আসুন, জেনে নিই কাঁচা রসুনের জাদুকরী উপকারিতাঃ
বিগত ১৫০০ শতকের দিকে চীন ও ভারতে রক্ত পাতলা রাখার জন্য রসুন ব্যবহারের প্রচলন ছিল। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস একে ব্যবহার করেছিলেন সারভাইকাল ক্যানসারের চিকিৎসায়। আর আধুনিক বিজ্ঞানীরা জানালেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে রসুনের কার্যকর ভূমিকার কথা। আসলে, নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ রসুনে রয়েছে রোগ প্রতিরোধের বহুমুখী যাদুকরী ক্ষমতা।
ইউনিভার্সিটি অব কানেক্টিকাট স্কুল অব মেডিসিনের কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ টিমের মতে, কাঁচা রসুন খেলে হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে, রান্না করা রসুনের থেকেও কাঁচা রসুনের উপকারিতা অনেক বেশি। তাই রসুনের সম্পূর্ণ উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিন এক কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে পাওয়া যাবে এর প্রকৃত পুষ্টিগুণ।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক, কাঁচা রসুন খেলে মিলতে পারে আরও যেসব উপকার-
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে:
রসুনের মধ্যে থাকা বায়োঅ্যাকটিভ সালফার, রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শরীরের সালফারের ঘাটতি দেখা দিলে তবেই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে:
রসুনে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা দেহের আনাচকানাচে জমতে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:
রসুনে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ রয়েছে। এই উপাদানটি একদিকে যেমন শরীরে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, তেমনি উচ্চ রক্তচাপকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর এ কথা তো সবারই জানা আছে যে এই দুটি জিনিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে তো হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটার আশঙ্কা একেবারেই থাকে না।
জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে:
ওয়েদার চেঞ্জের সময় যারা সর্দি-কাশিতে খুব ভুগে থাকেন। তারা আজ থেকেই দুই কোয়া রসুন অথবা গার্লিক টি খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন আর কোনও দিন এমন ধরনের শারীরিক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। কারণ রসুন শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে খুব শক্তিশালী বানিয়ে দেয়। ফলে ভাইরাসদের আক্রমণে শরীরের কাহিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।
সংক্রমণ সব দূরে থাকে:
রসুনে থাকা একাধিক কার্যকর উপাদান ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসসহ একাধিক জীবাণুর সংক্রমণ আটকাতে যে কোনও আধুনিক মেডিসিনের থেকে তাড়াতাড়ি কাজে আসে। প্রতিদিন ১-২ কোয়া রসুন খেলে এমন ধরনের সব রোগের খপ্পরে পরার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।
ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে :
শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিনের কারণে ত্বকের যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে রসুন। সে সঙ্গে কোলাজিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখার মধ্যে দিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
রক্ত বিষমুক্ত হয় :
প্রতিদিন এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে দুটি রসুনের কোয়া খেলে রক্তে থাকা নানা বিষাক্ত উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে ত্বক এবং শরীর উভয়ই চাঙা হয়ে ওঠে।
হাড় শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে:
নিয়মিত রসুন খাওয়া শুরু করলে দেহের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি প্রপাটিজের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে একদিকে যেমন নানাবিধ যন্ত্রণা কমে, তেমনি হাড়ের ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
যৌবন দীর্ঘস্থায়ী করতেঃ
যৌবনের স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে রসুনের ভূমিকা দারুন কার্যকর। প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক কোয়া কাঁচা রসুন খেলে যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়। যারা পড়ন্ত যৌবনে চলে গিয়েছেন, তারা প্রতি দিন দু’কোয়া রসুন খাঁটি গাওয়া ঘি-এ ভেজে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন। তবে খাওয়ার শেষে একটু গরম পানি বা দুধ খাওয়া উচিৎ। এতে ভাল ফল পাওয়া যাবে। যৌবন রক্ষার জন্য রসুন অন্যভাবেও খাওয়া যায়। কাঁচা আমলকির রস দুই বা এক চামচ নিয়ে তার সাথে এক বা দুই কোয়া রসুন বাটা খাওয়া যায়। পরিক্ষায় দেখা গেছে, এতে স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়।
অনলাইন থেকে সংগৃহিত এবং সংশোধিত। ছবিঃ অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩১