যারা People’s Republic Of Bangladesh আর Islamic Republic Of Bangladesh এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে না তাদের জন্য সমবেদনা।এই পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা এত কিছু থাকতে এমন একটা ইস্যু কে বেছে নিলো যা এন্টি আওয়ামীলীগ পাবলিক এবং অল্পশিক্ষিত ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের খুব করে খাওয়ানো যায়।কই ভাই শুধু ভাস্কর্য কেন?এই তথাকথিত ফতুয়াবাজদের কখনো বলতে শুনছেন "বিড়ি খাওয়া হারাম" "ব্যাংকের মুনাফা নেওয়া হারাম" "ছেলে-মেয়ে একসাথে পড়াশোনা হারাম" "বৈদেশিক ঋণ নিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা হারাম" "নাটক সিনেমা বানানো হারাম" "সিনেমাহল হারাম" "শাড়ী পরা হারাম" এগুলা বলবে না।কারণ এইগুলা পাবলিক খাবে না।তারা ইস্যু বের করবে "জাতীয় সঙ্গীত চেঞ্জ কর" "বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলবে" এইগুলা।কারণ এইগুলা পাবলিককে খাওয়ানো যায়। আর কি কি হারাম বলে বন্ধ করতে চান দেশে? প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলা,নাট্যকলা,চারুকলা বিভাগ রয়েছে।বন্ধ করে দিবেন? শার্ট-প্যান্ট বাদ দিয়ে আরবের আলখেল্লা পরবেন? এই একই পাকি প্রেতাত্মাদের পূর্বপুরুষেরা একসময় "মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই,পাকিস্তান খাতরে ম্যায় হ্যা" বলে ফতুয়া জারি করে নিজের দেশের মা-বোনদের পাকিদের হাতে তুলে দিয়েছিল।ও এই দেশে তো আবার নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে।এখন তো পাকিদের নিয়ে,একাত্তর নিয়ে কিছু বলাও একপ্রকার হারাম।বললেই চেতনাবাজ,দালাল।ঠিক আছে।এগুলো আর গায়ে লাগে না এখন।কারণ এই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী মানুষ সবসময় মাইনোরিটির খাতায়-ই ছিল।এখনো আছে।সাত কোটি মানুষের দেশে অফিসিয়ালি তিন কোটি ছিল ভারতে শরণার্থী,আনঅফিসিয়ালি সেটা কত ছিল জানি না।হাতে একটা থ্রি নট থ্রি রাইফেল আর মুখে একটা জ্বলন্ত বিড়ি নিয়ে দেশটাকে মুক্ত করেছিল দেড়-দুই লাখ মাইনোরিটি চেতনার মানুষগুলো যাদেরকে এখন খেয়ালখুশিমত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা খেতাব নিয়ে পুরস্কৃত করি আমরা।
ধর্মকে কাজে লাগিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো এটা তো বহু পুরনো অস্ত্র।এই যে আজ ভারতের মোদি সরকারের এত সমালোচনা করি আমরা,ভারত থেকে কি শিক্ষা নিলাম আমরা? বিজেপি কিভাবে রাজনৈতিকভাবে আজ এত শক্তিশালী হল? ৯২ এ বাবরী মসজিদ ভাঙার মাধ্যমে ধর্মকে বর্ম বানিয়ে আমজনতাকে এই প্রসাদ খাওয়াতে সক্ষম হয়েছে তারা যে "এই দেখ আমরা সনাতন ধর্মের ত্রাণকর্তা,আমাদের ভোট দাও" ব্যাস আজ তারা ক্ষমতায় আর দেশের ১২টা বাজানো শুরু। জামাত জোটের আমল কি ভুলে গেছেন? দিন দুপুরে যখন হিন্দুদের প্রতিমা ভাঙা হত,মায়ের সামনে মেয়েকে গনিমতের মাল বানিয়ে গণধর্ষণ, ৬৪ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা হত, গাছে উল্টো ঝুলিয়ে পিটিয়ে মারা হত,হাত পায়ের রগ কেটে ফেলা হত,মহিলা সরকার প্রধানের সাথে বসে জোট গঠন করা হত,এইগুলো তখন হালাল ছিল আর এখন যেই জাতির পিতার কয়েকটা ভাস্কর্য বানানো হয়েছে অমনি ইসলামের চেতনা জাগ্রত হয়ে গেল...! হিপোক্রেসির তো একটা সীমা থাকে ভাই।
জনাব ফতুয়াবাজরা, এইসব সিলেক্টেড ইস্যু নিয়ে সাময়িকভাবে যতই জনপ্রিয়তা পান না কেন,দিনশেষে ঠিক ৭১ এর মত একদল মাইনরিটি চেতনার মানুষ আপনাদের পথ রোধ করে দাঁড়াবে,এরা মচকাবে কিন্তু ভাঙবে না।