গত ২দিনের ঘটনা নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে।
১। প্রতিটি দেশে প্রতিটি সিস্টেমে কম বেশি দুর্নীতি থাকে। বিডিআর এর দুর্নীতি কি এতই বেশি ছিল যা এমন ঘটনার জন্ম দেবে? এই জাওয়ানরা আর সব দুর্নীতিবাজদের আমলে কোথায় ছিল?
২। রিক্সাচালক আমজাদ আলীর মত মানুষের দায়িত্ব কে নেবে?
৩। এটা কি আসলেই বিডিআর সদস্যদের প্রতিবাদ নাকি এর পিছলে ইন্ধন আছে?
৪। আমরা কি আসলেই স্বাধীন?
প্রশ্নগুলো গত ২দিন যাবত আমার মাথায় ঘুরছে। কিন্তু কোন সদোত্তর কেউ দিতে পারছে না। আশা করি কেউ দিতেও পারবে না। কিছু কিছু প্রশ্ন আছে কেউ উত্তর দেয় না। কিছু কিছু দায়িত্ব আছে যা কেউ নেয় না।
আমি বিডিআর এর নিয়ম কানুন খুব কম জানি। তবু গত ২দিনে কিছু কিছু নিয়ম বা নীতি অনুধাবন করার চেষ্টা করছি। কিছু সংবাদ পড়ে কিছু বা বিবিসি শুনে। টিভি মিডিয়ার উপর বিশ্বাস খুব কম আমার। টিভি মিডিয়া এ ধরনের ঘটনা আগে যে হ্যান্ডেল করেনি তা ভালই বুঝা যাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যম এ দেশের ইতিহাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। so, in my opinion you can rely on them as they have to filter all the news before publishing. টিভি মিডিয়ার কোন লাগাম নাই।এখানে আর একটু বলে রাখি বিডিআরে যে দুর্নীতি হচ্ছে এ বিষয়ে কোন তথ্য গোয়েন্দা সংস্থা কেন কোন পেপারেও আমি এখনো দেখিনি।
ঘটনার সূত্রপাত(সব মিডিয়ার মতে) দরবার হলে। বিডিআর জোয়ানদের মতে প্রথম ফায়ার করে একজন সেনা কর্মকর্তা, তারপর জোয়ানরা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে এসে ফায়ার শুরু করে। আমার প্রশ্ন-
১। সেনা কর্মকর্তা কি এতটাই বোকা এতজন জোয়ানের সামনে কোন ঘটনা না ঘটলে ফায়ার ওপেন করবে?
২। বুঝলাম সেনা কর্মকর্তা প্রথম ফায়ার করেছে। এরপর বাকিরা যে বাইরে যাচ্ছে সেনা কর্মকর্তারা কি তা খেয়াল করেননি?খেয়াল করে যদি থাকে তবে তারা কি কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা কাউকে জানায়নি?
৩। লাল স্কার্ফ মাথায় গেটে গেটে ছিল জোয়ানরা, যদি তাদের কথা ঠিকও হয় যে এটা পূর্ব পরিকল্পিত নয়, তবে এত স্কার্ফ এল কোথা থেকে?
৪। আমার জানা মতে অস্ত্র আর গুলি একসাথে রাখা হয় না। তাহলে অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে অন্যত্র থেকে গুলি নিয়ে এত তাড়াতাড়ি জোয়ানরা এল কিভাবে? অস্ত্রাগারের চাবি প্লাস গোলাবারুদের চাবি তাদের একসাথে দিল কে?
প্রত্যকেই বলছে যে এর মধ্যে কেমন যেন গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে না, গন্ধ আছেই। বিডিআর যে অন্যায় কিছু করেছে তার বড় একটা প্রমাণ লাশ গুম করে ফেলার চেষ্টা। নবাবগঞ্জে যে লাশগুলো ভেসে উঠেছে সেগুলোর গায়ে বুলেটের চিহ্ন রয়েছে। rank খুলে ফেলা হয়েছে। nameplate ছিল না।
বিএসএফ এর গুলিতে কোন জোয়ান মারা গেলেও তো সীমান্তে এত গুলি হয় না। এরকম যুদ্ধাংদেহী মনোভাব নিয়ে জোয়ানদের অবস্থান নেওয়া, একসাথে পুরো এলাকায় বিদ্রোহ সৃষ্টি হওয়া দেখে একটি কথাই আমার মাথায় আসছে- পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া এসব সম্ভব না। হয়তো সব জোয়ান তা জানতেন না। কিন্তু বিডিআর এর নিজস্ব (সেনাবাহিনীর অংশ নয়) যারা উর্ধ্বপদস্থ তারা যে এমনটি ঘটানোর পরিকল্পনা আগে থেকেই করেছেন সে বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
২১৩ বছরের পুরাতন হলেই কোন সংগঠন দুধে ধোয়া তুলসি পাতা হতে পারে না, তার সব সদস্য যা বলবেই তাই সত্য হতে পারে না। সবাই শুনেছে টিভিতে যে বিদ্রোহীরা বলছে কর্ণেলের দেহরক্ষী প্রথম ফায়ার করে। মিডিয়ার কেউ তখন একটিবারও প্রশ্ন করেনি যে, তারা কি স্বচোক্ষে তা দেখেছে? এমনওতো হতে পারে যে তাদের ব্রেন ওয়াশ করা হয়েছে?
একটি সরকারী সংস্থা হয়ে বিডিআর এমন করে যদি পার পেয়ে যায় তবে সামনের দিনে আরও অনেক ঘটনা যে ঘটবে তা সরকারও যে বুঝতে পারছে তাতে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
কোথাও একটিবার শোনা গেল না জোয়ানরা প্রতিবাদ মিছিল করছে, শোনা গেল না তারা অসন্তুষ্ট, সরাসরি রক্তাক্ত প্রান্তর?
যারা তাদের পিতা-স্বামী-ভাইকে হারিয়েছে তাদের সান্ত্বনা দেওয়া সম্ভব নয়। তারা কি দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন? না, তারা বলি হয়েছেন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থের কাছে। যে সব সন্তান আজ পিতৃহারা হয়েছে কি জবাব দেবেন তাদের মায়েরা, তাদের আত্মীয়রা? কে নেবে এসকল পরিবারের ভার?কে নেবে আমজাদ আলীর মত রিক্সাচালকের পরিবারের ভার। একজন মানুষের অভাব তার পরিবার ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারে না, কেউ না। এসব সেনাকর্মকর্তা(বিডিআর না কারণ বিডিআর আর এদেরকে নিজেদের অংশ ভাবে না)যদি সত্যি দুর্নীতবাজ হয়ে থাকেন তবে তাদের ভাগ্যে যদি এই জোটে তাহলে মহা দুর্নীতিবাজরা আজ বেঁচে কেন? ৭ কোটি (শোনা তথ্য)টাকা দুর্নীতির অভিযোগে যদি ১৩০ সেনাসদস্যকে এভাবে মাশুল গুনতে হয়, তবে বড় বড় দুর্নীতিবাজদের কি করা উচিত?সীমান্ত এলাকায় যে চোরাচালান হয় তা তো আমার জানামতে অনেকগুলো বিডিআর এর সামনে দিয়ে হয়।
আশপাশের মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি বিস্মিত হই। আমরা সম্ভবত একটি হত্যাযজ্ঞকে প্রথমবারের মত বৈধতা দিয়েছি। সেনাবাহিনী কি এতই খারাপ??বিডিআর গেটের সামনে মানুষের হইহই রই রই দেখে মনে হয়েছে যে জনতা বিডিআরদের সাথে। তাদেরকে বলছি আপনাদের কোন আত্মীয় ভিতরে থাকলে দেখতাম তখন কেমন লাফান? টিভি মিডিয়া খালি বলেছে জোয়ানদের “আপনাদের চাওয়া কি, দাবি কি?”তারাও সুযোগ পেয়ে একতরফা বলে গেছে আর আমরাও একতরফা শুনেছি।
যাদের দোষে আজ এতগুলো মানুষকে প্রাণ দিতে হল তাদের বিচার “হবে না”। এর কারণ অনেক পুরনো, এই ঐতিহ্য অনেক পুরনো। আমাদের ইতিহাসে আরও একবার দেখা গেল অস্ত্র যার হাতে সে সবসময়ই পার পেয়ে যায়। আমরা জাতি হিসেবে যে ধ্বংসাত্মক তাও আর একবার প্রমাণিত হল।
I salute those who died. I salute them with my heart out. We students have a long rivalry with army. Somehow this time I feel that they have been betrayed, brutally killed. Not only are the army officers dead but also some of their families. We should have acted more responsibly.
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



