অনেকদিন ধরেই ব্যাপারটা নিয়ে লিখব ভাবছিলাম। দুই তারিখে একটা খবর দেখে আর না লিখে পারলাম না।View this link
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের গণভবন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সাব্বিরকে প্রহার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন শিক্ষক। আইনত শিক্ষকেরা শাস্তি দিতে পারেন না। এই শিক্ষক আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ছাত্রকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই শিক্ষকের কাছ থেকে তার ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে? তিনি কি মানুষ গড়ার কারিগর না মানুষ মারার কারিগর ?
আমার লেখা দেখে কেউ মনে করতে পারেন আমি বুঝি শিক্ষকদের সমালোচনা করতে নেমেছি। মোটেও তা করতে আমি আসিনি। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপারে আসলে মনে প্রশ্ন জাগে।
এক সময় শিক্ষকতা একটা সম্মানজনক পেশা ছিল। কিন্তু আজকাল দেখা যায় অনেকে কোন চাকরী না পেয়ে শেষ উপায় হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নিচ্ছেন। যে শিক্ষকতাকে নিরুপায় হয়ে পেশা হিসেবে বেছে নেয়, সে অনেক সময়ই যোগ্য নাও হতে পারে। আসলে শিক্ষক হবার যোগ্যতা বা মাপকাঠিটা আর উন্নত হওয়া উচিৎ ছিল। এটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা বড় দোষ। একবার আমার এক শিক্ষক বলেছিলেন জুনিয়র/প্রাইমারি লেভেলে পাঠাতে হয় সবচেয়ে ভালো শিক্ষকদেরকে, তাহলে একজন শিক্ষার্থী ছোটবেলা থেকেই সুশিক্ষিত হয়ে উঠতে পারবে। কিন্তু জুনিয়র লেভেলে যে বেতন, একজন যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক কেন সেখানে পড়ে থাকতে চাইবেন? তিনি চাইবেন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, নিদেনপক্ষে হাই স্কুলের শিক্ষক হতে। সুতরাং যা হবার তাই হচ্ছে, গাছের গোঁড়াই পচা থাকছে। আমরা সার্টিফিকেট পাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু শিখছি কতটুকু। এখন যা অবস্থা, ভালো সাবজেক্ট মানে যেটা পড়লে ভালো চাকরির নিশ্চয়তা বেশি। জ্ঞানের চেয়ে গ্রেডের দাম বেশি।
কিছু ঘটনা বলা যাক। প্রথম ঘটনাটা চিটাগাং ইস্পাহানি স্কুলের। এক শিক্ষার্থীর ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট দেখে তার বাবা-মার সন্দেহ হয়। পরে কোনভাবে তার খাতাগুলো পুরানো কাগজের দোকান থেকে বের করার পর ধরা পড়ে স্কুলের দুর্নীতি। খাতার নম্বরের সাথে রেজাল্ট কার্ডের অসামঞ্জস্য ধরা পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় অনেকেই এ দুর্নীতির শিকার। ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায় প্রাইভেট না পড়তে চাওয়ার কারণেই তাদের সাথে এমনটি হয়েছে, খাতার পঁচাত্তর মার্ক শিটে হয়ে গেছে ত্রিশ। আরো অনেকেরই একইভাবে ঐ দোকান থেকে খাতা বের হয়েছে, ধরা পড়েছে স্কুলের দুর্নীতি। এ নিয়ে টেলিভিশনেও রিপোর্ট হয়েছে View this link , কিন্তু স্কুলের টনক নড়েছে কিনা জানা যায় নি। এখন আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই। ধরলাম প্রাইভেট না পড়ার কারণে একজনকে ফেল করানো হল। সে অপমান না সইতে পেরে আত্মহত্যা করলো। একে কি আমি আত্মহত্যা বলবো না খুন বলবো? আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা কি এভাবে ভেবে দেখেছেন?
অনেক সময় শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পড়া বুঝতে পারে না বলে প্রাইভেট পড়ে। তাই বলে সবার যে পড়ার দরকার আছে তা কিন্তু নয়। অনেকের আবার আর্থিক সঙ্গতিও হয় না। কিন্তু এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ শিক্ষক আছেন যারা ক্লাসে কিছুই বোঝান না, বা এমনভাবে পড়ান বা ইঙ্গিত করেন যাতে শিক্ষার্থীতার কাছে যেতে বাধ্য হয়। না গেলে অনেক সময় তার প্রভাব তো খাতায় পড়েই, এমনকি একবার এক শিক্ষককে বলতে শুনেছিলাম একথা বলতে, “আমার কাছে না আসলে দেখে নেব তুই কিভাবে পাশ করিস”। অথচ শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্বই কিন্তু ক্লাসে পড়া বুঝিয়ে দেয়া।
এবার এক ভদ্রলোকের(!) কথা বলবো, জনাবের নাম পরিমল জয়ধর। তিনি শুধু প্রাইভেট পড়িয়েই সন্তুষ্ট থাকেননি, সরাসরি ‘মিউচুয়াল সেক্সে’ চলে গেছেন, উপর্যুপরি ধর্ষণ করেছেন প্রাইভেট পড়তে আসা এক ছাত্রীকে। তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করেছেন, বারবার নির্যাতন করেছেন। পরিমলকে পেলে একবার জিজ্ঞেস করতে চাই, তোমার মেয়েকে যদি কেউ এভাবে ধর্ষণ করে তাহলে তোমার কেমন লাগবে? মনে হয় খারাপ লাগবে না, কারণ পরিমল পশুবৃত্তিক পর্যায়ে চলে গেছে। আসলে পরিমলকে পশুর সাথে তুলনা করলে পশুরই অপমান হয়, কারণ পশু প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছুই করে না। আরো আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশের আনাচে কানাচে আরো অনেক পরিমল রয়েছে। সংবাদপত্রে মাঝে মাঝেই পাওয়া যায়, অমুক জায়গায় শিক্ষকের হাতে ছাত্রী নির্যাতিত। ভাবতে অবাক লাগে, ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের মত একটা সম্পর্ককে কিভাবে কলুষিত করা হচ্ছে।
ক্লাসে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা আমাদের দেশের আইনে নিষিদ্ধ। কিন্তু কয়জন এই আইন মানেন সেটা একটা প্রশ্ন। তুচ্ছ কারণে অনেক সময় জোটে প্রচণ্ড শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন। শিক্ষকরাও তো একসময় ছাত্র ছিলেন, তাদের কি মনে নেই শাস্তি পেলে কেমন লাগে? আমি বলছি না যে শাসনের দরকার নেই। তাই বলে শাসন মানে কি সবার সামনে বেদম মার, কটু কথা আর অপমান? এসব না করে কি ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করা যায় না? এমন কোন শিক্ষক কি নেই যিনি মারধোর না করে, অপমান না করে, ভয় না দেখিয়ে সেরাটা আদায় করতে পেরেছেন? অল্প হলেও আছেন। তারা পারলে বাকিরা কেন পারবেন না? আমার কি মনে হয় জানেন? যারা নিজের ছাত্রছাত্রীদের নির্যাতন করেন, তারা আসলে পড়াতে অক্ষম এবং মানসিকভাবে অসুস্থ। তারা নিজেরাও সেটা জানেন এবং জানেন বলেই সেটা আড়াল করার জন্য নির্যাতনকে বেছে নেন। আজকাল যখন স্কুলে পড়া বাচ্চাদের দেখি, তখন মনে হয় একজন মানুষ কিভাবে পারে একে গরুর মত পেটাতে, ক্লাসে সবার সামনে তার বাবা-মা নিয়ে কথা বলতে। কিছু কিছু স্কুলে শুনেছি পুরুষ শিক্ষকেরা মেয়েদের গায়ে পর্যন্ত হাত দেয়। কতটা কুৎসিত মানসিকতা চিন্তা করুন।
শারীরিক নির্যাতনের প্রসঙ্গে একটা কৌতুকে শোনা দুটো লাইন মনে পড়ছে, না লিখে পারছি না।
“গাধা পেটালে হয় না অশ্ব
অশ্ব পেটালে হয় যে গাধা”
স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের আরেকটি অভ্যাস হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের তুই করে বলা। অনেক ছেলে-মেয়ে আছে যারা বাইরের মানুষের কাছ থেকে তুই ডাকটা ঠিক পছন্দ করে না। যেসকল শিক্ষক স্নেহ করে তুই বলে ডাকেন তারা কখনো তুমি করে ডাকলেই কেমন যেন বেখাপ্পা লাগে। কিন্তু কিছু শিক্ষক আছেন যাদের ডাক শুনলেই বোঝা যায় তার স্বরে স্নেহের ‘স’ও নেই। রীতিমত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেই শিক্ষক তুই বলছেন। তারা যখন তুই-তোকারি করেন তখন সেটা হজম করা কিছুটা মুশকিল হয়ে যায় বৈকি।
স্কুল জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ মানুষ বয়ঃসন্ধিকালে কাটায়। এই সময়টাতে মানুষ একটু বেশিই সংবেদনশীল থাকে। ওই সময় শাস্তি পেলে সেটা মনের ওপর মারাত্মক ছাপ ফেলে। আপনারা নিশ্চয়ই পত্রিকায় পড়েছেন শাস্তি পেয়ে অনেকেই অপমানে আত্মহত্যা করেছে বা দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। তাই বলছি, এই সময় কি শাসনের নামে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করা উচিৎ? শিক্ষকেরা কি ভুলে যান তাদের জীবনের ওই সময়গুলোর কথা?
স্কুলে পড়ার বয়সটা কিন্তু দুষ্টুমি করার। যখন দুষ্টুমি মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন শাসনের দরকার অবশ্যই আছে। কিন্তু শাসন মানে কি মার আর অপমান? শিক্ষক সম্মান পাবার পাত্র। কিন্তু ইদানিং যা দেখছি, তাতে মনে হয় কি সম্মানের পাত্ররা নিজেদের সম্মান রক্ষার দিকে নজর রাখছেন? একজন মানুষকে ভয় দেখানো সহজ, তার কাছ থেকে সম্মান আদায় করা কিন্তু সহজ নয়। আর যাকে আপনি সম্মান করেন, তিনি আপনাকে শাসন করলেও কিন্তু আপনার তেমন কোন অপমান বোধ হবে না। কথায় আছে না, “শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে”। আর যে শুধু শাসনই করে, তাকে আপনি শুধু ভয়ই পাবেন, সম্মান খুব কম ক্ষেত্রেই আসবে। মাঝে মাঝে যে আসে না তা নয়, কিন্তু কথায় আছে না, Exception is no law.
লেখার শুরুর দিকে আমি ছাত্র প্রহারের একটা ঘটনা বলেছিলাম, মনে আছে? কারণ কি জানেন? পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়ে এক ছাত্র অসন্তোষ প্রকাশ করায় ঐ শিক্ষক ছাত্রটিকে মারার জন্য তেড়ে যান। ঐ ছাত্রটি নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে আরেকটি ছাত্রের ওপর পড়ে গেলে ওই অন্য ছাত্রটির খাতাটি ছিঁড়ে যায়। তখন খাতা ছেঁড়ায় কোন সমস্যা হবে কিনা জিজ্ঞেস করায় ওই ছাত্রটিকে শিক্ষক বেধরক মারধর করেন। মারের এক পর্যায়ে ছাত্রটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং তাকে হাসপাতালের নেয়া হয়। অথচ ছাত্রটি কি এখানে অবান্তর কিছু জিজ্ঞেস করেছে বা বেয়াদবি করেছে? বিচার করার দায় পাঠকের ওপর ছেড়ে দিলাম।
এখন শিক্ষকদের কিছু প্রশ্ন করতে চাই। আপনাদের অনেকেরও
নিশ্চয়ই ছেলে মেয়ে আছে। তাদের যদি বাইরের কেউ মারধর করে, অপমান করে, তুই- তোকারি করে তাহলে আপনাদের কেমন লাগবে? যদি খারাপ না লাগে তবে বলতে চাই, বাবা-মা হবার কোন যোগ্যতা কি আপনাদের আছে? কোন স্বাভাবিক বাবা-মাই নিশ্চয়ই চাইবেন না তার সন্তানকে নির্যাতন করা
হোক।
আমি এতক্ষণ যা বললাম, তা যে সব শিক্ষকের জন্য প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়। এখনো প্রচুর শিক্ষক আছেন যারা প্রাইভেট পড়ার জন্য জোর করেন না বা বাধ্য করেন না। অনেকেই আছেন যারা শাস্তি না দিয়েই ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, ছাত্রছাত্রীদের নিজের সন্তানের মতই ভালবাসেন। এদের জন্যই এখনো কিছু জ্ঞানী ছাত্র এখনো তৈরি হচ্ছে। ভালো গ্রেড পাওয়া আর কিছু জানার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে। মুখস্ত করেও অনেক সময় ভালো গ্রেড পাওয়া সম্ভব, কিন্তু জ্ঞান আহরণের জন্য অবশ্যই আপনাকে একটা বিষয়ের গভীরে ঢুকতে হবে, তাকে আত্মস্থ করতে হবে। একজন আদর্শ শিক্ষক আপনাকে সেই পথে খুব সহজেই পরিচালিত করতে পারবেন। আপনি চিন্তা করে দেখুন, যার কথা মনে হলে আপনার আতঙ্ক হয় আপনি তার দেখানো পথে চলতে চাইবেন নাকি যে আপনার শ্রদ্ধার পাত্র, যাকে আপনি আপনার নিজের বাবা-মার মতই সম্মান করেন, ভালবাসেন তার পথে চলবেন?
কলেজের নির্যাতনের ধরণটাও স্কুলের মতই। কলেজের শিক্ষকদেরও প্রাইভেট পড়ানোর একটা বাতিক আছে। কলেজে শারীরিক নির্যাতনের মাত্রাটা সাধারণত কম(জায়গাভেদে পার্থক্য থাকতে পারে), তবে অপমান করা হয় প্রায় স্কুলের মতই।
স্কুল কলেজ নিয়ে অনেক কথা বললাম। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যাপারে কিছু কথা না বললেই নয়। স্কুল-কলেজের মত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়ানোর নিয়ম নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবতাদের অন্য ফুল দিয়ে সন্তুষ্ট করতে হয়। স্কুল কলেজের শিক্ষকেরা মূলত শাস্তি আর প্রাইভেটের মধ্যেই নিজেদের অত্যাচার সীমাবদ্ধ রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবার ওই দুটি জিনিস চর্চার তেমন সুযোগ নেই। তাই ছাত্রদের নির্যাতন করতে অনেক সময় তাদেরকে উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিতে হয়, এবং তারা তাতে বেশ সফল!
বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারের সাথে ইদানিং কুইজ, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি বেশ সম্পর্কযুক্ত। এগুলোর অনেক উপকারী দিকও আছে। কিন্তু একই সাথে এগুলো নির্যাতনের বেশ মোক্ষম হাতিয়ার। ধরা যাক শিক্ষক বললেন, কাল সকাল দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত তোমাদের কুইজ। ওই সময় হয়তো অন্য কোন ক্লাস আছে। কিন্তু শিক্ষক যদি বলেন আমি ওই সময়েই নেব, তুমি আসলে আসো, না আসলে নাই, তাহলেই বিপদ। কুইজে গেলে শিডিউলড ক্লাসের শিক্ষক ক্ষেপতে পারেন, আবার না গেলে পাঁচ নম্বর কাটা। শ্যাম রাখি না কুল রাখি দশা! আবার অনেক সময় নোটিশ আসতে পারে, তিন দিনের মধ্যে পাঁচ হাজার শব্দের একটা অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। তিন দিনে পাঁচ হাজার শব্দের একটা অ্যাসাইনমেন্ট যে লেখা কত কষ্টকর সেটা আশাকরি ভুক্তভোগীদের জানা আছে। অনেক প্রেজেন্টেশন আছে যেগুলো বেশ খরচ সাপেক্ষ, কষ্টসাপেক্ষ; পরিশ্রমসাপেক্ষ তো বটেই। কষ্ট করে সেগুলো প্রস্তুত করার পর যখন শিক্ষক বলেন তোমাদের যা প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলাম সেগুলো বাদ, নতুন করে অমুক কাজটা কর বা তমুক প্রেজেন্টেশনটা কর, তখন কেমন লাগে। তিনি শিক্ষক বলেই কি তার খামখেয়ালির মুল্য আছে, আর আমরা ছাত্র বলে কি আমাদের পরিশ্রম, অর্থ, সময়ের কোন মুল্য নেই?
অনেক শিক্ষকই আছেন যারা অনেক সময় বিনা নোটিশে ক্লাসে আসেন না। একবার এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক একটা চমৎকার কথা বলেছিলেন। “ আমি যদি ক্লাসে না যাই তাহলে কিন্তু একটা ঘণ্টা নষ্ট হয় না, ক্লাসে যে একশো ছাত্র এসে বসে থাকে তাদের মোট একশো ঘণ্টা নষ্ট হয়”। আর কোন শিক্ষক কি কখনো এভাবে ভেবে দেখেছেন?
আপনি খেয়াল করে দেখবেন, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের ছাত্রী সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেলেঙ্কারি অনেক বেশি অতিহ্যবাহী! ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান কেলেঙ্কারির অভিযোগে পদত্যাগ করেন। তাছাড়া সাইকোলজি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রায় একই ধরণের অভিযোগ ওঠে, যদিও তার কোন শাস্তি হয়নি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের এক শিক্ষকের বিররুদ্ধেও অভিযোগ পাওয়া যায়। গত ৪ অক্টোবরের প্রথম আলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে একই কারণে সাসপেন্ড করার খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনাগুলো আকারে তীব্র ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। আর কত ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা যে লুকিয়ে আছে তা কি আমরা জানি?
বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের ‘আমি কি হনু রে’ ধরণের মানসিকতা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া অবশ্যই যোগ্যতার ব্যাপার। তাই বলে সাপের পাঁচ পা দেখা উচিৎ বলে আমি মনে করি না। তাছাড়া অহংকারী ব্যক্তিকে কেউ পছন্দও করে না, সম্মান তো অনেক পরের ব্যাপার। আর যাকে সম্মানই করি না তার কাছ থেকে শেখার আগ্রহ কে পায়, ক’জন পায় বলুন? তিনি মূল্যবোধ নিয়ে কিছু বলতে গেলে কি তা হাসির উদ্রেক করবে না(তবে ক্লাসে হাসলে খবর আছে)? কিছু শিক্ষক ক্লাসে এমন মুখভঙ্গি করে রাখেন, তাকে দেখলে বাঘ-সিংহ বলে মালুম হয়। আবার অনেক শিক্ষক ‘ফ্রেন্ডলি’ সেজে অনৈতিক কাজের সুযোগ খোঁজেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষমতা স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের তুলনায় একটু বেশিই, তাদের অনেকেই তাদের সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে কার্পণ্য করেন না । এদিক থেকে তাদের সাথে পুলিশদের বেশ মিল আছে!
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জবাবদিহিতা এবং দায়বদ্ধতা অনেক কম। তারা সেই সুযোগ সম্পূর্ণ কাজে লাগান। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচারদের দায়বদ্ধতা কিছুটা আছে, তবে দুই ধরণের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই তাদের প্রাপ্ত ক্ষমতার অপব্যাবহার করেন, একে সম্পূর্ণ কাজে লাগান। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার প্রভাব পড়বে পরীক্ষার নম্বরে। তাই অনেকেই বিভিন্ন অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকতে বাধ্য হয়। একটা উদাহরণ দেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেবাস বলে কিছু নেই। তারপরও এটুকু আশা করা কি অন্যায় যে শিক্ষক যা পড়িয়েছেন তার থেকে প্রশ্ন করবেন বা না পড়ালে আগে থেকেই পড়তে বলে দেবেন। কিন্তু যখন পরীক্ষার হলে যখন দেখা যায় প্রশ্ন আর গ্রিক ভাষার মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই, তখন কেমন লাগে? শিক্ষকের তো আর কোন দায় নেই, উনি যে রকম খুশি প্রশ্ন করতে পারেন, তাকে কারো সামনে জবাবদিহি করতে হবে না। এক-দুইজনের কমন পড়বে না এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন সারা ক্লাসের অবস্থাই এক রকম হয় তখন? তখন কি ব্যর্থতার দায় শিক্ষকের ওপর কিছুটা হলেও বর্তায় না?
আরেকটা ঘটনা না বললেই নয়। একবার তো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক স্যার ফাইনাল পরীক্ষার আগের দিন ফেসবুকে নোটিশ দিয়েছিলেন অনেকটা এ ধরণের, “ গত বছর অমুক আইনের একটা সংশোধন এসেছে। তোমরা নিজেরা একটু পড়ে নিও। ওই সংশোধন থেকে দুটো প্রশ্ন থাকবে।” কথা হচ্ছে, পরীক্ষার আগেরদিন কয়জন ফেসবুকে যায়? তাছাড়া যে জিনিস সম্পূর্ণ অজানা, পরীক্ষার আগেরদিন সেটা নতুন করে তৈরি করে কতটুকুই বা মনে রাখা সম্ভব। সম্ভবত স্যারের ওই সংশোধনী যে পড়ানো হয়নি সেকথা মনে ছিল না। আর প্রশ্ন যেহেতু সাবমিট করেই ফেলেছেন তখন আর কি করা? স্কুল কলেজের প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষরা তাও শিক্ষকদের ডেকে জবাবদিহি চাইতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কি এতটা ‘শিশুতোষ’ কাজে নিজেকে জড়াবেন? বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউণ্ডের কারণে নিয়োগ পান। ভিসি কেন খামাখা নিজের অবস্থানকে বিপন্ন করতে চাইবেন? তাছাড়া তিনিও তো রাজনৈতিক কারণেই এই পদ পেয়েছেন। ( আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করার জন্য বলছি না, আমি নিজেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং পাবলিক প্রাইভেট দু ধরণের বিশ্ববিদ্যালয়কেই আমি সম্মান করি)
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকেরই নিজের ছাত্রদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার একটা অভ্যাস আছে। এই বয়সে মান অপমান বোধটা কিন্তু স্কুল কলেজের চেয়ে বেশি থাকে। সারা ক্লাসের সামনে শিক্ষকের অপমান অনেক সময় হজম করে নেয়াটা একটু কষ্টকরই।
অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষক কোর্সের শুরুর দিককার ক্লাসগুলোতে ঢিমে তেতলা গতিতে পড়াচ্ছেন, শেষের দিকে এসে বেশি চাপ দিচ্ছেন। তাতে ক্ষতি যা হবার ছাত্রদেরই হচ্ছে। কম সময়ে বেশি বুঝতে গিয়ে কিছুই বোঝা হচ্ছে না। অনেকেই নিশ্চই এই ঘটনা দেখেছেন, শুনেছেন বা এর শিকার হয়েছেন।
অল্প কিছুদিন আগে একটা ঘটনা শুনলাম, কতটুকু সত্য জানি না, আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। একটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের কিছু শিক্ষিকা নাকি তাদের ছাত্রদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, বিনিময়ে সেই ছাত্রদেরকে তারা বিশেষ কিছু আনুকুল্য দিয়ে থাকেন। যদি সত্যি হয়ে থাকে, এবং এই কালচার যদি আরো কোন জায়গায় চালু থাকে, তাহলে চিন্তা করতে পারেন আমরা কোন পথে হাঁটছি? আগে তো শুধু স্যারদের নারী কেলেঙ্কারি ছিল। এখন তো দেখি ম্যাডামরাও ‘ছাত্র কেলেঙ্কারি’-র সাথে জড়িয়ে যাচ্ছেন। ঠিকই তো, নারীরা কেন পুরুষদের থেকে পিছিয়ে থাকবেন? জাগো গো ভগিনী!
এবার অন্য দিকে একটু নজর দেই। আশা করি ‘লবিং’ শব্দটার সাথে আপনারা পরিচিত। অবশ্য যারা লবিং করেন, তারা একে বলবেন নেটওয়ার্কিং। আমরা যারা পারি না বা করতে চাই না তাদের কাছে লবিং। স্কুল কলেজে যে লবিং নেই তা নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এর উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। এটা কি হাস্যকর নয় যে আমার শিক্ষকের সাথে স্রেফ ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে আমি অনেক সময় বেশি মার্ক বা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছি। নম্বর পাওয়ার মানদণ্ড কি খাতায় যা লিখেছি তাই হওয়া উচিৎ না? আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, এই যে যারা স্যারের পা চাটছে, তাদের কি ব্যক্তিত্ব বলে কিছু আছে? আমার ধারণা, কোন শিক্ষক সারা ক্লাসের সামনে নিজের পশ্চাৎদেশ চুলকালেও এরা বলবে, “বাহ! স্যার তো অনেক সুন্দর করে চুলকান!” কেউ কেউ হয়তো এর উপকারিতাও তুলে ধরবে। অতি সাহসী দু’একজন হয়তো স্যারের কাছে ক্লাসের পর গিয়ে জানতেও চাইবে স্যার এই ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য বিশেষ কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেন কিনা এবং তারা এই পদ্ধতিতে কাজ করতে চাইলে স্যার কিছু মনে করবেন কিনা। অবাক লাগে যখন দেখি টিচাররাও এদের পাত্তা দেন। সবাই দেন না, কিন্তু যারা দেন, তাদের বলছি, খাতাই কি নম্বর দেওয়ার মানদণ্ড হওয়া উচিৎ না? আমাদের দেশে কিছু ‘লুল’ শিক্ষক আছেন, এরা মেয়েদের বিশেষ সুবিধা দিতে পছন্দ করেন ( আমি মেয়েদের আঘাত করার জন্য কথাটা বলছি না)। কিছু মেয়ে এর সম্পূর্ণ সুযোগটা নেয়। আমি একবার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছিলাম এক মেয়ে স্যারের রুমে যাওয়ার যাওয়ার আগে সাজগোজ করছিলো। তার মানে কিন্তু এই না যে ছেলেদের মধ্যে তেলবাজ শ্রেণী নেই। যথেষ্টই আছে। কিছু ছেলে তো সেধে সেধে শিক্ষকের অনেক ব্যক্তিগত কাজ করে দেয় অতিরিক্ত কিছু সুবিধার আশায়। গুরুর সেবা করা আর গুরুকে তেল দেয়া কি সম্পূর্ণ ভিন্ন নয়? আমার প্রশ্ন, শিক্ষকেরা কি বোঝেন না, এগুলো যে স্রেফ স্বার্থ? আর কারো তেলে মুগ্ধ হয়ে যখন শিক্ষক তাকে যখন বেশি মার্ক দিচ্ছেন, তখন কি একবারও মনে হয় না যে এর চেয়ে ভালো লেখা একজনকে তিনি এর থেকে কম দিয়েছেন? এটা কি অন্যায় নয়? তার কি বিবেক জাগ্রত হয় না? আর যার বিবেক নেই, তিনি আমাদের কি শেখাবেন? সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে তিনি কি মানুষ তৈরি করছেন না একদল চাটুকার তৈরি করছেন। তিনি কি এমন কিছু মানুষকে তৈরি করছেন না যারা নিজেদের শিক্ষাজীবনেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে? আর যারা কর্মজীবনে ঢোকার আগেই দুর্নীতিবাজ, তারা পরবর্তীতে যে খুব সাধু হবে, এমনটি কি আশা করা উচিৎ? আমার মনে হয় না। অথচ শিক্ষকেরা যদি চাটুকার শ্রেণীকে পাত্তা না দিয়ে সঠিক মেধার মুল্যায়ন করতেন, তাহলে আমার মনে হয় আমাদের শিক্ষার মানটা আরো একটু উন্নত হত, কিছু যোগ্য শিক্ষার্থী তৈরি হত।
অবশ্য যারা লবিং করতে পারে তাদের কাছে এটা একটা বিরাট যোগ্যতা! তবে এই যোগ্যতার প্রধান শর্ত নিজের মান-সম্মান বিসর্জন দেওয়া, অন্যের কাছে নিজেকে ছোট করে হলেও স্বার্থ উদ্ধার করা। অন্যে গালি দিচ্ছে দিক, আমি তো স্যারের নয়নের মণি!
একবার আমার জনৈক ক্লাসমেট বলেছিল, “শিক্ষকের ‘ইয়ে’ ধরে আমার ফার্স্ট ক্লাস পাওয়ার কোন দরকার নাই”। স্যারের ‘ইয়ে’ (ইয়ের মানে বলতে লেখক বাধ্য নন) ধরার কৌশল সম্পর্কে অজ্ঞ ও অনিচ্ছুক এবং লবিং পার্টির সাফল্যে ‘ঈর্ষান্বিত’ আমরা ক’জন তখন তাকে বেশ সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। পাঠক, আমি আমার লেখায় কিছু কুৎসিত অংশের অবতারণা করেছি। নিজগুণে আমার ধৃষ্টতা ক্ষমা করবেন।
আমার ক্লাসের ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া এক লবিংবাজকে নিয়ে আমাদের ক্লাসেরই জনৈক কবির একটি কবিতা আছে, বলার লোভ সামলাতে পারছি না। কবিতাটা আমি নিখিল লবিংবাজ গোষ্ঠীকে উৎসর্গ করছি, লেখকের বিনা অনুমতিতেই।
“হাসিমাখা মুখটি যে তার, অন্তরেতে বিষ
গুরুমশাইর পেছন পেছন চলে অহর্নিশ।
সোনার হরিণ চাই
তার মনে শান্তি নাই।
বিশ্বটাকে ডুবিয়ে হলেও নিজে আগে বাঁচি
লাজ লজ্জার মাথা খেয়েও প্রথম হয়ে আসি।”
আশা করবো সেই অজ্ঞাত লেখক আমার বিরুদ্ধে চুরির মামলা করবেন না।
আমি বলছি না যে সকল শিক্ষকই খারাপ। অনেক শিক্ষকই আছেন যারা লবিং করার বিন্দুমাত্র সুযোগ দেন না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো এমন শিক্ষক আছেন যারা সৎ, মেধাবী,নিজে জানেন, অন্যকে জানাতে চান, ছাত্রদেরকে কিছু শেখাতে চান। তাদের জন্যই এখনো এই দেশে অনেক ভালো ছেলেমেয়ে তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ভালো হওয়া এবং ভালো থাকাটা বেজায় কঠিন। তাই অনেক শিক্ষকই আছেন, যারা অনেক জ্ঞানী, কিন্তু সৎ নন। আর একজন অসৎ মানুষের উপদেশকে কেই বা পাত্তা দেয়।
আমার ওপরের কথাগুলোর মানে কিন্তু এই নয় যে সব দোষ ঢালাওভাবে শিক্ষকদের। শিক্ষার্থীরাও কিন্তু এই দুর্নীতিগুলোতে অনেক সময় সমর্থন দেয় বিশেষ সুবিধা পাবার আশায় বা ঝামেলা এড়ানোর আশায়। কিন্তু গুরু যদি ঠিক থাকেন তাহলে কার বাবার সাধ্য অন্যায় করার। আবার শিক্ষকের দুর্নীতিতে সবাই একাট্টা হয়ে প্রতিবাদ করতে পারে তাহলে শিক্ষকও বাধ্য হবেন সৎ থাকতে। কিন্তু কজনই বা পারে ঐক্যবদ্ধ থাকতে। বিশেষত জুনিয়র লেভেলে?
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর আমাদের মেরুদণ্ড গঠন করেন এই শিক্ষকেরাই। আমাদের দেশের প্রচুর মেধাবী সন্তান আছে। এদের এতদূর আসার পেছনে কাজ করেছে তাদের মেধা ও পরিশ্রম, পাশাপাশি এদের শিক্ষকদেরও কিন্তু অবদান রয়েছে। একজন শিক্ষক যদি সৎ থাকেন তাহলে তার ছাত্ররা তাকে দেখে শিখবে, অনুপ্রাণিত হবে। কিন্তু একজন শিক্ষকের নিজেরই যদি নীতি না থাকে তাহলে তিনি যত বড় বড় বুলিই কপচান না কেন, কেউ তা আমলে নেবে না। Lead By Example বলে একটা কথা আছে না?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



