somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতা আর স্বেচ্ছাচারিতা কি একই জিনিস?

২৯ শে জুলাই, ২০১৯ ভোর ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীনতাকে এখন ‘যাচ্ছেতাই করা’র একটি আদর্শ হিসেবে দেখিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। মানে, আপনি যেটাই করবেন সেটাই আপনার স্বাধীনতা। এটাই তাদের সারকথা। চুলের ব্যবহার্য পণ্য শরীরের অযাচিত চুলে ব্যবহার করার নাম স্বাধীনতা বলে একটা লেখা পড়লাম। সেখান থেকেই বিষয়টা মাথায় এলো, ওরা সবাই প্রত্যেককে একটা একটা মানুষ ভাবে। কিন্তু সকল মানুষ মিলে যে একটা মানবসম্প্রদায় হয়, একটা মানবিক মূল্যবোধ তৈরি হয়, সেইটা খেয়াল করে না।

যে কোনো কাজ করার আপনার স্বাধীনতা আছে, হোক তা পাপ কিংবা পূণ্য। সেটা আপনার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। কিন্তু মানবসম্প্রদায় হিসেবে যেটা অমানবিক, সেটা করার স্বাধীনতা আপনার নেই। ঠিক এ কারণেই আপনি স্বাধীনতার উন্মুক্ত সবকে উন্মাদ হয়ে একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করলেন। এইটা আপনার ব্যক্তি স্বাধীনতা হলেও মানবিক স্বাধীনতা পরিপন্থী। যার কারণে আপনি একা একজন মানুষ হলেও মানবিকভাবে বিকারগ্রস্ত। তাই মানবিকভাবে আপনার ‘ফাঁসি’ হওয়া জরুরি। এবং সারাবিশ্বে এ আইনকে মানবিকভাবেই শ্রদ্ধা করে।

এখান থেকে মোটাদাগে যেটা বুঝা গেলো, একজন মানুষের স্বাধীনতাকে স্রেফ স্বাধীনতা বলা যায় না। সকল মানুষের একত্রিত স্বাধীনতাকে দ্ব্যর্থহীনভাবে স্বাধীনতা বলা যায়। এবং এ স্বাধীনতার প্রান্তসীমা হলো মানবিকতা। অর্থাৎ আপনার একার পক্ষে কোনো একটি কাজের সংকল্পকে স্বাধীনতা বলা হবে না। বলা হবে, যে সংকল্পটি সকল মানুষের জন্য কল্যাণনিহিত হবে, সেটাই প্রকৃতপ্রস্তাবে মৌলিক স্বাধীনতা।

একাত্তরেও বাংলাদেশের কিছু লোক পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। আর সে সময়ে বাংলাদেশ ছিল পাকিস্তানের সাথে যুক্ত অর্থাৎ পূর্বপাকিস্তান। তাই পাকিস্তানের পক্ষে থাকাটা পাকিস্তানের স্থানীয় হিসেবে স্বাধীনতা হলেও বাঙালী জাতির স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল আর বাংলাদেশে থেকে বাঙালী জাতির স্বাধীনতাবিরোধী আন্দোলন করাটা এককথায় অমানবিক ছিল। এ কারণে বাঙালী জাতির কাছে সেটা মানবতাবিরোধী কিংবা মানবিক স্বাধীনতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আজও চিহ্নিত।

অতএব, আপনার একার যে কাজটিকে আপনি স্বাধীনতা ভাবছেন, সেটা আদৌ স্বাধীনতা না, এটাকে বড়জোর বলা যায় ‘স্বেচ্ছাচারিতা’। এ স্বেচ্ছাচারিতাও একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত বৈধতা রাখে। আপনার স্বেচ্ছাচারিতা যদি অন্যের ক্ষতির কারণ হয় তাহলে এ স্বেচ্ছাচারিতাও নাজায়েজ। আমাদের সমস্যা হলো, আমরা স্রেফ করার মধ্যেই স্বাধীনতা দেখি। না করার মধ্যেও যে স্বাধীনতা আছে, সেটা দেখি না। এই যে ধরুন, নারীরা তাদের বক্ষ উন্মুক্ত করে বেড়ানোকে তাদের স্বাধীনতা মনে করছে। কিন্তু না করারও তো স্বাধীনতা আছে, সেটা নারীবাদিরা মানতে নারাজ।

যার প্রকৃতি যেটা স্বাধীনতা ঠিক সেটাই। বৃষ্টি সব কিছু ভিজিয়ে দিবে, এটাই তার স্বাধীনতা। কিন্তু হঠাৎ করে যদি ভেজানো বন্ধ করে দেয়, সেটা হবে তার স্বাধীনতাবিরুদ্ধ আচরণ। তদ্রূপ নারীদের গতিপ্রকৃতির উপাদান হলো আড়ালে থাকা, আড়ালে রাখা। পুরুষের মতো বক্ষ উন্মুক্ত করে নারীরা চলতে পারবে না। বাইরে বাইর হলেও তারা চলবে শালীনভাবে, এটাই নারীর প্রকৃতি, এটাই তাদের স্বাধীনতা।

কিন্তু উন্মুক্তভাবে চললে তো সেটা স্বাধীন হলো না, পরাধীন হয়ে গেলো। জিনিস আপনার দেখছে হাজারো জনে, বিষয়টা পরাধীন হয়ে গেলো না? তাই এখানে নারীর ‘করা’তে নয়, ‘না করা’তেই রয়েছে স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতাকে উপেক্ষা করাকে বলে স্বেচ্ছাচারিতা। অতএব, স্বাধীনতা আর স্বেচ্ছাচারিতা এক জিনিস নয়। স্বাধীনতার স্ব প্রত্যয়টির অর্থ এককভাবে নিজের হলেও সেটা নির্দেশ করে সামাজিকতাকে, মানবিকতাকে।

আমি এ সামাজিক ও মানবিক স্বাধীনতার সবক পেয়েছি ইসলামে। ইসলাম মানবতারহিত কোনো ধর্ম নয় কিংবা ইসলাম কিছু বিধিবিধানেরও নাম নয়। পুরা মানবতাটাই হলো ইসলাম। ইসলামের বাইরে কোনো মানবতা নাই, কোনো মানবতাবাদও নাই। তাই ইসলামের নাম দিয়ে মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধও ইসলাম গ্রহণ করে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৯ ভোর ৬:৫৪
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×