somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লালন ফকির ও কতিপয় গুরুতর প্রসঙ্গঃ পর্ব-৫

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুনরায় উল্লেখ করি, অনেকের বিবেচনায় লালন একজন খুবই উচু মর্যদার সুফী সাধক। আমরাও বলি, তিনি একজন অত্যুচ্চ মাকামের সুফীই বটে। কিন্তু সেই উচ্চ মার্গীয় মাকামটা যে কি জিনিষ, আল্লাহপাক ভালো জানেন। তবে আমরা যেটুকু দেখি তাতে বুঝতে পারি, এই গোসাঁইগুরু কামালিয়াত এতটাই হাসিল করে ফেলেছেন যে, তিনি কামের ঘরে কপাট বন্ধ করে কামক্রীড়ায় অটল রূপে বিহার করতে জানেন। শুধু তাই নয় গোপনাঙ্গের রঙমহল ঝলক দেয়া থেকে শুরু করে শুদ্ধ প্রেমরসের রসিক ত্রিবেণীতীর্থে প্রেম ডুবারু এই লালন যে আরো যে বহু অকথ্য করণ কারণ এরই এক অপরাজেয় গ্রান্ড মাষ্টার, সে বিষয়েও রসিকজনেরা সম্যক ওয়াকিবহাল। এবং আমরাও অস্বীকার করবো না, কামলোলুপতা অশ্লীল যৌনাচার যদি কামালিয়াত হয়, তাহলে লালন অবশ্যই একজন বড় মাপের কামেল পুরুষ, আধ্যাত্নবাদের এক মহানায়ক।

কিন্তু ইসলাম কি বলে? ইসলামের অকাট্য ও স্বাভাবিক অনুশাসন থেকে আমরা কি পাই? ইসলাম কারো জন্যই কোন কারণে কোন অবস্থাতেই সুক্ষ্মতম অশ্লীলতাকেও অনুমোদন করে না। পাক নাপাক শ্লীলতা-অশ্লীলতার প্রশ্নটি ইসলামে একটি গুরুতর প্রশ্ন; যে কারণে মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকী কোনো নারীর পক্ষে কারও সঙ্গে বসাই নিষিদ্ধ, মুসলমানের জন্য নির্জন বাথরুমেও নগ্ন হওয়া নিষেধ, এবং সামান্য বায়ু-নিঃসরিত হলেও তাকে পুনরায় অজু করে পবিত্র হতে হয়।

কিন্তু কি আফসোস, অনেক মুসলমান আজ এতটাই গাফেল ও আত্নবিস্মৃত যে, লালনের চুড়ান্ত অশ্লীলতাকেও পরম শ্রদ্ধায় মনে করছে মুক্তির পথ ও পাথেয় এক অমূল্য আধ্যাত্নিকতা। অথচ এই গ্রান্ডমাষ্টার কামেল সম্পর্কে তার জীবদ্দশাতেই লেখা হয়েছিল, সাধুসেবা নামে লালনের শিষ্য ও তাহার সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাভিচার চলে। যা আজও বিদ্যমান।

আসলে লালনের পুরো ধর্মকর্মই হলো ব্যভিচার নির্ভর। লালন যে গূঢ় আধ্যাত্নিকতার কথা বলে, সেখানে আছে টলে জীব অটলে ঈশ্বর, আছে সে অটলরূপে উপাসনা, সে ভাব কেউ জানে কেউ জানে না। অথবা অটলকে চিনতে পারে কোন জনা। অন্য কিছু নয়, এখানে যৌনমিলনকালে পুংবীর্যকে ধারণ করে রাখার কথা বলা হয়েছে। এবং অটল সাধনার নামে নানা ধরণের অস্বাভাবিক নোংরা যৌনাচারই হলো লালনের গুপ্তভেদ গুপ্তমন্ত্র ও সাধনপ্রক্রিয়া। যারা ইসলাম একেবারেই না মানে, তাদের কথা আলাদা, কিন্তু যার মধ্যে ইসলামের সামান্য নামগন্ধও অবশিষ্ট আছে, তার পক্ষে কি এই ধরণের নিকৃষ্ট ইন্দ্রিয়সেবাকে মহৎ বলে মেনে নেয়া সম্ভব? আর শুধু ইসলামের কথা বলি কেন, পৃথিবীর কোন ধর্মই কি এই ধরণের কামাচারকে ভালো চোখে দেখে বা দেখতে পারে? এতদসঙ্গে উল্লেখ করি, নরনারীর যৌনমিলনের মধ্যেই যেহেতু লালনের মোক্ষ নিহিত, যুগলভজনই হলো লালনের সকল সিদ্ধিসাধনার উর্বর কৃষিক্ষেত্র। অবশ্য লালনকে অধিকাংশ সময়ই তার প্রকৃত রূপে শনাক্ত করা কঠিন হয়; কারণ এই কবি সর্বদায় এক আপাত-নির্দোষ পরিভাষায় আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। উদাহরণতঃ লালনের একটি বিখ্যাত গানের কথা “সময় গেলে সাধন হবে না”; এখানে সময় অর্থ মহাযোগের মূহুর্ত। আর এই মূহুর্তটির শুভাগমন ঘটে নারীদেহে রজঃস্রাবের প্রথম তিনদিনের মধ্যে; যে কারণে লালন বলে, ও সে তিন দিনের তিন মর্ম জেনে একদিনেতে সেধে লয়।

সত্যিই লালনের কোন তুলনা হয় না। এবং এটাও সত্য যে, ইবলিসের সার্বক্ষণিক ও প্রত্যক্ষ সহায়তা না পেলে এত নিপুণভাবে কেউ কখনো কদর্য যৌনাচারকে ধর্মের মোড়কে লোকসমক্ষে সাফল্যের সঙ্গে উপস্থাপন করতে পারে না।
১ম পর্ব
২য় পর্ব
৩য় পর্ব
৪র্থ পর্ব
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×