পৃথিবীর বাইরে চাঁদে তো মানুষ কত আগেই ঘুরে এসেছে। আজকাল অন্য গ্রহে, মানে মঙ্গলে তো মানুষ বসবাস করার চিন্তা-ভাবনাও করে চলেছে। কিন্তু এতো গেল সামান্য কিছু হাতে গোনা মানুষের কথা যারা মহাকাশযানে চড়ে, বিশেষ নিরাপত্তা
নিয়ে তবেই গিয়েছেন পৃথিবীর বাইরে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষও আছেন যারা কিনা নিজের ঘরে বসেই চলে গিয়েছে অন্য গ্রহে! না, সিনেমায় নয়। একেবারে বাস্তবেই। অন্তত সেই মানুষগুলো সেটাই মনে করেন ও সবার কাছে দাবীও করেন। আসুন জেনে নিই এমন কিছু মানুষ আর তাদের অন্য গ্রহে ভ্রমনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা। বলাই বাহুল্য যে, সবগুলো অভিজ্ঞতাই অতিরঞ্জিত ও অতিকল্পিত। আর ভীষণ অদ্ভুতও বটে!
১. ডেনটন পরিবার:
ডেনটন পরিবারে কেবল এক বা দুইজন নয়, সবাই-ই কম বেশি ঘোরাঘুরি করে ফেলেছেন এ গ্রহে সে গ্রহে। তবে শুরুটা হয় মিঃ ডেনটনকে দিয়েই। তিনি এবং তার স্ত্রী এলিজাবেথ দুজনেই ঘুরে এসেছেন আর কোথাও নয়, এই পৃথিবীরই অতীতে। সেখানে বিশালাকার পতঙ্গও দেখেন তারা। তাদের বোন অ্যানে ক্রিজ পরবর্তীতে একটি লাভার টুকরো স্পর্শ করার সাথে সাথেই দেখতে পান বিশালাকার সমুদ্রকে। এছাড়াও এই পরিবার ও তাদের ছেলে শারমেন ঘুরে এসেছে শুক্র, বৃহস্পতি ও মঙ্গলেও। যেগুলোর ভেতরে মঙ্গলে প্রাণীর দেখা পায় তারা। কি বিচিত্র দাবী, তাই না?
২. এমান্যুয়েল সোডেনবার্গ:
সুইডিশ এই দার্শনিক বলেন তিনি স্রষ্টা আর পরীদের দ্বারা স্বর্গ, নরক আর বিশ্বব্রহ্মান্ড ঘুরে এসেছেন। চাঁদের ব্যাপারে তিনি জানান সেখানে সাত বছর বয়সী বাচ্চাদের মতন মানুষ বাস করে। শুক্রগ্রহের মানুষ দুই ধরনের। কিছু ভালো আর কিছু খারাপ। অন্যদিকে বুধ গ্রহের মানুষেরা অনেকটা পৃথিবীরই মতন। এছাড়াও বৃহস্পতি, শনি আর মঙ্গলগ্রহকে নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। সেখানকার মানুষদেরকে নিয়ে নিজের মতামত জানান। বাকীগুলোর কথা তিনি জানতে পারেননি তার কারণ হয়তো এটা যে, তখনো সেগুলো আবিষ্কৃত হয়নি! বুঝতেই পারছেন, অতি কল্পনা ছাড়া এগুলো আর কিছুই নয়!
৩. হাওয়ার্ড মেনগার:
১০ বছর বয়স থেকেই হাওয়ার্ড অন্য পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন হাওয়ার্ড যে, একদিন বনের ভেতরে হাঁটবার সময় তার দেখা হয় বুধ গ্রহের এক মানবীর সাথে। যে কিনা তাকে জানিয়েছিল সে অন্যরকম এবং বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন। এরপর সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন হাওয়ার্ড। এরপর সেখান থেকে অবসর নিয়ে অন্য গ্রহ থেকে পৃথিবীতে ঘুরতে আসা মানুষগুলোকে সাহায্য করে দিন কাটাতে থাকেন। নিজের কাছে ঘুরতে আসা বুধ ও মঙ্গলের প্রানীদের কথা তিনি বলেন। একটা সময় বুধ গ্রহের এক নারীর সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠলে হাওয়ার্ড জানতে পারেন যে তিনি আসলে শনিগ্রহের সোল ডু নারু নামের এক প্রাণী। যে কিনা মৃত হাওয়ার্ড মেনগারের শরীরে বসবাস করছে! সত্যি হোক বা মিথ্যা, সায়েন্স ফিকশনের প্লট হিসাবে কিন্তু বেশ চমৎকার!
৪. ক্যাপ্টেন কায়ে:
২০১৪ সালে ক্যাপ্টেন কায়ে নামের একজন বাঁশিবাদক দাবী করেন তিনি তার ২০ বছর জীবনের ১৭ বছর কাটিয়েছেন মঙ্গলের সেনাবাহিনীতে। যেখানে এমডিএখ-এ ছিলেন তিনি। সেখানে মানব সমাজের রক্ষার জন্যে নিয়োগ করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু পরবর্তী এক দূর্ঘটনায় গ্রহের ১,০০০ জন মারা যায় এবং তার দলের মাত্র ২৭ জন বেঁচে ফেরে। তাদের ভেতরে তিনিও একজন। কায়ের কথাকে সমর্থন করে মাইকেল রেলফে নামের একজন মানুষও জানান যে তিনিও ২০ বছর ধরে এমডিএফ-এ আছেন। পরবর্তীতে জানা যায় ক্যাপ্টেন কায়ের আসল নাম রেন্ডি ক্র্যামার, যিনি কিনা পরবর্তীতে আরো অনেক তথ্য সরবরাহ করেন। এখন দুই দুইজন ভিন্ন মানুষ একই কল্পনা করছেন, বিষয়টি একটু বিচিত্রই বটে!
৫. ডানা হাওয়ার্ড:
নিজের শুক্রগ্রহ ভ্রমণ নিয়ে বেশ কিছু বই লেখেন ডানা হাওয়ার্ড। সেগুলোর ভেতরে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মাই ফ্লাইট টু ভেনাস, ডায়ানে: শি কেম ফ্রম ভেনাস, ওভার দ্যা থার্সহোল্ড এবং ভেস্তা-দ্যা আর্থবর্ন ভেনাসিয়ান। ১৯৩৬ সালে প্রথম ২৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এক ভেনাসিয়ান ডায়ানের সাথে দেখা করেন ডানা। নিজের বইয়ে সেসবের বর্ণনা দেন তিনি। সেবার ডায়ানে চলে গেলেও পরবর্তীতে আবার দেখা হয় ডানার নারীটির সাথে। তাদের প্রযুক্তি, জীবন আর সবকিছু নিয়ে সেবারই পুরোপুরি কথা বলেন তিনি। বলাই বাহুল্য, ডানার কল্পনা শক্তি ছিল অসাধারণ। নতুবা এতগুলো বই লিখে পারতেন না তিনি।
তথ্যসূত্র: (প্রিয় ডট কম)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩২