somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেজ নাইটঃ (গেম অব থ্রোন্সের প্রিকুয়েল সিরিজ) ডানকান এগ সিরিজঃ পর্ব-৪

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সাধারণ সময়ে তৃণভূমিটা সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতো অ্যাশফোর্ড শহরে আর নদীর তীরে যাতায়াত করার জন্যে, কিন্তু এখন তা পুরোপুরি বদলে গেছে। রাতারাতি আরেকটা শহর দাঁড়িয়ে গেছে, ইট পাথরের শহরের বদলে তাবুর শহর, আসল শহরটার চেয়ে অনেক বড় আর অনেক সুন্দর করে সাজানো। ব্যবসায়ীরা তাদের স্টল দাড় করিয়ে দিয়েছে মাঠের মাঝে। তারা উলের কাপড় আর ফল বিক্রি করছে, কেউ কেউ জুতা আর বেল্ট, চামড়া আর পালক, মাটির পাত্র, জেমস্টোন, দস্তার কাজ, মশলা, বিছানার পালক, আর নাম না জানা হরেক রকম জিনিসের পশরা বসিয়েছে। ভাড়েরা, পাপেটশোকারি আর জাদুকরেরা ভীড়ের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর তাদের দক্ষতা দেখাচ্ছে। যেমনটা ঘুরে বেড়াচ্ছে বেশ্যারা আর পকেটমারের দল। ডাঙ্ক এক হাত দিয়ে কয়েনের ব্যাগটা দেখে নিল।


তার জিভে জল চলে আসল যখন সে আগুনের মাঝে চিরচির করতে থাকা সসেজের ঘ্রাণ পেল। সে একটা তামার কয়েন দিয়ে একটা সসেজ কিনল, সাথে গলা ভেজানোর জন্যে এক শিং এল কিনে নিল। সে খেতে খেতে দেখতে থাকল কাঠের নাইট আর কাঠের ড্রাগনের মাঝের যুদ্ধ। যে পাপেটিয়ারটা ড্রাগনটাকে নিয়ন্ত্রণ করছিল তাকেও দেখতে তার ভালো লাগল। লম্বা ছিপছিপে ধরনের, জলপাইয়ের মত গায়ের রঙ, কালো চুলের ডর্নিশ এক মেয়ে। সে যুদ্ধের বল্লমের মত রোগাটে আর সমতল বক্ষ বিশিষ্ট। কিন্তু ডাঙ্কের তার চেহাড়াটা ভালো লাগল আর তার হাতের কাজ; যেভাবে সে ড্রাগনকে নাড়াচ্ছে দড়ির মাথা নাড়িয়ে। সে মেয়েটাকে একটা তামার মুদ্রা ছুড়ে দিত যদি তার কাছে অতিরিক্ত খরচ করার মত থাকত। এখন তার প্রত্যেকটা কয়েনই দরকার!


বণিকদের মাঝে হয়তো বর্ম প্রস্তুতকারকেরাও থাকবে, সে ভাবল। একটা নীল ফালা করা দাড়ির টাইরশি সুসজ্জিত কিছু শিরস্ত্রাণ বেচছিল, চমৎকার এই জিনিসগুলো বানানো হয়েছে পাখি আর বিভিন্ন প্রাণির আদলে, সোনা আর রূপা দিয়ে ঠাসা। অন্যদিকে সে একটা তলোয়ার প্রস্তুতকারকে পেল যে ফেরি করছিল কম দামি স্টিলের ব্লেড। সে দেখল আরেকজন ফেরিওয়ালারটা তার থেকে ভাল, কিন্তু সে সোর্ডের জন্যে এখানে আসে নি।


যাকে সে খুজছিল সে বসেছে কলামটার একেবারে পেছনে, একটা ঝকঝকে চেইনের শার্ট আর এক জোড়া স্টিলের গন্টলেট (হাত মোজা) তার টেবিলের উপরে সাজানো। ডাঙ্ক ভালো করে দেখল। “তুমি দেখি ভালই বানাও,” বলল সে।


“হ্যা অবশ্যই!” কামারটা দেখতে মোটা ও বেটে, কোনভাবেই পাচ ফুটের চেয়ে বেশি হবে না। তারপরও তার বুকের পাজর আর হাতের পেশি ডাঙ্কের মতই প্রশস্থ। তার মুখের উপর বিরাট কাল মোচ বসানো, চোখে কোন নমনীয়তা নেই।


“আমি টুর্নির জন্যে বর্ম চাই,” ডাঙ্ক তাকে বলল। “ একটা চামড়ার ভালো কোট, সাথে গলার বর্ম (gorget) আর শিনের জন্যে গ্রিভস আর গ্রেট-হেল্ম (শিরস্ত্রাণ)।” বুড়োর অধেক-হেল্মটা তার মাথায় আটত কিন্তু সে আরো বেশি প্রোটেকশন চাইল শুধুমাত্র নাকের উপরের হালকা লোহার পাতটা ছাড়া।


বর্ম প্রস্তুতকারটা তার দিকে ভালো করে তাকালো। “তুমি বিশাল দেহের মানুষ, কিন্তু আমি তোমার চেয়েও বিশাল আর্মর বানিয়েছি।” সে তার টেবিলের পেছন থেকে বের হয়ে আসল। “হাটু গাড়, আমি তোমার কাধটা মেপে দেখব। আই, আর তোমার ওই মোটা গলাটাও!” ডাঙ্ক হাটু গেড়ে বসল। আর্মরারটা সমান গিট বিশিষ্ট একটা ফিতা দিয়ে ডাঙ্কের কাধ মাপল। ঘোতঘোত করে সে মাপার দড়িটা তার কাধের উপরে চড়াল, “তোমার হাতটা উচু কর, না, ডান হাতটা।” আবারো সে ঘোতঘোত করে উঠল। “এখন তুমি দাড়াতে পার।” সে
এরপর ঘোতঘোত করতে করতে তার পায়ের নিচে, হাটুর চারপাশে আর তার কোমরের চারপাশ মাপল। “ আমার কাছে কিছু আছে যা তোমার লাগতে পারে,” কাজ শেষ করে লোকটা বলল। “কোনটাই সোনা কিংবা রুপা দিয়ে বাধাই করা না, তোমাকে আগেই জানিয়ে রাখলাম, কিন্তু সেগুলো ভালো স্টিলের, শক্ত আর মশৃণ। আমি হেল্ম বানাই যেগুলো দেখতেও হয় হেল্মের মতই, ডানাওয়ালা শুয়র কিংবা কিংভুৎকিমার্কা বিদেশি ফল বানাই না, তোমার মুখে যুদ্ধের একটা বল্লম ঢুকে গেলেও আমার হেল্ম থাকলে কিছুই হবে না।”

“আমি এমন কিছুই চাই,” ডাঙ্ক বলল। “কত হবে?”
“আটশ স্ট্যগ, আমি তোমার জন্যে কম করে ধরলাম।”


“আটশ!” সে যা ভেবেছিল এটার দাম তার থেকেও বেশি। “আ...আমি তোমার সাথে পুরোনো কিছু আর্মর বিনিময় করতে পারি, ওটা বানানো হয়েছিল আরো ছোটখাট মানুষের জন্যে… একটা অর্ধ-হেল্ম, একটা চেইনের হাউবার্ক…”


“এই স্টিলের পেইট শুধুমাত্র নিজের কাজগুলোই বিক্রি করে।” সে ঘোষণা দিল। “কিন্তু হতে পারে আমি ঐ সব মেটাল ব্যবহার করতে পারব। যদি খুব বেশি মরিচা না পরে থাকে। আমি ওসব নিয়ে তোমাকে আর্মর দিতে পারব ছয়শোর মধ্যে।”


ডাঙ্ক পেইটের কাছে মিনতি করতে পারে তাকে বিশ্বাস করে আর্মরটা দিয়ে দিতে, কিন্তু কি জবাবটা এই ধরনের মিনতির জন্যে সে পাবে আন্তাজ করতে পারল। সে বুড়োর সাথে ঘুরাঘুরি করার ফলে জানত যে বণিকেরা হেজ নাইটদের মোটেও বিশ্বাস করে না। তারা ডাকাতদের চেয়ে কিছুটা ভাল, এতটুকুই! “আমি তোমাকে এখন দুইটা রুপার স্ট্যাগ দিচ্ছি, আর কাল আর্মরের সাথে পাবে বাকিটুকু।”

আর্মরারটা কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে ভাবল। “দুইটা সিলভার স্ট্যাগ তোমাকে শুধু একদিন সময়ই দিবে, এরপরে আমি আমার কাজ যে আসবে তাকেই দিয়ে দিব।”


ডাঙ্ক তার থলে থেকে দুইটা স্ট্যাগ বের করল আর আর্মরারের প্রসস্থ হাতের তালুতে ফেলল। “তুমি পুরোটাই পাবে। আমি এখানে এসেছি চ্যাম্পিয়ন হতে।”

“তাই নাকি?” পেইট কামড় দিয়ে কয়েনটা যাচাই করে নিল। “আর তারা, তারা তাহলে এসেছে তোমার জন্যে হাততালি দিতে?”

আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×