প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মোবারকের সাথে বেয়াদবি ও তার পরিণামঃ
আল্লাহ জাল্লা জালালুহু সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার জন্য সকল প্রশংসা যিনি তাঁর পয়গামকে বিশ্ববাসী জ্বীন ও মানব সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণের জন্য নবী রাসূলগণকে পাঠিয়ে ধরাধামকে সৃষ্টিকর্তা মহান মালিকের তাসবিহ পাঠের উপযোগী করে গড়ে তুলেছেন। আমরাও তাসবিহাত পাঠ করছি সেই মহান বারি তাআ'লার- যার তাসবিহ পাঠে রত কুল কায়েনাতের তামাম কিছু। বিশ্ব চরাচরের সকল মাখলূকাত বুঝে হোক কিংবা না বুঝে, তাসবিহ পাঠ করেই যাচ্ছে অনবরত, অবিরত, অবিরাম, অবিশ্রান্ত- মহান মালিক খালিক পরওয়ারে দিগারে আলমের।
হৃদয়ে মদীনাঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার প্রেম ভালোবাসায় জাগ্রত হৃদয়ে বিশেষ সম্মানের স্থান করে নেয় তাঁর সাথে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয়। সাইয়্যিদুল মুরসালীন সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় শহর ঈমানদারদের হৃদয়ের মনিকোঠায় সুউচ্চ আসনে সমাসীন। আর এটি যে তাকওয়ারই পরিচায়ক তা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নিম্নোক্ত বাণীতেই প্রতীয়মান হয়-
ذَلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى الْقُلُوبِ
'এটা শ্রবণযোগ্য কেউ আল্লাহর নামযুক্ত বস্তুসমুহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত।' -সূরাহ আল হাজ্ব, আয়াত-৩২
আল্লাহ তাআ'লা তার প্রিয় বান্দাগণকে ইহ পরকালে সাহায্য করেনঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাঁর আশীষধন্য প্রিয়তম বান্দাগণকে ইহ পরকালে সাহায্য করেন। তিনি মুমিনদের অভিভাবক। রক্ষাকারী। ইরশাদ হচ্ছে-
اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ
'যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক।........' -সূরা আল বাক্কারাহ, আয়াত-২৫৭
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাঁর মাহবূব বান্দাগণের সাহায্যকারী। পার্থিব জীবনে যেমন, মৃত্যুর পরেও ঠিক একইভাবে নবী-রাসূল, তাঁদের সঙ্গী সাথী সাহাবায়ে কেরামগণ, অলি-আউলিয়া এবং পীর-মাশায়েখগণকে তিনি সাহায্য করেন। শত্রুর শত্রুতা থেকে বাঁচিয়ে রাখেন। বস্তুত: যুগে যুগে কিছু লোক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা এবং তাঁর রাসূলের সাথে অকারণে শত্রুতা পোষন করেছে। চালাকির আশ্রয় নিতে গিয়ে উল্টো নিজেদের বোকামির ফাঁদে আটকে গেছে। অবশেষে তাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে নিজেদেরকেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এরা কাজ করে শয়তানের প্ররোচনায়। শয়তান এদের অভিভাবক। শয়তানই এদের পরিচালিত করে। শয়তানের চক্রান্তে নিজেদের দুষ্ট বুদ্ধিতে ছুটে চলে এরা। পক্ষান্তরে আল্লাহ জাল্লা শানুহু কাজ করেন নিজের জ্ঞান ও কৌশল দ্বারা এবং নিজের প্রজ্ঞাপূর্ণ তদবীরের মাধ্যমে যাবতীয় কিছুর আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। তাঁর ব্যবস্থাপনার ভিতরে সামান্যতম খুত থাকার সম্ভাবনা নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইরশাদ করেন,
وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِينَ كَفَرُواْ لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ اللّهُ وَاللّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
'আর কাফেরেরা যখন প্রতারণা করত আপনাকে বন্দী অথবা হত্যা করার উদ্দেশ্যে কিংবা আপনাকে বের করে দেয়ার জন্য তখন তারা যেমন ছলনা করত তেমনি, আল্লাহও ছলনা করতেন। বস্তুতঃ আল্লাহর ছলনা সবচেয়ে উত্তম।' -সূরা আল আনফাল, আয়াত-৩০
অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন-
وَمَكَرُواْ وَمَكَرَ اللّهُ وَاللّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
'এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম কুশলী।' -সূরা আলে ইমরান, আয়াত-৫৪
আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ওয়াল জালাল রাসূল আকরম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন,
وَاللّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ
'হে হাবিব! নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনাকে ষড়যন্ত্রকারী লোকদের থেকে নিরাপদ রাখবেন।' -সূরা আল মায়েদা, আয়াত-৬৭
রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পাশে সমাধিস্থ দুই প্রিয় সাহাবি হযরত সিদ্দিকে আকবর (রা.) ও হযরত ফারূকে আযম (রা.) এর কবর মোবারকের প্রতি অবমাননামূলক আচরণের অপপ্রয়াস চালানো হয় বেশ কয়েকবার। ইসলামের শত্রুরা বারংবার এই ষড়যন্ত্র চালায় যে, রওজা মুবারক হতে রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর প্রিয় সাহাবিদ্বয়ের কফিন মুবারকসমূহ উঠিয়ে নিয়ে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করবে। যাতে করে মুসলমানদের রূহানী তাওয়াজ্জুহের কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত মদীনা মুনাওয়ারা তার অবস্থানে থাকতে না পারে। ঐতিহ্য, মর্যাদা এবং বিশেষত্ব হারিয়ে মদীনা মুনাওয়ারা যেন হয়ে যায় অন্য কোনো সাধারণ শহরের মতই গুরুত্বহীন। উপমহাদেশের বিখ্যাত হাদিস বিশারদ শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলবী (র.) তাঁর ‘তারীখে মদীনা’ গ্রন্থে রওজা মোবারকের প্রতি অবমাননাকর এ ধরনের তিনটি বড় ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেছেন।
মিশরীয় শাসনকর্তার অন্যায় অভিলাষঃ
বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিক ইবনু নাজ্জার (রহ.) তাঁর ‘তারিখে বাগদাদ’ গ্রন্থে লিখেন, ৩৮৬-৪১১ হিজরীতে মদীনা মুনাওয়ারা ছিল মিশরীয় ফাতেমী বংশের এক শাসনকর্তার অধীনে। শাসক গোষ্ঠির গোপন ইচ্ছা ছিল যে, রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর দুই সাহাবীর লাশ মুবারক মিশরে স্থানান্তরিত করবে। যাতে করে লোকদের দৃষ্টি মদীনা মুনাওয়ারা থেকে সরে মিশরে গিয়ে পড়ে। সে এ ইচ্ছায় মিশরে একটি ভবনও নির্মাণ করে। যেখানে সে তাঁদের লাশ মুবারক রাখবে।
মিশরীয় শাসনকর্তা তার এই অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তার এক কর্মকর্তা আবুল ফুতুহকে মদীনায় প্রেরণ করে। সে মদীনায় গিয়ে পৌঁছলে মদীনাবাসী এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে যায়। এই অবস্থায় আশেকে রাসূল (সা.) ক্বারী যিলবানী (রহ.) নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করেন,
وَإِن نَّكَثُواْ أَيْمَانَهُم مِّن بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَطَعَنُواْ فِي دِينِكُمْ فَقَاتِلُواْ أَئِمَّةَ الْكُفْرِ إِنَّهُمْ لاَ أَيْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَنتَهُونَ
'আর যদি ভঙ্গ করে তারা তাদের শপথ- প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর। কারণ এদের কোন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে।' -সূরা আততাওবাহ, আয়াত-১২
أَلاَ تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَّكَثُواْ أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّواْ بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ وَهُم بَدَؤُوكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ أَتَخْشَوْنَهُمْ فَاللّهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَوْهُ إِن كُنتُم مُّؤُمِنِينَ
'তোমরা কি সেই দলের সাথে যুদ্ধ করবে না; যারা ভঙ্গ করেছে নিজেদের শপথ এবং সংকল্প নিয়েছে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নির্বাসনের? আর এরাই প্রথম তোমাদের সাথে বিবাদের সূত্রপাত করেছে। তোমরা কি তাদের ভয় কর? অথচ তোমাদের ভয়ের অধিক যোগ্য হলেন আল্লাহ- যদি তোমরা মু’মিন হও।' -সূরা আততাওবাহ, আয়াত-১৩
নবী প্রেমিক মদীনাবাসীগণের সামনে আয়াতে কুরআনিয়ার এই স্মৃতিচারণের পর মদীনাবাসীরা আবুল ফুতুহের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও তার বাহিনীকে হত্যা করতে তৈরি হতে লাগলেন। আবুল ফুতুহ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বলতে বাধ্য হল, মিশরের শাসনকর্তা আমাকে হত্যা করলেও আমি কখনো এই কাজ বাস্তবায়ন করব না। এমতাবস্থায় বিষয়টির প্রেক্ষিতে মহান রাব্বুল আলামীনের মহিমা যে, মদীনা মুনাওয়ারায় তখন প্রচন্ড রকমের ঘূর্ণিঝড় শুরু হয় এবং এর ফলে অনেকগুলো ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয় এবং জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। পরিশেষে আবুল ফুতুহ মদীনা মুনাওয়ারা থেকে পালিয়ে যায়। এভাবেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা রাসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবাদেরকে (রা.) এই কুচক্রীদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন।
লাশ মোবারক চুরি করতে দরবেশ বেশে খ্রিস্টানদের ভয়াঙ্কর ষড়যন্ত্রঃ
খ্রিস্টানরা ৫৫৭ হিজরী সালে আরেক ষড়যন্ত্র করে। সে সময় সিরিয়ার বাদশাহ ছিলেন সুলতান নুরুদ্দীন জঙ্গী (রহ.) আর জামালুদ্দীন ইস্পাহানী (রহ.) ছিলেন তাঁর উপদেষ্টা। এক রাত্রে সুলতান নুরুদ্দীন জঙ্গি রাসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনবার স্বপ্নে দেখতে পেলেন। তিনি দুই ব্যক্তির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, 'আমাকে এই দু’জনের অনিষ্ট হতে রক্ষা কর।'
সুলতানের ধারণা হল নিশ্চয়ই মদীনা মুনাওয়ারায় কিছু একটা ঘটছে। তাই তিনি তাঁর পরামর্শদাতাকে সঙ্গে নিয়ে মদীনায় উপস্থিত হলেন, সঙ্গে নিলেন মদীনাবাসীদের জন্য মূল্যবান দামি দামি হাদিয়া তোহফা। জামালুদ্দীন ইস্পাহানী (রহ.) মদীনায় ঘোষণা করে দিলেন যে, মহামান্য সুলতান মদীনাবাসীকে নিজ হাতে মূল্যবান উপহার দিতে চান। সকলকেই স্বশরীরে হাজির হয়ে আপন আপন হাদিয়া নেবার জন্য নির্দেশ দিলেন। সুলতান মদীনাবাসীদের মধ্যে হাদিয়া বণ্টন করে দিলেন। কিন্তু ঐ স্বপ্নে দেখা দু’ব্যক্তিকে হাদিয় গ্রহনকারীদের ভেতরে দেখতে পেলেন না।
সুলতান মদীনাবাসীদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'আর কেউ কি অবশিষ্ট আছে?'
লোকেরা জানাল, 'দুইজন বিত্তশালী ব্যক্তি রয়েছেন, তারা বেশ মুত্তাকি ও পরহেজগার লোক। কারো কাছ থেকে হাদিয়া তোহফা গ্রহণ করেন না, বরং লোকজনকে দিয়ে থাকেন। তারা ইবাদত ও রিয়াযত-মুশাহাদায় মশগুল থাকায় এখানে হাজির হতে পারেননি।'
সুলতান তাদের উপস্থিত করার নির্দেশ দিলেন।
যখন হাজির করা হল, সুলতান দেখতে পেলেন, এরা অবিকল ঐ দু’ব্যক্তি যাদেরকে তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন। সুলতান তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কোত্থেকে এসেছ?
তারা উত্তর দিল, 'আমরা মরক্কোর বাসিন্দা, হজ্জ করতে এসেছি। এখন আমরা রাসূলুলাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পড়শী হয়ে এখানে অবস্থান করছি।'
সুলতান তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, 'তোমাদের বর্তমান আবাসস্থল কোথায়?'
তাদের আবাসস্থল ছিল রওজা মুবারকের নিকটেই। মসজিদে নববীর দক্ষিণ দিকের দেয়ালের ঠিক কাছে। তারা তাদের আবাসস্থলের কথা সুলতানকে বললেন। কিন্তু সুলতান শুনে শুনে নয় বরং, নিজ চোখে তাদের আবাসস্থল দেখতে চাইলেন।
অবশেষে সুলতান তাদের ঘরে গিয়ে উপস্থিত হলেন। ঘরে ঢুকতেই দেখা গেল মেঝের উপরে একটি কার্পেট বিছানো। সুলতানের সন্দেহ দূর করার জন্য তিনি মেঝের উপর থেকে কার্পেটটি সরাতে বললেন। কার্পেট সরানো হলে দেখা গেল, এর নিচে বিশাল এক সুড়ঙ্গ, যা রওজা মুবারক পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। সুলতান তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, 'এখন সত্য কথা বল!'
তারা স্বীকার করে বলল, 'আমরা খ্রিস্টান। আমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে সাইয়েদুল মুরসালীন সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কফিন মুবারক উঠিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। আমরা প্রতিদিন দিনের বেলায় খুঁড়াখুঁড়ি করতাম আর রাতের বেলায় বস্তায় মাটি ভরে জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসতাম। এই ছিল আমাদের দৈনন্দিন কর্মকান্ড। আমরা যখন রওজা পাকের কাছাকাছি পৌঁছি তখন প্রচন্ড তুফান আসে, বিদ্যুৎ চমকে আর ভূকম্পন সৃষ্টি হয়। তাই বলে আমাদের উদ্দেশ্য সফল করতে পারিনি আজ অবধি। আর এখন তো আমাদের পরিকল্পনা ফাঁসই হয়ে গেল!'
সুলতান তাদের এই অমানবিক ও অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে প্রবল মানসিক আঘাত পেলেন। তিনি কেঁদে ফেললেন। যখন নিজেকে সামলালেন, তখন আল্লাহ তাআ'লার কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন এজন্য যে এই কাজের জন্য তিনি তাঁকে নির্বাচন করেছেন। সুলতান এই ষড়যন্ত্রকারী দুই ব্যক্তিকে শিরোচ্ছেদের আদেশ দিলেন এবং রওজা মুবারকের চারদিক ঘিরে গভীর পরিখা খনন করে সেটিকে তরল সীসা দিয়ে ভরে সুরক্ষিত করে দিলেন।
সুলতান রওজা মুবারকের নিকট একটি চত্বর নির্মাণ করেন। সেখানে দিনরাত অনবরত রওজা পাক পাহারা দেয়ার ব্যবস্থা করলেন। এই চত্বর এখনো বিদ্যমান রয়েছে, যা বাবে জিবরাঈল দিয়ে প্রবেশ করার সময় ডানদিকে অবস্থিত।
শেষের প্রার্থনাঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের সকলকে প্রিয় নবীজির প্রিয় মদীনার পানে বারবার ছুটে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। মদীনা এবং মদীনাওয়ালার প্রেমের সুধা পানে ধন্য হওয়ার কিসমত নসিব করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩১