somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ৮"

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রশ্ন হাজার মনের ভিতরে। দুজনই যেনো পুরোনো সব দিনে ফিরে গেলো। এসএসসির পর তিনটা মাস ওদের জীবনকে ওলটপালট করে দিয়েছিল। তখন থেকেই হয়তো শুরু হয়েছিল ওদের দূরে যাওয়া।
মিতু কথা বলা শুরু করল সায়েম ভাইয়ের সাথে ফোনে। সায়েম কখনোই পাত্তা দেয়নি মিতুকে। কিন্তু মিতুকে সে কঠোর ভাবে বলতেও পারেনি যে সে চায় না মিতু তাকে ফোন করুক। হ্যা, সায়েমও তো একটা ছেলেই , তাইনা? একটা মেয়ে ওকে এতো পাত্তা দিচ্ছে । ও থামাতে পারেনি ওর কৌতুহল। বয়সেরই দোষ হয়তো। নাহলে সায়েমের মত কঠিন ছেলেও থামাতে পারেনি রাতের পর রাত কথা বলতে। মিতু বকবক করেই চলত সারারাত, আর সায়েম শুনে যেত। মাঝে মাঝে মিতুর আওয়াজ ওর কানে ঢুকত না। শুধু রিমার চোখ দুটোকে মনে পড়ত। রিমার কথা ভাবত ও। কি করছে এখন রিমা? হ্যা, রিমা সেদিন এসেছিল। সায়েম বুকের ভিতরের সব ভয়গুলো দূর করে ওর সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল," রিমা, আমি তোকে আজকে যা বলব তা আমি অনেকদিন থেকেই বলতে চেয়েছি। কিন্তু পারিনি। আজ আমি না বলে আর থাকতে পারব না। আমি তোকে অনেক ভালোবাসি। তোকে হারালে আমি হয়তো নিজেকেও হারিয়ে ফেলব।" রিমা চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। সায়েমের মনে হয়েছিল যেন যুগের পর যুগ কেটে গেছে ওভাবে। রিমা মুখ খুলল," দেখ সায়েম। আমি আসলে এমন কিছুই তোকে নিয়ে ভাবিনি। আর সামনে আমাদের পরীক্ষা। আগে কোথাও ভর্তি হই আমরা, তারপর দেখা যাবে।" খুব কষ্ট পেয়েছিল সায়েম। কিন্তু মেনে নিয়েছিল রিমার কথা।
তারপর মিতু প্রায়দিনই সায়েমকে ফোন করত। তখন সায়েমের ল্যাব পরীক্ষা চলছিল। সায়েমের হাতে তাই সময়ও ছিল অনেক। আর রিমাকে ফোন করা যাবে না এটা সায়েম জানতো। তাই মিতুর আবোলতাবোল কথা শুনে ওর রাত গুলো কেটে যেত। ওপাশের মানুষটার এত অবহেলাকেও কিন্তু মিতু সহ্য করে নিয়েছিল। তবুও তো সেই মানুষটার সাথে কথা বলতে পারছে যে দিনরাত তার স্বপ্নের জগতে বিচরণ করছে। মিতুর সান্ত্বনা অতোটুকুই। একদিন রাতে মিতু অনেক সাহস নিয়ে ফোন দিল সায়েমকে। আজকে যেন কোনো কথাই আর মাথায় আসছিল না। শুধু বলল," আচ্ছা, আপনি কি কাউকে পছন্দ করেন?" রিমার কথাটা বলতে গিয়েও মুখে আটকে গেলো সায়েমের। ফ্যামিলির সাবার সামনে ওর ইম্প্রেশন খুব ভালো। যদি রিমার কথা মিতুকে বলে দিলে মিতু কথাটা সবাইকে বলে দেয়, তাহলে ওর কি হবে? ওর ইমেজটা কোথায় দাঁড়াবে? আর ও নিজেই একটু কৌতুহলী ছিল কিভাবে এই পাগল মেয়েটা ওকে কিভাবে কথাটা বলে তা শুনার জন্য। তাই বলে ফেলল,"না!"। এই একটা কথা যেন মিতুর জীবনের সবথেকে বড় কথা ছিল। মিতুর জীবনের সব থেকে বড় মিথ্যে ছিল যে কথাটা। আসলে কেউ কি জানে কোন কথাটা আমাদের জীবনকে পাল্টে দিবে? জানেনা। মিতু বলল,"আমি আর পারছি না। আমি জানতে চাই । আমি উ্ত্তর চাই।" "কিসের উত্তর?" " আপনি কি কিছুই বুঝেন না? কিছুই জানেননা?" মিতুর কণ্ঠে অভিমান ঝড়ে পরে। চোখ ফেটে পানি আসতে চায়। " আমাকে খুলে বলো। আমি এসব প্যাচের কথা বুঝি না।" " আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি। আমি কি আপনার জন্য অপেক্ষা করবো?" "তুমি কি আমাকে প্রপোজ করছো? আমাকে প্রথম কেউ করছে।" "হুমম। আই লাভ ইউ। কিছু বলুন।" "ভালোই লাগছে শুনতে, আরেকবার বলতো", তাচ্ছিল্যের স্বরে বলল সায়েম। কিন্তু ওপাশের পাগলী মেয়েটির কাছে তখন তাচ্ছিল্যও যেনো ভালোবাসা। ভালোবাসা যে অন্ধ মিতু তা আবারও প্রমাণ করল।

" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ৭"
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ৬"
" দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ ৫"
(**হরতাল খাচ্ছিলাম। অলস মানুষ, তাই ঘুমই জীবন। লিখতে দেরি হয়ে গেলো। **)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৩
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×