“Bangladesh is our lovely motherland. It became independent after nine months of blood-shed liberation war in 1971. Myriads of people sacrificed their lives in the war to attain the freedom of their motherland………..”
আমার এক খালাতো বোন। ক্লাস টুতে পড়ে । মাঝে মাঝে যখন আমাদের বাসায় দু’একদিনের জন্য বেড়াতে আসে তখন তাকে পড়ানোর গুরুদায়িত্বটা এসে পড়ে আমার ঘাড়েই । এবারও তাই ঘটল । স্কুলের হোমওয়ার্ক করাতে বসে দেখি একগাদা পড়া !(এতোটুকুন একটা বাচ্চাকে কেন যে এতো প্রেসার দেয় তা আমার মাথায় আসে না,আর তাকে পড়াতে গিয়ে আমার প্রেসার হাই হয়ে যায়!)! এরপর দেখি ইংলিশ প্যারাগ্রাফ মুখস্ত করাতে হবে- OUR COUNTRY । এমনিতেই এই মেয়ে আমার চেয়ে এক ধাপ বেশি ফাঁকিবাজ । তার উপর মুখস্ত করানো তো আরও কঠিন। তবুও দোয়া পড়তে পড়তে শুরু করতে চেষ্টা করলাম । কিন্তু শুরু আর করতে পারলাম কই ?!
পড়ানোর আগেই শুরু হয়ে গেল তার প্রশ্নের সিডর । আর আমিও প্রাণপণ চেষ্টা করে চলছি তার প্রশ্নবান দৃঢ়চিত্তে মোকাবিলা করতে ।
প্রথম প্রশ্ন – আপু, বাংলাদেশ তো মায়ের মতো বকেও না, মারেও না । তাহলে এটা মাদারল্যান্ড হলো কেন ?
উত্তর – কারণ বাংলাদেশ মায়ের মতো আমাদের গর্ভে ধারণ করে । বুঝছিস? এবার মুখস্ত করা শুরু করি ?
সেও নির্বিকার উত্তর দিল, আচ্ছা । কিন্তু আগে বলো, বাংলাদেশ তো আমাদেরই মা। তাহলে আমাদের মায়ের জন্যই কেন আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে ?
দিত্বীয় উত্তর – কেউ যদি তোর মাকে তোর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চায়,তুই দিবি ?(সে না-সূচক মাথা নাড়লো)। সেরকম বাংলা মায়ের সন্তানেরাও তা মেনে নিতে পারেনি। তারা মেনে নিতে পারেনি তাদের মায়ের উপর পরশক্তি এসে জোড় খাটাবে ।তাই তাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে । বুঝলি তো ? এবার পড় ।
কিন্তু তার প্রশ্ন তো থামেই না- তারা তো নিজের মায়ের জন্যই যুদ্ধ করেছে । তাহলে তাদের মরতে হলো কেন ?
নিরুপায় আমিও উত্তর দিলাম - বাংলাদেশ তো বাংলার সন্তানদের মা, অথচ সব আদর – ভালোবাসা অন্য কাউকে কী করে নিয়ে যেতে দেয় বল ? তাই তারা যুদ্ধ করে , মৃত্যুর বিনিময়ে হলেও দেশের জন্য, দেশের মানুষ-আমাদের জন্য স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে ।
এরপরের প্রশ্ন শুনে আমি একটু আঁতকে উঠলাম ! আপু, বাংলাদেশ তো তোমার আর আমারো মা। তাই না ? তাহলে তুমি –আমি স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করি না কেন ?
উত্তর কী দিব বুঝে উঠতে না পেরে ওকে বকে দিলাম , আর কী যুদ্ধ করবো ? আমরা তো স্বাধীন-ই ।স্বাধীনতায় তোর আর আমার কী রে? স্বাধীনতা তো আমাদের । খুব ফাঁকিবাজি হচ্ছে , না ? আগে মুখস্ত করে আমার কাছে বল । এরপর যা প্রশ্ন আছে সব করিস ।
সেদিন আমার ঐ ছোট্ট বোনটার প্রশ্নটা প্রায়ই ভাবায় -
আমরা হয়তো স্বাধীন । কিন্তু এই স্বাধীনতার মর্যাদা কতোটুকুই বা রেখেছি ? বাস্তবিক জীবনে কতোটুকুই বা মনে রেখেছি যে – স্বাধীনতা শুধু আমার কিংবা আপনার না, স্বাধীনতা আমাদের ।১০:৬ এর ঐ লাল-সবুজ পতাকা কিংবা ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটারের ভৌগোলিক এক ম্যাপ ছাড়া কখনও কি বাংলাদেশকে নিজের সত্ত্বা কিংবা অস্তিত্বে ধারণ করেছি ?
১৬ই ডিসেম্বর , বিজয় দিবসে প্রতি বছর লাল-সবুজ পাঞ্জাবী/শাড়ি পরে সেজেগুজে স্মৃতি সৌধে ফুল দিতে যাই , নিজের স্বাধীনতা নিজেই উপভোগ করি । আমার স্বাধীনতা আমি অবশ্যই উদযাপন করবো-নতুন নতুন শাড়ী/পাঞ্জাবী পড়েই করবো কিন্তু সে সাথে আমরা কী পারিনা বিজয় দিবসে নিজের স্বাধীনতাকে সবার সাথে উদযাপন করতে ? আমরা কি পারি না ইভ-টিজিং, দারিদ্র্য কিংবা নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহযোদ্ধা হতে ?
আমরা পারি , আমরাই পারি । হয়তো জ্যাম/বিদ্যুৎ বিভিন্ন সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে ভীষণ অভিমানে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও করি না । কিংবা কী করবো/কীভাবে করবো তাই নিয়েই ভাবি । তবে এর উত্তরও আছে –
ক্লাসের বিরতিতে,ছুটির সময়, চরম ব্যস্ততা মাঝেও একটু ফাঁক পেলেই কমিউনিটি এ্যাকশন এর এ্যাকশনিয়াররা সামান্য হলেও কিছু একটা করতে চেষ্টা করে -দেশের জন্য , দেশের মানুষের জন্য ।
“সেবার মাধ্যমে বিজয়ের প্রকাশ” কন্সেপ্ট নিয়ে গত বছরের মতো এবারো কমিউনিটি এ্যাকশন কাজ করছে , সাথে আছে byei ও 1di অর্গানাইজেশন দু’টি ।
ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা প্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে কতোগুলো প্রতিষ্ঠান। দেখুন নিম্নের লিঙ্ক দু’টি –
সেবার মাধ্যমে বিজয়ের প্রকাশ ভিডিও
সেবার মাধ্যমে বিজয়ের প্রকাশ]
আপনার বিজয় দিবস এবার কীভাবে কাটাবেন ?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


