অবশেষে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় বাহিনী ঢুকতে অনুমতি দিলেন শেখ হাসিনা। ভারতের সাথে গোপনে “কাউন্টার টেরোরিজম” চুক্তি সই করেছে বর্তমান সরকার। এর আওতায় (আসামী ধরার প্রয়োজনে) কোনো প্রকার পূর্বানুমতি ব্যতিরেকেই ভারতীয় বাহিনী যেকেনো সময় ঢুকে অনির্দিকালের জন্য... অপারেশন চালাতে পারবে। শুধু ডিসি-এসপিকে অবহিত করলেই চলবে। যদিও বলা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি। বাংলাদেশও চাইলে এ সুবিধা নিতে পারবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ কি কখনও সাহস করবে ওদিকে যেতে? Shamsul Alam এখন তো আর উপায় নাই ফিরে যেতে হয় ইতিহাসের কাছে। মূল চুক্তিটি হয়েছিলো ১৯৭১ সালের আক্টোবর মাসে। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে সহযোগিতা করার শর্ত হিসাবে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম (যিনি আওয়ামীলীগে...র বর্তমান সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পিতা) ভারতের সাথে ৭ দফা লিখিত চুক্তিতে সই করেছিলেন। মুজিবনগর সরকারের অনেকেই জানতেন না সে চুক্তির বিষয়। এর মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মরহুম তাজউদ্দিন আহমেদ। যার মূল বিষয়বস্তু ছিলঃ ১· মুক্তিযুদ্ধ করেনি এমন সরকারী কর্মকর্তাদেরকে প্রশাসন থেকে অবসর দেয়া হবে, সেখানে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দেশ চালাবেন। এর আওতায় স্বাধীনতার পরে বেশ কিছু ভারতীয় সিভিল সার্ভিস অফিসার বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২· বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবে না। ৩· অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা রার জন্য একটি প্যারা-মিলিশিয়া বাহিনী থাকবে। পরে তা ’জাতীয় রক্ষী বাহিনী’ নামে গঠিত হয়েছিল ভারতীয় সেনাদের প্রশিক্ষণে। ৪· ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশে থাকবে অনির্দিষ্টকাল। ৫· সীমান্তের তিন মাইল জুড়ে চালু হবে খোলা বাজার, কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। শুধু বছর শেষে হিসাব নিকাশ হবে পাউন্ড-ষ্টার্লিং এর মাধ্যমে। ৬· বিদেশ বিষয়ে ভারত যা বলবে তাই মেনে চলতে হবে। সাউথ ব্লকের এনেক্স হবে সেগুন বাগিচা। ৭· পাকিস্তানের সাথে চুড়ান্ত লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিবেন ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান। সহ প্রধানের দায়িত্বও পাবেন না, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক। আর এ কারণেই জেনারেল ওসমানী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের দর্শকের ভূমিকা পালন করতে রাজী হননি। এক কথায়, এ চুক্তি বলে ভারত বাংলাদেশের সামরিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ের সার্বিক কর্তৃত্ব পেয়ে যায়। চুক্তি স্বাক্ষরের ভয়াবহতা ভেবে এ অনুষ্ঠানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ১৯৭২ সালে শেখ মুজিব দেশে প্রত্যাবর্তন করে এ চুক্তি মানতে অস্বীকার করেন।
অবশেষে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় বাহিনী ঢুকতে অনুমতি
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন
=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?
যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!
যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।
কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।
ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।