somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

করোনা মহামারিতে আক্রান্ত বিশ্বঃ ভয়াবহ এই দুর্যোগে আমাদের করণীয়ঃ

১৮ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



করোনা মহামারিতে আক্রান্ত বিশ্বঃ ভয়াবহ এই দুর্যোগে আমাদের করণীয়ঃ
প্রথম দিকে কিছুটা মন্থর গতি থাকলেও গত কয়েক সপ্তাহে ‘করোনা’ বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নিয়েছে। চীনের পর এ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ইউরোপের দেশগুলোতে। দিনকে দিন বেড়ে চলেছে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। একইসঙ্গে প্রলম্বিত হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। https://www.worldometers.info/coronavirus/ ওয়েবসাইটটি করোনা ভাইরাস এর তাৎক্ষনিক আপডেট দেয়া একটি প্রতিষ্ঠান। এটির COVID-19 CORONAVIRUS OUTBREAK রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ১৮ মার্চ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জাতিসংঘভুক্ত ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১৬৩টি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। এই সময়ে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩৮ জন। মারা গেছে ৭ হাজার ৯৯৪ জন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৮২ হাজার ৮০৬ জন।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য বলছে: এ পর্যন্ত আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চলের সংখ্যা ১৫৯ টি এবং আক্রান্ত ব্যক্তি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৫ জন। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭৫২৯ জনের।

আমরা শুধু প্রাপ্ত তথ্যভিত্তিক সংখ্যাটাই এখানে উপস্থাপন করেছি। তবে এই সংখ্যা হয়তো বা আরও অনেক বেশি হতে পারে। কারণ, ইউরোপ আমেরিকার উন্নত দেশগুলোর মত আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, সুযোগ-সুবিধা ও সক্ষমতা না থাকার কারণে আমাদের মতো এরকম আরো অনেক দেশের পক্ষেই আক্রান্ত লোকের সঠিক পরিসংখ্যান জানা প্রায় দূরূহ। সঙ্গত কারণে, আমাদের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই সীমিত, অর্থাৎ মাত্র ১০ জন—এই খবরে খুশি হওয়ার অথবা নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছু নেই। এই ধরনের বৈশ্বিক মহামারির এমন দুর্যোগের ঘনঘটা মোকাবেলায় রাষ্ট্রের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। যার যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে সামর্থ্যের সবটুকু ব্যবহার করে দেশ, জাতি সর্বোপরি গোটা বিশ্ব মানব সম্প্রদায়কে রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।



বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে সরকারকেই। তবে নাগরিক হিসেবে আমাদেরও রয়েছে কিছু করণীয়। নিজেকে, নিজের পরিবারকে, আপন দেশকে সর্বোপরি পৃথিবীবাসী সকল মানবগোষ্ঠীকে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ব্যক্তিপর্যায়ে আমাদের যে কাজগুলো সতর্কতার সাথে করে যাওয়া একান্ত প্রয়োজনঃ

এক.প্রথমতঃ মনে রাখতে হবে, এই রোগটি যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়িয়ে থাকে, তাই করোনায় আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে কখনোই যাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধিগুলো যথাযথভাবে মেনে চলুন। করোনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য করণীয়গুলো টিভি, সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ইতিমধ্যে বারংবার প্রচার করা হয়েছে এবং হচ্ছে। আশা করছি, এগুলো আমরা সবাই জেনেও গিয়েছি ইতোমধ্যে। এখন মেনে চলাই কাজ।

দুই. মহামারি হোক আর ঝড় ঝঞ্জা যা-ই আসুক, সকল ক্ষেত্রেই প্রথমত, প্রধানত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হলো, নিজেকে আতঙ্কগ্রস্থ হতে দেয়া যাবে না। আতঙ্কিত করা যাবে না অন্যদেরকেও। অন্যরা আতঙ্কিত হতে পারেন, অন্যদের ভেতরে ভীতি-ত্রাস এবং আতঙ্ক এসে ভর করে- এ ধরনের সকল কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে।

তিন.যেসব প্রবাসী ব্যক্তিবর্গ সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছেন, দয়া করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করুন। আপনাকে যদি হোম কোয়ারেন্টিনে (বাসার ভেতরে একা থাকা, কারও কাছাকাছি না আসা-যাওয়া না করা, ইত্যাদি) থাকতে নির্দেশ প্রদান করা হয়, তাহলে আপনার নিজের, মা–বাবা, সন্তানের, পরিবার-পরিজনের, সর্বোপরি দেশের স্বার্থে তা কঠোরভাবে পালন করুন। খামখেয়ালি আচরণ করে এদের সবার জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না। পরিবার-পরিজন, সমাজ সর্বোপরি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। আমাদের আরও স্মরণ রাখতে হবে, দুই সপ্তাহ কিংবা এরচেয়ে সামান্য কমবেশি দিন বাড়ির বাইরে না গেলে, ঘরের বাইরে বের না হলে আপনার-আমার এমন কোনো বিপদাপদ চলে আসার সম্ভাবনা নেই। এই সামান্য ক'টা দিন ঘরে থাকলে তাতে আমরা মরেও যাব না। কিন্তু এর বিপরীতে আমাদের সামান্য খামখেয়ালিপনার কারণে আপনি–আমি নিজেকেও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিব এবং পাশাপাশি পরিবার-পরিজন সমাজ ও দেশের অগনিত মানুষকেও মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দিব- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

চার.যতটা সম্ভব জনবহুল স্থানসমূহ যেমন, বাজার-রেস্টুরেন্ট-উপসনালয়-জনসভা ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন। সাময়িক সময়ের জন্য সম্মিলিতভাবে ধর্মীয় যে আমলগুলো করা হয়ে থাকে সেগুলো নিজের বাড়িতে পালন করুন। সৌদি আরবসহ অনেক ইসলামি দেশ ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে এখন মানুষকে মসজিদে যেতে নিষেধ করছে। সর্বশেষ অদ্য ১৮ মার্চ এর সংবাদে জানা গেছে, মক্কাতুল মুকাররমায় অবস্থিত পবিত্র কাবা শরিফ এবং মদিনাতুল মুনাওওয়ারার মসজিদে নববি ব্যতিত সৌদি সরকার তাদের দেশের সকল মসজিদ বন্ধ ঘোষনা করেছে। পবিত্র কাবা শরিফ এবং মদিনাতুল মুনাওওয়ারার মসজিদে নববিতেও কর্তৃপক্ষ এখন মানুষের প্রবেশ সীমিত করে দিয়েছে। মন্দির-গির্জা ইত্যাদিতে যেতেও মানুষকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

পাঁচ.আমাদের মনে রাখতে হবে, এটা বেড়ানোর সময় নয়, মজা করার সময় নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে করোনার সংক্রমণ এড়ানোর জন্য, ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য নয়। তাই খুব প্রয়োজন দেখা না দিলে সাধারণ দরকারি কাজে বা সামান্য প্রয়োজনেও কোথাও যাবেন না। এখন ঘুরতে যাওয়া রীতিমতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের শামিল। কারও বাসায় দাওয়াত খেতে যাওয়ার অথবা কাউকে নিজের বাসায় দাওয়াত করারও সময় এটি নয়। করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে তবেই বেশি বেশি দাওয়াত দেয়া কিংবা দাওয়াত খেতে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

ছয়.কোনো প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে গেলে অন্যের নিকট থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলতে চেষ্টা করুন। অভিজ্ঞ মহলের মতে এই দূরত্ব অন্ততঃ তিন ফুট হওয়া বাঞ্চনীয়।

সাত.স্কুল, মাদরাসা এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করোনার সতর্কতার বিধিবিধানগুলো কঠোরভাবে মেনে চলুন। আপনারা নিয়ম মানলে অন্যরা এগুলো মানতে উৎসাহিত হবেন। আপনারা সাধ্যানুযায়ী সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করার কার্যক্রম গ্রহণ করুন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, সেটা যেন হয় অবশ্যই নিজেকে সুরক্ষিত রেখে।

আট.যেখানে সেখানে থুতু ফেলবেন না। বিশেষ করে, ঘরের দরজা-জানালা-গ্রিল দিয়ে অথবা বাইরে হাটাচলার সময় এখানে-সেখানে থুতু ফেলবেন না। মনে রাখতে হবে, থুতু না ফেললে কোনো ক্ষতি হয় না। তাছাড়া যেখানে-সেখানে থুতু ফেলা দৃষ্টিকটুও বটে।

নয়.খোলা মুখে হাঁচি-কাশি দেবেন না। বয়স্ক ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন, বিশেষ করে যাঁরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তাই তাঁদের যত্ন বিশেষভাবে নিতে চেষ্টা রাখুন।

দশ.নিয়মিত ব্যায়াম করুন, প্রচুর হাটুন। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলফ্রুট বেশি বেশি খান। ব্যায়াম করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে আশা করা যায়, করোনা ভাইরাস শরীরে বাসা বাধতে খুব একটা ভরসা পাবে না।



কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন আসলে কী?
কোয়ারেন্টিন হলো কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে ছিল বা ব্যাপক ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক রোগের এলাকা থেকে এসেছে, কিন্তু পরীক্ষায় সেই সংক্রামক রোগের লক্ষণ বা জীবাণু তার শরীরে পাওয়া যাচ্ছে না। আর আইসোলেশন হলো তার শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই দুই দলকেই অন্যান্য সুস্থ মানুষের সংস্পর্শ থেকে আলাদা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় হলো ১৪ দিন। তবে ভিন্নমতও আছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আরও কিছুদিন বেশি হতে পারে। এই ১৪ দিনে যদি সেই ব্যক্তির শরীরে রোগের উপসর্গ বা জীবাণু না পাওয়া যায়, তাহলে তার কোয়ারেন্টিন শেষ বলে ধরা হবে, কিন্তু ১৪ দিনের মধ্যে জীবাণু পাওয়া গেলে সেই ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে। আর আলাদা রাখার এই ব্যবস্থাপনাকে আইসোলেশন সময় বলা হবে। রোগ থেকে সম্পূর্ণ ভালো বা জীবাণুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বা চিকিৎসকের পরামর্শে আইসলেশনের মেয়াদকাল নির্ধারিত হবে।

হোম কোয়ারেন্টিনে কীভাবে থাকবেনঃ
বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা এবং আলো–বাতাসের সুব্যবস্থা আছে, এমন আলাদা একটি ঘরে থাকতে হবে। কোনোভাবে তা সম্ভব নাহলে অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

● ঘুমানোর জন্য আলাদা বিছানা ব্যবহার করতে হবে।

● যদি সম্ভব হয়, তাহলে আলাদা গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহার করতে হবে।

● শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর আগে মাকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

● কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কোনো পোষা প্রাণী (পাখিও) রাখা যাবে না।

● বাড়ির অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে একই ঘরে থাকার সময় বা ১ মিটারের মধ্যে এলে ও জরুরি দরকারে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্কে সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি পাল্টে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

● ব্যবহার করা মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন বা ময়লা রাখার পাত্রে ফেলতে হবে।

হাত ধোয়াঃ
কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে নিয়মিত। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

মুখ ঢেকে হাঁচি–কাশি দিতে হবেঃ
কাশির সময় শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। হাঁচি–কাশির সময় টিস্যু, মাস্কে কিংবা বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে এবং ওপরের নিয়ম অনুযায়ী হাত পরিষ্কার করতে হবে।

● টিস্যু ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।

● ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না।

● বাসনপত্র—থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি; তোয়ালে ও বিছানার চাদর অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না। এসব জিনিস ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

কখন কোয়ারেন্টিন শেষ হবে?
বিভিন্ন সংক্রামক রোগের কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ১৪ দিন।

কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় যা করা যেতে পারেঃ
● পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে টেলিফোন, মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা যেতে পারে।

● শিশুকে পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দেওয়া যেতে পারে এবং খেলার পর খেলনাগুলো জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

● দৈনন্দিন রুটিন, যেমন খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলতে হবে।

● সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করা যেতে পারে।

● বইপড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা নিয়মের পরিপন্থী নয়, এমন যেকোনো বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে।

পরিবারের সদস্যদের জন্যঃ
বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যাঁর দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলো, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, অ্যাজমা প্রভৃতি নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত করতে হবে। তিনি ওই ঘরে বা পাশের ঘরে থাকবেন, অবস্থান বদল করবেন না।

কোয়ারেন্টিনে আছে এমন কারও সঙ্গে কোনো অতিথিকে দেখা করতে দেওয়া যাবে না।



পরিচর্যাকারীর কী করণীয়ঃ
নিয়মিত হাত পরিষ্কার করবেন। বিশেষ করে কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাওয়ার আগে, গ্লাভস বা হাতমোজা পরার আগে ও খোলার পরে, যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হয়, খালি হাতে ও ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না।

কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা ওই ঘরে ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখতে হবে। এসব আবর্জনা খোলা জায়গায় না ফেলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

ঘরের মেঝে, আসবাব, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করতে হবে। ব্লিচিং পাউডার পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে। কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিকে নিজের কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালেসহ ব্যবহৃত কাপড় গুঁড়া সাবান বা কাপড় কাচার সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে বলুন এবং শুকিয়ে ফেলুন।

উপসর্গ দেখা দিলেঃ
যদি কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন জ্বর, কাশি–সর্দি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি, অতিদ্রুত রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হটলাইনে অবশ্যই যোগাযোগ করুন এবং পরবর্তী করণীয় জেনে নিন।

হটলাইন নম্বর: ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৯২৭৭১১৭৮৪–৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৫৫০০৬৪৯০১–৫ এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩।

এই রোগ আপনাকে না ছুঁলেও দয়া করে সাবধানে থাকুন। জনসমাগম থেকে দূরে থাকুন। সিনেমায় যাবেন না, মিউজিয়ামে যাবেন না, বেড়াতে যাবেন না, খেলার মাঠে যাবেন না। কিছু দিনের জন্য অন্তত: বন্ধ রাখুন এসব কাজ।

দয়াপূর্বক বৃদ্ধ মানুষগুলোর দুঃখ অনুভব করার চেষ্টা করুন। তারা এসময়ে নিজেদের প্রতি বেশি অসহায়ত্ব অনুভব করেন। তাদের সেবা পরিচর্যার দায়িত্ব আপনাদের হাতে। এবং আপনারা সচেষ্ট হলে অনেক বেশি মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবেন। আল্লাহ পাক সকলকে রক্ষা করুন।

ছবি: সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×