ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা
ব্যবহারের দ্বায়সারা নির্দেশ
শাহেদ নুর উদ্দিনঃ
গত মে মাসে দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণ সংক্রান্ত দলিলাদিতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দীর্ঘ কয়েক মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও দেশে অধিকাংশ তফসিলি ব্যাংকই এই নিদের্শনা পুরোপুরি অনুসরন করছে না। তারা এখনও বিভিন্ন ফরম, লেনদেন বই, চুক্তিপত্র এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক দলিলাদিতে প্রতিনিয়ত শুধুমাত্র ইংরেজি ব্যবহার করছে। ফলে গ্রাহকদের পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে। ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন সময় বেধে দেয় নি বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক শুধুৃ দ্বায়সারা নিদের্শনা দিয়েই বসে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকগুলো এই নিদের্শনা মানছে কিনা সে ব্যাপারেও তাদের কোন মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেই বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং ও নীতি বিভাগের এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা সকল তফসিলি ব্যাংকগুলোকে চিঠির মাধ্যমে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারে নির্দেশ প্রদান করেছি। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব তারা পালন করবে। যদি তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসে তাহলে আমরা সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করবো। পাশাপাশি যারা দোষী সাবাস্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোন মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ব্যাংকগুলো এই নির্দেশনা পালন করছে কিনা তা মনিটরিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভিন্ন কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ব্যাংকগুলো তাদের নিজেদের বিভিন্ন লেনদেনের সুবিধার্থে অতি শিঘ্র এ কাজটি করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং ও নীতি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব তফসিল ব্যাংকে প্রেরিত এক চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়, আমানত ও ঋণ সম্পর্কিত বিভিন্ন ফরম, লেনদেন বই, চুক্তিপত্র এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক দলিলাদিতে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকসমূহকে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহার করতে হবে। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দেশে বিদ্যমান সকল ব্যাংকের সাথে গ্রাহকদের যোগাযোগ ও লেনদেন সহজ করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিন্ধান্ত নিয়েছে। যাতে করে সকল শ্রেণির গ্রাহক ব্যাংকগুলোর দলিলাদি সম্পর্কে সঠিকভাবে তথ্য জানতে পারে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অধিকাংশ ব্যাংকের নথি যেমন, হিসাব খোলার ফরম, ঋণ মঞ্জুরিপত্র, বিভিন্ন প্রচার পত্র, আবেদনপত্র, চুক্তিপত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ ইংরেজিতে হওয়ায় স্বল্প শিক্ষিত গ্রাহককে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া তাদের ওয়েবসাইট গুলোতে তারা বাংলা ব্যবহারের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পুরোপুরি ইংরেজি ব্যবহার করছে। ফলে গ্রাহকরা ঋণদানকারী ব্যাংকের বিভিন্ন শর্ত ভালো ভাবে না বুঝেই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে যা পরবর্তী সময়ে ব্যাংকার ও গ্রাহকদের মধ্যে নানা জটিলতা সৃষ্টি করে। যা অনেক সময়ই গ্রাহক (বিশেষ করে স্বল্প শিক্ষিত ুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী শ্রেণী ) লোকসানের কারণ হয়ে দাড়ায়। ফলে ব্যাংকগুলোকেও অনেক সময় লোকসান গুনতে হয়। দেশের স্বল্প ও অর্ধশিক্ষিত মানুষের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনার দ্রুত বাস্তবায়ন চায় গ্রাহকরা। তাদের দাবী ব্যাংকগুলো সকল কাগজপত্রে ইংরেজি ব্যবহার করায় অনেক বিষয় তাদের বুঝতে কষ্ঠ হয়। যার কারণে তারা না ভোগান্তি পড়েন।
##################
দৈনিক ইনকলাবে প্রকাশিত

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


