somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

হিজরী সনের ইতিকথা এবং আরবি বারো মাসের নাম:

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি: অন্তর্জাল।

হিজরী সনের ইতিকথা:

হিজরী সনের পরিচয়:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ জন্মস্থান মক্কার ক্বুরাইশদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করে চলে যান। তাঁর জন্মভূমি ত্যাগ করার এই ঘটনাকে ইসলামে 'হিজরত' আখ্যা দেয়া হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই হিজরী সাল গণনার সূচনা। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর শাসনামলে ১৭ই হিজরী অর্থাৎ মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ইনতিকালের সাত বছর পর চন্দ্র মাসের হিসাবে এই পঞ্জিকা প্রবর্তন করা হয়। হিজরতের এই ঐতিহাসিক তাৎপর্যের ফলেই হযরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর শাসনামলে যখন মুসলমানদের জন্য পৃথক ও স্বতন্ত্র পঞ্জিকা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুমিত হয় তখন তারা সর্বসম্মতভাবে হিজরতের সন থেকেই এই পঞ্জিকার গণনা শুরু করেন। এর ফলে চন্দ্রমাসের এই পঞ্জিকাকে ‘হিজরী সন’ নামে অভিহিত করা হয়।

হিজরী সন প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা:
হিজরী সন প্রবর্তনের একটি প্রেক্ষাপট রয়েছে- হজরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর খেলাফতকালে মুসলিম বিশ্বের পরিধি বৃদ্ধি পায়। ইসলামী রাষ্ট্রের সীমা এবং সমৃদ্ধি বাড়তে থাকায় রাষ্ট্রীয় কার্যাবলীও আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। খলিফাতুল মুসলিমীন -এর কাছে তখন রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন চিঠিপত্রাদি আসতো। সেখানে মাসের নাম ও তারিখ লেখা হতো। কিন্তু সনের নাম থাকতো না। এতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতো। সেই প্রেক্ষিতে পরামর্শের ভিত্তিতে একটি সন নির্ধারণ ও গণনার সিদ্ধান্ত হয়। বিভিন্ন উপলক্ষ্য থেকে সন গণনা শুরু করার পরামর্শ এবং মতামত আসলেও শেষ পর্যন্ত হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনা থেকেই সন গণনার সিদ্ধান্ত হয়। আর এই সিদ্ধান্তের আলোকে দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু তার খিলাফতকালে হিজরতের ১৭তম বর্ষে হিজরী সন গণনা শুরু করেন।

আরবি বারো মাসের নাম:

১। মুহাররম Moharram محرم: অর্থ- নিষিদ্ধ, এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ (হারাম) বিধায় এটি পবিত্র মাস বলে বিবেচিত। এ মাসের ১০ম দিনে আশুরা (Click This Link ) পালিত হয়।

২। সফর Safar صفر: অর্থ- রিক্ত, শূণ্য, এ মাসে এরূপ নামকরণের কারণ সম্ভবত এটি যে, প্রাক-ইসলামিক যুগে আরবীয় ঘর-বাড়ি এই সময়ে শূণ্য থাকতো যখন গৃহস্থরা খাবার সংগ্রহ করতো। অন্যমতে, তারা তাদের শত্রুদের যুদ্ধে পরাজিত করে সবকিছু লুট করে নিয়ে যেত বলে এ মাসের নাম সফর।

৩। রবিউল আউয়াল Robiul Awal ربيع الاول: অর্থ- প্রথম বসন্ত, অন্য অর্থ চারণ, কেননা এই সময়ে গবাদি পশু চারণ করা হতো। মাসটি মুসলমানদের জন্য পবিত্র একটি মাস বলে বিবেচিত কারণ হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (Click This Link.)) এই মাসে জন্মগ্রহণ করেন।

৪। রবিউস সানি Rabius Sani ربيع الثاني: অর্থ- দ্বিতীয় বসন্ত, ইসলামি বর্ষপঞ্জির (Click This Link ) চতুর্থ মাস। এই মাসটি **রবিউল আখির** (ربيع الآخر) নামেও পরিচিত।

৫। জমাদিউল আউয়াল Jamadiul Awal جمادى الاول: অর্থ- প্রথম শুকনো ভূমিখণ্ড, প্রাক-ইসলামিক গ্রীষ্মকাল হিসেবে বিবেচিত।

৬। জমাদিউস সানি Jamadius Sani جمادي الثاني: অর্থ- দ্বিতীয় শুকনো ভূমিখণ্ড, **জমাদিউস সানি** ইসলামি বর্ষপঞ্জির (Click This Link ) ৬ষ্ঠ মাস। একে জমাদিউল আখির ও বলা হয়।

৭। রজব Rajab رجب: অর্থ- শ্রদ্ধা, সম্মান, এটি আরবি বছরের দ্বিতীয় মাস যখন যুদ্ধ নিষিদ্ধ। 'রজব' শব্দের অন্য অর্থ 'সরিয়ে নেওয়া', কেননা প্রাক-ইসলামিক যুগে আরবরা এ মাসে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার জন্য বর্শার মাথা সরিয়ে রাখতো।

৮। শা’বান Shaban شعبان: অর্থ- বিক্ষিপ্ত, এর নামকরণের সম্ভাব্য কারণ এ মাসের পানির অভাব। তৎকালীন আরবেরা এ মাসে পানির সন্ধানে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো। তাই এর নাম 'শাবান'। এর অন্য অর্থ দুইয়ের মাঝামাঝি, কেননা এটি রজব (Click This Link ) এবং রমজান (Click This Link ) মাসের মাঝখানে।

৯। রমজান Ramjan رمضان: অর্থ- দহন, দহন বলতে উপবাস বা রোজাকে (Click This Link ) বোঝানো হয়েছে, কেননা উপবাস বা রোজার মাধ্যমে ব্যক্তির পার্থিব লালসা দগ্ধ হয়। রমজান মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র মাস। মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী এ মাসে পবিত্র কুরআন (Click This Link ) নাজিল হয়। এ মাসে মুসলমানদেরকে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বাধ্যতামূলক রোজা রাখতে হয়।

১০। শাওয়াল Shawal شوال: অর্থ- উত্থিত, এ নামের কারণ এই সময়ে স্ত্রী-উট (Click This Link ) বাচ্চা প্রসব করে এবং লেজ উত্থিত করে।

১১। জ্বিলক্বদ Jelkad ذي القد: অর্থ- সাময়িক যুদ্ধবিরতির মাস, এ মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ, তবে আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষা বৈধ।

১২। জিলহজ্জ Jilhaj ذي الحج: অর্থ- হজ্জের (Click This Link ) মাস, এই মাসে মুসলমানরা মক্কায় (Click This Link ) বাইতুল্লাহকে কেন্দ্র করে (Click This Link) হজ্জব্রত পালন করতে যায়। এ মাসের ৮, ৯ ও ১০ তারিখে হজ্জ অনুষ্ঠিত হয়। ঈদুল আযহা (Click This Link ) এই মাসের ১০ তারিখে শুরু হয় এবং ১২ তারিখ সূর্যাস্তের সাথে সাথে শেষ হয়। এই মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ।

তথ্যসূত্র এবং কৃতজ্ঞতা:

১. উইকিপিডিয়া।
২. https://www.alkawsar.com/bn/article/92/
৩. Click This Link
৪. Click This Link
৫. https://www.alkawsar.com/bn/article/498/
৪. অন্যান্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৯
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×