দৈনিক আমার দেশ বলতে অনেক ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যান। তারা গলা ফুলিয়ে বলেন, দৈনিক আমার দেশ নাকি সত্যের অপর নাম। অথচ বাস্তবতা বলে, তারা মিথ্যাচার ছাড়া সংবাদ প্রকাশই করে না।তারা সংবাদকে ফুলিয়ে ফালিয়ে এমনভাবে প্রকাশ করে যাতে করে পাঠক বিভ্রান্ত হয়, উত্তেজিত হয় এবং বিপন্ন বোধ করে।
দৈনিক আমার দেশের মালিকানায় আছে জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক তাসনীম আলম। যখন দৈনিক সংগ্রাম এবং দৈনিক নয়া দিগন্ত প্রকাশ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় নি, তখনই বিএনপি জামাত সম্মিলিত এই প্রোডাকশন দৈনিক আমার দেশ। মূলত বিএনপিতে প্রভাব বিস্তার করার জন্যই এই পত্রিকা সৃষ্টি করেছে জামায়াতে ইসলামী।
যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য তারা কাবা শরীফের নামে মিথ্যা সংবাদ ছাপাতে পিছ পা হয় না। এই গর্হিত কাজ করার পরও দৈনিক আমার দেশের ধর্মান্ধ পাঠক গোষ্ঠী তারপরও বলে যায়, পত্রিকাটি নাকি সত্যের ঝাণ্ডা তুলে রেখেছে। অথচ এই একটা কাজের জন্য প্রচলিত আইনে এবং ধর্মীয় আইনে তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত এবং সম্ভব। তারাই ধর্মান্ধ মানুষকে উষ্কে দিতে ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। তারাই ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করে কবীরা গুণাহ করেছে।
অন্য কোন পত্রিকা এই রকম কাজ করলে সারা বাংলায় আগুন জ্বালিয়ে দিত ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী।সম্পাদককে জবাই করার হুমকি দিত। বরং এই জঘন্য কাজ করার পরও তারা এই পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে দহরম মহরম সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তাদের ভাবভঙ্গি এমন, ধর্ম গোল্লায় যাক, মাহমুদুর রহমান টিকে থাক।
অথচ বিএনপি জামায়াত চক্রের এই পত্রিকার সম্পাদক নাকি নবী প্রেমী। মাহমুদুর রহমানের মুখেই তো রসুল (সাঃ) এর সুন্নত দাড়ি মোবারক নাই, তার আবার নবী প্রেম এল কোত্থেকে ? তার পোশাক আশাকের কোথাও তো নবীপ্রেমের চিহ্ন খুজে পাই না। ইহুদী-নাসারাদের মতো পোশাক পরে তিনি কিভাবে নবী প্রেমিক হলেন, বুঝলাম না।
বরং বিগত জোট সরকারের সময় জ্বালানী উপদেষ্টা হিসেবে দেশের তেল গ্যাস ক্ষেত্র ইহুদী নাসারাদের হাতে তুলে দিতে তৎপর ছিল এই মাহমুদুর রহমান। জোট সরকারের দুর্নীতির বড় সহচর ছিল এই ব্যক্তি। এশিয়া এনার্জির হাতে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি কয়লা ক্ষেত্র তুলে দেয়ার নেপথ্য নায়ক এই ব্যক্তি।
২০০৬ সালের আগষ্ট মাসে ফুলবাড়ীর সাধারণ মানুষ যখন অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে বিদেশী বেনিয়া এশিয়া এনার্জির মুখোমুখি দাড়িয়েছিল, তখন অনেকেই ভাবেননি যে এই মানুষগুলি দেশের সুবিধাভোগী প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সমর্থন ছাড়াই বিজয় অর্জন করে ঘরে ফিরবে ।
সেই সংগ্রামে ৭ জন সংগ্রামী মানুষের রক্তে রক্তাক্ত হয়েছিল ফুলবাড়ী আর জনমানুষের সেই আন্দোলনের সূত্র ধরে এশিয়া এনার্জি একরকম বিতারিত হয় ফুলবাড়ী থেকে। সরকারও বাধ্য হন এশিয়া এনার্জির সাথে ওপেন পিট পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের চুক্তি বাতিল করতে ।
কিন্তু যেহেতু তাদের নিজের পত্রিকা তাই এই কাবা শরীফের মর্যাদা হানি হলেও দৈনিক আমার দেশের ধর্মপ্রাণ পাঠকবৃন্দ নিশ্চুপ থাকবে এবং থেকেছে। তখন তাদের ধর্মানুভূতিতে কোন সুরসুরি লাগে না। ধর্মানুভূতি বিশেষ কোন গোষ্ঠীর ইশারায় চালিত হলে এবং নিজের বিবেক কারো কাছে বন্ধক রেখে এলে এরকমই হওয়ার কথা। তারা গায়ের জোর এবং মিথ্যাচার দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আসলে তো ইসলাম প্রতিষ্ঠা মূল উদ্দেশ্য নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানো।
অন্য দিকে, দৈনিক আমার দেশ তথা জামাতী মিডিয়া সেলের উদ্দেশ্য হল, ধর্মকে ব্যবহার করে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে ধর্মভীরু মানুষকে উত্তেজিত করে তোলা এবং ধর্মভীরু মানুষদের ভোট ব্যাংক নিজেদের সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা। তারা এই কাজটা চমৎকারভাবে করতে পেরেছে। তারা দৈনিক আমার দেশ ব্যবহার করে যে কোন ব্যক্তির চরিত্র হনন করতে পিছ পা হয় না। আর তাদের ধর্মান্ধ পাঠককুল ওই মিথ্যা সংবাদ নিয়েই লম্ফঝম্ফ শুরু করে। তাদের চোখে কোরানের পরে সত্য দৈনিক আমার দেশ।
আসলে কী তাই ?
দেখেন কাবা শরীফ নিয়ে তাদের জঘন্য মিথ্যাচার :
এসব প্রকান্ড মিথ্যাচার কি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা? কতিপয় বিপথগামী শিবির কর্মীর দুষ্টুমী? না, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই লালন করে এহেন মিথ্যাচারী মনোভাব। এদের রাজনীতির মুল অস্ত্র মিথ্য রটানো, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কুৎসা প্রচার করা। কুৎসাকারী না হলে কোন ইসলামপ্রেমী মুসলমান কাবা শরীফ নিয়ে মিথ্যা কথা বলে? আমার দেশ পত্রিকায় ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি রিপোর্ট দেখুন - - -
একই দিনে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার একটি রিপোর্ট দেখুন - - -
এবার এই ছবির উৎস দেখুন, ১৮ অক্টোবর ২০১২ তে প্রকাশিত কাবার গিলাফ পরানোর সময় তোলা ছবিটিকে একটি আরবি সাইট থেকে নিয়ে বাংলাদেশের রাজাকারদের বাঁচাতে মানববন্ধন নাম দেয়া হয়েছে দেশের দুইটা জাতীয় দৈনিকে - - -
এ খবরের একটা বিষয় খেয়াল করার মতো। দুটি সংবাদের রিপোর্টার একজনই - আবুল কালাম আজাদ, সৌদি আরব। এই দুটি পত্রিকা যে একই মালিকানার এবং একই ব্যক্তির ইশারায় পরিচালিত তার প্রমাণ এই দুটি পত্রিকায় একই সাংবাদিকের পাঠানো সংবাদ প্রকাশ। একই ব্যক্তি দুই পত্রিকাতেই চাকুরি করছে। তার মানে হল, দৈনিক সংগ্রাম এবং দৈনিক আমার দেশ একই চক্রের মিডিয়া। সেই চক্র হল জামায়াতে ইসলামী।
সরকারের প্রতি আহবান জানাই, কাবা শরীফ নিয়ে মিথ্যাচারের জন্য এই দুটি পত্রিকার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিন। ধর্মকে নিয়ে মিথ্যাচারের জন্য কঠোর শাস্তি দিন। মুসলিমদের ধর্মানুভূতি ব্যবহার করে উত্তেজনা সৃষ্টির এই প্রয়াসকে এক্ষুনি বন্ধ করুন।
কাবা শরীফ নিয়ে জঘন্য মিথ্যাচারের জন্য দৈনিক আমার দেশ এবং দৈনিক সংগ্রামের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ মুসলিম ভাইদের কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। মুসলিম ধর্মের তীর্থভূমিকে ব্যবহার করে এই রকম মিথ্যাচার সহ্য করা আপনার ঈমানী দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। বরং যারা ধর্ম ব্যবহার করে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো তৌহিদী জনতার অবশ্য কর্তব্য।
হেফাজতে ইসলামের মোল্লারা আল্লাহ রসুলের নামে কটূক্তিকারীদের বিচার চান। কিন্তু তারা কেন মাহমুদুর রহমানের মিথ্যাচারের বিচার চান না ? কারণ মাহমুদুর রহমান তাদের পক্ষের লোক। মাহমুদুর রহমান তাদের দলের লোক।
দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক নয়া দিগন্ত ও দৈনিক সংগ্রাম নামের জামায়াতের তিনটি প্রোপাগান্ডা মেশিনকে বয়কট করুন। আমাদের ঈমান কোন মিথ্যাচারীর হাতে বাঁধা থাকতে পারে না।
জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের বেসাতি পাবেন এখানে : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:২২