বাংলাদেশ যদি পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয় তাহলে কি এমন ভালো জিনিস প্রতিষ্ঠিত হবে যা বর্তমানে নাই এমন প্রশ্ন ১৯৭১ সালে কারো মাথায় আসলে তার জবাব হচ্ছে ১৯৭১ সালের আজকের দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত তিনটি বিষয়। সেগুলো হচ্ছে -
১। সাম্য
২। মানবিক মর্যাদা
৩। সামাজিক সুবিচার
অর্থাৎ, ততকালীন পূর্বপাকিস্তানে এই তিনটা বিষয় অনুপস্থিত ছিল এবং এই এগুলো প্রতিষ্ঠিত করতেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ করা৷ বাংলাদেশ গঠন করা৷
স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশত বছর পরে এসে আমরা যদি হিসাব মিলাই তাহলে কি বলতে পারবো যে এই তিনটা বিষয় বর্তমানে রাষ্ট্রে বিদ্যমান আছে? উত্তর না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী যদি না আপনি দলকানা হয়ে থাকেন৷
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বলেতে রাজনৈতিক দলগুলো কি বুঝে বা বুঝার ভান করে তা আমার কাছে স্পষ্ট না হলেও আমি কিন্তু এই তিনটা বিষয়কেই বুঝি। এগুলোকে ভালো করে বিশ্লেষণ করলে আদর্শ রাষ্ট্রের সকল উপাদান এর ভেতরেই পাবেন বলে আশা করি।
হাইওয়ে, ওভারব্রিজ, পদ্মাসেতু, ইত্যাদি করে যদি আপনি বলেন মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তবায়ন হয়েছে তাহলে আপনি একইসাথে রাষ্ট্র, জনগণ, এবং নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেন।
যতদিন এদেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠিত না হবে ততদিন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লন্ডন/প্যারিস হয়ে গেলেও স্বাধীনতার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়েছে বলে ধৃষ্টতা দেখানো কোন রাজনৈতিক দলেরই উচিত হবেনা।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিঃসন্দেহে তারিফের দাবি রাখে, কিন্তু সমাজে সুবিচার না থাকলে, মানবিক মর্যাদা না থাকলে, সাম্য না থাকলে এই উন্নয়ন কেনো জানি হজম করতে কষ্ট হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৩৫