টানা কয়েকবার রিং হওয়ার পর ধ্রুব ফাইনালি যখন ফোনটা রিসিভ করল তখন নীরা যেন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল । কিন্তু ধ্রুবকে বেশ রাগান্বিত স্বরেই বলে উঠল , " কী ব্যাপার তোমার ? ফোন ধরো না কেন ? "
" সরি ! শুনতে পারিনি ! "
" সেই কখন থেকে ট্রাই করছি ! ফোনের বাটন টিপতে টিপতে তো আমার আঙ্গুল ব্যথায় ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে । "
" হাহা । তাই নাকি ? আমি তোমায় অনেক বেশি ব্যথা দেই , না ? "
" হুমম ... অ-নে-ক ! "
" তাহলে আমায় এতো ভালবাসো কেন ? "
" কি আশ্চর্য !!! এটা কেমন প্রশ্ন ? ভালোবাসি , তাই ভালোবাসি । হয়তো তুমি এতোটা ব্যথা দাও বলেই এতো বেশি ভালবাসি । আর কথায় কথায় এমন উদ্ভট কথা বলবে নাতো , আমার ভীষণ রাগ হয় । আমি রেগে গেলে পরিণাম কি হবে তা তো তুমি জানোই । "
" ওরে বাবা । তোমাকে রাগাবো ? সেই সাহস কি আমার আছে ? আর কখনও বলব না । সরি, ওকে?"
" হুমম ... আচ্ছা এবার বলো - তুমি কোথায় ? "
" বাসে ।। "
" বাসে মানে ?! "
"বাসে মানে বাসে । অন দ্য ওয়ে টু ঢাকা । "
" কিন্তু আজ কেন ? তোমার না পরশু রওনা দেয়ার কথা ছিল ? হঠাৎ আজ যে ?"
" তুমি-ই না বলো আমায় না দেখলে ভালো লাগে না ?! তাই ! "
"ইশ ! আজ যেন ভালোবাসার সিডর বইয়ে দিলে ! আসল কারণটা বলো তো ! "
" হে হে ! আসলে ক্লাস শুরু হলেই কার্ড এক্সাম আছে কয়েকটা , তাই আগেই চলে এলাম !"
" ও ! তাই বলো । কিন্তু আজ না শনিবার ? তোমাকে না কতবার বারণ করেছি শনিবারে জার্নি করবে না । এই দিনে যাত্রা শুভ হয় না । "
"উফ্ ! তুমি কুসংস্কারগুলো এতো যে কেন মানো ! আচ্ছা এমন যদি হয় তোমার বিশ্বাস সত্যি হয়ে গেল আর আমি ঢাকায় পৌঁছাতে পারলাম না ! "
" যাহ্ পঁচা ছেলে ! মুখে যত্তসব আজেবাজে কথা ! ভালোভাবে এসো আগে তারপর তোমায় মজা দেখাচ্ছি । পৌঁছে ফোন দিও । এখন ছাড়লাম । "
"ওককে ম্যা'ম !!! "
ফোনটা ছাড়ার পর থেকেই নীরার কেমন যেন এক অস্বস্তি লাগছিল । সারা বিকেল ধ্রুবর ফোনের অপেক্ষাতেই কেটে গেল ।
সন্ধ্যার দিকে ধ্রুবর রুমমেট বিপ্লবদার ফোন পেয়ে নীরা ছুটে গেল ঢাকা মেডিকেলে ।
দুঃস্বপ্ন , দুঃশ্চিন্তা যে বাস্তবেরই অংশ ! ধ্রুবর সেই নিথর , নিষ্প্রাণ অস্তিত্ব নীরা কখনওই কল্পনা করতে পারেনি । তাই সেই অনাকাংখিত প্রতিমূর্তিটাকে সে কখনোই মনে ঠাঁয় দিতে চায়নি । ধ্রুব যে তার কাছে সর্বদাই 'ধ্রুব' , আকাশের সবচেয়ে উজজ্বল নক্ষত্রটার মতো !
ইতিকথা - আমি পেশাদার লেখক নই । নিয়মিত লেখা-লেখিও করি না ।আসলে লেখা-লেখি আমার মন খারাপের ঔষধ । পেপারে প্রতিদিন এক্সিডেন্টের এতো খবর পড়ে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায় । এই লেখাটা সে কারণেই লেখা ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


