somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গর্দভ ভোলাদার চাকুরী খোঁজা!

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভোলাদার খুব ইচ্ছে এবার সে চাকুরী খুজবে। যদিও এতদিন ভবঘুরের মত এদিক সেদিক কাটিয়েছে। চাকুরী, চাইলেই আর পাওয়া যায় না৷ তার জন্য দরকার বিস্তর পড়াশোনা। কিভাবে প্রস্ততি নেওয়া যায়?
কয়েজনের সাথে আলাপে ভোলাদা যা জেনেছে তার সারমর্ম হলো- চাকুরী পেতে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে, বিভিন্ন বিষয়ে অধিক জ্ঞান না থাকলে চাকুরী পাওয়া যাবে না, সবকিছু বাদ দিয়ে চাকুরীর পড়াশোনা করতে হবে।
উন্মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানো পাখি কি খাঁচায় থাকতে পারে? এই কথা ভেবে দিশেহারা ভোলাদা। বাজার থেকে সদ্য কেনা বইয়ের আকার আর ভিতরের আলোচনা দেখে ভোলাদার মাথা গরম, যেন প্রেসার বেড়ে চোখ দিয়ে ফুটে বের হবে ।
বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়ে গাছ, পাখির সাথে কথা বলা আর পড়াশোনা করা এক কথা নয়। নিরুপায় হয়ে ভোলাদা নিজের ফেসবুকে চাকুরীর প্রস্তুতির বিভিন্ন গ্রুপে ' সহজে কিভাবে৷ চাকুরির প্রস্ততি নেওয়া যায়' তা জানতে চেয়ে পোস্ট দিলো। এই গ্রুপের খবর সে জেনেছে তার চাকুরীজীবী বন্ধু আবল পালের থেকে।
যাইহোক, পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে কমেন্ট পাওয়া গেলো। বেশ আগ্রহ নিয়ে কমেন্ট পড়ছে ভোলাদা-
১ম কমেন্টঃ চাকুরীর প্রস্তুতি পানির মতো সহজ, সহজে প্রস্ততি নিতে আপনি এই গ্রুপে যোগ দিন।
২য় কমেন্টঃ মাত্র ৪০ দিনে প্রস্তুতি নিতে আপনি এই পিডিএফ ফাইলটি সংগ্রহ করুন।
৩য় কমেন্টঃ সহজে চাকুরীর প্রস্তুতি নিতে এই চ্যানেলটি (চ্যানেলের লিংক) সাবস্ক্রাইব করুন।
৪র্থ কমেন্টঃ নিশ্চিত চাকুরী পেতে প্রথমে আপনি "১০০ দিনে চাকুরী" বইটি প্রতিটি অধ্যায় খুটে খুটে পড়ুন৷ এরপর, "১০০ দিনে চাকুরী মডেল টেস্ট" বইটি সংগ্রহ করে মডেল টেস্ট দিন। এরপর পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার আগেই আমরা একটি শর্ট সাজেশন বের করব তা সংগ্রহ করুন। নিয়মিত বিভিন্ন তথ্য জানতে নিম্নোক্ত গ্রুপে যোগ দিন ও এই চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।
৪র্থ কমেন্টটি মনে ধরেছে ভোলাদার। কারণ, এর আগে ভোলাদা এমন অনেক বই পড়েছে। 'সাত দিনে ইংরেজী শেখা", '১৪ দিনে হিন্দি শেখা', ২১ দিনে রান্না শেখা' এমন বই পড়ার অভিজ্ঞতা আছে ভোলাদার। যদিও এই বইগুলো বছরের পর বছর পরেও ভোলাদা আজ অবধি এক লাইন ইংরেজী বলতে পারে না।
যাইহোক, মনে মনে ভাবলো যে অবশ্যই আমাকে এই বইগুলো সংগ্রহ করতে হবে। এত সহজে চাকুরীর পাওয়ার সুযোগ মিস করা যাবে না।
ভোলাদা তার গুরু মদন মিত্রের সাথে এই বিষয়ে আলাপ করলো। মদন মিত্র বেশ মেধাবী, একটি কলেজে যুক্তিবিদ্যা পড়ায়।
মদন মিত্র ভোলাদাকে বলল, "এত সহজে চাকুরী, বিশাল ব্যপার। তুই বই কেনার আগে গুগুলিং করে বইগুলো দেখে নে'।
কথামতো ভোলাদা গুগলে বইয়ের কাভার পেজ সংগ্রহ করে মদন মিত্রের বাসায় হাজির। কফি হাতে মদন মিত্র ভোলাদার পুরনো মোবাইলটা নিয়ে বইগুলোর ছবি ও লেখকের নাম দেখলো। বিজ্ঞের মত ভোলাদার দিকে তাকিয়ে মদন মিত্র বলল,
- 'তুই যেখানে পোস্ট করেছিস সেটা দেখা'।
ফেসবুকে পোস্ট ও কমেন্ট দেখে মদন মিত্র মাথা ঝাকিয়ে বলল,
-' ও আচ্ছা, বুঝছি।
হাবলার মত তাকিয়ে থাকা মদন দা কিছু না বুঝে জিজ্ঞেস করল,
- ' কি দেখলে এত মনযোগ দিয়ে?'
মদন মিত্র ভোলাদার সামনে মোবাইল এনে বলল,
- 'দেখ যিনি কমেন্ট করেছে তার নাম,আর এই বইয়ের লেখকের নাম এক, আর লেখক পরিচিতির ছবি আর কমেন্টদাতার প্রোফাইলের ছবি এক, মানে কমেন্ট দাতাই এই বইয়ের লেখক'।
গর্দভ ভোলাদা এই কথার কোনো মানে খুজে পেলো না। নিজে নিজে বিড়বিড় করতে থাকলো। ভাবল, কি বুঝালো মদন দা? মাথার মধ্যে এই কথাটা খুব খোঁচাচ্ছে। বুঝল, তার কাম্য নয় এর মানে বুঝা। শুধু ভাবছে, কেন যে মদন দার মতো তার বুদ্ধি নেই।
তার যে বুদ্ধি নেই সে নিজে জানে। কারণ মদন দার মতো বুদ্ধিমান হলে তো তার একটা চাকুরী থাকতো, মনের দুঃখে বন,জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে হতো না।

সুত্রঃ মানসিক বিকারগ্রস্ত ভোলাদার ডায়েরি।
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×