১। শীতের সকালে নানী/দাদী গোত্রের কেউ নবজাতক শিশুকে রোদে বসিয়ে গায়ে সরিষার তেল মাখিয়ে দিচ্ছেন।
২। অফিস শেষ হওয়ার এক ঘন্টা আগে কেউ প্রস্তাব দিলো চানাচুর-মুড়ি মাখানোর জন্যে চাঁদা তোলা হোক। সবাই মিলে পেঁয়াজ-মরিচ কেটে বিশাল এক গামলায় মাখিয়ে খাওয়া শুরু করলো।
৩। হঠাৎ কারো ইচ্ছা হলো রিকশায় করে একা একা ঘুরতে।
৪। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পরিবারের ছোট মেয়েটি আবদার করলো, “বাবা ভিজতে যাবো।” মা বারণ করলেন। কিন্তু ছাদে গিয়ে তিনিই সবচেয়ে বেশি আনন্দ করলেন।
৫। পাশের বাড়ির খালাম্মা পান চিবুতে চিবুতে লালচে ঠোঁট নিয়ে গল্প করতে এসেছেন মায়ের সাথে। তবে তিনি বসবেন না, কারণ তার দেরি হয়ে যাবে। এ করে দুই ঘন্টা কাটিয়ে দিলেন।
৬। প্রাথমিক শ্রেণিগুলিতে আজ স্কুলে বই দিবে। মা পুরোনো ক্যালেন্ডারের পাতা খুলে বইয়ের মলাট করে দেবেন।
৭। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের ক্রমাগত ব্যর্থতায় অতীষ্ঠ হয়ে খেলা দেখা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর হুট করে তারা জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে এক ম্যাচে। প্রতিজ্ঞা ভুলে আবার খেলা দেখতে বসা।
৮। হঠাৎ করে কারেন্ট গেলে বিরক্ত হবার বদলে হৈ হৈ করে গল্পে-খেলায় মেতে ওঠা।
৯। ফুপা বা খালু গোত্রের কেউ একজন কোনো এক বিয়েবাড়িতে কোনো এক ইস্যু নিয়ে রাগারাগি করছেন। তার রাগ ভাঙানোর জন্যে রেজালার বাটিটা খাওয়ার সময় তার প্লেটের পাশেই রাখা হয়েছে।
১০। বাসায় গ্রামের বাড়ি থেকে মুরুব্বী মেহমানেরা এসেছে। তার জন্যে বিছানা ছেড়ে দিয়ে চ্যাংড়া প্যাংড়ারা ফ্লোরে, সোফায় ঘুমানোর আয়োজন করছে। গভীর রাত পর্যন্ত গল্প হবে।
১১। ছয় পদ খাওয়ানোর পর মেহমানকে লজ্জিত মুখে গৃহকর্তা বলছেন, তেমন একটা সমাদর করতে না পারায় তিনি খুবই লজ্জিত।
১২। মা আজকে রান্না করতে পারবেন না বলে বাচ্চারা খুব খুশি। কারণ, মাছের বদলে আলুভর্তা আর ডিমভাজি দিয়ে খাওয়া যাবে।
১৩। টংয়ের দোকানে কেক, কলা, বিড়ি খেয়ে নিজের বিল নিজেই গুণে দিয়ে দেয়া। দোকানদারের অত গোণার সময় নাই।
১৪। বিশ বছর সুখে-দুঃখে একসাথে কাটিয়ে দেয়ার পরেও স্ত্রীর মিষ্টি করে অভিযোগ “আমি বলেই আজও রয়ে গেছি তোমার সাথে। অন্য কেউ হলে সেই কবেই ছেড়ে যেতো!”
১৫। বইমেলা চলছে। বাবা মেলায় নিয়ে যান না বলে ছেলের রাগ। বাবা একদম শেষ শুক্রবারে বিশ্রাম বিসর্জন দিয়ে প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে গেলেন। বই কেনার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের জন্যে হাওয়াই-মিঠাই আর স্ত্রীকে ফুচকা খাওয়ানোতে সবাই খুশি।
১৬। দেশের প্রতি প্রেম কাজেকর্মে তেমন প্রকাশ না পেলেও দেশপ্রেমমূলক গানের অভাব নেই। এসব দেশাত্মবোধক গান বিশেষ বিশেষ দিবসে শুনলে আবার চোখে জলও আসে।
সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
সবার কাছে বাংলাদেশ ধরা দিক তার নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে।