
তিনি ছিলেন ভয়ঙ্কর সাইকো
ঠান্ডা মাথার নৃশংস খুনি
হাজারও মায়ের বুক খালি করেছেন তিনি
তার হুকুমে গুম করা হতো ধরে ধরে
তার আঙুলের ইশারায়
খুন করা হতো ভিন্নমতাবলম্বীদের-
নদীতে, সাগরে, নর্দমায়
ভাসিয়ে দেওয়া হতো তাদের নিথর দেহ
তিনি মনেপ্রাণে পরিপূর্ণভাবেই ছিলেন
প্রতিবেশি একটি দেশের নির্লজ্জ সেবাদাসী
স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেও
কখনো কখনো তাকে সম্বোধন করা হতো “মুখ্যমন্ত্রী” বলে,
তবুও এ নিয়ে তিনি কখনও কিছু বলতেন না
এসব আদৌ তার গায়েই লাগতো না,
কারণ, তিনি জানতেন-
তার গদি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব
তাকে “মুখ্যমন্ত্রী” বলা সেই দাদাদের হাতেই
তার সভাসদগণ সেদেশে গিয়ে
তাদের পায়ে মাথা ঠুকতেন আর প্রকাশ্যেই
আরেকটি টার্ম ক্ষমতায় রাখার আঁকুতি জানাতেন
ছি! কতটা নির্লজ্জ হলে অন্য দেশের কাছে নিজেদেরকে
এমন নিকৃষ্টভাবে সোপর্দ-সমর্পন-বিকিয়ে দেওয়া যায়?
সীমান্তে কাঁটাতারে ঝুলতো তার দেশের নাগরিকদের লাশ
ফেলানিদের মত তন্বী তরুনী কিশোরীর নিথর মরদেহ থেকে
রক্ত গড়িয়ে পড়তো ফসলের ক্ষেতে,
আর্ত মানবতার চিৎকারে
ভেঙে খান খান হতো পল্লীর নিরবতা
শুধু কাঁপতো না তার পাষান হৃদয়
কোনো প্রতিবাদ ছিল না-
তিনি থাকতেন সবসময়ই নিরব নিশ্চুপ
কারণ, ভূয়া ভোটের প্রধানমন্ত্রী কখনো প্রতিবাদ করতে পারে না
অভিন্ন নদীগুলোর পানি একতরফা কেড়ে নিত দাদারা,
বিশুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হতো বাংলাদেশের খেতখামার,
মরতো মাছ, শুকিয়ে খা খা করতো পদ্মা-মেঘনা-যমুনার বুক
তবুও তিনি ছিলেন নির্বিকার
কারণ, তিনি জানতেন,
রাতের ভোটের ঋণ শোধ হয় নীরবতার মাধ্যমেই
তিনি দেশ বিক্রি করেছেন বন্দর আর বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিতে
প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বেচে দিয়েছেন অবলীলায়-
চকচকে চুক্তির ফাইলের বিনিময়ে
আদানির বিদ্যুতের নামে রক্তচোষা চুক্তি,
গ্যাস-তেল-কয়লা সব কিছু বেহাত
তবুও তিনি বলতেন- “উন্নয়ন হচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে।”
তার আমলে শ্বাসরোধ করা হয়েছিল বাকস্বাধীনতার
ফেসবুকের পোস্টে হতো সাত বছরের জেল,
একটি সমালোচনামূলক মন্তব্যেই ভাগ্যে জুটতো হাজতবাস
সাংবাদিকের কলম থেমে যেত গোপন হুমকিতে,
পত্রিকার ছাপা বন্ধ হয়ে যেত রাতারাতি
কিন্তু তিনি গর্ব করতেন-
“বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে।”
তার আমলে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার যেত না
কারণ রাতের আঁধারে ভোট হয়ে যেত আগেই
ভোটের বাক্স ভর্তি হয়ে আসত পুলিশ-প্রশাসনের পাহারায়
মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছে,
কিন্তু তিনি গর্ব করতেন- “নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।”
তিনি দেশের শিক্ষার্থীদের উপর চালিয়েছেন সন্ত্রাস,
কোটা সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় নামা তরুণদের রক্তাক্ত করেছেন
সর্বশেষ ২০২৪ এর আন্দোলনে তিনি
পাইকারিভাবে খুন করিয়েছেন ছাত্রদের
সে এক বিভৎস দৃশ্য!
গুলির আঘাতে ঝাঝরা দেহ ছাত্র জনতার
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয়ে উঠেছিল ছাত্র নামধারী
লুটেরা অস্ত্রবাজ অছাত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা
তবুও তিনি বলতেন- “তরুণরাই আমার শক্তি।”
তিনি ছিলেন ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদী-
যিনি ক্ষমতার লোভে দেশকে বিকিয়ে দিয়েছেন,
যিনি এস আলমদের মত দস্যুদের দিয়ে
দেশে ব্যাংকলুটের নতুন দিগন্ত উম্মোচন করেছেন,
অতঃপর এই লুটেরাদের মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার করেছেন
বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা
যার ফলশ্রুতিতে ফোকলা হয়েছে দেশের অর্থনীতি,
যিনি মায়ের কান্নাকে উপহাস করেছেন,
যিনি শহীদদের রক্ত নিয়ে খেলেছেন,
যিনি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন বারবার
অবশেষে, তার পতন হলো নিজের তৈরি গহ্বরে
দাদারা আর বাঁচাতে পারলো না তাকে,
কারণ কোটি কোটি মজলুমের হৃদয়ের তন্ত্রীছেঁড়া কান্না
আর হাজারো সন্তানহারা মায়ের নিরন্তর অভিশাপ
পৌঁছে গিয়েছিল আসমান জমিনের মালিকের কাছে,
যিনি বিপন্ন আত্মার কান্নাকে কখনো ফিরিয়ে দেন না
চোখের অশ্রুর মূল্য যার কাছে অনেক অনেক বেশি
তাই অবশেষে নেমে এলো তাঁর ইনসাফপূর্ণ বিচার
যার ফলে তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে এক কাপড়ে
বছরাধিককাল যাবত তিনি অবস্থান করছেন
তার অতি প্রিয় সেই আবাসভূমিতে
রাষ্ট্রীয় আতিথ্যে বিলাসী জীবন সেখানেও
সারা জীবন ধরে
যে দেশটিকে তিনি ভালোবেসে এসেছেন
নিজের দেশের চেয়েও অনেক অনেক বেশি
যে দেশটিকে তিনি সকল কিছু দিয়ে এসেছেন
অকাতরে নিজের দেশকে উজার করে
বিশ্বের মানবতাবাদী কোন দেশই যখন এগিয়ে আসেনি,
একমাত্র সেই দেশটিই লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে
আশ্রয় দিয়েছে ভয়ঙ্কর এই খুনি সাইকোকে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


