
এইসব দিনরাত্রি—
গ্রামের নিস্তব্ধ আকাশে ভেসে থাকা ধোঁয়াটে রোদ,
আলখেতের দুবলা ঘাসে সময়ের পদচিহ্ন—
যেখানে প্রতিটি হাওয়ায় বাজে এক অদৃশ্য বাঁশির সুর।
আমরা হাঁটি, থামি, আবার হাঁটি—
ভেবে দেখি না, এই মাটিও একদিন
আমাদের পদচিহ্ন মুছে ফেলবে নিঃশব্দে।
ধানের শীষে লেগে থাকা সোনালি আলোর কণা
আসলে আমাদেরই স্মৃতির প্রতিফলন—
যা ঝরে পড়ে প্রতিদিন, তবু টিকে থাকে অনুভূতিতে।
প্রভাত আসে, শিশিরে ভেজে পৃথিবী,
নদীর বাঁকে ঝিলমিল আলো, পাখির ডানায় ক্ষয়িষ্ণু সময়—
সবই যেন এক অনন্ত পুনর্জন্মের প্রতীক।
আর কতটা প্রভাত দেখব, কে জানে—
প্রতিটি প্রভাত তো একেকটি নতুন জন্ম,
আর প্রতিটি রাত, নীরব মৃত্যুর মতো।
সুবহি সাদিক, মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ভেসে আসে স্মরণ—
সব সূচনা একদিন ফুরিয়ে যায়,
সব ফেরা একদিন ফিরে আসে শূন্যতায়।
আর কতটা লেখা যাবে—
এই মাটির গন্ধ, এই পুকুরের জল, এই নরম আকাশের নিচে—
শব্দেরা তো কেবল একেকটি নিশ্বাস,
যা লিখে রাখে ক্ষণস্থায়ী জীবনের অমর ব্যাখ্যা।
যতদিন হৃদয়ে রক্ত বইবে,
যতদিন চোখে থাকবে আলো,
ততদিন প্রতিটি স্মৃতি হয়ে থাকবে জীবনের দেয়ালিকার পৃষ্ঠা।
একদিন থেমে যাবে পথচলা,
চলার ছন্দ হারিয়ে যাবে সময়ের স্রোতে।
তবু প্রকৃতি—
তার সবুজ ছায়া, বৃষ্টির গন্ধ, চাঁদের আলপনা—
সবই শ্বাস নেয় আমাদের মধ্যেই,
আমাদের নিঃশ্বাসে থাকে তার অনন্ত প্রকাশ।
কারণ, জীবন আসলে মৃত্যুর বিপরীত নয়,
বরং এক দীর্ঘ যাত্রা—
যেখানে প্রতিটি সূর্যাস্ত শেখায় পুনর্জন্মের প্রতিশ্রুতি।
এইসব দিনরাত্রি তাই কেবল সময় নয়,
এ এক নীরব স্রোত—
যেখানে স্মৃতি, ভালোবাসা আর নশ্বরতার তীরে
আমরা রেখে যাই আমাদের অস্তিত্বের ছায়া।
আর সেই ছায়াটাই—
হয়ে থাকে এক অসমাপ্ত কবিতা,
যা চিরকাল লেখা থাকে অদৃশ্য এক মায়াবি আলোয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




