পাখি শিকারী মোহাইমিনুল
_________________________
মোহাইমিনুল একজন পাখি শিকারী এবং পাখি খাদক। ছোটবেলা থেকে সে ধানের ক্ষেতে ও বিলে ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে। পাখি শিকার তার নেশা। সেই পাখি বাসায় এনে রান্না করে,তারপর মজা করে খায় এবং ইয়ার বন্ধুদের দাওয়াত দিয়েও খাওয়ায়। সবাই তাকে বাহবা দেয়। মানুষের নকল ভালোবাসায় সে আরও দ্বিগুণ উৎসাহে পাখি শিকার করে। পাখিদের দুঃখ কষ্ট অসহায়ত্ব তার লোভী চোখে ধরা পড়ে না।
এলাকায় তার নাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।অনেক লোকজন তার পাখি শিকার নিয়ে গালগল্প করতে থাকে,তাকে নানাভাবে উৎসাহিত করে তবে কেউ কেউ তার পাখি শিকারকে অপছন্দও করে। তারা প্রতিবাদ করে । মোহাইমিনুল এসব ব্যপার একটুও পাত্তা দেয় না। সে অহংকারী ব্যক্তি অন্যের সৎ উপদেশ তার সহ্য হয় না। এদিকে যারা মোহাইমিনুলের পাখি শিকারের বিপক্ষে তারা মোহাইমিনুলের বন্ধুদের দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়।
একসময় ইয়ার বন্ধুদের পরামর্শে মোহাইমিনুল অতি উৎসাহী হয়ে শহর থেকে ইয়ারগান কিনে আনে এবং একের পর এক পাখি শিকার করতে লাগে আর গান বাজনা সহ ভোজ সভা বসায়। শীত মৌসুমটা তাদের দারুণ আনন্দে কাটে। এলাকায় পানিশূন্য অবস্থা তৈরি হয়।
এদিকে একদিন হঠাৎ গুটিকয়েক পাখি সংঘবদ্ধ হয়ে তাকে উড়ে এসে মাথা বরাবর আক্রমণ চালায়। এলাকার লোকজন হঠাৎ খেয়াল করে দেখে এই ঘটনার পর থেকে মোহাইমিনুল বাইরে বের হলেই কোন না কোন পাখি তাকে আক্রমণ করে।
একসময় সে পাখিদের ভয়ে আর ঘর থেকে বের হয় না। তাকে বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ লাগে। এদিকে মোহাইমিনুল বিয়ে করেছে প্রায় সাত বছর হয়েছে তাদের সন্তান নেই।সন্তান হয় নি আর কি। ডাক্তার কবিরাজ সহ নানা তৎবির সত্ত্বেও সন্তানের মুখ সে দেখতে পায় না। তার বউ কান্দে আর বিলাপ করে বলে,
- পাখিখোরের পাখির অভিশাপ লাগছে।
যদিও কথাটা ঠিক না,এটা কুসংস্কার। তবু কেউ কেউ বলে কারও ঘর ভাঙলে তারও ঘর একদিন উজাড় হয় প্রকৃতির নিয়মে।
মোহাইমিনুলের জীবনে এখন চির অশান্তি বিরাজ করছে। বন্ধু বান্ধব ও তার পাশে নেই। নিঃসঙ্গতা তার সঙ্গী এখন।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৮:৫৬