বাংলাদেশ ও তার স্বাধীনতাকে যারা ব্যাক্তিগত সম্পদ মনে করেন তারা হয়ত তাদের মনের ঝাল মেটাবার জন্য অথবা নিজেদের ব্যার্থতা ঢাকার লক্ষে দেশেরে যাবতিয় সমস্যার দায়ভার যুদ্ধ অপরাধিদের ঘারে চাপিয়ে দিয়ে স্বস্তি লাভ করতে পারেন কিন্তু এতে করে তাদের সাময়িক কিছু ফায়দা হাসিল হলেও দীর্ঘ মেয়াদি কোন লাভ হয় না। বরং সময় যত গরিয়ে যাচ্ছে ততোই তাদরে এ সব খোরা যুক্তির অসারতা এবং নিজেদেরে ভন্ডামির কথা জনগনের কাছে পরিস্কার হয়ে যাচ্ছ।
ভাবতেই অবাক লাগে যে, যেই সংগঠন স্বাধীনতা যুদ্ধের একক দাবিদার তারা কিভাবে স্বাধীনতা ইস্যুকে কেন্দ্র করে এভাবে নোংরা রাজনিতি করে। তারা যেই রাজাকারদের ফাসির কাষ্ঠে চড়াবার ঘোষনা দেয় আবার তাদের সাথে গলা মিলিয়েই তারা রাজপথ কাপিয়ে বেড়ায়। যেই ইসলামি রাজনিতিকে তারা নষিদ্ধি করতে চান, সেই রাজনিতির ধারকদের নিয়ে ক্ষমতার সিড়ি মাড়াবার স্বপ্ন দেখতে তাদের লজ্জাবোধ হয় না। তাদের পতাকাবাহি পত্রিকা, মিডিয়া এরং বুদ্ধিজিবীরা এখন আবারো যখন আদাজল খেয়ে লেগেছেন যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের জন্য তখন সাধারন মানুষরে কাছে তাদের মুল উদ্যেশ্য নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে। বগিত বিএনপি নতৃত্বাধীন জোট সরকারের অগে পাঁচ বছর যখন তারা ক্ষমতায় ছিলেন তখন এই সব দাবিদাওয়া কোথায় ছিলো। তখন ক্ষমতা, সাধ্য সামর্থ সব থাকা সততেও তারা যুদ্ধাপরাধিদের বিচার করেনি কেন তা অনকেরে কাছে বোধগম্ম না হলেও বিজ্ঞজনদরে কাছে তা পরিস্কার। আসলে তারা র্জজ বুশ সিনিয়ররে পদাঙ্ক অনুসরন করছেন। সাদ্দাম যখন কুয়েতে অক্রমন করে তখন মিস্টার বুশ তাকে শায়েস্তা না করে পরবর্তিতে এজেন্ডা বানাবার জন্য যেমন রেখেদেন, তেমনি আওয়ামি লিগও কথিত যুদ্ধ অপরাধিদের বিচারকে ইচ্ছে করে জিয়িয়ে রেখেছে যেন ভবষ্যিতে তাদের বিষয়টি নিয়ে রাজনিতি করতে সুবিধা হয়। এখনই সেই সুবিধা নিয়েই তারা আবারো পানি ঘোলা করছেন। দশেরে প্রতিটি জনগন যেখানে অভিযুক্তদের বিচারের বিষয়ে একমত সেখানে ক্ষমতায় থাকা সততেও অপরাধিদের বিচার না করাকে সন্দেহের চোখে দেখলে কি ভুল হবে। তারা কি তবে অভিযুক্তদের সাথে কোন প্রকার গোপন সমযোতা করেছিলেন না কি আসলে যুদ্ধ অপরাধিদের বিরুদ্ধে আদালতে হাজরি করার মতো সত্যিই কোন প্রমানাদি ছিলনা। আমারা সাধারন মানুষেরা যদি দ্বিতিয়টাকে ধরে নিয় তাহলে দোষ দেয়া যাবে কি?
পৃথিবির ইতিহাসে আর কোন জাতি পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ যারা দেশের ভিতর পক্ষ বিপক্ষ বিভাজন রেখা তৈরি করে দেশের স্বাধিনাতাকে অমর্যাদা করছে এবং সমস্ত সমস্যাগুলো পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র একটি ইস্যুকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করে দেশকে অমানিশার গহিনে ঠেলে দিচ্ছে । বিশ্বের বড় বড় উন্নত দেশগুলো যখন এগিয়ে যাচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনাকে সামনে রেখে সেখানে আমাদের সুবিধাবাদি রাজনিতিবিদরা জাতিকে বার বার পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন কেবলমাত্র তাদের হিন স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য। যে দেশের বেশির ভাগ লোক শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত সে দেশে যদি তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই যে রাজনিতিবিদরা প্রয়োজনি জ্ঞান ও যোগ্যতার নিওমেনিয়ায় ভুগছেন তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,সংস্কৃতি ও গবেষনাকেন্দ্র গুলোতে যে সব পন্ডিতগন দেশের কুতসা রটনায় এবং সাপ্রদায়িকতা উসকে দিতে ব্যাস্ত তাদের কি বলবো।
সম্প্রতি সংস্কৃতির ধ্বজাধারি এক জন তার্কিক ও উপস্থাপকের বিতর্কিত কিছু মন্তুব্যের দিকে দৃস্টি দিলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। একটি জাতিয় দৈনিকে "মুহনিরে গান, যুদ্ধাপরাধীদরে বিচার এবং প্রতারতি জনগন" শির্ষক একটি নিবন্ধকে কেন্দ্র করে আব্দুন নুর তুষার যে ভাষায় তার ক্ষোভ ও ঝাল প্রকাশ করলেন এবং পরবর্তিতে তার পক্ষে সাফাই গাইলেন একটি বিতর্কিত পত্রিকার বিতর্কিত কলামিস্ট তা সত্যিই লজ্জাকর। এতেকরে সেই পুরোনো কথাটাই আবারো সত্য প্রমানিত হলো আর তা হলো- আমগাছে কখনো জাম ধরে না, আমই ধরে। তার মানে হচ্ছে তারা যে দলের বা আদর্শের সৈনিক, সে দল যেমন ২৮শে আগষ্টের মতো সন্ত্রাস, সহিংসতা এবং হত্যার রাজনিতিতে অভ্যস্ত এবং জয়নাল হাজারি ও ড.ইকবালের মতো স্বনামধন্য সন্ত্রাশিকে শ্রেষ্ট সন্তানের মর্যাদায় সংসদে বসিয়ে তৃপ্ত, তারাও তেমনি কলমের মাধ্যমে তথ্য সন্ত্রাস ও সহিংসতা প্রচারে অভ্যস্ত। সেই পুরোনো আরেকটি প্রবাদের কথা মনে পড়ছে –- বৃক্ষ তোমার নামকি, ফলে পরিচয়। তুষার অথবা জাব্বার যে ফল দিচ্ছেন, তাতে বিষবৃক্ষের পরিচয়টিই বার বার প্রকাশিত হয়ে পড়ে। একজন সদা হাস্যজ্জল উপস্থাপকের হাসির আড়ালে যে একজন কদাকার ভাষাজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ লুকায়িত তা প্রকাশিত হয়ে পড়ায় দেশবাশির কাছে এখন অনেক বিষয় পরিস্কার হয়ে যাবে। ছোটবেলা থেকে দেখেছি, যে মানুষ যুক্তি হারিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি একই সাথে হারিয়ে ফেলেন ভাষাজ্ঞানও। তুষার তার লেখায় যুদ্ধ অপরাধিদের বিচার চেয়েছেন কিন্তু কিভাবে চেয়েছেন তা বলেননি। তার আদর্শের সবাই যুদ্ধ অপরাধিদের বিরুদ্ধে হাজারো তথ্য প্রমানের উদাহারন দেন। তারা এত কস্ট না করে শুধু তথ্যপ্রমানগুলো আদালতে হাজির করলেই কি প্রচলিত আইনে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যেত না। শুধু যুদ্ধ অপরাধিদের বিচার দাবি করে স্টানবাজি করার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা।
জব্বার হোসেনের জব্বর তেলেসমাতি দেখে আমি কিন্তু বিস্মিত হইনি। তিনি টাইটানিক উদ্ধারের মতো তুষার উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতেই পারেন। ইংরেজিতে একটি কথা আছে –-Birds of a feather flock together. তার মিনার রশিদের লেখার পোস্টমর্টেমটি যে পুর্ব পরিকল্পিত ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবেই মিনারকে ছি ছি করেছেন আলতাফ মাহমুদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. আলীম চৌধুরী হত্যার বিচার প্রসঙ্গটি তুলে। মিনার কি তাদের হত্যার বিচারের বিরোধিতা করেছেন। করেননি। এজাতিয় আরো অসংখ অসংগতি ও ব্যাক্তিগত কুতসায় পরিপুর্ণ লেখা জব্বার সাহেবের হাতে এবং তার বিতর্কিত পত্রিকায় যে নিয়মিতই আসে সে বিষয়ে পাঠক মহলকে আমি স্বরন করিয়ে দিতে চাইনা। শুধু এতটুকু বলতে চাই যে মি. জব্বার ও তার পত্রিকা দেশের জাতিসত্তার সাথে একাকর হয়ে থাকা সকল মানুষের ধর্মিয়সত্তার বিরুদ্ধাচারন এবং যুদ্ধ অপরাধিদের বিচারের নামে যে প্রহশন শুরু করেছে তার যবনিকাপাত হতে খুব বেশি কালক্ষেপন করতে হবে না। তারা দেশটিকে একটি বদ্ধভুমির দিকে নিয়ে যাবে আর দেশবাশি তা চেয়ে চেয়ে দেখবে তা হবে না। জব্বার ও তুষার সাহেবদের বলবো - যদি সত্যি দেশের উন্নতি চান তা হলে স্টান বাজি পরিহার করে সঠিক পথে হাটুন। আবারো বলছি, যদি তথ্য প্রমান থাকে তাহলে আদালতে গিয়ে যুদ্ধ অপরাধিদের বিচার করুন। আর প্রমান না থাকলে বা "দায় দায়িত্ব সরকারের এবং তারা তা না করলে তারা রাজাকার" দয়া করে একথা বলবেন না । এটা এজন্য বলছি যে, যারাই আপনাদের ভুল ধরিয়ে দিতে চায় বা যুক্তি খন্ডাতে চায় তাদেরকেই আপনারা রাজাকার ফতোয়া দেন যদিও তাদের বয়স এবং যুক্তি আপনাদের বিবেচ্য নয়।
পরিশেষে বলবো, আসুন সংকির্ন দলিয় বা ব্যাক্তি স্বার্থের উদ্ধে উঠে দেশকে ভালোবাসি। আর দেশকে ভালোবাসা মানে সমগ্র দেশবাসিকে ভালোবাসা। বিশ্বের প্রতিটি দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা কেন একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে পিছিয়ে যাবো। জার্মানিতে নতুন নাজি আদর্শের উত্থান অথবা বৃটেনে চরমপন্থি বিএনপি পার্টির অস্তিত্ব থাকা সততেও সে সব দেশ যদি এগিয়ে যেতে পারে আমরা কেন গনতান্ত্রিক পদ্ধতি ও চর্চায় বিশ্বাসি দলগুলোকে নিয়ে ভেদাভেদ ভুলে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে পারবোনা।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




