somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

পৃথিবী এবং অন্তহীন রহস্যে ঘেরা মহাশুণ্য, পর্ব-৩

১৮ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পূর্ববর্তী পর্বগুলো দেখে আসতে ক্লিক করুন-

পৃথিবী এবং অন্তহীন রহস্যে ঘেরা মহাশুণ্য, পর্ব-১

পৃথিবী এবং অন্তহীন রহস্যে ঘেরা মহাশুণ্য, পর্ব-২

পৃথিবী এবং অন্তহীন রহস্যে ঘেরা মহাশুণ্য, পর্ব-৩

আমাদের চিরচেনা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে দিয়েই ভাবতে শুরু করি। বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৬১০ বর্গ কিলোমিটার। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি ভারত বাংলাদেশের চেয়ে বড়। শুধু বড় বললে হয় না। বরং অনেক বড়। অন্ততঃ ২৫ গুন বড়। ২৮ টি রাজ্য ও ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলবিশিষ্ট ১২,৬৯,২১৯ বর্গমাইল (৩২,৮৭,২৬০ বর্গকিলোমিটার) আয়তনের বিশাল দেশ ভারত। আয়তন বিবেচনায় বিশ্বে এর অবস্থান ৭ম। আবার কানাডা বাংলাদেশের চেয়ে ১৫০ গুন বড়। দেশটির আয়তন ৯৯,৮৪,৬৭০ বর্গকিলোমিটার (৩৮,৫৫,১০০ বর্গমাইল)। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া বাংলাদেশের চেয়ে অন্ততঃ ২০০ গুন বড়। বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশটির দখলে রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। ২৩৩ টি ছোট বড় রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত আমাদের পৃথিবীর ৩০ শতাংশ স্থলভাগ, বাকি ৭০ শতাংশ বারিরাশি। আমাদের দৃষ্টিতে ৩০ ভাগ মাটি এবং ৭০ ভাগ পানির সমন্বয়ে গঠিত এই পৃথিবীর আকার কিন্তু বিশাল। কথা সত্য, পৃথিবী বিশাল বটে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, আসলেই কি এটি বিশাল? মহাবিশ্বের আকার, আকৃতি এবং আয়তনের তুলনায় পৃথিবীর আয়তন চিন্তা করলে বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? বস্তুতঃ মহাবিশ্বের আকার, আকৃতি এবং আয়তনের তুলনায় পৃথিবী খুবই ক্ষুদ্র। কতটা ক্ষুদ্র তা ভাবতেও বিস্ময়ে হতবাক হতে হয়। গোটা মহাবিশ্বের কাছে পৃথিবী নামক এই গ্রহটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই রীতিমত কঠিন বিষয় মনে হতে পারে। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা যেমন অসীম গুণাবলীর অধিকারী, তাঁর সৃষ্টি এই মহাবিশ্বও ঠিক তেমনই বিপুল, বিশাল এবং অকল্পনীয় আকার, আকৃতি এবং আয়তনের। তাঁর সৃষ্টির অভাবনীয় বিশালতা, সীমাহীন বৈচিত্র্য, অকল্পনীয় সৌন্দর্য্যসুষমা, অচিন্ত্যনীয় নিয়মানুবর্তিতা ভাবতে ভালো লাগে। তাকে জানতে হলে তাঁর সৃষ্টির দিকে তাকাতে হবে চোখ মেলে। তাকে বুঝতে হলে ছুটে যেতে হবে গ্রহে, নক্ষত্রে, উল্কাপিন্ড, নিহারিকা, ছায়াপথ আর মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির নিরন্তর ছোটাছুটির বিচিত্র মহাশুণ্যের পানে। প্রিয় পাঠক, আসুন, ঘুরে আসি অনন্ত মহাশুণ্যে। কিছুটা সময়। অনুভবে তাকে অনুধাবনের চেষ্টা করি তাঁর সুবিশাল সৃষ্টির ভেতরে। কারণ, স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাঁর সৃষ্টি নিয়ে ভাবতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন-

إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لِّأُوْلِي الألْبَابِ

নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্যে।

الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىَ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষযে, (তারা বলে) পরওয়ারদেগার! এসব আপনি অনর্থক সৃষ্টি করেননি। সকল পবিত্রতা আপনারই, আমাদিগকে আপনি দোযখের শাস্তি থেকে বাঁচান। -সূরা আলে ইমরান, আয়াত, ১৯০-১৯১



মহাকাশে ভাসমান প্রত্যেকেই পরিভ্রমনরত নির্দিষ্ট কক্ষপথেঃ

অনন্ত মহাশুন্যে কোনো কিছুই স্থির নয়। সকল কিছু আবর্তনশীল। ঘূর্ণায়মান। চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র-নীহারিকা-উল্কাপিন্ড-মিল্কিওয়ে ছায়াপথ প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমনরত। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-

وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ

প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে। -সূরা ইয়া - সীন, আয়াত- ৪০

পূর্ব দিগন্ত আলোকিত করে প্রতি দিন সূর্য ওঠে। আলো ছড়াতে ছড়াতে সূর্য উঠে আসে আমাদের মাথার উপরে। ধীরেধীরে ঢলে পড়তে থাকে পশ্চিমাকাশে। একসময় গোধুলি লগ্নের নরম আলোর রেখা ছড়িয়ে অস্তমিত হয় প্রখর আলোর উৎস সূর্য। এই সূর্যকে নিয়েই একটু চিন্তা করি। কার গোপন ইশারায় নির্দিষ্ট নিয়মে সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় সূর্যের নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিভ্রমন? কেন সূর্য একটুও এদিক ওদিক সরে যায় না তার উদয় অস্তাচলের নির্ধারিত কক্ষপথ হতে? কেন একমুহূর্ত হেরফের করে না তার নিয়ন্ত্রিত সময়ের গন্ডি থেকে? বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ, শতাব্দির পর শতাব্দি, হাজার হাজার বছরকালব্যাপী একইভাবে, একই রেখায় থেকে, একই পরিমান সময় নিয়ে, একই মাত্রা-পরিমাত্রায় কিভাবে সে নিয়মের কঠিন নিগরে বন্দি হয়ে নিজেকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে অন্যসব গ্রহ নক্ষত্রকে আলোকিত করার জন্য নিরন্তর আলো বিকিরণ করেই চলেছে?



চন্দ্র এবং সূর্যের নিরবচ্ছিন্ন আবর্তনের বিষয়ে কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে-

وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ

সূর্য তার নির্দিষ্ট অবস্থানে আবর্তন করে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ, আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ। -সূরা ইয়া - সীন, আয়াত- ৩৮

وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتَّى عَادَ كَالْعُرْجُونِ الْقَدِيمِ

চন্দ্রের জন্যে আমি বিভিন্ন মনযিল নির্ধারিত করেছি। অবশেষে সে পুরাতন খর্জুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়। -সূরা ইয়া - সীন, আয়াত- ৩৯



সূর্য না থাকলে পৃথিবী হয়ে যেত প্রাণহীনঃ

সূর্য আমাদের উষ্ণতা দেয়, আলো দেয়। আমাদের সজিব, সতেজ এবং প্রাণবান রাখতে সূর্যের ভূমিকা অপরিসীম। সূর্যের আলো, তাপ এবং উষ্ণতা না থাকলে পৃথিবী প্রাণহীন হয়ে যেত। শুকনো কাষ্ঠখন্ডের ন্যায় শুকিয়ে মরে যেতাম আমরা। খাল বিল নদী সাগরের কুলুকুলু ধ্বনিতে বহমানতা থেমে যেত। জোয়ার ভাটার টান বন্ধ হয়ে যেত। দু'কুল ছাপিয়ে বয়ে চলা স্রোতস্বিনীরা স্তব্ধ হয়ে যেত। সকল প্রাণি মরে যেত। গাছপালা শুকিয়ে খড়কুটোয় পরিনত হতো। জল-স্থলের কোনো প্রাণির পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব হতো না। সবুজ-শ্যামল-অপরূপ পৃথিবীর চেহারা পাল্টে যেত। নিকষ কালোয় ঢেকে যেত গোটা চরাচর। দীঘল রাতের কৃষ্ণ আঁধারে হারিয়ে যেত দিগন্ত। আমাদের এই পৃথিবী সূর্যের একটি গ্রহ। সূর্যকে কেন্দ্র করে সদা ঘূর্ণায়মান। সূর্যের অপরাপর গ্রহের মত বৃহস্পতিও ঘুরছে এর নির্দিষ্ট কক্ষপথে। সূর্যকে ঘিরে এরও বিরামহীন আবর্তন। আপাতদৃষ্টিতে পৃথিবীকে আমাদের নিকট অনেক বড় মনে হলেও পৃথিবীর তুলনায় বৃহস্পতি (Jupiter) গ্রহটি কিন্তু ২৩০০ গুন বড়। এর মানে দাঁড়ায়, ২৩০০ টি পৃথিবীকে বৃহস্পতির পেটে অনায়াসে ঢুকিয়ে রাখা সম্ভব। তাহলে বুঝুন, বৃহস্পতির আকার পৃথিবীর চেয়ে কত বেশি বড়!

সূর্যের চেয়ে ৪ শত কোটি গুন বড় 'ইউ ওয়াই স্কুটি' (UY Scuti) নক্ষত্রঃ

আবার আমাদের পৃথিবী থেকে ১৩ লক্ষ গুন বড় হলেও সূর্যকে কিন্তু মহাকাশের অন্যান্য নক্ষত্রের তুলনায় ক্ষুদ্র না বলে উপায় নেই! সূর্য পৃথিবী থেকে ১৪ কোটি ৯৫ লক্ষ ৯৮ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সূর্যের সক্রিয় থাকতে জ্বালানি হিসাবে প্রতিদিন ৮,৬৪০ কোটি মেট্রিকটন হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের প্রয়োজন হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মহাকাশে 'ইউ ওয়াই স্কুটি' নামক একটি দৈত্য নক্ষত্র আছে; যা সূর্যের চেয়ে ৪ শত কোটি গুন বড় এবং এই 'ইউ ওয়াই স্কুটি' (UY Scuti) নক্ষত্রটির মধ্যে ৬৫০ ট্রিলিয়ন সূর্যকে একত্রে ঢুকিয়ে রাখা কোনো ব্যাপারই না। সূর্যের আয়তনের ৪ বিলিয়ন আয়তনসম্পন্ন এই নক্ষত্রকে প্রদক্ষিন করতে আলোরও ৭ ঘণ্টা সময় লেগে যায়, যেখানে আমাদের সূর্যকে প্রদক্ষিন করতে আলোর সময় লাগে মাত্র ১৪.৫ সেকেন্ড। ৮৬০ সালের বন মানমন্দিরের Bonner Durchmusterung Stellar Catalogue এ একে প্রথম তালিকাবদ্ধ করা হয়। গ্যালাক্টিক কোরের দিকে অবস্থিত এই নক্ষত্রটি একটি অতি উজ্জ্বল নক্ষত্রও বটে। এর উজ্জ্বলতা সূর্যের উজ্জ্বলতার ৩৪০,০০০ (তিন লক্ষ চল্লিশ হাজার) গুন বেশি। এটি একটি কম্পমান ভ্যারিয়েবল নক্ষত্র (pulsating variable star)। অর্থাৎ, সময়ের সাথে এর উজ্জ্বলতা ও আকৃতির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। এটিকে লোহিত মহাদানব নক্ষত্র (red super giant)ও বলা হয়, যা পৃথিবী থেকে ৯৫০০ (নয় হাজার পাঁচশত) আলোকবর্ষ দূরে দক্ষিন গোলার্ধ থেকে দৃশ্যমান স্কুটাম নক্ষত্রমন্ডলে (constellation Scutum) অবস্থিত।



তিনি স্রষ্টা, তিনিই মহান মালিক সকল কিছুরঃ

আমরা কি ধারণা করতে পারি, এরকম একেকটি নক্ষত্রকে সক্রিয় রাখতে প্রতিদিন কত ট্রিলিয়ন টন জ্বালানি প্রয়োজন এবং বিশালাকারের এই জ্বালানির যোগানদাতা যিনি, তিনি আসলে কে? কি তাঁর পরিচয়? তিনিই কি বিশ্বজাহানের স্রষ্টা নন? নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী একজন সর্বশক্তিমান স্রষ্টার নিরবচ্ছিন্ন তত্ত্বাবধান ব্যতিত এই মহাবিশ্বের টিকে থাকা কি আদৌ সম্ভব? একমুহূর্ত সম্ভব? কোনোক্রমেই কি সম্ভব? সম্ভব নয়। আর যিনি এসকল কিছুর স্রষ্টা এবং নিয়ন্ত্রনকারী তিনিই আমাদেরও স্রষ্টা, পালনকর্তা, মহান মালিক, বিশ্ব নিয়ন্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা। আসুন, দেখে নিই তাঁর অমোঘ ঘোষনাগুলো-

هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعاً ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء فَسَوَّاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত। -সূরা আল বাকারাহ, আয়াত-২৯

وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مِّنْهُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لَّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

এবং আয়ত্ত্বাধীন করে দিয়েছেন তোমাদের, যা আছে নভোমন্ডলে ও যা আছে ভূমন্ডলে; তাঁর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। -সূরা জাছিয়া, আয়াত-১৩

الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمَنُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا

তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি অবগত, তাকে জিজ্ঞেস কর। -সূরা আল ফুরক্কান, আয়াত-৫৯

اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ مَا لَكُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا شَفِيعٍ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ

আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না? -সূরা আস সাজদাহ, আয়াত-০৪

هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَاء وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। -সূরা আল হাদীদ, আয়াত-০৪

বস্তুতঃ মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লাই যদি গোটা সৃষ্টিকুলকে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সেগুলোকে সুষ্ঠু, সুন্দর এবং সুনিপূণভাবে নিয়ন্ত্রণ না করতেন তাহলে গোটা সৃষ্টিনিচয় এক মুহূর্ত টিকে থাকতো না। পলকেই ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়ে যেত। কুরআনে হাকিমে বর্ণিত হয়েছে-

لَوْ كَانَ فِيهِمَا آلِهَةٌ إِلَّا اللَّهُ لَفَسَدَتَا فَسُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ

যদি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ের ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র। -সূরা আল আমবিয়া, আয়াত-২২



সূর্য মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির একটি মাঝারী আকারের বামন নক্ষত্র!

বস্তুতঃ সূর্য মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির একটি মাঝারী আকারের বামন নক্ষত্র! আমরা হয়তো জেনে থাকবো, কোনো নক্ষত্রকে বামন নক্ষত্র বলা হয় তার আকার-আকৃতি ক্ষুদ্র হওয়ার কারণে। সূর্য আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ের কেন্দ্র থেকে ২৭ হাজার ২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। বামন নক্ষত্র হলেও সূর্য কিন্তু আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে সবচেয়ে বড় বস্তু যা পুরো সৌরজগতের ভরের ৯৯.৮% ভরই বহন করে চলেছে! আগেই বলেছি, সূর্য ১৩ লক্ষ পৃথিবীর সমান। আয়তনে ১৩ লক্ষ পৃথিবীর সমান হলেও সমস্ত মহাবিশ্বে সূর্য হয়তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোন নক্ষত্রই নয়; তবে একে কেন্দ্র করে ঘোরা সব গ্রহ-উপগ্রহের জন্য এটিই সকল শক্তির কেন্দ্রবিন্দু! গ্রিকরা সূর্যকে বলে 'ইলিওস' (ήλιος), স্পেনিশরা 'ডোম' (Dom) আর রোমানরা ডাকে 'সোল' (sole) নামে। ইতালিয়ান ভাষার এই 'সোল' (sole) শব্দটি থেকেই মূলতঃ Solar শব্দের উৎপত্তি।



পৃথিবীর কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টোরি (Proxima Centauri)ঃ

পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্রটির নাম প্রক্সিমা সেন্টোরি (Proxima Centauri)। পৃথিবী থেকে ৪.২৪ আলোকবর্ষ দুরে অবস্থিত (১ আলোকবর্ষ = ৯ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি কিলোমিটার) এটি। আমরা জানি, পৃথিবীর দ্রুততম রকেট এ্যাপেলো-১১, যার গতি প্রতি সেকেন্ডে ১১ কিলোমিটার এবং প্রতি ঘন্টায় ৩৯,৬০০ কিলোমিটার। এই গতিতে প্রক্সিমা সেন্টোরি (Proxima Centauri) -তে পৌঁছাতে রকেটটির সময় লাগবে মাত্র ১ লক্ষ ১৫ হাজার বছর!



মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি নিয়ে কিছু কথাঃ

বিংশ শতাব্দীতে প্রবেশের শুরুলগ্নে জ্যোতির্বিদগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন যে, মহাবিশ্বে মাত্র একটি গ্যালাক্সি আছে। নাম মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। সেখানে সূর্যের মতো প্রায় ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র রয়েছে। যদিও আঠরো শতকের ডারবানের টমাস রাইট ও দার্শনিক ইম্যানুয়েল কান্ট প্রত্যেকের মোটামুটি ভিন্ন একটি অনুমান ছিল। অনুমানটি হলো, টেলিস্কোপে দেখা আকাশে সর্পিল প্রভাময় বিন্দুবৎ কাঠামোগুলো আসলে অন্যান্য গ্যালাক্সি। কান্ট স্পষ্টভাবে ধারণা করেছিলেন যে, অ্যান্ড্রোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জের ভেতর এম-১৩ আসলে আরেকটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। সেটি বিশালসংখ্যক নক্ষত্র দিয়ে গঠিত। তাঁরা এগুলোকে ‘দ্বীপ বিশ্ব’ বলে ডাকার প্রস্তাব করেছিলেন। কিছু বিজ্ঞানী ওই ধারণাটি নিয়ে উপহাস করে বললেন, সর্পিল নীহারিকাগুলো হলো দূরবর্তী দ্বীপবিশ্ব নয়, বরং নিকটবর্তী অনেকটা জমাটবদ্ধ আন্তনাক্ষত্রিক গ্যাসীয় মেঘ। সম্ভবত সেখানে অন্যান্য সৌরজগত তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।

কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডউইন হাবল ১৯২৪ সালে টেলিস্কোপে এম-১৩ নামের আন্তনাক্ষত্রিক মেঘগুলোকে অস্বাভাবিক দূরত্বে আছে বলে চিহ্নিত করলেন, হাজার বা লক্ষ আলোকবর্ষ নয়, প্রায় ২০ লক্ষ আলোকবর্ষের চেয়েও বেশি। তা-ই যদি হয়, তাহলে এম-১৩ শুধু আন্তনাক্ষত্রিক মাত্রার মেঘ হতে পারে না, এটাকে অনেক বড় হতে হবে, একটি অপরিমেয় বিশাল গ্যালাক্সির অবয়ব নিয়ে। পার্শ্ববর্তী এই গ্যালাক্সির নাম অ্যান্ড্রোমিডা এম-১৩। নিষ্প্রভতর গ্যালাক্সিগুলো হবে আরও দূরে, পরিচিত মহাবিশ্বের সীমান্তে। ধারণা করা হয়, এভাবে ১০ হাজার কোটি গ্যালাক্সি ঝিকমিক করে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় আছে মহাবিশ্বে।



গ্যালাক্সি; যার মহাকর্ষের টানে আটকে থাকে লাখ লাখ থেকে শতকোটি নক্ষত্রঃ

২০১৬ সালের অক্টোবরে অবশ্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির সংখ্যা পূর্বধারণার চেয়ে কম করে হলেও ২০ গুণ বেশি। প্রায় দুই লক্ষ কোটি গ্যালাক্সি। জ্যোতির্বিজ্ঞানী হাবলের নাম অনুসারে রাখা হাবল স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্য নিয়েই এই গবেষণা করা হয়েছে। হাবল টেলিস্কোপের ২০ বছরের গবেষণায় প্রাপ্ত ত্রিমাত্রিক ছবি থেকে একটি মডেল বানানো হয়েছে। এই মডেল থেকে ২ লক্ষ কোটি গ্যালাক্সির এই সিদ্ধান্তে এসেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। গ্যালাক্সিগুলো হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে লাখ লাখ থেকে শতকোটি সংখ্যক নক্ষত্র মহাকর্ষের টানে একসঙ্গে আটকে থাকে। এই গবেষণার প্রধান ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার কোনসেলাইস বলেন, ‘শুনতে চমক লাগতে পারে, কিন্তু গ্যালাক্সিগুলোর ৯০ শতাংশ নিয়েই এখনো কোনো গবেষণা হয়নি।’

তিনি বলেন, 'তাঁর নেতৃত্বে বিজ্ঞানী দল হাবল টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া ছবিগুলোকে ত্রিমাত্রিক রূপ দিয়ে মহাবিশ্বের সচিত্র ইতিহাস তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। ১৩৮০ কোটি বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে ‘বিগ ব্যাং’ বা সময়ের আদিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।'



আলোর গতিতে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি প্রদক্ষিন করতে সময় প্রয়োজন প্রায় এক লক্ষ বছরঃ

প্রক্সিমা সেন্টোরি (Proxima Centauri) -র মত ১০ হাজার কোটি নক্ষত্র ও ১০ হাজার কোটি প্লানেটের সমন্বয়ে গঠিত মিল্কিওয়ে (Milky Way) গ্যালাক্সি। এই গ্যালাক্সির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব প্রায় ১০০,০০০ এক লক্ষ আলোকবর্ষ বা ৯×১০১৭ কিলোমিটার (৩০ কিলোপারসেক) এবং এর পুরুত্ব প্রায় ১,০০০ এক হাজার আলোকবর্ষ (০.৩ কিলোপারসেক)। অর্থাৎ, আলোর গতিতে (প্রতি সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার) মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে সময় লাগে প্রায় ১ লক্ষ বছর। ধারণা করা হয়, এই ছায়াপথে কমপক্ষে ২০০ বিলিয়ন থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ বিলিয়ন পর্যন্ত নক্ষত্র রয়েছে।



এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি হচ্ছে- লোকাল গ্রুপ অফ গ্যালাক্সির একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।

আবার, লোকালগ্রুপ অব গ্যালাক্সি যার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তের দুরত্ব প্রায় ১ কোটি আলোকবর্ষ অর্থাৎ আলোর গতিতে যার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ১ কোটি বছর।

বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, লোকাল গ্রুপ অফ গ্যালাক্সি ভাগ্রোসুপারপ্লাষ্টারের একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ।

ভাগ্রোসুপারপ্লাষ্টার যার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দুরত্ব প্রায় ১১ কোটি আলোকবর্ষ।

ভাগ্রোসুপারপ্লাষ্টার লানিয়াকেয়া সুপারপ্লাষ্টারের একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ।

লানিয়াকেয়া সুপারপ্লাষ্টার যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দুরত্ব প্রায় ৫২ কোটি আলোকবর্ষ।

আবার, লানিয়াকেয়ার সুপারপ্লাষ্টার টাইটানিক লানিয়াকেয়ার সুপারপ্লাষ্টারের একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ। উল্লেখ্য যে, ২ লক্ষ কোটি গ্যালাক্সির সমন্বয়ে গঠিত হয় একটি টাইটানিক লানিয়াকেয়ার সুপারপ্লাষ্টার।

টাইটানিক লানিয়াকেয়ার সুপারপ্লাষ্টার অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। প্রায় ১ কোটি টাইটানিক লানিয়াকেয়ার সুপারপ্লাষ্টার রয়েছে অবজার্ভেবল ইউনিভার্সে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, অবজার্বেবল ইউনিভার্সে যতটি নক্ষত্র আছে আমাদের সমগ্র পৃথিবীতে ততগুলো বালুকণাও নেই।

বিজ্ঞানীরা টেলিস্কোপের মাধ্যমে অবজার্ভেবল ইউনিভার্স পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের পরে শুধু শুন্যতা বিরাজমান যার সীমানা কতটা বৃহৎ তা আমাদের কল্পনারও বাইরে এবং সে সম্পর্কে শুধুমাত্র, কেবলমাত্র এবং একমাত্র সমগ্র বিশ্বজাহানের স্রষ্টা মহান রাব্বুল আলামিনই সুপরিজ্ঞাত।



থিওরি অফ কসমিক ইনফ্লেশানের হিসাবে অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ হাজার ৩ শত কোটি আলোকবর্ষ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের তুলনায় মহাবিশ্ব এতটাই বড় যে অবজার্ভেবল ইউনিভার্স যদি একটি ফুটবলের সমান হয় তাহলে মহাবিশ্ব হবে গোটা পৃথিবীর সমান। যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দুরত্ব ১৫০ সেক্স-ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ। যা সংখ্যায় প্রকাশ করলে ১৫০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ (১৫০ এর পর ২১ টি শুন্য) হতে পারে। এই ইউনিভার্স প্রতিনিয়ত আলোর থেকে অধিক গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। ঘন্টায় বিলিয়ন কিলোমিটার গতিতেও সে অবদি পৌঁছানো কোনদিনও মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, আমরা এতক্ষন যা কিছু নিয়ে আলোচনা করলাম, অর্থাৎ, আমাদের এই অবজার্ভেবল ইউনিভার্স এটি কিন্তু প্রথম আসমানে অবস্থিত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইরশাদ করেন-

وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ

আমি সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি; সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি
তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি। -সূরা আল মুলক, আয়াত-০৫

আমাদের কল্পনা শক্তির চেয়েও যা অতি বড় বলে প্রতীয়মান হয়। তো, বাদবাকি ছয় আসমানের ব্যাপারে আমরা কি ধারণা পোষন করতে পারি???



আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইরশাদ করেন-

قُلِ انظُرُواْ مَاذَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَا تُغْنِي الآيَاتُ وَالنُّذُرُ عَن قَوْمٍ لاَّ يُؤْمِنُونَ

তাহলে আপনি বলে দিন, চেয়ে দেখ তো আসমানসমুহে ও যমীনে কি রয়েছে। আর কোন নিদর্শন এবং কোন ভীতিপ্রর্দশনই কোন কাজে আসে না সেসব লোকের জন্য যারা মান্য করে না। -সূরা ইউনূস, আয়াত-১০১

সূরা আল মুলক এর অন্য দু'টি আয়াতে তিনি বলেন-

الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِن تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِن فُطُورٍ

তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। আপনি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবেন না। আবার দৃষ্টি প্রসারিত করুন; কোন ফাটল দেখতে পান কি? -সূরা আল মুলক, আয়াত-০৩

ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِأً وَهُوَ حَسِيرٌ

অতঃপর আপনি বার বার তাকিয়ে দেখুন- আপনার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে আপনার দিকে ফিরে আসবে। -সূরা আল মুলক, আয়াত-০৪

উপরোল্লেখিত সূরা আল মুলক এর ০৫ নং আয়াতে মহান রাব্বুল আলামিন ঘোষনা করেছেন যে- সর্বনিম্ন আসমান অর্থাৎ, প্রথম আকাশকে তিনি প্রদীপমালা মানে, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র প্রভৃতি দিয়ে সাজিয়েছেন। একথার অর্থ দ্বারায়, বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত আমাদের সামনে যে অবজার্ভেবল ইউনিভার্সটি রয়েছে, এটি কিন্তু প্রথম আসমানেরই অংশ।



হাদিসের বর্ণনায় এক আসমান হতে আরেক আসমানের দূরত্বঃ

হাদিসের বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত কিছু কিছু হাদিসে এক আসমান হতে আরেক আসমানের দূরত্ব পাঁচশত বছরের পথ বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। অবশ্য এ ধরণের বর্ণনা সম্বলিত কিছু হাদিসের সহিহ হওয়ার বিষয়ে কোনো কোনো মুহাদ্দিস আপত্তি উত্থাপন করেছেন। কেউ এই বিষয়ক কিছু হাদিসকে দুর্বল আখ্যায়িত করেছেন।

এই সংক্রান্ত বর্ণনা বিষয়ক একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন ইমাম আবু দাউদ (রঃ)। তাঁর সংকলিত হাদিসে বলা হয়েছে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বর্ণনায় বলেছেন- জমিন থেকে প্রথম আসমানের দুরত্ব ৫০০ বছরের রাস্তা এবং এক আসমান থেকে আরেক আসমানের দুরত্ব ৫০০ বছরের রাস্তা। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের নিকট বর্ণনা করেছেন- প্রথম আসমানের তুলনায় দ্বিতীয় আসমান এতটাই বড় যে প্রথম আসমানকে যদি দ্বিতীয় আসমানের মধ্যে ফেলে দেয়া যায় তাহলে মরুভূমির মধ্যে হাতের একটি আঙটি ফেলে দিলে সেই আঙটিটি যতটুকু, দ্বিতীয় আসমানের তুলনায় প্রথম আসমান তেমনই ক্ষুদ্র। তাহলে আমরা কি কখনো চিন্তা করেছি, এই সুবিশাল মহাকাশ যা দ্বিতীয় আসমানের তুলনায় অতি ক্ষুদ্র একটি আঙটি সমতুল্য, আল্লাহর সৃষ্টি সেই দ্বিতীয় আসমান কত বিশাল? কতটা সুবিশাল?



আবার, দ্বিতীয় আসমানের তুলনায় তৃতীয় আসমান, তৃতীয় আসমানের তুলনায় চতুর্থ, চতুর্থ আসমানের তুলনায় পঞ্চম, পঞ্চম আসমানের তুলনায় ষষ্ঠ, ষষ্ঠ আসমানের তুলনায় সপ্তম আসমান যদি এতটা সুবিশাল হয় তাহলে আল্লাহ তাআ'লার সৃষ্ট সপ্তম আসমানের আয়তন এবং পরিধি কতটা সুবিশাল?

সপ্তম আসমান পর্যন্ত পৌঁছেই শেষ নয়। এর উপরে রয়েছে সিদরাতুল মুন্তাহা। বিশাল থেকে বিশালতর যার আয়তন এবং অবয়ব। আমাদের কল্পনারও বাইরে। তার উপরে পবিত্র কুরআনে হাকিমের আদি আবাস অর্থাৎ লওহে মাহ্ফুজ। তার উপরে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের কুরছি মোবারক এবং আরশে আজীম।

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে বিখ্যাত তাফসিরকারক হাফেজ ইবনু কাসির রহ. আসমানসমূহের পরস্পর দূরত্ব বিষয়ে একইরকম আলোচনা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া উপরোক্ত সুনান আবু দাউদের ৪৮২৩ এবং মুসনাদে আহমদের ২০৬, ২০৭ নং হাদিসে একই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।



ইমাম আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ ও ইমাম তিরমিজি (রহঃ) সিমাক (রাদিঃ) থেকে অনুরূপ বর্ননা করেন। ইমাম তিরমিজি (রহঃ) হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। এই দূরত্বের হিসাব দ্রুতগামী ঘোড়া না থেমে টানা ৫০০ বছর চলার কথা বিভিন্ন হাদিসসমূহে উল্লেখ হয়েছে।

কোন আসমান কি দিয়ে তৈরিঃ

১ম আসমান তৈরি স্থির পানি দিয়ে, ২য় আসমান তৈরি সাদা মোতির পাথর দিয়ে, ৩য় আসমান তৈরি লোহা দিয়ে, ৪র্থ আসমান তৈরি তামা দিয়ে, ৫ম আসমান তৈরি রৌপ্য দিয়ে, ৬ষ্ঠ আসমান তৈরি স্বর্ণ দিয়ে, ৭ম আসমান তৈরি যমরুদ (মূল্যবান সবুজ পাথর) দিয়ে। সূত্রঃ তাফসীরে রুহুল মা'আনী : ৬/৩০ মাসিক মদিনা তারিখ- অক্টবর ২০১৪ প্রশ্নের উত্তর - ০৯ পৃষ্ঠা - ৪৬

ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন- কুরছি হলো মহান রাব্বুল আলামিনের কুদরতি কদমদ্বয়ের স্থল এবং পবিত্র আরশে আজীম যে কত বড়- তা একমাত্র মহান রাব্বুল আলামিন ব্যাতিত আর কারো জানা নেই। কুরআনে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে-

وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ

তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। -সূরা আল বাকারাহ, আয়াত-২৫৫

সাহাবীদের নিকট এক বর্ণনায় রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- সপ্তম আসমানকে যদি কুরছির সাথে তুলনা করা যায়, তাহলে সপ্তম আসমান হবে একটি থালার মধ্যে নিক্ষিপ্ত ৭টি মুদ্রাতুল্য। কুরছির তুলনায় মহান রাব্বুল আলামিনের আরশে আজীম এতটাই সুবিশাল যে তা প্রান্তরের তুলনায় কড়ার সমতুল্য মাত্র।



এই যদি হয় মহান রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টি, তাহলে সেই সৃষ্টিকর্তার নিকট মানুষ হিসেবে আমরা কতটা ক্ষুদ্র সৃষ্টি তা কি কখনো ভেবে দেখেছি? মহান রাব্বুল আলামিন যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রতিটি সৃষ্টি নির্দিষ্ট আকার ও অনুপাতে বিধায় সুনির্দিষ্ট নিয়মে সবকিছু চলমান। কোথাও কোনো ব্যত্যয় নেই। কোনো বিভেদ নেই। কোনো ছন্দপতন নেই। কোনো ঝঞ্জাট নেই।

قَالَ رَبُّنَا الَّذِي أَعْطَى كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدَى

মূসা আলাইহিস সালাম বললেনঃ আমাদের পালনকর্তা তিনি, যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন। অতঃপর আল্লাহ তাআ'লা প্রতিটি বস্তুকে সুসমন্বিত করেছেন। -সূরা ত্বোয়া হা, আয়াত-৫০

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যেমন সুমহান তাঁর সৃষ্টিও তেমনি মহান, সীমাহীন। আমাদের সীমিত জ্ঞান তাঁর সীমাহীন সত্ত্বাকে যেমন ধারণ করতে অক্ষম তেমনি তাঁর অসীম কুদরত অনুধাবন করাও মানব মস্তিষ্কের সাধ্যের অতীত। কুরআনে হাকিমে তাঁর ঘোষনা-

اللّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ

আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। -সূরা আল বাকারাহ, আয়াত-২৫৫

একই সূরার একই আয়াতের পরবর্তী অংশে তিনি বলেন-

وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاء

তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। -সূরা আল বাকারাহ, আয়াত-২৫৫



এই সুবিশাল ৭ম আসমান, জমিন, কুরছি, আরশে আজীম যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই মহান রাব্বুল আলামিন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা কেমন এবং কত মহান তা তিনি নিজেই পবিত্র কুরআনে হাকিমে ব্যক্ত করেছেন। সুরা ইখলাসে তিনি তাঁর নিজের পরিচয় বিবৃত করেছেন এভাবে-

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ

'বলুন, তিনি আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়।'

اللَّهُ الصَّمَدُ

'আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী'।

لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ

'তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি'।

وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ

'এবং তাহার সমতুল্য কেউই নেই'। -সূরা ইখলাছ, আয়াত-১-৪

তাঁর পরিচয় বিধৃত হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতগুলোতেও-

هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। -সূরা আল হাদীদ, আয়াত-৩

هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَاء وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। -সূরা আল হাদীদ, আয়াত-৪



لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الأمُورُ

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। সবকিছু তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। -সূরা আল হাদীদ, আয়াত-৫

يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَهُوَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রিতে। তিনি অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞাত। -সূরা আল হাদীদ, আয়াত-৬



হে আল্লাহ্! হে চিরঞ্জীব! হে মহিয়ান! হে অনন্ত অসীম! হে নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের একচ্ছত্র মালিক! হে আরশে আজীমের অধিপতি! হে সকল প্রাণের স্রষ্টা! হে সকল অস্তিত্বের রূপকার! আপনি দয়া করে আমাদেরকে বুঝার তাওফিক দান করুন। আপনার অনুপম সৃষ্টিসুষমা, অকল্পনীয় জ্ঞান-গরিমা, অচিন্ত্যনীয় সৃজনকৌশল, অভাবনীয় গুণক্ষমতা অনুধাবন করার মত নূন্যতম জ্ঞানটুকু আমাদের দান করুন। আপনার সৃষ্টির বিশালতার দিকে তাকিয়ে আপনাকে জানার, চেনার এবং মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আপনাকে ভালোবেসে হৃদয় আলোকিত করার তাওফিক দান করুন। আপনার প্রেম-ভালোবাসা-মুহাব্বত দিয়ে পূর্ণ করে দিন হৃদয়-মন-অন্তর। পার্থিব ক্ষুদ্র স্বার্থের মোহজালে জড়িয়ে যেন আপনাকে বিস্মৃত হয়ে না যাই মুহূর্তকালের জন্য। আপনার স্মরণ যেন হয় চোখের শীতলতা, আপনার জিকর যেন হৃদয়ে আনে আনন্দের উষ্ণ হিল্লোল, আপনার সুউচ্চ নামের স্মরণে পাগলপাড়া হয়, ভেঙ্গে চৌচির হয় নিরন্তর- এমন বিগলিত, নির্মল এবং প্রশান্ত অন্তর দান করুন আমাদের।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

নিবন্ধটি প্রণয়ণে সহায়তা নেয়া হয়েছে- উইকিপিডিয়া, মাসিক মদিনা, তাফসীরের বিভিন্ন কিতাব, কুরআনুল কারিম, সিহাহ সাত্তাহসহ অন্যান্য হাদিস গ্রন্থসমূহ এবং বিভিন্ন জার্নাল। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

সাথে থাকা এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে লেখাটি পাঠ করার জন্য কল্যানের দুআ এবং আন্তরিক মুবারকবাদ।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:২৬
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×