সৈয়দ মবনু'র প্রেমপত্র-১
প্রায় মানুষের প্রত্যাশা অপূরণ থেকে যায়। হয়তো এটা বিধাতারও বিধান। খুব সাধারণ বিষয়ে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ, আকাঙ্খার ভাত নাও ফুটতে পারে। যেমন খুব প্রত্যাশায় ছিলাম, তুমি কথাটা রাখবে। উদগ্রীব ছিলাম কিংবা আজও আছি। অপেক্ষার প্রহর যায় সময়ের জলস্রোতে। আমি হারাতে থাকি নিশির গহীন অন্ধকারে। সন্ধ্যা ডিঙিয়ে মধ্যরাত, অতঃপর ঘুম আসে না। দিন যায়, মাস যায়। বলো তুমি কতদিন হলো আমার আর আকাশ দেখা হয়নি?
এই দীর্ঘদিন আকাশে পূর্ণিমা হয়তো ছিলো, হয়তো ছিলো না। আমার আর দরোজা খুলে দেখতে ইচ্ছে করেনি। আবার অনিচ্ছাও করেনি। এভাবে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় রাত যায়, দিন যায়, সময় যায়, নদীর জল যায়, প্রেম যায়, তুমি যাও, আমি যাই। আরো কতকিছু যায়, এত হিসাব কে রাখে! না, কোনো সংকেত আসে না তোমার। রাতের অন্ধকার ডিঙিয়ে সকালের আকাশে সূর্যোদয় ঘটে। আলোকিত সূর্য আকাশে বসে হাসে, আর আমার দিন যায় ফ্যাকাশে। সকাল গড়িয়ে দুপুরের মাঠ পেরিয়ে সন্ধ্যার দেয়ালে সময়ের কাটা ঘূর্ণিঝড়ের মতো ঘুরতে থাকে। আর তুমি পাথরের পাহাড় হয়ে নীরবতা প্রদর্শন করো। শহরে মানুষ আর মানুষ, পয়েন্টে পয়েন্টে রিকশার জ্যাম, নানা কর্মে মানুষের ব্যস্ততা, সবই আছে তার নিজস্ব গতিতে। শুধু নীরব-নিস্তব্ধে তোমার দিকে চেয়ে আমার সময় যায় পিপিলিকার পায়ে। প্রতিদিনের মতো আজও সন্ধ্যায় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রম। তুমি জানো, এটা আমাদের শহরের ঐতিহ্যবাহী নিত্য বদাভ্যাস। এই বদাভ্যাসে আমরা এখন বিরক্ত হই না। কিন্তু আজকের বিষয়টি ভিন্ন, আমার কাছে বিদ্যুৎ বিভ্রম খুব ভালোই লাগছিলো। যেনো হাজার বছর আমি প্রার্থনা করেছি এই শহরের সকল বিদ্যুৎ জনমের মতো অকেজো হয়ে যাক। শহর হোক ভণ্ডামিমুক্ত জমকালো অন্ধকার। কারণ, তুমিহীন শহরে বিদ্যুতের আলো দিয়ে আমি কার মুখ দেখবো? বরং অন্ধকারের যে একটা মিজমিজে আলো আছে সেখানে ঝিনুক পোকার মতো ঝিলিক মারে তোমার চেহারা। সেই চেহারা দেখতে আজ খুব ভালোই লাগছিলো। আমার কথা বিশ্বাস না হলে তুমি চোখ বন্ধ করে দেখ তোমার প্রিয় মানুষটির চেহারা চোখে ভাসে কি না। ঐ যে তুমি সেদিন কী একটা হারিয়ে খুব অশান্ত হয়ে উঠলে। আমি বললাম, শান্ত মাথায় চোখ বন্ধ করে মনে মনে খুঁজতে। তুমি বললে -- আরে বাবা, চোখ বন্ধ করলে তো আমি কিছুই দেখি না তোমার চেহারা ছাড়া। আমার প্রশ্ন হলো -- আলো ছাড়া তো কিছুই দেখা যায় না, তাহলে তুমি চোখ বন্ধ করে আমার চেহারা দেখলে কীভাবে? তবে কি তুমি স্বীকার করাতে বাধ্য, জমকালো অন্ধকারেরও একটা আলো আছে কিংবা চর্মচোখের থেকে আত্মচোখের শক্তি অনেক বেশি? তাহলে তুমি আত্মাকে গুরুত্ব দিচ্ছ বস্তুর পাশাপাশি? তুমি কেনো বুঝতে চেষ্টা করো না প্রেম দেহে নয়, মনে। দৈহিক বিষয়টি হলো আসক্তি, প্রেম নয়। যারা আলোতে পথ দেখে হাঁটতে পেরেছেন বলে গর্ব করে বক্তব্য রাখেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে, তাদের গর্বের কারণ আমি জানি না? ভালো পরিবেশে বড় হয়ে ভালো থাকার মধ্যে আমার দৃষ্টিতে বক্তব্য দেওয়ার মতো অসাধারণ কিছু নয়। বরং এটা তাদের ভাগ্য। যারা খারাপের ভেতর ভালো থাকতে পারে কিংবা অন্ধকারের আত্মা থেকে আলো বের করে অনেক দূর হাঁটতে পারে তারাই মহামানব। তবে আমি মহামানব হতে শহরের জমকালো অন্ধকার প্রত্যাশা করিনি। মহামানব হওয়ার আমার কোন শখও নেই। আমি প্রত্যাশা করেছিলাম শহর জমকালো অন্ধকার হয়ে যাক, শুধু প্রেমের টানে। কিন্তু আমি জানি, আমার এই প্রত্যাশা পূর্ণ হওয়ার নয়। কারণ, আমার প্রত্যাশাগুলো সর্বদাই অশুভেচ্ছায় থেকে যায়। আজ বরং অন্যদিন থেকে একটু আগে বিদ্যুৎ এসে আমাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়। সারারাত আর বিদ্যুৎ গেলো না আমাদের শহরে। তুমিহীন বিদ্যুতের আলোতে গতরাত একবিন্দু ঘুম আসেনি আমার চোখে। কেনো জানি মনে প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিলো -- তুমি আমাকে যে কোনো সময় প্রাকৃতিক আলোর পথ দেখাবে। কিন্তু তুমি কেনো যে করলে না আমাকে আলোকিত? আমার প্রশ্ন জাগে -- তুমি কেনো এমন করছো আমার সাথে? কেনো তুমি আমার সকল প্রত্যাশা প্রেমহীন রেখে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছো? তুমি কি জানো, তোমার পথ চেয়ে আমি এখন ক্ষয় হই প্রায় প্রতিক্ষণ। প্রশ্ন আছে অনেকগুলো আমার ভেতরে-বাইরে। খেলা করি আমি, প্রশ্নের খেলা। কিন্তু তুমি ছাড়া কে দেবে উত্তর? এসবের কোনো উত্তর আমার জানা নেই। এই যে তুমি খুব ক্ষুব্ধ হলে, বলো -- আমি তোমার কে? কেনো এত গায়ে পড়ে তোমার ব্যাপারে মাথা ঘামাই? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমার কাছে হয়তো হাজারো আছে কিংবা একটাও নেই। আমি তো প্রথম দিকে প্রশ্নটাকে তেমন গুরুত্ব দেইনি। ক্ষুব্ধ হলে মানুষ অনেক কথাই বলে। আবার ক্ষুব্ধতা হ্রাস পেলে অনুতপ্ত হয়। হয়তো এখনও তোমার রাগ থামেনি, হয়তো তুমি এখন শান্ত এবং অনুতপ্ত, হয়তো তোমার এই প্রশ্ন ছিলো খুব অনিচ্ছাকৃত। তাই আমি বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিলাম। আবার একেবারে উড়িয়ে দিতে পারলাম না। তাই কিছুক্ষণের জন্যে হাত নেড়ে বিদায় জানাই একে অন্যকে। চলে যাই দু' জন দু'দিকে। এ যেনো স্বর্গ থেকে আদম-হাওয়ার বিচ্ছেদের সূচনা। তুমি চলতে থাকো আমাকে পেছনে ফেলে। আমি পেছনে বসে চেয়ে থাকি তোমার চলে যাওয়া পথে। তুমি যেতে যেতে বারবার পেছন ফিরে দেখলে। আমি নানা কারণে ভুলে যাই -- তোমার আমার সম্পর্কের ওই প্রশ্নের কথা। কিন্তু তোমার কাছ থেকে যখন কোনো সংবাদ আসে না তখন প্রশ্নটি মাথায় কেবলই ঘুরতে থাকে। তাহলে কি এ কথা সত্য -- তুমি আমার কেউ নও? তুমি বিশ্বাস করো, এটা সত্য নয়, এটা সত্য হতে পারে না। তুমি যদি আমার একেবারে কিছু না হও তাহলে এতো জল কোথায় গড়িয়ে গেলো? আমার কবিতা কিংবা গানের আত্মায় কেনো ঝিলিক মারে তোমার মুখের হাসি? কেনো বিস্মৃতির কবর খুঁড়ে বেরিয়ে আসতে থাকে পুরনো দিনের স্বর্গীয় স্মৃতিগুলো! মনে সঞ্চিত হতে থাকে নতুন করে বেদনা। আমি বেদনার সাগরে সাঁতার কেটে তোমাকে ধরতে চেষ্টা করি মনের গভীরে। আমি আমার স্বপ্নে তোমাকে নিয়ে একটা কাঁচের ঘর সাজিয়েছিলাম। খুব চেষ্টা করেছি কেউ যেনো এই ঘরে ঢিল মেরে ভাঙতে না পারে। প্রশ্ন জাগতে পারে -- কেনো স্বপ্নে এই ঘর সাজানো? তোমার কাছে আমার প্রত্যাশাটা কী? মূলত বেশ কিছুদিন আগে একটা খরস্রোতা নদীর জলে নিজের মুখ দেখতে গিয়ে আমি অতলের পথে হারিয়ে যাই। সাঁতার না-জানাদের মতো আমি তলহীন নদীর আরো অতলের দিকে যেতে থাকি। ঐদিন যেতে যেতে আমার ভেতরে নদীকে নিয়ে একটা স্বপ্ন জন্মালো। আমি সেই স্বপ্ন দেখতে থাকি। স্বপ্ন আমাকে খুব আনন্দিত করে। স্বপ্ন আমাকে কাঁদায়। এই হাসি-কান্নার ভেতরে একদিন আমার স্বপ্ন আমার ভেতরে শেকড় গজিয়ে মজবুত গাছ হয়ে ওঠে। এখানেই তোমার-আমার সম্পর্কের যোগসূত্র। এই সম্পর্কের গাছটা এখন বিশাল বটবৃক্ষ হয়ে হৃদয়ে শেকড় ফেলে বসে আছে। আমি এই গাছ কিংবা আমার কবিতা-গান কোনোদিন ফেলতে পারবো না। আমি ফেলতে পারবো না তোমাকেও। তুমি আমাকে ভুলে যাও, তাতে আমার কী আসে যায়! আমি তোমাকে ভুলতে পারি না। কারণ, আমি কবি। কবিরা ভালোবাসতে জানে, ভালোবাসা না পেলেও। কবি'রা ভালোবাসাবঞ্চিত বলেই কবি হয়। তুমি আমাকে ভালো না বাসলেও আমি তোমাকে বাসি। যেদিন তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিলো নদীর জলে, তোমার কি স্মরণ আছে সেদিনের কথা? তোমার কি স্মরণ আছে, আমি আমার শহরের যে অংশে বাস করি তার সমুখ দিয়ে প্রবাহিত সেই নদীর কথা, যা দিয়ে প্রতিদিন তুমি যাওয়া-আসা করতে? কতোদিন থেকে যাওয়া-আসা, তা আমার মনে নেই। একদিন তুমি আর এই নদী একাকার হয়ে গেলো আমার ভেতরে। অতঃপর আমরা দু'জন চোখাচোখি হই। বিশ্বাস করো, সেদিন তোমার হাসি আমাকে স্বপ্নের মিনারে উজ্জ্বল করেছিলো যেদিন আমরা দু'জনে চোখে চোখ রেখে ভাব বিনিময় করি। দীর্ঘ সময় যায় চোখাচোখি। মাঝেমধ্যে হাসি-কান্নার বিনিময়। এখন তোমার হাসি থেকে আমার মনে আলো ঝরে, আর কান্না থেকে ঝড়-বৃষ্টি। তোমার আলো পেলে আমার মন আলোকিত হয়। তাই আলোর সন্ধানে আমি আসি তোমার কাছে। বলো, আমার স্বপ্নের মঞ্জিলে তুমি আলো দেবে কি? আমি শপথ করে বলছি, তুমি যদি আজ আমাকে প্রেমের আলো দাও; আমি এই আলো দিয়ে একদিন গোটা বিশ্বকে আলোকিত করে দেবো। তাই বসে আছি আলোর অপেক্ষায়। আমার বিশ্বাস, তুমি একদিন আমাকে দেবে একপৃথিবী আলো, আমরা দু'জন হাতে হাত রেখে এই আলো নিয়ে একাকার হয়ে যাবো স্বর্গের পথে।
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।