somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মরিচ চাষ, কৃষি গবেষণার নতুন দিগন্ত!

০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঝাল জাতীয় ফসল মরিচ মাঠে আবাদ করতে দেখেছে সবাই। মসলাজাতীয় এই ফসলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মানব সমাজে। আমাদের প্রতিদিনের তরকারিতে মরিচ অতি প্রয়োজনীয় ফসল।
কৃষকদের বিস্তৃত মাঠে মরিচ ক্ষেত দেখতে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু এবার সেই মরিচ চাষ হলো আন্তজার্তিক মহাকাশ স্টেশনে। চার মাস আগে রোপন করা মরিচ গাছে দেখা মিলেছে মরিচের। মহাকাশচারী মেগান ম্যাকআর্থার তার টুইটারে মহাকাশ স্টেশনে জন্মানো মরিচের ছবি প্রকাশ করেন। নাসা একটি অফিসিয়াল বার্তায় জানিয়েছে, মহাকাশ স্টেশনে মরিচ চাষ তাদেও প্ল্যান্ট হ্যাবিটেট (পিএএইচ-০৪) প্রকল্পের একটি অংশ। মহাকাশ স্টেশনের প্রতিকূল পরিবেশে মরিচ চাষ করতে পারা সত্যিই দুরুহ কাজ। এর জন্য বিজ্ঞানীদেওর বিশেষ ব্যবস্থায় মরিচ চাষ করতে হয়েছে। মহাকাশ স্টেশনের পরিবেশে মরিচের অঙ্কুরোদগম ও বৃদ্ধির সময়কাল স্বাভাবিক পরিবেশের তুলনায় অনেক বেশি। জানা গেছে উৎপাদিত মরিচের স্বাদ নিবেন প্রথমে মহাকাশ স্টেশনের ক্রুরা, এরপর কিছু মরিচ পৃথিবীতে পাঠানো হবে।

মহাকাশে চাষাবাদের প্রভাব
পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহের অনুসন্ধানে প্রতিনিয়ত চলছে নতুন নতুন গবেষণা। পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে অবস্থান করে গবেষণা পরিচালনা ও অন্য গ্রহ অনুসন্ধানে ক্ষেত্রে মহাকাশে চাষাবাদ পরিকল্পনা হতে পারে একটি চমকপ্রদ ধারণা। যদি বিজ্ঞানীরা শূণ্য অভিকর্ষে বা পৃথিবীর তুলনায় কম অভিকর্ষে ফসল আবাদের সক্ষমতা অর্জন করে, স্বাভাবিকভাবে চাঁদ বা অন্য কোনো গ্রহে আর্টেমিস মিশন পরিচালনার প্রস্তুতিতে বড় সহায়ক হবে। আর্টেমিস মিশন হলো নাসা পরিচালিত বিশেষ মিশন। এই মিশনের উদ্দেশ্য হলো ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথমে নারী নভোচারী ও পরবর্তীতে পুরুষ নভোচারী প্রেরণ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মঙ্গলের মতো দীর্ঘকাল ব্যাপী অভিযান বা যে সকল অভিযানে পুনরায় প্রয়োজনীয় রসদ পাঠানো মুশকিল সেসকল ক্ষেত্রে নভোচারীদের টিকিয়ে রাখার জন্য বিশেষ কোনো পদ্ধতি আবিষ্কারের পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। তাদের চাষাবাদ গবেষণার গুরুত্ব নিয়ে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাসা এই বিষয় উল্লেখ করে।

চাঁদে বা মঙ্গলে প্রেরিত নভোচারীদের খাবার যোগান দেওয়া একটি জটিল কাজ। বিশেষ করে যখন নভোচারীরা পৃথিবী থেকে পাঠানো প্যাকেজ খাবারের উপর নির্ভর করে, তখন জটিলতা আরো বেড়ে যায়। বিশেষ করে মঙ্গল গ্রহের মতো অংশে গবেষণায় অধিক জ¦ালানী সরবরাহ ও সময়ের প্রয়োজন হয়।
মহাকাশে চাষাবাদের এই সফলতা নভোচারীদের খাদ্য যোগানে বড় সহায়ক হবে। অনেকটা পৃথিবী থেকে পাঠানো প্যাকেজ খাবারের মতো খাবার তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে পারবে। দেখা গেছে নভোচারীরা প্যাকেজ খাবার গ্রহণ করে মহাশূণ্যে অবস্থান করলেও নির্দিষ্ট সময় পার তাদের দেহে অনেক পুষ্টি উপাদান হ্রাস পায়। বিশেষ করে তাদেও শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে’র ঘাটতি দেখা যায়। মহাকাশে ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে নভোচারীরা ভিন্ন ভিন্ন খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে যা তাদের দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যোগান দেবে বলে মনে করেন নাসার বিজ্ঞানীরা

চাষাবাদের জন্য মরিচ কেন?

চাষের উপযোগী বহু ফসল থাকলেও নভোচারীরা কেন মরিচ বেছে নিলেন? মহাশূণ্যে চাষাবাদ নিয়ে গবেষণায় মরিচ বেছে নেওয়ার কারণ এটি বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ধারণ করে। বিশেষ করে মরিচ ভিটামিন সি এর একটি বড় উৎস হিসেবে পরিচিত।

পাশাপাশি মরিচ গাছে স্বপরাগায়ন ঘটে, খুব সহজে ফল পাওয়া যায় এবং সফলভাবে মাইক্রোগ্রাভিটিতে চাষ করা যায়। এটি খাবারে স্বাদের ভিন্নতা নিয়ে যা নভোচারীদের পছন্দের আরোও একটি কারণ।
নাসার মতে, ২০১৫ থেকে আজ অবধি বিজ্ঞানীরা ১০ প্রকার ফসল মহাকাশ স্টেশনে চাষ করেছেন এবং আগামীতে মহাকাশ স্টেশনে অবস্থানকারীদের সতেজ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার যোগান দিতে চাষাবাদ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।


সূত্রঃ রিপাবিলিক ওয়ার্ল্ড ডট কম

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×