somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘ছাত্রলীগ’ একটি পারমানবিক বোমার নাম।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ এর ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’ গল্পটি প্রায় সকলেই হয়তো পড়েছেন। সেই গল্পের একটি মাত্র লাইন, আজকের সমাজের সম্পূর্ণ চরিত্রটাকেই বহন করছে। সেই লাইনটি হল, “ হাতে বন্দুক থাকলে নিরীহ মানুষেরও দৃষ্টি পড়ে পশুপাখির দিকে”

আজ নিরীহ মানুষদের হাতে বন্দুক না থাকলেও আছে ‘লীগ’ নামক অস্ত্র। এটি যদিওবা একটি সাইনবোর্ড মাত্র। তথাপি এটি এখন একে-৪৭ রাইফেলের চেয়েও ভয়ানক অস্ত্র। আমি ভাবছি, ‘লীগ’ নামক অস্ত্রটিকে একে-৪৭ রাইফেলের সাথে তুলনা করে ভুল করলাম না তো! এই মান্ধাতার আমলের একটি রাইফেলের সাথে তুলনা করে লীগ বাহিনীর মান সম্মানে আঘাত হানতে পারে। সেই আঘাতের জোরে তারা আবার আমার নামে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মানহানির মামলাও ঢুকে দিতে পারে! তাই আমি এই ‘লীগ’ নামক অস্ত্রটিকে পারমানবিক অস্ত্রের সাথে তুলনা করতে চাই। এতে অন্ত্যত মানহানি মামলা খাওয়ার কোন ভয় থাকবে না। ‘লীগ’ কে পারমানবিক অস্ত্র বলার অন্যতম প্রধান কারণ এদের বিরুদ্ধে অত্যাধুনিক অস্ত্রধারী পুলিশরাও দাঁড়ানোর সাহস করে না। ‘লীগ’ বাহিনীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ নেতার থাপ্পড় খেয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলার পরও পুলিশবাবুরা কচুরী পানা ভর্তি পুকুরের পানির মত শান্ত আচরন করছে। ইতিহাস সৃষ্টি করা থাপ্পড় খাবার পরও যখন পুলিশরা নিশ্চুপ হয়ে থাকে তখন আমার মনের কোনায় আশংকা জাগে, তাহলে কি এরা পরমানু বোমার চেয়েও শক্তিধর কোন শক্তি! যে শক্তির ভয়ে পুলিশ নিজের কোমরের পিস্তলের বাটে আঙ্গুল রাখারও সাহস করল না।



সাহস করবে কোথায় থেকে বলেন? ছোটরা তো সাহস পায় বড়দের দেখে। পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তারা যখন ‘লীগের’ নেতাদের ফুটফরমায়েশ এবং দলবাজির মাঝে নিজেদেরকে বিলীন করে দিয়েচ্য তখন ছোটদের আর কিবা বলার থাকে! তখন ছোটদের মুখ বুঝে সব সয়ে যেতে হয়। এটাই নাকি জগতের নিয়ম।



ওবায়দুল কাদের আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এই দৃশ্য দেখে ছোটদের বুঝে নিতে হবে, যতোই ধাপ্পড় খাই আর কানের পর্দা ফাটাই ফেলাই কোন প্রতিবাদ করা যাবে না। এখন চলছে ‘লীগের’শাসন। ‘লীগের’ শাসন মানেই সব আওয়ামিলীগ। সেখানে পুলিশ এবং আওয়ামি কর্মী বলে কোন জাতি ভেদাভেদ থাকবে না। ‘লীগের’ অনুষ্ঠানে সবাই আওয়ামিলীগের নেতা এবং কর্মী। ‘লীগের’ আমলে জাতি ভেদাভেদ অর্থাৎ দলীয় কর্মী ও সরকারী কর্মচারীর নামকরন করে কোন পার্থক্য থাকবে না। সব মিলেমিশে একাকার। গাহি সাম্যের গান। এমন সাম্যেরই স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যেখানে শেখ সাহেবের স্বপ্ন জড়িয়ে আছে সেখানে আর কোন কথা থাকতে পারে না।

‘লীগের’ অভ্যন্তরে একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানিকের কথা হয়তো আপনারা ভুলেই গেছেন। এতো তাড়াতাড়ি মানিকের কৃতিত্বের কথা ভুললে চলবে না তো! ধর্ষনের সেঞ্চুরিয়ান মানিককে যখন ১০০ টি বাঙ্গালি মেয়েকে ধর্ষণ করেও কোন সাজা অথবা শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় না, তখন বদরুলের মত হাজারো বদরুল ছাত্রলীগের ছায়াতলে জন্মগ্রহণ করে। সেই বদরুলরা চাপাতি দিয়ে খাদিজাদের বারবার,শতবার,হাজারবার,কিংবা সহস্রাধিকবার কুপিয়ে ক্ষ্যান্ত দিলেও তাতেও দেশের বুদ্ধিজীবি সমাজের কোন যায় আসে না।



বদরুলদের দেখানো পথে মেয়েরা চাপাতির কোপের শিকার হলেও তাতে শাহরিয়ার কবিররা আঁতকে উঠেন না। ‍মুনতাসির মামুনরা জাতিকুলের ভাগ্যে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখতে পান না। বদরুলদের দেখানো পথে দেশের তরুনী কুলের জীবন ক্ষতবিক্ষত হলেও সুলতানা কামালদের মত নারীবাদিরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার ডাক দেন না। কারণ আগেই বলেছি এটি একটি অস্ত্র। এই অস্ত্র ধারণ করে দেশের সাধারণ মানুষ ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’ গল্পের আদলে নিরীহ মানুষের দিকে বন্দুকের ট্রিগার চেপে ধরছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে বললেই অপরাধ! যেমন সেই অপরাধের জেরে হয়তো আমার এই ব্লগটিও সামুর মডুরা স্থগিত করে দিতে পারেন। কারণ তারাও ভয় পান। যদি আবার তাদের অতি সাধের ব্লগটিকেও ইষ্টিশন ব্লগের মত বন্ধ করে দেওয়া হয়!

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির অঙ্গনে এই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারো ঘটনার যোগসূত্র। এই ছাত্রলীগের নামের নিচেই বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি একটি প্রলয়ংকারী রাজনীতিতে রূপ লাভ করেছে। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে ফ্লোরিডাময় বিপ্লব সংগিঠিত হয়েছে। তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে অস্ত্রের প্রবেশ ঘটেছে। জানি এই কথাগুলো ছাত্রলীগের সমর্থক বিজ্ঞ বন্ধুদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। প্রমাণ ছাড়া বর্তমান সময়ে কোন কথাই খাটে না। তাই প্রমান সমেত এই কথাগুলো লিখলাম। জানি তারপরও আপনারা সত্যটাকে স্বীকার করবেন না। এই দোষ আপনাদের নয়। এটি আমাদের জাতির দোষ। এটা আমাদের জাতিস্বত্বার দোষ। এটি আমাদের চিরদাসে পরিণতকারী শিক্ষাব্যাবস্থার দোষ। নিচের ছবি দুইটার দিকে একটি ভাল করে তাকান তো।


ছবিঃ গুলিস্তানে ছাত্রলীগের অস্ত্র প্রদর্শনী।


ছবিঃ চবি ছাত্রলীগের অস্ত্র প্রদর্শনী।

এমন অস্ত্র প্রদর্শনী দেখে আমার বুকটা আনন্দে ভরে যায়। এরাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। এদের হাত ধরেই বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিবে সকল অশুভ শক্তি। সেই সকল অশুভ শক্তিকে বিদায় করে দিয়ে ছাত্রলীগ এমন একটি বাংলাদেশ গড়বে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই মটোতে বিশ্বাসী হয়ে ছাত্রলীগে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে রোল মডেল করে উপস্থাপন করবে। সেই সময় নিশ্চয়ই আমরা স্মরণ করব না, পাবনার সাঁথিয়ায় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছিল। আমরা নিশ্চয়ই বলব না, ব্রাক্ষনবাড়িয়ায় আহুত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিস্থিতির জন্য ‘লীগের’ কতিপয় নেতা দায়ী।



না! আমরা এসব কিছুই বলব না। শুধু বলব, ‘পিছনে ফেলে সামনে চল,জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো’
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×