somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার গল্প

১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

েজা ঘাসের রাস্তায় হাটছি, পিছন পিছন একটা কুকুর আসছে। কিছু একটারগন্ধ শুকবার চেষ্টা করে চলেছে। জনমানব শুন্য রাস্তা, এত রাতে কেই বা বের হবে তাও আবার গ্রামের বাড়িতে।কুয়াশাও বেশ পড়েছে, খুব একটা দেখা যায় না। রাত দুটো আড়াইটা হবে। গ্রামের রাস্তার দু পাশ জুড়েই বেশগাছ আর বড় বড় ঘাস থাকে তাই এত রাতে হাটার সাহস ও হচ্ছে না, যদি সাপ থেকে থাকে তারউপর নীলার ভুতের ভয়তো আছেই, সেই যে হাত খাঁমচে ধরেছে আর ছাড়ার নাম নেই, বাধ্য হয়ে খালের ধার ঘেঁষে চলা রাস্তা দিয়ে হাটছি। খালের ওপারটা থেকে আলো আসছে, বড় বড় খড়ের স্তুপ দেখা যাচ্ছে, মনে হচ্ছে ধান সিদ্ধ করা হচ্ছে। একটাবাঁশ, আর সাথে আরেকটা বাঁশ ধরুনি হিসেবে এটার উপর দিয়ে পার হতে হবে। পায়ে কনভার্স থাকায় আমার খুব একটা অসুবিধে হবে না কিন্তু নীলার পায়ে হিল তাও একেবারে পেন্সিল হিল ! এটা পায়ে উঠলে পানিতে পড়তে আর সময় লাগবে না। সাঁকোর কাছে এসে দাঁড়িয়েছি পার হবো বলে ধুপ করে একটা আওয়াজ হল............।।বেশ তীব্র একটা আওয়াজ শুনলাম, সেই সাথে হাতের উপর নীলা আরো জোরে খামচে ধরল। ভয় ভয় কন্ঠে বললো, ‘ কিসের শব্দ হলো বলতো?’
‘কি জানি। সাঁকো থেকে বস্তা টস্তা পড়েছে বোধহয়’
‘কি যে বলো! এইটুকুন বাঁশের সাঁকো,তার উপর বস্তা রাখা সম্ভব? মনেহচ্ছে, সাঁকো পার হতে গিয়ে কেউ ধুপুস হয়েছে।‘
‘কি জানি!এত রাতে কেআসবে এখানে? গ্রামের মানুষ রাত আটটা বাজার আগেই ঘুম।তোমার মত সন্ধ্যা ছয়টার ট্রেন ধরে রাত দু’টোয় এসেস্টেশনে পৌছার মত ভীমরতি ধরা কেউ নেই এখানে‘ অন্ধকারেই মুচকি হাসলাম।
নীলা এবার ইচ্ছে করেই প্রচন্ড একটা খামচি দিয়ে বললো, ‘মাস্টার মশাইগিরি বাদ দিয়েটর্চ জ্বেলে দেখো ঘটনা কি’
টর্চ জ্বাললাম।ইতি উতি তাকালাম কিছুক্ষণ। সাঁকোর নিচে ছোট খাটো একটা খাল বয়ে যাচ্ছে। খরস্রোতা, পানি নেই খুব একটা। তবে কাঁদাটে। পড়লে নাক পর্যন্ত ডুবে যাবে। ‘কিছুই তো দেখছিনা। মনে হচ্ছে বেঁজী টেজি কিছু একটা লাফ দিয়েছে।‘
‘এখানে বেঁজী আছে?’
‘বেঁজী শেয়াল সাপ খোপ সবই আছে। তুমি এক কাজ করো, জুতা খুলে আমার হাতে দাও, নয়তোপেন্সিল হীল নিয়ে এই মামুলি বাঁশের সাঁকো পার হতে পারবেনা।‘
‘খুব পারব। আমার এসব অভ্যেস আছে’ বলেই হুট করে আমার হাত ছেড়ে সাঁকোতে গিয়ে উঠলো নীলা। তরতর করে অনেকখানি পারও হয়ে গেল।
আমি শক্ত করে এপাশটা ধরে রাখলাম, পাছে দূর্ঘটনা ঘটে। একটু পরেই শুনলাম নীলার গলা, ‘সেফলি রিচড।তুমি চলে এসো এবার।‘
একহাতে নীলার স্যুটকেস নিয়ে আরেকহাতে সাঁকো ধরলাম। এই সাঁকোর সাথে প্রায় তিন বছরের পরিচয়।অসংখ্যবার পার হয়েছি, কি রাত কি দুপুর।
কিন্তু আজ কি হলো কে জানে, মাঝামাঝি আসার পর হঠাৎই মনে হলো মাথাটা দুলছে,সেই সাথে সাঁকোও।আশপাশটা লাটিমের মত ঘুরছে-এরকম একটা অনুভূতি নিয়ে, মুহূর্তের মধ্যেই স্যুটকেস সমেত ভূপতন। ঝপাস করে আওয়াজ হলো ,এরপর ওপাশ থেকে নীলার উচ্চস্বরে হাসি শুনতে পেলাম। ‘পেন্সিল হীলের কাছে চটি জুতোর পরাজয়! হাড় গোড় ভাঙ্গেনি আশাকরি। উঠে এসো।‘ নীলা হাসছে।
বুকসমান কাদা মেখে কোনরকমে উঠে পাশে শক্ত মাটির উপর দাঁড়ালাম।পকেট থেকে টর্চ লাইট পড়ে গেছে,তবে নীলার স্যুটকেসটা এখনো ছাড়িনি।
নীলা একটু ঝুঁকে হাত বাড়ালো। অল্প স্বল্প চাঁদের আলো, এই ক্ষীণআলোতেও নীলার অনিন্যসুন্দর মুখটা দেখতে পেলাম।কি মোহনীয় এক ভঙ্গিমায় হাসছে। মনে মনে আওড়ালাম,”আমি ভুলে যাই,তুমি আমার নও...”
‘কি হলো?উঠে এসো।‘ নীলা বলে উঠলো।
‘বেশি ঠান্ডা পানি?’ নীলা জিজ্ঞেস করলো।
‘খুব একটা না’ কাঁপতে কাঁপতে বললাম।
বাড়িতে এসেই কলপাড়ে এসেছি,গোসল করার জন্য।নীলাও এলোপেছন পেছন। টিউবওয়েল চেপে পানি তুলতে যেতেই নীলা বললো,’তুমি বসো, আমি পানি তুলছি।‘
‘ব্যাপক শক্তির অপচয় হবে কিন্তু। এমনিতেই আট ঘন্টার দীর্ঘ একটা জার্নি করে এলে।‘
‘হুহ!আমি ওসব পারি’ বলেই কোমরে শাড়ীর আঁচল গুঁজে টিউবওয়েল চাপতে শুরু করলো।
নীলার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ছ’মাস, পারিবারিকভাবে কনে দেখা এবং বিয়ের বন্দোবস্ত।ছোটবেলা থেকেই মুখচোরা স্বভাবের বলে কখনোই মেয়েদের সাথে তেমন করে ঘনিষ্ঠ হতে পারিনি। সমবয়সী মেয়েরা ছিল আমার কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের মত।ক্বচিৎ কদাচিৎ কারো সাথে দু’একলাইনের কথোপকথন হয়ে গেলে উপলব্ধি করতাম, পরবর্তী মিনিট দশেকের জন্য হার্ট বিট কয়েকগুন বেড়ে গেছে।
শহুরে পড়াশুনা শেষ করে এই অজপাড়া গাঁয়ের কলেজে শিক্ষকতা করতে আসার ব্যাপারটা অনেকের কাছে মহিমাময় কিংবা খ্যাঁত মনে হলেও আমার কাছে কখনোই খুব অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি। গ্রামের প্রতি খুব যে টান ছিলবা আছে, তা নয়- তবে নিরিবিলি পরিবেশটা সবসময়ই ছিলপ্রিয়।
নীলার সাথে বিয়ে হবার অনেক আগে থেকেই আমি এখানে,শহরে তখন মাঝে সাঝে যাওয়া হতো কলেজের প্রয়োজনে কিংবা বড়মামার জরুরী তলব পেলে। মাস ছয়েক আগেবড়মামার অসুস্থতার খবর দেয়া টেলিগ্রাম পেয়ে ঢাকাযেতে হলো।
যাওয়ার পর মামা বললেন,’বাপ,তোকে মিথ্যা সংবাদ দিয়ে এইসময়ে ডেকে আনালাম,মামার প্রতিরাগ হোস না। আমি তোর জন্য একটা মেয়ে দেখে রেখেছি,যদি তুই রাজি থাকিস তাহলে আগামীকালই বিয়ে।‘ অবাক হলেও সেটা চেপে গেলাম। বড় মামার অবাধ্য কখনো হইনি।
মামা বললেন,’কন্যা মাশাল্লাহ খুবই সুন্দর।এবছরই ইন্টার পাশ করবে,রেজাল্টের অপেক্ষায় আছে। মেট্রিকে চার বিষয়ে লেটার মার্ক ছিল।পরিবার ভালো,সহায় সম্পদ ও আছে বেশ।বড় দুই বোনের বিবাহ হয়ে গেছে,সে তৃতীয়। ছোটআরো দু’জন আছে।‘
‘সবই তো বুঝলাম মামা।কিন্তু এত তাড়াহুড়োর বিয়ে...মানে,আমিও তো কোন প্রস্তুতি নিয়ে আসিনি।তাছাড়া টাকা পয়সার ব্যাপারও তো আছে।‘বললাম আমি।
‘সব ব্যবস্থা হবে।তুই ভাবিস না।আর তাড়াহুড়োটা হচ্ছে ওদের জন্য।মেয়েকে নাকি পাড়ার কিছু বখাটে ছেলেপেলে উত্যক্ত করে,যন্ত্রনা দেয়।মুখে এসিড মেরে দিবে,রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাবে-এসব হুমকি ধামকি দিয়ে চিঠিও এসেছে বাসায়।‘
‘আর মামা...আমি তো গ্রামে পড়ে আছি,মেয়ে কি গ্রামে যেতে রাজি হবে?’জিজ্ঞেস করলাম।
‘কেন হবেনা?আলবৎ হবে। তুই কিচ্ছু ভাবিস না। তোর কাজ শুধু কবুল বলা। তিনবার বলবি,’কবুল কবুল কবুল’ ব্যস’
অবশ্য বিয়ের রাতে বুঝতে পারলাম,মামা যেমনটা বলেছেন-ঘটনা এত সহজনা।
বরাবরই শুনে আসছি,বাসর রাতে ফুল দিয়ে সাজানো বিছানায় নতুন বঊ লাজরাঙা হয়ে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে,বরের জন্য অপেক্ষা করে। আমার ক্ষেত্রে হলো উল্টোটা। বাসর নীলাদের বাসায় হলো,সেজন্য হয়তো।
একঝুড়ি গাঁদাফুল আর কাঁটাওয়ালা গোলাপ দিয়ে সাজানো বিছানায় বসে,দু’তিনবার কাঁটার খোঁচা খেয়ে অপেক্ষা করছিলাম আমি,নীলার জন্য। প্রায় মিনিট চল্লিশেক পরে সে এলো।বেশ সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গি। লাল পাড়ের একটা কাতান গায়ে জড়ানো,অনেকটা আনাড়ীভাবে। মাথার একপাশে বেলীফুলের একগাছি মালা। ঘরে ঢুকে শান্ত ভঙ্গিতে দরজা বন্ধকরলো,এরপর কোনোরকম জড়তা ছাড়াই বিছানায় এসে বসল এবং আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘এত তাড়াহুড়োর বিয়ে হলো,আপনার কি কোন ঝামেলা হয়নি?’
একটু ভ্যাবচ্যাকাখেয়ে বললাম, ‘না,তেমন একটা...’
‘কিন্তু আমার হয়েছে।অনেক ঝামেলা হয়েছে।মাত্র দু’দিন আগে যখন জানলাম,পরশু রাতে আমার বিয়ে-তখন আর কিছুই করার নেই।একদিনের মধ্যে কি আর কেনাকাটা করা যায়?গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হলো,একেবারেই সাদামাটা। আপনার তো বোধহয়,কিছুই হয়নি।তাইনা?’
‘ইয়ে,হয়েছে আরকি!এইযে,হাতে মেহেদী দিয়েছে মামাতো বোনেরা’হাত মেলে তাকে দেখালাম।
‘কি বিশ্রী ডিজাইন! যাক,তবু যে কিছু একটা হয়েছে,তা ইযথেষ্ঠ। এবার জরুরী কথাটা বলি। আপনি হয়তো শুনেছেন,পাড়ার বখাটে পোলাপানের ঝামেলা থেকে মুক্তিলাভের জন্য আমাকে তাড়াহুড়ো করে আপনার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হচ্ছে?’
‘হ্যা,মামার কাছে শুনলাম।‘
‘ঘটনা মিথ্যা। বখাটেরা আমাকে জ্বালানোর সাহস কোনদিনই পায়নি,কারন এ পাড়ার বখাটে দলের লীডার আমার পরান সখা,মানে প্রেমিক। এবার বুঝলেন,বাবা আমাকে প্রেম থেকে নিষ্কৃত করতেই আপনার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন।‘
‘ও আচ্ছা।‘
‘শুধু ও আচ্ছা,আর কিছুনা?’
‘আর কিছু কি?’
‘আসল কথাই তো শুনেননি।আগামী ছ’মাসের মধ্যেই আমি আমার পরানসখার কাছে চলে যাব।কাজেই,এই ছ’মাস আমি আপনার শো পিসস্ত্রী হয়ে থাকতে পারি,যদি চান। আবার,পুরো ঘটনা সবাইকে বলে দিয়ে যদি ডিভোর্সও দিয়ে দেন,তাতেও আমার আপত্তি নেই। বরং লাভ।তবুও অনুরোধ করব, আপাতত ডিভোর্স না দিতে।‘
‘হুম’
‘এই বাসায় থাকতে থাকতে দম বন্ধ হবার দশা। কটা দিন ছুটি কাটাতে মন চাইছে।আমি আপনার সাথে গ্রামে যাব’
‘আচ্ছা’
‘সব কথা হু হা আচ্ছা দিয়েই চালিয়ে দেবেন? বাসর রাতে এত মারাত্মক একটা ঘটনা,তাও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা গচ্চা দিয়ে ঘন্টা তিনেক আগে বিয়ে করা নতুন বউয়ের মুখে শুনতে খারাপ লাগছে না?’
আমি হাই তুলে বললাম,’না,লাগছেনা নীলা।আমি জানি,আমার কাছে কিছুই থাকেনা।তুমিও থাকবেনা,এটাই স্বাভাবিক। যাকগে,ঘুমোচ্ছি আমি।‘ বলেই পাশ ফিরে শুয়েপড়লাম।
এভাবেই সমাপ্তি ঘটলো আমার বিয়ের রাতের।
সপ্তাহ দুয়েক মামার বাসায় ছিলাম। এরই মধ্যেচোখে পড়লো,নীলার অস্বাভাবিক উচ্ছ্বলতা। বাবার বাসায় বোধহয় সারাক্ষণ খাঁচার পাখির মত ছটফট করছিল। বিয়ে পৃথিবীর সব মেয়ের কাছে অদৃশ্য এবং চির বন্দিশালাহলেও নীলার কাছে হলোনা। তার আনন্দ চোখের পড়ার মত।আমারও ভালোই লাগল।
আমাকেও কিভাবে জানি দূরে দূরে সরিয়ে রেখেও এক আলগা মায়ায় বেঁধে ফেলল মেয়েটা।আপনি ছেড়ে দিল বেমালুম,কোন রকম সংকোচ ছাড়াই তুমি করে ডাকতে শুরু করল। সবাই ধরেই নিল, অসম্ভব সুখী এক জুটিহয়েছি আমরা।
তিন সপ্তাহ পর নীলাকে রেখেই গ্রামে ফিরতে হলো। শেষমুহুর্তে সে বললো,যাবেনা।‘তুমি গ্রামে গিয়ে সব ঠিক ঠাক করো,আমি নাহয় কদিন পরে আসব’
‘এই কদিনটা কোথায় থাকবে?এখানে?’
‘না।আমার বাসায় চলে যাব।‘
‘তোমার যা ইচ্ছে।‘
‘তোমাকে চিঠি লিখব।উত্তর দিয়ো।আমি অনেক চমৎকার চিঠি লিখতে পারি,জানো।বান্ধবীদের প্রায় সবগুলো প্রেমপত্রই আমার লিখে দেয়া। অথচ,নিজের জন্য আজ পর্যন্ত একটা প্রেমপত্র লেখা হলোনা। বখাটে লীডার রস কষ হীন। সে এসব চিঠি ফিটির ধার ধারে না।‘
‘হুম’
‘হুম কি? চিঠি পাওয়া মাত্রই উত্তর দিবে,কেমন?’
‘আচ্ছা’
গ্রামে আসার পর অনুভব করলাম, কিছু একটা অসম্ভবরকম ভাবে মনকে নাড়িয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারলাম, নীলাকে অনুভব করছি আমি। পিছুটান বলতে কিছু কখনোই ছিলনা আমার। মাকে হারিয়েছি বুদ্ধি হবার আগেই। বাবা ছিলেন এই গ্রামেরই হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সারাজীবনভর স্বপ্ন দেখে গেছেন, এই গ্রামে একটা কলেজ হবে।
আমার পড়াশুনা হয়েছে বড়মামার বাসায়,ঢাকাতে।
মৃত্যুর আগে আগে বাবা ঢাকায় এলেন। বললেন,’আমার স্কুলের এক ছাত্র আমেরিকায় থাকে। গত মাসে সে চিঠি পাঠিয়েছে।পড়ে দেখ এটা’ বলে একটা চিঠি বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে।
“ শ্রদ্ধেয় স্যার, সালাম জানবেন।
আমাকে চিনবেন কিনা জানিনা।আমি আপনার ‘বেকুব মাকাল’ ক্লাসে কখনোই পড়া পারতাম না। আপনি বলতেন,’তুই হইলি একটা মাকাল।দেখতেই যা সুন্দর, ভিতরে কিচ্ছু নাই। তুই হইলি বেকুব মাকাল।‘
স্যার,আমার পড়াশুনা হয়নি সত্যি।তবে আমি নিজের চেষ্টায় জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। স্কুলে থাকতেপ্রায়ই আপনার মুখে শুনেছি,আমাদের গ্রামে একটা কলেজকরার খুব শখ আপনার।কিন্তু আর কেউ এগিয়ে আসছেনা। ভাবতেও বিস্ময় লাগে, গত বিশ বছরেও এই গ্রামে আপনার স্বপ্নের কলেজটি হয়নি।
স্যার,আমি নিজের এবং এখানকার একটি সংস্থার মাধ্যমে মোটামুটি অংকের একটি চেকপাঠাচ্ছি।আপনি কলেজের কাজ শুরু করেন।একক প্রচেষ্টায় বড় কিছু করা খুব কঠিন। কিন্তু সামনে যদি আপনার মতএকজন মানুষ থাকে নির্দেশনা দেয়ার জন্য,তাহলে সেটা অসম্ভব নয়।
ভালো থাকবেন ইতি, শামিমুল আনাম। ”
আমি বাবার দিকে তাকালাম।
‘তাহলে কলেজের কাজ হচ্ছে?’
‘অনেকখানি এগিয়েছে।কিন্তু বাপ,কলেজ বানালেই তো শুধু চলেনা।সেটা চালাতেও তো হবে।ভালো শিক্ষক নেই।শিক্ষক না থাকলে মানুষ কেন নিজের ছেলেমেয়েকে সেই প্রতিষ্ঠানে পড়াবে?’
‘তা তো বটেই’
‘তোকে গ্রামে যেতে হবে।আমি আর কদিন আছি।এখন লাগামটা বিশ্বস্ত কারো হাতে দিয়ে যেতে চাই।তুই ছাড়া তেমন আর কেউ নেই। এখনতোর মতামত বল। শহরের মায়া কাটিয়ে যাবি গ্রামে?’
‘যাব বাবা’
বাবার মৃত্যুর পর,প্রথমবারের মত উপলব্ধি করলাম,কেউ একজনকে জীবনের অংশ ভাবতে ইচ্ছে করছে। সেই কেউ একজনটা বোধহয় নীলা,আমার শো পিস স্ত্রী!
মাসখানেক পরে নীলার চিঠি পেলাম।
‘মাস্টার মশাই, কেমন আছ?
মনে পড়ে নীলাকে? আমার পড়ে। তোমার বোকাবোকা হাসিটা দেখতে ইচ্ছে করে মাঝে মাঝে।
ইতি নীলা’
আমি উত্তর দিলাম,
‘ভালো আছি। তুমিও ভালো থেকো।
খুব দেখতে ইচ্ছে হলে গ্রামে চলে এসো’
তবে এই তিন লাইনের চিঠির বাইরেও বেশ বড়সড় দীর্ঘ একটা চিঠিও লিখলাম, সেটা গোপন ডায়েরীর ভাঁজে রয়ে গেল।
গত ছ’মাসে নীলার ছয়টি চিঠি পেয়েছি,উত্তর পাঠিয়েছি পাঁচটা।
শেষ চিঠিতে নীলা জানাল,অমুক তারিখেসে গ্রামে আসছে।স্টেশন থেকে যেন তাকে নিয়ে আসি।
তাকে আনতে গিয়েই আসার পথে এই দূর্ঘটনা।
নীলাকে নিয়ে পরদিন গ্রামে ঘুরতে বেরোলাম।
হাঁটতে হাঁটতে নীলা বলল, ‘গ্রামে তো তোমার ব্যাপক পপুলারিটি দেখছি! সবাই চেনে’
‘গ্রামে এরকমই হয়।সবাই সবাইকে চেনে।‘
বিকেলে চা খাওয়ার সময় নীলা বলল,’আমি একসপ্তাহ থাকব এখানে।এরপর তোমার সাথে আর দেখা হচ্ছেনা বোধহয়’
‘বখাটে লীডারের কাছে চলে যাবে?’
‘হুম।তবে তোমার ভয় নেই,তোমাকে সবার কাছে সন্দেহ এবংকলংকমুক্ত করেই যাব’
আমি হাসলাম, ‘আমাকে নিয়ে ভেবোনা’
‘কেন?’
আমি শান্ত গলায় বললাম,’কারন,আমাকে কাছে কিছুই থাকেনা,নীলা। কেউ থাকতে চায়না,চাইলেও পারেনা।‘
নীলা কিছু বললো না।
নীলা ছিল এক সপ্তাহ। পুরনো অনুভূতিটুকু মাথাচাড়া দিল আরেকবার। দু’একবার ভাবনাও হলো,নীলাকে ভুলতে পারব তো?
একসপ্তাহের মধ্যে নীলা পুরো বাড়িটা বদলে দিল,সেই সাথে আমার জগতও।
প্রতি বেলা নিজ হাতে রান্না করা,ভোরে উঠে বিপুল উদ্যোমে উঠোন ঝাট দেয়া,কোমরে শাড়ি গুঁজে কলপাড়ে গিয়ে হাড়িকুড়ি ধুয়ে আনা,সবই করল। এমনকী,আশপাশের বাড়িগুলোর মহিলাদের সাথেও তার বেশ ভাব হয়েছে লক্ষ্য করলাম। সন্ধ্যা বেলা প্রায়ই সে আশপাশের বাড়িতে যেত।ঘন্টাখানেক বাদে পান চিবুতে চিবুতে ঘরে ফিরত।আনন্দময় সময়টুকু বড় দ্রুতই চলে গেল। নীলা চলে যাওয়ার দিন কলেজ থেকে তাড়াতাড়ি চলে এলাম ছুটিনিয়ে। স্যুটকেস গোছাতে গোছাতে নীলা বলল,’তুমি ঢাকায় যাবেনা কখনো?’
‘কেন যাব না? প্রায়ই তো যাই’
‘প্রায়ই যাওয়ার কথা বলছিনা।কলেজের চাকরী ছেড়ে একেবারে কখনো যাওয়ার চিন্তা ভাবনা নেই?’
‘না নীলা।আমি এখানেই থাকছি।‘
‘বাবার ইচ্ছাপূরণ?’ ‘প্রথমদিকে তাই ছিল।এখন ব্যাপারটা ভিন্ন। আমি নিজেও এই জায়গাকেভালোবেসে ফেলেছি।‘ ‘তুমি ভালো বাসতেও জানো?! জানতামনা।‘
আমি হাসলাম।মনে মনে বললাম,”তুমি কিছুই জানোনা নীলা। কোনদিন জানবেও না...”
নীলাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে রইলাম।অপেক্ষা করছি,ট্রেন ছাড়ার।
খানিক বাদেই হুইসেলের আওয়াজ শুনলাম। ট্রেন ছুটতে শুরু করলো।জানালার পাশে বসেছে নীলা,আমার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে হাত নাড়লো। ওর স্নিগ্ধ হাসিমাখা মুখটা শেষবারের মত দেখছি।ভাবতেই বুকের ভেতর কেমন জানি করে উঠলো। হাত নাড়লাম আমিও,মনে মনে শেষবারের মত আওড়ে ফেললাম, “তুমি কোনদিনও জানবেই না,আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি...”
একফোঁটা বৃষ্টি কি ঝরলো,প্লাটফর্মের ছাদ বেয়ে?
নীলা আবার ফিরে এসেছিল। একবিকেলে পোঁটলাপুটলি নিয়ে একাই চলে এলো। এসেই আবার আগের মত কাজে নেমে পড়লো। ঘর ঝাঁট, উঠোন ঝাঁট, দু'হাতে এটো হাড়িপাতিল নিয়ে কলপাড়ে বসে বিপুল উদ্যোমে বাসন মাজা- সবই করলো, এবং করছে!
প্রায়ই নীলা আমার সাথে কলেজে যায়। আমার কলেজেই সে অনার্সে ভর্তি হয়েছে।
পুরো ব্যাপারটা এই গ্রামের মানুষের কাছে একটা বিস্ময়। স্বামী-স্ত্রী একসাথে কলেজে যাওয়া আসাটা তাদের কাছে যতোটা অদ্ভুতুড়ে, নীলার কাছে ততোটাই আনন্দের।
পৃথিবীতে একশ্রেণীর মানুষ আছে, যাদের চোখে মুখে, হাবে-ভাবে , কোথাও স্বপ্নের ছিটেফোঁটা নেই।
আমি ছিলাম সেই দলের একজন। কিন্তু সৌভাগ্যবশত নীলার মত একজনকে পেয়ে গিয়েছিলাম, যে হাত ধরতে জানে, স্বপ্ন বাঁধতে জানে এবং স্বপ্ন দেখতে বাধ্য করে!
নীলার মতো কজন মায়াবতী আছে বলেই আমার মত কিছু দূর্ভাগা 'খ্যাঁত'দের ভালোবাসার গল্পগুলো ডায়েরীর ভাঁজে থেকেও 'বিখ্যাত' হয়ে যায়...প্রতিদিনেরমত আজও রাত বারটা নাগাদ ডায়েরী খুলে বসলাম।নীলা আসার আগে রোজ রাতে কিছু লিখতাম।আসার পরেও অনেকরাতে লিখেছি,প্রতিদিন। সবই নীলাকে সম্বোধন করে।
অতীতের অনেকগুলো সুখ-দুঃখের গল্প, বর্তমানের ভালোবাসায় ডুব মারা অবুঝ মনের কিছু ছেলেমানুষী কল্পকথা, অনিশ্চিত অথচঅসহ্যরকমের রঙ্গিন কিছু স্বপ্নের ইতিকথা-মন খুলে লিখেছি, রাতের পর রাত।
ডায়েরীটা শুধুই কষ্ট বাড়াবে, যতোবার চোখ পড়বে,বুকে ব্যথা হবে। রাখা উচিৎ হবেনা।
শেষপৃষ্ঠা খুলে থমকে গেলাম।
গুটিগুটি করে লেখা কয়েকটা লাইন। নীলা লিখেছে!
“মাস্টার মশাই, অনুমতি ব্যতীত তোমার ডায়েরীর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তপড়ে ফেলেছি।যদিও আমার কাছ থেকে লুকানোর জন্য বিশেষএকজায়গায় তুলে রেখেছিলে ডায়েরীটা,সেদিন হুট করেইহাতে পেয়ে গেলাম।
এবার বলতো,এতো ভালোবাসা কেউ লুকিয়ে রাখে? ভালোবাসা কি লুকিয়ে রাখতে হয়?
কেবলমাস্টারমশাইগিরি করে গেলে,কিচ্ছু জানোনা।
শোনো বোকা মাস্টার, তোমার এই বিশেষত্বহীন নির্বিকার সত্বাকেআমি অনেক কাছে থেকে উপলব্ধি করেছি।
অনেকরকম মানুষদেখেছি জীবনে,কিন্তু তোমার মত এতটা হাল ছাড়া মানুষআর দেখিনি। ভিক্ষুকেরও চোখে স্বপ্ন থাকে,সে একদিন একটা ট্রেনের মালিক হয়ে পুরো ট্রেনে একাই ভিক্ষা করবে।অথচ তোমার চোখে,মুখে হাবে ভাবে কোন স্বপ্ন নেই।
তোমার স্বপ্ন খুঁজতে গ্রামে এলাম।সেখানেও একই দৃশ্য।
ঢাকা থেকে যেদিন এলাম,রাত দশটায় যে ট্রেন স্টেশনে পৌছানোর কথা,সেটার জন্য তুমি সন্ধ্যা সাতটা থেকেই নাকি অপেক্ষা করছিলে। পুরো সাত ঘন্টা ঠায় দাঁড়িয়ে রইলে,তবুও কিভাবে আমার কাছ থেকে অপেক্ষার ক্লান্তিটুকুলুকিয়ে রাখলে?
ডায়েরীটা না পড়লে এই অসম্ভব সুন্দর ব্যাপারটা জানতেও পারতাম না।
বৃষ্টির রাতে তোমার খিচুড়ী খেতে খুব ইচ্ছে হয়,কিন্তু রাঁধতে পারোনা। তোমার খুব শখ,একরাতে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে সানকীতে করে খিচুড়ি খাবে। তুমি জানো,আমি খুব ভালো খিচুড়ী রাঁধতে পারি?
এতকথা,এতগুলো দিন থেকে,কিভাবে লুকিয়ে রেখেছো?
শেষপর্যন্ত বুঝলাম,তোমার চমৎকার সব স্বপ্নই এই নীল চামড়ার ডায়েরীতে আটকা পড়ে আছে।
এত বোকা হয় মানুষ?
ডায়েরীর মাঝের পুরো সত্তরটা পৃষ্ঠা জুড়ে কেবল একটি শব্দই লিখা, “নীলা নীলা নীলানীলা নীলা...”
আর কিছু মাথায় আসছিল না বোধহয়?
ভালো থেকো,বোকা মাস্টারমশাই!
পুনশ্চঃ সপ্তাহখানিকের মধ্যেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে চিরতরে চলে আসছি।
সেই সাথে,তোমার আরেকটা স্বপ্নও পূরণ হবে শীগগিরই। ঠিক করেছি,তোমার কলেজেই অনার্স পড়ব। তাহলে,ঘরে বাইরে সর্বত্রই তোমাকে মাস্টারমশাই ডাকা হবে!
কলেজ শেষে তোমার হাত ধরে বাড়ি ফিরব যখন,তোমার ছাত্র-ছাত্রীরা হেসে কুটিকুটি হবে,আর তুমি যে লজ্জায় কিরকম মুখভঙ্গি করবে,ভাবতেও পারছিনা। আশা করি,এই কদিনের মধ্যেই বাড়ি ঘর আগের মত খোঁয়াড়ে পরিনত করবে না। “
__________
বাইরে বোধহয় বৃষ্টি হচ্ছে...টিনের চালে গুড়ুম গুড়ুম শব্দ শুনতে পাচ্ছি। নাকি বুকের মধ্যে হাতুড়ি পিটছে কেউ?
চালের ফুটো বেয়ে দু’ফোটা জল কি গাল ছুঁয়ে গেল?
স্বার্থপরতা মানুষকে পিছিয়ে দেয়
বিবর্তন-প্রক্রিয়ায় স্বার্থপর মানুষ ও প্রাণীরা কোনো প্রশ্রয় পায় না। কিন্তু সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন
মানুষেরা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে। নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। নেচার কমিউনিকেশনস সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, সহযোগিতামূলক একটি পরিবেশে স্বার্থপর প্রাণীদের সুষ্ঠু বিকাশ সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্বার্থপরতা মানুষকে পিছিয়ে দেয়।
কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি দল গবেষণা চালায়। ওই গবেষকেরা
মানুষের পারস্পরিক দ্বন্দ্বমূলক এবং সহযোগিতার পরিস্থিতির মধ্যে ছলনা শনাক্ত করার জন্য ‘একজন কয়েদির উভয় সংকট’ নামের একটি নমুনা তত্ত্ব প্রয়োগ করেন। এতে ব্যক্তির নির্দিষ্ট ধরনের আচরণের কারণ বেরিয়েআসে। এই পরীক্ষায় দুজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পৃথক কারাকক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একটি বিশেষ শর্তে তাঁদের প্রত্যেককে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। শর্তটি হলো অপর সন্দেহভাজন ব্যক্তির ব্যাপারে তথ্য দিতে হবে। ফলে ওই ব্যক্তিটির ছয় মাসের কারাদণ্ড হবে। এ ক্ষেত্রে যদি উভয় ব্যক্তি পরস্পরের গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করেন (স্বার্থপর অবস্থান) দেন, তাহলে প্রত্যেকের তিন মাসের সাজা হবে। আর যদি উভয়ে পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকেন বা তথ্য প্রকাশে বিরত (সহযোগিতামূলক অবস্থান) থাকেন, তাহলে প্রত্যেকের এক মাস করে কারাদণ্ডহবে। গণিতবিদ ও বিশেষজ্ঞ জন ন্যাশ হিসাব করে দেখিয়েছেন, এই নমুনা তত্ত্বের প্রয়োগকালে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ পরস্পর সহযোগিতামূলক অবস্থান থেকে বিরত থাকে।সংশ্লিষ্ট গবেষক ক্রিস্টোফ অ্যাডামি বলেন,ন্যাশের বক্তব্যের যথার্থতা নিয়ে বহু বছর ধরে মানুষের মধ্যে সংশয় ছিল। কারণ, প্রাণীজগতে মানুষ থেকে শুরু করে অণুজীব পর্যন্ত সবার মধ্যে সহযোগিতার প্রকাশই বেশি দেখা যায়। তবে মজার ব্যাপার হলো পারস্পরিক যোগাযোগের বিষয়টি আগে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি। সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি যদি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতেপারতেন, তাহলে উভয়ে নীরব থেকে সর্বনিম্ন সাজা ভোগ করার সুযোগ নিতে পারতেন। কিন্তু ‘খারাপ ও স্বার্থপর’অবস্থান গ্রহণের ফলে তাঁদের বেশি শাস্তি পেতে হয়। এভাবে প্রাণীজগতে স্বার্থপরদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়।এই গবেষণার ফলাফলের কারণে বিজ্ঞানীদের পুরোনো একটি তত্ত্ব এখন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে যাতে নিজেকে প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের লিচেস্টার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু কোলম্যান বলেন, প্রকৃতিতে প্রাণীকুলের মধ্যে সহযোগিতামূলক অবস্থানের ব্যাপারটি বিবর্তনবাদের প্রবক্তা চার্লসডারউইনকেও বিভ্রান্তিতে ফেলে দিয়েছিল। প্রতিটি প্রাণীকে আলাদাভাবে নিজ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে যেতে হয় না, ব্যাপারটা ঘটে জিনগত পর্যায়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষ থেকে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬


আমি যখন কানাডায় বসে পাশ্চাত্যের সংবাদগুলো দেখি, আর তার পরপরই বাংলাদেশের খবর পড়ি, তখন মনে হয় - পশ্চিমা রাজনীতির চলমান দৃশ্যগুলো বহু পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আলো-ছায়ায় প্রতীয়মান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×