সালমান মাদ্রাসার ছাত্র সে লজিং থেকে পড়ালেখা করে। সালমান যে বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে সে বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান সাহেব এলাকার একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি। এলাকার সবাই তাকে অনেক সম্মান করে। হাবিবুর রহমানের দুই ছেলে এক মেয়ে। শাহিন ও আশিক ঢাকায় থেকে চাকরি করে সাথে তাদের স্ত্রী সন্তানরাও থাকে। হাবিবুর রহমান তাদের বাপের ভিটা ছেড়ে ঢাকায় যেতে রাজি হয়নি তাই গ্রামেয় থাকে তার ছোট মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে। হাবিবুর রহমানের ছোট মেয়ের নাম নুরজাহান।
।
সালমান আজ মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় এলাকার বখাটে ছেলেরা তাকে অপমাণ করেছে। গ্রামের বখাটে ছেলেদের লিডার পল্টু। পল্টু নুরজাহানকে ভালবাসে তাই সে তার চেলাপেলাদেরকে নিয়ে নুরজাহানদের বাড়িতে যে ছেলেই লজিং থাকতে আসে তাকে যেকোন উপায়ে বেড় করে দেয়। তারি দারাবাহিকতায় সালমানকেও টার্গেট করে। সালমানকে কটু কথা বলে রাগানোর চেষ্টার করে কিন্তু তাদের চেষ্টা বিফলে যায়। কারণ সালমান তাদের সাথে জগড়া না করে মাথা নিচু করে অপমান সহ্য করে বাড়িতে চলে আসে।
।
সালমান মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসার পর নুরজাহান তার চেখারা দেখেই বুজতে পেরেছে যে আজও বখাটে ছেলেরা তাকে অপমান করেছে।
।
সালমান প্রতিদিন নুরজাহানকে উর্দু আর আরবি বিষয়ে পড়ায়। নুরজাহান নামে যেমন সুন্দুর বাস্তবেও তাই। সে সারা জাহানের নুর না হলেও নিঝুমপুর গ্রামের নুর ঠিকি। তার রূপে এলাকার জোয়ান থেকে বুড়ু বয়সের পুরুষরা পর্যন্ত হাবুডুবু খায়। নুরজাহান স্কুলে যাওয়ার সময় এলাকার ছেলেরা লাইন দরে। কিন্তু নুরজাহানের একটাই দুঃখ সে এত সুন্দরী হওয়া সত্বেও তাদের বাড়িতে একটিবারের জন্যও সালমান তার দিকে তাকালো না এটাই তার দুঃখ। সালমান ইসলামের নিয়মকানুন মেনে চলার কারণে বেগানা নারীর প্রতি নজর দিতে পারে না যদিও বাধ্য হয়ে তাকে একবেলা পড়াতে হয়।
।
নুরজাহান মনে মনে সালমানের প্রেমে পড়েগেছে তার এই সততা দেখে কিন্তু তার ভালবাসার কথা প্রকাশ করতে পারে না। যদিও ইশারা ইঙ্গিতে প্রকাশ করেছে। একদিন সালমান আবার সেই বখাটে ছেলেদের মার খেয়ে বাড়িতে আসার পরে নুরজাহান অনেক রেগে গিয়ে সালমানকে উদ্দেশ্য করে বলে-
আপনি কি মানুষ নাকি অন্যকিছু? আপনি কি পুরুষ না কি অন্যকিছু? আপনার কি কোন পুরুষ্যত্ব নাই? আল্লাহ কি আপনারে রাগ অভিমান, প্রেম ভালবাসা কোন কিছু দেন নাই? আপনাকে প্রতিদিন সেই ছেলেগুলো অপমান করে আর মারে আপনি কোন কিছু না বলে চুপ করে কাপুরুষের মতো চলে আসেন কেন? আপনার গায়ে কি রক্ত নেই?
নুরজাহানা এই কথাগুলো বলার সময় হঠাত মনের অজান্তে সালমানের হাত ধরেফেলে। কিছু সময়ের জন্য কেউ কোন কথা না বলে কল্পনার জগতে হারিয়ে গিয়েছিল।
।
সালমান নুরজাহানের এসকল কথা শুনে তার পুরুষত্বে আঘাত লাগে তাছাড়া নুরজাহানের হাতের ছুয়া পেয়ে তার অন্তরের মুম গলতে শুরু করে। আর নুরজাহানের সকল কথাগুলো তার অন্তররে গেতে যায়। তাই সে আজ যখন মাদ্রাসায় যাচ্ছিল রাস্তায় বখাটের দলেরা আক্রমণ চালাতে এইবার চুপ না থেকে একজন একজন করে দরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। আর তাদের দলের লিডার হাতে ছুড়ি নিয়ে সালমানকে আঘাত করতে আসলে সালমান প্রতিহত করতে গিয়ে সেই ছুরির আঘাতে লিডার মারা যায়।
।
পুলিশ এসে সালমানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় খুনের অপরাধে। সব সাক্ষী প্রমাণের পর সালমানের ছয় বছর জেল হয়। আর নুরজাহান তাকে চিটি দিয়ে জানায় যে, এই ছয় বছর সে সালমানের জন্য অপেক্ষা করবে। সে সালমানের ফিরে আসার পথপানে চেয়ে চেয়ে দিন পার করবে।
।
গল্পের সার্মম হলোঃ আগুনের ধর্ম হলো পুরানো আর মোমের ধর্ম হলো আগুনের লেলিহান শিখায় পুরে পুরে নিজেকে শেষ করে দেওয়া। নারী হচ্ছে আগুন আর পুরুষ হচ্ছে মোম। মোম যেমন আগুনের স্পর্শে গলে যায় ঠিক তেমনে একটি নারীর সঙ্গ পেলে পুরুষ নিজেকে যতই সহি রাখতে চাই তা সম্ভব নয়।