somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

ভ্রমণ; নিছক বিনোদন নয়, একটি আনন্দময় ইবাদতও

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মক্কাতুল মুকাররমায় বাইতুল্লাহ লাগোয়া দৃষ্টিনন্দন ক্লক টাওয়ার যার অপর নাম আবরাজ টাওয়ার, ছবি http://www.themeccaclocktower.com থেকে সংগৃহীত।

ভ্রমণ; নিছক বিনোদন নয়, একটি আনন্দময় ইবাদতও

মানবজীবন একটি অনন্ত ভ্রমণের অংশবিশেষ। মানুষ অনন্ত সফরের যাত্রী। এই ভ্রমণের সূচনা হলো আমলে আরওয়াহ বা রুহের জগৎ থেকে। এর দ্বিতীয় ধাপ হলো আলমে দুনিয়া তথা দুনিয়ার জীবন। তৃতীয় সোপান হলো আলমে বারজাখ বা অন্তর্বর্তীকালীন জীবন, যা মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত বিস্তৃত। এরপর আখিরাত বা পরকালের অনন্ত জীবন।

ভ্রমণের আরবি হলো সফর, ছায়ের, রেহলাত ইত্যাদি। ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম হজ অর্থও ভ্রমণ এবং ওমরাহ অর্থও ভ্রমণ।

ভ্রমন বা সফরে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ

ইসলাম সফরকে কখনো নিরুৎসাহিত করেনি। কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রসঙ্গে বহুবার ভ্রমনের নির্দেশনা এসেছে। এ কারণেই ভ্রমন এমনই একটি কাজ যা একইসাথে একটি ইবাদত এবং আনন্দেরও মাধ্যম। ইসলামের অন্যতম রুকন বা স্তম্ভ হজ পালন করতে হয় দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে। হজের আনুষ্ঠানিকতাও অনেকটা সফর নির্ভর। সাফা মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে সায়ী করা, বাইতুল্লাহর তাওয়াফ, মিনা, মুযদালিফা এবং আরাফাত ময়দানে অবস্থান এবং পরিভ্রমনসহ ইত্যাদি হজের আবশ্যিক কার্যাদি সম্পাদনের প্রয়োজনে প্রত্যেক হাজির জন্য সফর আবশ্যিক হয়ে ওঠে।

এতদ্ব্যতিত ইসলামের অন্যতম আরেকটি রুকন যাকাত আদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো বিত্তহীন মুসাফিরকে দান করা। অর্থাৎ, বিত্তহীন ও সম্বলহীন মুসাফির বা সফরকারী ব্যক্তির কষ্ট লাঘব পূর্বক তার যাত্রাপথকে মসৃণ করা। এর দ্বারা অনুমান করা যায় যে, মুসাফির বা সফরকারী ব্যক্তিকে যাকাত আদায়ের খাত হিসেবে নির্দিষ্ট করে ইসলাম মূলতঃ ভ্রমনের গুরুত্ব তুলে ধরার সাথে সাথে সামগ্রিক ভ্রমন কার্যক্রমকেই উৎসাহিত করেছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বে সফরের কারণে শ্রেষ্ঠতম আবশ্যিক ইবাদত ফরজ নামাজকে কসর বা সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ দেয়ার মধ্যেও রয়েছে ভ্রমনের বিশেষ অনুমোদন এবং সমর্থন।

এভাবেই বিভিন্ন উপায়ে ইসলাম ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করেছে। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) ভ্রমণের পাঁচটি উপকারিতা উল্লেখ করেছেন। এক. দুশ্চিন্তা দূর হয়। দুই. জীবিকা অর্জন করা যায়। তিন. জ্ঞানার্জন করা যায়। চার. সৌজন্যতা ও শিষ্টাচার শেখা যায়। পাঁচ. শারীরিক সুস্থতা অর্জন হয়।

ভ্রমণের অতীত ও বর্তমান সংস্কৃতিঃ

প্রাচীনকালে আরববাসী ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবিকা নির্বাহ, শিকার এবং মেষ চরানোর লক্ষ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান পরিভ্রমণ করত। কিন্তু শিক্ষামূলক ও উপদেশ গ্রহণের জন্য ভ্রমণের আদেশটি তাদের জন্য একেবারেই নতুন ছিল। আর এ নতুন পন্থাই তাদের জাহেলিয়াতের গহ্বর থেকে টেনে তুলে উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। বর্তমানে ব্যবসা, শিক্ষা, বিনোদন, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কারণে মানুষ ভ্রমণ করে। এসব সফরও যদি কোরআনের নির্দেশের কথা স্মরণ করে ইবাদতের উদ্দেশ্যে করা হয়, তাহলে পার্থিব কল্যাণের পাশাপাশি আখিরাতের জন্য সওয়াবও অর্জিত হবে।

পর্যটন হলো জ্ঞানসমুদ্রের সন্ধান। প্রফুল্ল মন ও শারীরিক সুস্থতার জন্য মাঝেমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করা খুব উপকারী। ভ্রমণ মানুষের মনের পরিধিকে বিস্তৃত করে।

বিশ্বময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আল্লাহর সৃষ্টির লীলারহস্য। এই সৃষ্টিরহস্য ও ঐতিহাসিক নিদর্শনাদি মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রতি মুহূর্ত। বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা বলেছেন, ভ্রমণ স্রষ্টার সৃষ্টিরহস্য জানায়, ভ্রমণ আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। প্রত্যেক মানুষেরই সাধ্যানুসারে কাছে কিংবা দূরে ভ্রমণের মাধ্যমে স্রষ্টার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টিকে দেখে অন্তরকে বিকশিত করা উচিত। মহান আল্লাহর বিশাল সৃষ্টি দর্শন, উপার্জন, জ্ঞান আহরণ, রোগ নিরাময় এবং আত্মশুদ্ধির জন্য ভ্রমণ করার নির্দেশ রয়েছে ইসলামে। কেউ যদি সওয়াবের নিয়তে ভ্রমণ করে, পুরো ভ্রমণেই তার সওয়াব অর্জন হবে। জ্ঞানার্জনের জন্য স্বামী-স্ত্রী সপরিবারে বা দলবদ্ধভাবে ভ্রমণে বা পর্যটনে যাওয়ায় কল্যাণ ও পুণ্য নিহিত রয়েছে। পৃথিবীজুড়ে রয়েছে আল্লাহর কুদরতের নানা কীর্তি। এসব দেখে মানুষ চিন্তা ও গবেষণা করবে। দৃঢ় করবে ঈমান ও আমল। তবে কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে সফর করার অনুমতি ইসলাম প্রদান করেনি।

ভ্রমণ একটি আনন্দময় ইবাদতঃ

ভ্রমণ একটি আনন্দময় ইবাদত এবং জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার উৎস। সফর বা ভ্রমণের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো পূর্ববর্তীদের কীর্তি ও পরিণতি সম্বন্ধে জানা ও শিক্ষা গ্রহণ করা। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۗ وَلَدَارُ الْآخِرَةِ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ اتَّقَوْا ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ

‘তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না এবং তাদের পূর্ববর্তীদের কী পরিণাম হয়েছিল তা কি দেখে না? যারা মুত্তাকি তাদের জন্য পরলোকই শ্রেয়; তোমরা কি বোঝো না?’ -সুরা-১২ ইউসুফ, আয়াত: ১০৯

অন্য আয়াতে তিনি ইরশাদ করেন-

أَوَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ كَانُوا مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَانُوا هُمْ أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَآثَارًا فِي الْأَرْضِ فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ وَمَا كَانَ لَهُم مِّنَ اللَّهِ مِن وَاقٍ

এরা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? করলে দেখত এদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল। পৃথিবীতে তারা ছিল এদের অপেক্ষা শক্তিতে ও কীর্তিতে প্রবলতর। অতঃপর আল্লাহ তাদিগকে শাস্তি দিয়েছিলেন তাদের অপরাধের জন্য এবং আল্লাহর শাস্তি হতে তাদিগকে রক্ষা করার কেউ ছিল না।’ -সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ২১

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে-

أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَانُوا أَكْثَرَ مِنْهُمْ وَأَشَدَّ قُوَّةً وَآثَارًا فِي الْأَرْضِ فَمَا أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُوا يَكْسِبُونَ

‘তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না ও দেখে না তাদের পূর্ববর্তীদের কী পরিণাম হয়েছিল? পৃথিবীতে তারা ছিল এদের অপেক্ষা সংখ্যায় অধিক এবং শক্তিতে ও কীর্তিতে অধিক প্রবল। তারা যা করত তা তাদের কোনো কাজে আসেনি।’ -সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৮২

ভ্রমণ বা সফরের বিশেষ উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি-রহস্য অবলোকন করে জ্ঞানার্জন করা এবং তাঁর কুদরত ও শক্তির প্রতি অনুগত হওয়া। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে নির্দেশনা রয়েছে,

أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَتَكُونَ لَهُمْ قُلُوبٌ يَعْقِلُونَ بِهَا أَوْ آذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَا ۖ فَإِنَّهَا لَا تَعْمَى الْأَبْصَارُ وَلَـٰكِن تَعْمَى الْقُلُوبُ الَّتِي فِي الصُّدُورِ

‘তারা দেশ ভ্রমণ করে না? তা হলে তারা জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন ও শ্রুতিশক্তিসম্পন্ন হতে পারত। বস্তুত চক্ষু তো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হচ্ছে হৃদয়।’ -সুরা-২২ হজ, আয়াত: ৪৬

قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ بَدَأَ الْخَلْقَ ۚ ثُمَّ اللَّهُ يُنشِئُ النَّشْأَةَ الْآخِرَةَ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

বলো, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো এবং অনুধাবন করো, কীভাবে তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছেন? অতঃপর আল্লাহ সৃজন করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহ তো সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ -সুরা-২৯ আনকাবুত, আয়াত: ২০

যাতায়াতব্যবস্থা, রাস্তাঘাট, যানবাহন ও পরিবহন আল্লাহর কুদরতেরই অংশ এবং তা-ও ভ্রমণের নিমিত্তে। কোরআনের ভাষায়,

وَجَعَلْنَا بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الْقُرَى الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا قُرًى ظَاهِرَةً وَقَدَّرْنَا فِيهَا السَّيْرَ ۖ سِيرُوا فِيهَا لَيَالِيَ وَأَيَّامًا آمِنِينَ

‘তাদের ও যেসব জনপদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলাম, যেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে বহু জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং ওই সব জনপদে ভ্রমণের যথাযথ ব্যবস্থা করেছিলাম এবং তাদিগকে বলেছিলাম, “তোমরা এসব জনপদে নিরাপদে ভ্রমণ করো দিবস ও রজনীতে।” -সুরা-৩৪ সাবা, আয়াত: ১৮

ইসলামি আইনবিদদের মতে, সব মুসলমানের জন্য আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে সামর্থ্য অনুযায়ী সফর করা ও ভ্রমণ করা কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা বলেন,

قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِكُمْ سُنَنٌ فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ

‘তোমাদের পূর্বে বহু বিধান-ব্যবস্থা গত হয়েছে, সুতরাং তোমরা পৃথিবী ভ্রমণ করো এবং দেখো মিথ্যাশ্রয়ীদের কী পরিণাম!’ -সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৭

قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ ثُمَّ انظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ

বলো, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো, অতঃপর দেখো, যারা সত্যকে অস্বীকার করেছে তাদের পরিণাম কী হয়েছিল!’ -সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১১

فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ

‘সুতরাং পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো এবং দেখো, যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কী হয়েছে?” -সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৩৬

قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ

‘পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো এবং দেখো, অপরাধীদের পরিণাম কীরূপ হয়েছে।’ -সুরা-২৭ নমল, আয়াত: ৬৯

قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلُ ۚ كَانَ أَكْثَرُهُم مُّشْرِكِينَ

‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো এবং দেখো তোমাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছে’! তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।’ -সুরা-৩০ রুম, আয়াত: ৪২

শীত, বসন্ত ও গ্রীষ্মকাল ভ্রমণের আদর্শ সময়। কোরআনের বর্ণনায়,

لِإِيلَافِ قُرَيْشٍ إِيلَافِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَـٰذَا الْبَيْتِ الَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ وَآمَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ

‘কুরাইশদের অনুরাগ, তাদের আসক্তি শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ। সুতরাং তাদের উচিত এই (কাবা) ঘরের প্রভুর ইবাদত করা। যিনি ক্ষুধায় তাদের অন্ন দিয়েছেন; ভয়ে দিয়েছেন নিরাপত্তা।’ -সুরা-১০৬ কুরাইশ, আয়াত: ১-৪

ভ্রমণে বের হওয়ার আগে করণীয়ঃ

ইসলামী শরিয়তে ভ্রমণের কিছু আদব রয়েছে, তা অনুসারে চলাফেরা করলে ভ্রমণ দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা যাবে বলে রাসুল (সা.) ঘোষণা দিয়েছেন। নিচে এসংক্রান্ত কিছু সুন্নত তুলে ধরা হলো—

বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ের দুআ ও যিক্‌রঃ

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দোয়া পড়তে বলেছেন-

بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি, তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি।’

অর্থ : আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি); আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো উপায় নেই; আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো শক্তিও নেই।’ -আবূ দাউদ ৪/৩২৫, নং ৫০৯৫; তিরমিযী ৫/৪৯০, ৩৪২৬। আরও দেখুন, সহীহুল তিরমিযী, ৩/১৫১

اللّٰـهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أُضَلَّ، أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أُزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أُظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ

আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযু বিকা আন আদ্বিল্লা, আও উদ্বাল্লা, আও আযিল্লা, আও উযাল্লা, আও আযলিমা, আও উযলামা, আও আজহালা, আও ইয়ুজহালা ‘আলাইয়্যা

“হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই যেন নিজেকে বা অন্যকে পথভ্রষ্ট না করি, অথবা অন্যের দ্বারা পথভ্রষ্ট না হই; আমার নিজের বা অন্যের পদস্খলন না করি, অথবা আমায় যেন পদস্খলন করানো না হয়; আমি যেন নিজের বা অন্যের উপর যুলম না করি অথবা আমার প্রতি যুলম না করা হয়; আমি যেন নিজে মুর্খতা না করি, অথবা আমার উপর মূর্খতা করা না হয়।” -সুনান গ্রন্থকারগণ: আবূ দাউদ, নং ৫০৯৪; তিরমিযী, নং ৩৪২৭; নাসাঈ, নং ৫৫০১; ইবন মাজাহ, নং ৩৮৮৪। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৫২; সহীহ ইবন মাজাহ্‌ ২/৩৩৬

বাহনে আরোহণের দুআঃ

بِسْمِ اللَّهِ، وَالْحَمْدُ للَّهِ ﴿سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ، وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ﴾، «الْحَمْدُ لِلَّهِ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي؛ فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ

বিস্‌মিল্লা-হি, আলহাম্‌দু লিল্লা-হি, সুব্‌হা-নাল্লাযী সাখখারা লানা হা-যা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন। ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনক্বালিবূন, আলহামদুলিল্লা-হ, আলহামদুলিল্লা-হ, আলহামদুলিল্লা-হ, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী ফাগফির লী। ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা

“আল্লাহ্‌র নামে; আর সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য। পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি একে আমাদের জন্য বশীভূত করে দিয়েছেন, অন্যথায় আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আর আমরা অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করবো আমাদের রব্বের দিকে। সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য। আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র-মহান; আমি আমার নিজের উপর যুলুম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে মাফ করে দিন। কেননা, আপনি ছাড়া গুনাহ মাফ করার আর কেউ নেই।” -আবু দাঊদ ৩/৩৪, ২৬০২; তিরমিযী ৫/৫০১, নং ৩৪৪৬। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৫৬। আর আয়াত দু’টি হচ্ছে, সূরা আয-যুখরুফের ১৩-১৪

সফরে বের হওয়ার সময় পঠিতব্য দুআঃ

اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، ﴿سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ * وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ﴾ «اللَّهُمَّ إِنّا نَسْأَلُكَ فِي سَفَرِنَا هَذَا البِرَّ وَالتَّقْوَى، وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضَى، اللَّهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هَذَا وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهُ، اللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ، وَالْخَليفَةُ فِي الْأَهْلِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ، وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ، وَسُوءِ الْمُنْقَلَبِ فِي الْمَالِ وَالْأَهْلِ

আল্লা-হু আকবার আল্লা-হু আকবার আল্লা-হু আকবার। সুব্‌হা-নাল্লাযী সাখখারা লানা হা-যা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীনা। ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনক্বালিবূন। আল্লা-হুম্মা ইন্না নাস’আলুকা ফী সাফারিনা হা-যাল-বিররা ওয়াত্তাকওয়া, ওয়ামিনাল ‘আমালি মা তারদ্বা। আল্লা-হুম্মা হাউইন ‘আলাইনা সাফারানা হা-যা ওয়াতউই ‘আন্না বু‘দাহু। আল্লা-হুম্মা আনতাস সা-হিবু ফিস সাফারি ওয়াল-খালীফাতু ফিল আহ্‌লি। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযু বিকা মিন ওয়া‘আসা-ইস্ সাফারি ওয়া কা’আবাতিল মানযারি ওয়া সূ-ইল মুনক্বালাবি ফিল মা-লি ওয়াল আহল)।

“আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়। পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি আমাদের জন্য একে বশীভূত করে দিয়েছেন, অন্যথায় আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আর আমরা অবশ্যই আমাদের রব্বের নিকট প্রত্যাবর্তন করব।

হে আল্লাহ! আমরা এই সফরে আপনার কাছে চাই পূণ্য ও তাকওয়া এবং এমন কাজ যা আপনি পছন্দ করেন। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য এই সফরকে সহজ করে দিন এবং এর দুরত্বকে আমাদের জন্য কমিয়ে দিন। হে আল্লাহ্! আপনিই সফরে আমাদের সাথী এবং আমাদের পরিবার-পরিজনের তত্ত্বাবধায়ণকারী। হে আল্লাহ! আমরা আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট-ক্লেশ থেকে, অবাঞ্ছিত অবস্থার দৃশ্য থেকে এবং সম্পদ ও পরিবারে অনিষ্টকর প্রত্যাবর্তন থেকে।”

আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফেরার সময়ও তা পড়তেন এবং তাতে যোগ করতেন,

«آيِبُونَ، تائِبُونَ، عَابِدُونَ، لِرَبِّنَا حَامِدُونَ».

(আ-ইবূনা তা-ইবূনা ‘আ-বিদূনা, লিরব্বিনা হা-মিদূন)।

“আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমাদের রব্বের প্রশংসাকারী।” -মুসলিম ২/৯৭৮, হাদীস নং ১৩৪২

গ্রাম বা শহরে প্রবেশের দুআঃ

اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَمَا أَظْلَلْنَ، وَرَبَّ الأَرَضِينَ السَّبْعِ وَمَا أَقْلَلْنَ، وَرَبَّ الشَّياطِينِ وَمَا أَضْلَلْنَ، وَرَبَّ الرِّيَاحِ وَمَا ذَرَيْنَ، أَسْأَلُكَ خَيْرَ هَذِهِ الْقَرْيَةِ، وَخَيْرَ أَهْلِهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ أَهْلِهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا».

আল্লা-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তিস্ সাব‘ঈ ওয়ামা আযলালনা, ওয়ারব্বাল আরাদ্বীনাস সাব‘ঈ ওয়ামা আক্বলালনা, ওয়া রব্বাশ শাইয়া-তী-নি ওয়ামা আদ্বলালনা, ওয়া রব্বাররিয়া-হি ওয়ামা যারাইনা, আস’আলুকা খাইরা হা-যিহিল কারইয়াতি ওয়া খাইরা আহলিহা ওয়া খাইরা মা ফীহা। ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি আহলিহা ওয়া শাররি মা ফীহা

“হে আল্লাহ! সাত আসমান এবং তা যা কিছু ছায়া দিয়ে রেখেছে তার রব্ব! সাত যমীন এবং তা যা ধারণ করে রেখেছে তার রব্ব! শয়তানদের এবং ওদের দ্বারা পথভ্রষ্টদের রব্ব! বাতাসসমূহ এবং তা যা উড়িয়ে নেয় তার রব্ব! আমি আপনার নিকট চাই এ জনপদের কল্যাণ, এ জনপদবাসীর কল্যাণ এবং এর মাঝে যা আছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই এ জনপদের অনিষ্ট থেকে, তাতে বসবাসকারীদের অনিষ্ট থেকে এবং এর মাঝে যা আছে তার অনিষ্ট থেকে।” -হাকেম, আর তিনি একে সহীহ বলেছেন এবং ইমাম যাহাবী সেটা সমর্থন করেছেন ২/১০০; ইবনুস সুন্নী, নং ৫২৪। তাছাড়া হাফেয ইবন হাজার তাঁর তাখরীজুল আযকার ৫/১৫৪, একে হাসান বলেছেন। আল্লামা ইবন বায রাহেমাহুল্লাহ বলেন, ‘হাদীসটি নাসাঈ হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন।’ দেখুন, তুহফাতুল আখইয়ার, পৃ. ৩৭

বাহন হোঁচট খেলে পড়ার দুআঃ

بِسْمِ اللَّ

বিসমিল্লা-হ)

“আল্লাহ্‌র নামে।” -আবূ দাউদ, ৪/২৯৬, নং ৪৯৮২। আর শাইখ আলবানী একে সহীহ বলেছেন, সহীহ আবি দাউদে, ৩/৯৪১

মুক্বীম বা অবস্থানকারীদের জন্য মুসাফিরের দুআঃ

«أَسْتَوْدِعُكُمُ اللَّهَ الَّذِي لاَ تَضِيعُ وَدَائِعُهُ».

(আস্তাউদি‘উ কুমুল্লা-হাল্লাযী লা তাদ্বী‘উ ওয়াদা-ই‘উহু)।

“আমি তোমাদেরকে আল্লাহ্‌র হেফাযতে রেখে যাচ্ছি, যাঁর কাছে রাখা আমানতসমূহ কখনও বিনষ্ট হয় না। -আহমাদ ২/৪০৩, নং ৯২৩০; ইবন মাজাহ্‌, ২/৯৪৩, নং ২৮২৫। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ্‌ ২/১৩৩

মুসাফিরের জন্য মুক্বীম বা অবস্থানকারীর দুআঃ

أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكَ، وَأَمَانَتَكَ، وَخَوَاتِيمَ عَمَلِكَ».

(আস্তাউদি‘উল্লা-হা দ্বীনাকা ওয়া আমা-নাতাকা ওয়া খাওয়া-তীমা ‘আমালিকা)।

“আমি আপনার দ্বীন, আপনার আমানত (পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ) এবং আপনার সর্বশেষ আমলকে আল্লাহ্‌র হেফাযতে রাখছি।” -আহমাদ ২/৭, ৪৫২৪, তিরমিযী ৫/৪৯৯, নং ৩৪৪৩।

আর শাইখ আলবানী একে সহীহু সুনানিত তিরমিযীতে ৩/৪১৯ সহীহ হাদীস বলেছেন

«زَوَّدَكَ اللَّهُ التَّقْوَى، وَغَفَرَ ذَنْبَكَ، وَيَسَّرَ لَكَ الخَيْرَ حَيْثُ ما كُنْتَ».

(যাওয়াদাকাল্লাহুত তাক্বওয়া, ওয়াগাফারা যানবাকা, ওয়া ইয়াসসারা লাকাল খাইরা হাইসু মা কুনতা)।

“আল্লাহ আপনাকে তাকওয়ার পাথেয় প্রদান করুন, আপনার গুনাহ ক্ষমা করুন, আর যেখানেই থাকুন না কেন আপনার জন্য কল্যাণকে সহজ করে দিন।” -তিরমিযী, নং ৩৪৪৪; আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৫৫

সফরে চলার সময় তাকবীর ও তাসবীহঃ

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كُنَّا إِذَا صَعِدْنَا كَبَّرْنَا، وَإِذَا نَزَلْنَا سَبَّحْنَا‏.

‘জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “আমরা যখন উঁচুতে আরোহণ করতাম তখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলতাম, আর যখন নীচের দিকে নামতাম তখন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলতাম।” -বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৬/১৩৫, নং ২৯৯৩

রাত্রির শেষ প্রহরে মুসাফিরের দুআঃ

«سَمَّعَ سَامِعٌ بِحَمْدِ اللَّهِ، وَحُسْنِ بَلاَئِهِ عَلَيْنَا، رَبَّنَا صاحِبْنَا، وَأَفْضِلْ عَلَيْنَا، عَائِذاً بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ».

(সাম্মা‘আ সা-মি‘উন বিহামদিল্লা-হ, ওয়া হুসনি বালা-ইহী ‘আলাইনা, রাব্বানা সা-হিবনা, ওয়া আফদিল ‘আলাইনা, ‘আ-ইযান বিল্লা-হি মিনান না-রী)

“আমরা যে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করলাম, আর আমাদের উপর তাঁর উত্তম নেয়ামতের ঘোষণা দিলাম, তা একজন শ্রোতা আমার এ কথা শুনে অন্যের কাছে পৌঁছে দিক। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের সাথী হোন, আর আমাদের উপর অনুগ্রহ বর্ষণ করুন। আগুন থেকে আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয়প্রার্থী হয়ে (এ দো‘আ করছি)।” -মুসলিম, ৪/২০৮৬, নং ২৭১৮। আর হাদীসে ব্যবহৃত سَمِعَ سامِعٌ শব্দের অর্থ, ‘একজন সাক্ষ্যদাতা সাক্ষ্য প্রদান করুন যে, আমরা আল্লাহর প্রশংসা করেছি তার যাবতীয় নেয়ামতের উপর, তাঁর উত্তম দান-দয়ার উপর।’ আর যদি হাদীসে ব্যবহৃত শব্দটিকে سَمَّعَ سامِعٌ ধরা হয়, তখন অর্থ হবে, ‘একজন শ্রোতা আমার এ কথা শুনে তা অন্যের কাছে পৌঁছে দিক।’ আর এ-কথাটি তিনি বলেছেন শেষ রাত্রির দো‘আ ও যিকর সম্পর্কে সচেতন করার জন্য। শারহুন নাওয়াওয়ী ‘আলা সহীহ মুসলিম, ১৭/৩৯

সফরে বা অন্য অবস্থায় কোনো ঘরে নামলে পড়ার দুআঃ

«أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ».

(আ‘ঊযু বি কালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাক্ব)

“আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।” -মুসলিম, ৪/২০৮০, নং ২৭০৯

সফর থেকে ফেরার যিকরঃ

প্রতিটি উঁচু স্থানে তিন বার তাকবীর দিবে, তারপর বলবে,

« لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، آيِبُونَ، تَائِبُونَ، عَابِدُونَ، لِرَبِّنا حَامِدُونَ، صَدَقَ اللَّهُ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزابَ وَحْدَهُ».

(লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর, আ-ইবূনা, তা-ইবূনা, ‘আ-বিদূনা, লি রাব্বিনা হা-মিদূন। সাদাক্বাল্লা-হু ওয়া‘দাহু, ওয়া নাসারা ‘আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু)

“একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমাদের রব্বের প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা বাস্তবায়ন করেছেন, তিনি তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন, আর তিনি সকল বিরোধী দল-গোষ্ঠীকে একাই পরাস্ত করেছেন।” -নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো যুদ্ধ অথবা হজ্জ থেকে ফিরতেন, তখন এগুলো বলতেন। বুখারী, ৭/১৬৩, নং ১৭৯৭; মুসলিম, ২/৯৮০, নং ১৩৪৪

ভ্রমণে বের হওয়ার আগে আরও কিছু করণীয়ঃ

একাকি ভ্রমণ না করা। কমপক্ষে দু'জন মিলে ভ্রমণ করা। যে কোনো যানবাহনে আরোহণের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া। যানবাহনে বসার পর তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়া।

জলযানে আরোহনের পূর্বে পাঠ করতে হয়ঃ

নৌকা, জাহাজ ইত্যাদিতে ভ্রমণের সময় এই দোয়া পড়া,

‘বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরসা-হা, ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রহিম।’

ভ্রমণের সময় সঙ্গে কুকুর না রাখা। ভ্রমণ থেকে ফিরে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা এবং এই দোয়া পাঠ করা।

নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ইসলামের নির্দেশনাঃ

ভ্রমণ ও চলাচল মানবজীবনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের ভ্রমণ করতে বলেছেন, যেন তারা সৃষ্টিজগতে বিদ্যমান আল্লাহর অসীম কুদরত দেখতে পারে। দুর্ঘটনায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়। সড়ক বা ভ্রমণ দুর্ঘটনার বাহ্যিক বিভিন্ন কারণ আছে। কিন্তু ধর্মীয় পণ্ডিতরা এর কিছু ধর্মীয় কারণও উল্লেখ করেছেন। সড়ক বা ভ্রমণ দুর্ঘটনার ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, প্রথমত, মৃত্যু সৃষ্ট জীবের অনিবার্য নিয়তি ও পরিণতি। ইসলামী বিশ্বাস মতে, নির্দিষ্ট সময়েই মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু পৃথিবী যেহেতু দারুল আসবাব বা কারণ-উপকরণের প্রকাশস্থল, তাই কারো মৃত্যুর জন্য ভ্রমণ দুর্ঘটনা বাহ্যিক উপলক্ষ ছাড়া আর কিছুই নয়।

দ্বিতীয়ত, পৃথিবীতে যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না, অপরাধী মানুষ আল্লাহর ভূখণ্ডে অবাধে বিচরণ করে তখন তারা যেকোনো সময়েই ভয়াবহ আজাবে নিপতিত হতে পারে। আল্লাহর আজাব এলে অপরাধী-নিরপরাধী সবাই আজাবে পতিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা পাপাচার ও অপকর্মের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়ে গেছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে ধসিয়ে দেবেন না, কিংবা এমন দিক থেকে শাস্তি আসবে না, যা তাদের ধারণাতীত? কিংবা তিনি তাদের পাকড়াও করবেন, যখন তারা চলাফেরা করতে থাকবে।’ -সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫, ৪৬

তৃতীয়ত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ‘যখন সমাজে জিনা-ব্যভিচার বেড়ে যাবে তখন তাদের মধ্যে মৃত্যু ব্যাপক হয়ে যাবে...যখন বিচারকার্যে অবিচার করা হবে তখন তাদের মধ্যে খুনখারাবি ছড়িয়ে পড়বে।’ -মুয়াত্তা, ইমাম মালেক

সফর অবস্থায় কিছু করণীয়ঃ

যেহেতু সফর একটি বিধিবদ্ধ ইবাদত, তাই সফরের রয়েছে বিশেষ কিছু বিধিবিধান। এখানে তার কিছু বিধি-বিধান তুলে ধরার চেষ্টা করছি-

সফরের সময়সীমা এবং দূরত্বঃ

ইসলামি শরিয়তে ফিকহি পরিভাষায় সফর বলা হয়: আপন বাসস্থান কিংবা কর্মস্থল থেকে ৪৮ (আটচল্লিশ) মাইল বা ৭০ (সত্তর) কিলোমিটার দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মহল্লা বা গ্রাম থেকে বের হওয়া। গন্তব্যে পৌঁছার আগ পর্যন্ত সফর অবস্থা বহাল থাকে। সফরে গমনকারী বা ভ্রমণকারীকে আরবিতে বলে মুসাফির। গন্তব্য যদি নিজ বাড়ি বা কর্মক্ষেত্র হয়, তবে সেখানে পৌঁছার পর আর মুসাফির থাকবেন না। আর গন্তব্য যদি নিজ বাড়ি বা কর্মক্ষেত্র না হয় এবং সেখানে অন্তত ১৫ দিবস রজনী থাকার নিয়ত বা ইচ্ছা না থাকে, তাহলে সফর অবস্থা বহাল থাকবে।

সফরের হালতে নামাজ কসর করতে হবেঃ

সফর অবস্থায় চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ কছর করতে হয়, অর্থাৎ চার রাকাতের স্থলে দুই রাকাত পড়তে হয় এবং সুন্নত নামাজ নফল পর্যায়ভুক্ত হয়। সফর অবস্থায় প্রয়োজনে ফরজ রোজা পরে রাখা যায়। সফর অবস্থায় ঈদের নামাজ ও জুমুআর নামাজ এবং কোরবানি ওয়াজিব হয় না। তবে সুযোগ থাকলে আদায় করা উত্তম।

সফর অবস্থায় অধিক পরিমানে দুআ করাঃ

সফরে দোয়া কবুল হয়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, তিন ব্যক্তির দুআ আল্লাহ তাআ'লা ফিরিয়ে দেন না, তাদের মধ্যে মুসাফিরের দুআ অন্তর্ভূক্ত। এ কারণে সফরে থাকাবস্থায় অধিক পরিমানে দুআর ইহতিমাম করা উচিত।

অমুসলিম দেশে ভ্রমণ করার হুকুম কী?

তিনটি শর্ত সাপেক্ষে অমুসলিম দেশে ভ্রমণ করা বৈধ:

১. ভ্রমণকারীর কাছে প্রয়োজনীয় ইলম বিদ্যমান থাকা, যার মাধ্যমে সকল সন্দেহ থেকে বিরত থাকা সম্ভব।

২. তার কাছে এমন দীনদারী বিদ্যমান থাকা, যার মাধ্যমে সে নফসের প্রবৃত্তি দমনে সক্ষম হবে।

৩. অমুসলিম দেশে ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান থাকা।

উপরের শর্তগুলো পাওয়া না গেলে অমুসলিম দেশে সফর করা বৈধ নয়। কেননা এতে ফিতনার ভয় রয়েছে। এতে প্রচুর সম্পদও বিনষ্ট হয়ে থাকে। তবে যদি প্রয়োজন দেখা দেয় যেমন চিকিৎসার জন্য অথবা শিক্ষা অর্জনের জন্য, যা অন্য কোনো দেশে পাওয়া যায় না, তা হলে কোনো অসুবিধা নেই। -সূত্রঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, ঈমান অধ্যায়, শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ), অনলাইন লিঙ্ক: https://www.hadithbd.com/books/link/?id=627

পর্যটনের উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণের বিধান কী?

পর্যটনের উদ্দেশ্যে অমুসলিম দেশে ভ্রমণ করার কোনো দরকার নেই; বরং এমন ইসলামী দেশে যাওয়া যায় যেখানে ইসলামের বিধিবিধান পালন করা হয়। আমাদের ইসলামী দেশসমূহে আল্লাহর মেহেরবাণীতে যথেষ্ট পর্যটনের স্থান রয়েছে। সেখানে পর্যটনের জন্য যাওয়া এবং সেখানে গিয়ে ছুটি কাটানো সম্ভব। -সূত্রঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, ঈমান অধ্যায়, শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ), অনলাইন লিঙ্ক: https://www.hadithbd.com/books/link/?id=627

পর্যটন জ্ঞানসমুদ্রের সন্ধানপ্রাপ্তির সোপানঃ

পর্যটনকে ইসলামী চিন্তাবিদগণ জ্ঞানসমুদ্রের সন্ধানলাভের সাথে তুলনা করেছেন। সুস্থ্ দেহ ও সুন্দর মন তথা শারীরিক ও মানসিক শান্তি, প্রশস্তি ও উন্নতির জন্য ভ্রমণ খুবই উপকারী। এ জন্যই হযরত শেখ শাদি রহমাতুল্লাহি আলাইহি পৃথিবীতে দু’ব্যক্তিকে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলে অভিহিত করেছেন, তারা হচ্ছেন- ১. ভাবুক বা চিন্তাশীল ব্যক্তি এবং ২. দেশ সফরকারী ব্যক্তি।

বস্তুত পক্ষে পর্যটনের ধারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম-এর সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে, আল্লাহ তাআলা যা প্রত্যেক নবী ও রাসূলের বাস্তব জীবনে ঘটিয়ে দেখিয়েছেন। আমাদরে প্রিয়তম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসরা বা মিরাজও এ পর্যটনেরই অন্তর্ভূক্ত। তাইতো পৃথিবীর আদি থেকে অদ্যাবধি ইতিহাসের পাতায় অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী, পণ্ডিত, নবী-রাসূলের নাম পাওয়া যায়, যাঁরা পৃথিবীর নানা প্রান্ত ভ্রমণ করে ভ্রমণেতিহাসে অমর হয়ে আছেন। যার গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে কুরআনুল কারিমে বর্ণিত ভ্রমন বিষয়ক বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে বর্ণিত আয়াতে কারিমায়।

ভ্রমণের বাহ্যিক কিছু উপকারিতা-

ক.মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ও আত্মার প্রশান্তি লাভ
খ. আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে ধারণা লাভ
গ. প্রাকৃতিক তথা জীব বৈচিত্রের স্বভাব-চরিত্রের ধারণা
ঘ. সৃষ্টি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা অর্জন
ঙ. ভ্রাতৃত্বের বন্ধন শক্তিশালীকরণ
চ. সৃষ্টিজগৎ সম্পর্কে নানামুখী জ্ঞানার্জন
ছ. সর্বোপরি আল্লাহ তাআ'লার হুকুম পালনের মাধ্যমে মহান স্রষ্টার পরিচয় লাভ ও নৈকট্যার্জনের সুযোগলাভ।

ভ্রমণের কিছু করণীয়ঃ

ক. আল্লাহর সাহায্য কামনা করে ভ্রমণে বের হওয়া
খ. একাধিক ব্যক্তি এক সঙ্গে ভ্রমণ করলে একজনকে দলনেতা বানানো
গ. ভ্রমণে ইবাদতের নিয়ম কানুন জেনে নেয়া
ঘ. রাস্তার হক তথা পর্দা মেনে চলা
ঙ. অবৈধ ও গর্হিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা
চ. সর্বোপরি দর্শণীয় স্থানসমূহ দেখে আল্লাহ তাআ'লার শুকরিয়া আদায় করা।

ভ্রমণে বর্জণীয়ঃ

ক. রুচি বহির্ভূত পোশাক পরিহার করা
খ. বৈধ অভিভাবক ছাড়া ভ্রমণে বের না হওয়া
গ. ভ্রমণে অপচয় না করা
ঘ. নিষিদ্ধ ও অবৈধ কথা-বার্তা, আচার-আচরণ পরিহার করা
ঙ. আল্লাহ তাআ'লার নির্দশন বহনকারী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধনকারী উপাদানের ক্ষতি না করা এবং সেগুলো বিনষ্ট না করা
চ. সব ধরনের অনিষ্ট হতে আল্লাহ তাআ'লার নিকট পানাহ চাওয়া।

পরিশেষে...

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার অতুলনীয় এবং অভাবনীয় রহস্যে ভরপুর সৃষ্টি সুবিশাল এই মহাবিশ্ব। অপরিমেয় বিশালতা আর বিপুলায়তনের মহাবিশ্বের অতি ক্ষুদ্র সদস্য হলেও পৃথিবী আমাদের কাছে নিঃসন্দেহে বিশাল। এই পৃথিবীর সৃজন, এর শৃঙ্খলাপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, নির্খুত রক্ষনাবেক্ষন এবং সুনিপূন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কুরআনুল কারিম এবং হাদিসে নববীর বর্ণনায় যে বিবরণ আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে, ভ্রমনের মাধ্যমে তা বাস্তবে প্রত্যক্ষ্ করে, সচক্ষে সরাসরি অবলোকন করে আমাদের ঈমান ও আমলকে মজবুত করাই হোক ভ্রমন এবং পর্যটনের মূল উদ্দেশ্য। একই সাথে ভ্রমন ও পর্যটন হোক দৈহিক ও মানসিক প্রশান্তিলাভের অন্যতম মাধ্যম। ভ্রমনের মাধ্যমে কুরআন সুন্নাহর আলো ঘরে ঘরে পৌছে দেয়া হোক আমাদের অন্তরের ঐকান্তিক প্রত্যাশা। ইসলামের সুমহান আদর্শকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই আমরা যেন ভ্রমনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হই। কথা-কাজে আমরা যেন ভ্রমনেও দায়ী' ইলাল্লাহ হিসেবে সকলের অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় হতে পারি- সেরকম উন্নত চরিত্র ও উত্তম আদর্শ আমাদের দান করুন।

এই বিষয়ক পূর্বে প্রকাশিত একটি লেখা-

ইসলামী শরিয়াতে পর্যটনের গুরুত্ব
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪০
১৪টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×