somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

এগুলোর ব্যাখ্যা কিভাবে দিবেন?

১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১। কক্সিস: এপ জাতীয় প্রাণি থেকে বিবর্তিত হলে মানুষের লেজ থাকার কথা। মানুষের লেজ না থাকলেও রয়েছে তার আভাস। মানুষের মেরুদন্ডের শেষ প্রান্তে বেশ কয়েকটি হাঁড় সংযুক্ত হয়ে যে ত্রিভূজাকৃতির একটি অস্হিকাঠামো তৈরী করেছে সেটাই কক্সিস। এই অঙ্গটি এক সময় আমাদের প্রাইমেট পূর্ব পুরুষদের দেহে লেজের অংশ হিসাবে অনেক কাজে লাগলেও এখন তা আমাদের কাছে শুধুই স্মৃতিচিহ্ন। আশ্চর্য্যজনক হলেও একথা সত্যি যে কিছু কিছু মানুষের দেহে খুবই বেসিক লেভেলের লেজের মাস্ল পাওয়া যায় যা কিনা বানর এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের লেজের সাথে হুবুহু মিলে যায়। যেহেতু আমাদের হাঁড়ের অংশটা নড়েনা তাই এই মাস্ল গুলোও কোন কাজে আসে না। আর যাদের মধ্যে এই মাস্ল গুলি আছে তারা নিজেরাও হয়ত জানেনা যে এই মাস্ল নিয়ে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে লেজের দেখাও মিলে। কেউ কেউ এর যন্ত্রণা ভোগও করে। কেন মানুষের দেহে কক্সিস? এর ব্যাখ্যা বিবর্তন ছাড়া কোনভাবে দেয়া সম্ভব নয়।


২। ভয় পেলে গায়ে কাটা দিয়ে উঠে, লোম দাঁড়িয়ে যায় কেন? একটি মাস্লের উপস্হিতি টের পাওয়া যায় শীতকালে অথবা খুব বেশী ভয় পেলে। এদের বলা হয় এরেক্টর পিলি। অতি ক্ষুদ্র এই মাসলগুলো দেহের প্রতিটা লোমের নিম্নাংশে সংযুক্ত থাকে। এরা যখন সংকুচিত হয় তখন লোমগুলি দাড়িয়ে যায়। দেখতে অনেকটা পালক ওঠা হাঁসের মত লাগে বলে। এই মাস্ল গুলোর কোন কার্যকারীতা আমাদের দেহে নেই। অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে খুব ঠান্ডার সময় এগুলো তাদের লম্বা পশমকে উত্থিত করে তাদেরকে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে। অনেক সময় অন্য প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত বোধ করলে তাদের প্রকৃত আকার থেকে বড় দেখাতে সাহায্য করে। বিড়াল যখন আক্রান্ত বোধকরে তখন ওদের লোমগুলি ফুলে ফেপে ওঠে। আমাদের দেহেও স্মৃতি হিসাবে রয়ে যাওয়া এই বাম্পগুলো ঠিক একই হরমোন বা উদ্দীপকের কারণে ঘটে থাকে; ঠান্ডা অথবা অতিরিক্ত এড্রেনালিন বৃদ্ধির কারণে। বিবর্তনকে বাদ দিয়ে এর ব্যাখ্যা কিভাবে দিবেন?


৩। কৌতুক অভিনেতা রবিউলের কথা আপনাদের মনে আছে? তাঁর একটি বৈশিষ্ট ছিল যে, তিনি কান নাড়াতে পারতেন! মানে হল কিছু মানুষ এমনটা করতে পারে। কেন? যারা নিজের কান নাড়াতে পারে তারা হলো বিবর্তনের স্বাক্ষী। আমাদের মাথার চামড়ার নিচে তিনটি মাস্ল কানের সাথে সংযুক্ত থাকে। বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই এই মাসলগুলো অকেজো। বিড়াল এবং ঘোড়ার মত অন্যান্য প্রাণীরা এই একই মাস্ল ব্যবহার করে তাদের কান নাড়াচাড়া করে থাকে শব্দের উৎসস্হল নির্দিষ্ট করার জন্য। এই সমস্ত প্রাণীদের ক্ষেত্রে কান নাড়ানোর এই টেকনিকটা শিকারী প্রাণী অথবা তাদের বাচ্চাদের উপস্হিতি টের পাওয়াসহ আরো কিছু কাজে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এটা শুধুমাত্রই অন্যদের মজা দেয়া ছাড়া আর কোন কাজে লাগে না। এই কান নাড়ানোর ব্যাখ্যা বিবর্তনবাদ বাদ দিয়ে দেয়া সম্ভব নয়।


৪।এন্টিবায়োটিক ওষুধ খেলে ডাক্টারগণ কেন ডোজ কম্প্লিট করতে বলে? এন্টিবায়োটিক ওষুধ খেলে কেন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ব্যাকটেরিয়াকে কাবু করে ফেলে? কোন রোগে এন্টিবায়োটিক খেতে শুরু করার একদিন/দুদিন পরেই কিছুটা সুস্থবোধ করলে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিলে ওই রোগ আবারো ফিরে আসলে ওই এন্টিবায়োটিকে আর কাজ করে না। তার জন্য অধিমাত্রার এন্টিবায়োটিক দরকার হয়। মূলত জীবাণূগুলো ওই এন্টিবায়োটিককেই প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়ে উঠে। কৃত্রিম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ালে শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে, সাধারণত খুব সিরিয়াস অবস্থা না হলে চিকিৎসকদের এন্টিবায়োটিকের নির্দেশনা দেন না। এন্টিবায়োটিকের ফলে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও মারা যায়। যাই হোক ডোজ কম্প্লিট না করলে যে ব্যাকটেরিয়া এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠে তার কারণ ব্যাখ্যা করবেন কিভাবে?


৫। ব্রাজিল পি-১ নামে নতুন স্টেইনের করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। ভাইরাস সবসময় নিজেকে পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিতে থাকে। কখনো কখনো এই নতুন রূপ নেয়া ভাইরাস আগেরটার চাইতে বেশি ভয়ঙ্কর হয়, বা আগের চাইতে 'নিরীহ'ও হয়ে যেতে পারে। এমন কিছু মিউটেশনও হতে পারে যার আদৌ কোন প্রভাব পড়ে না। করোনাভাইরাসও যে এভাবে মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন চেহারা নিতে পারে বা নিচ্ছে তার কারণ কিন্তু ওই বিবর্তনই। নিজের চেয়ে কখনো শক্তিশালী হয়ে উঠা বা দুর্বল হয়ে থাকা তা কিন্তু ইচ্ছাধীন নয়, তা হয় প্রাকৃতিক নির্বাচনের মতোই। অধিক শক্তিশালীটাই টিকে থাকে, দুর্বলগুলো একসময় হারিয়ে যায় বা মানুষের শরীর তা প্রতিরোধ করে দেয় সহজেই। ইতোমধ্যেই ভাইরাসের স্পাইকগুলোরও পরিবর্তন হয়েছে। এখন হাজার হাজার ধরনের ভাইরাস সৃষ্টি হয়েছে। এর ব্যাখ্যা বিবর্তনবাদ ছাড়া দেয়া সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৪৯
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×