somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে দ্বীপ বিড়ালের................

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিড়াল পালন শুরু হয়েছিল প্রাচীন মিশরে। এটি আদুরে প্রাণী। মানুষের কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসে। কিন্তু শুধু ঘরে নয় তারা দ্বীপেও বসবাস করতে পারে।
এমন এক দ্বীপ রয়েছে যে দ্বীপ বিড়ালের দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। হবেই না বা কেন? সেখানে আধিপত্য শুধুই বিড়ালের! মানুষ বিড়ালের দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন বিশ্বাস থেকে ভালোবাসা থেকে। চলুন এই দ্বীপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
দ্বীপটির নাম ‘তাশিরোজিমা’ এখানে মানুষের বসবাসের জন্য নেই তেমন কোনও ভালো ব্যবস্থা। খুব ভালো খাবারও পাওয়া যায় না। তবুও মানুষ সেখানে অদ্ভুত আকর্ষণে ছুটে যায়। আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে বিড়াল।
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ওশিকা উপদ্বীপের কাছে তাশিরোজিমা দ্বীপ। এটি জাপানে অবস্থিত। এই দ্বীপের পথে ঘাটে বিড়ালগুলো ঘুরে বেড়ায়। এসব বিড়ালকে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করেন স্থানীয়রা।
২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, তাশিরোজিমা দ্বীপে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা মাত্র ৮০ জন। আর বিড়ালের সংখ্যা প্রায় দেড়শো।
জানা যায়, ১৯৫০ সালের দিকে এই দ্বীপে বিড়ালের থেকে মানুষের সংখ্যা বেশি ছিল। তখন তাশিরোজিমা দ্বীপে প্রায় এক হাজার মানুষ বাস করতেন। বসবাসরতদের অধিকাংশের পেশা ছিলো মাছ ধরা। জাপানের এই দ্বীপে ২০১১ সালে সুনামি হয়। বদলে যায় দ্বীপের পরিবেশ। এরপর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। অনেক মানুষ দ্বীপ ছেড়ে চলে যান।
তাশিরোজিমা দ্বীপে এখন যারা বসবাস করেন তাদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ অধিবাসীর বয়স ৬০ বছরের বেশি। এমনকি ৫০ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের বেশি।
এই দ্বীপের অধিবাসীরা মাছ ধরে অথবা পর্যটকদের আতিথেয়তা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
দ্বীপে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই দ্বীপের সৌন্দর্য অন্য দ্বীপের থেকে আলাদা। জানা যায়, ১৬০৩ সাল থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত তাশিরোজিমা দ্বীপের মানুষেরা বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সে সময়ে এই দ্বীপে রেশমকীটের উৎপাদনও হত। এর ফলে ইঁদুরের উপদ্রবও ছিল বেশি। ইঁদুরের হাত থেকে রেশমকীট রক্ষা করতে দ্বীপের অধিবাসীরা বাড়িতে-বাড়িতে বিড়াল পুষতে শুরু করেন। বিড়ালের খাবার জোগাতে তারা মাছ ধরাকে নিয়মিত কাজে পরিণত করেন। দ্বীপের অধিবাসীরা বিড়ালের যত্ন-আত্তি কম করতেন না। কারণ, এই দ্বীপের মানুষের বিশ্বাস বিড়ালের যত্ন করলে জীবন সুখের হবে। বিশ্বাস আর ভালোবাসা প্রদর্শনে দ্বীপে বিড়ালের আদলে তৈরি করেন ৫১টি পাথরের মূর্তি।
২০১১ সালের সুনামিতে দ্বীপের অধিকাংশ অধিবাসী অন্যত্র চলে যায়, সঙ্গে সঙ্গে অনেক বিড়ালও চলে যায় তাশিরোজিমা দ্বীপ ছেড়ে।
জানা যায়, অনেক বছর আগে তাশিরোজিমা দ্বীপে একটি বিড়ালের ওপর পাথর পড়ে, সেখানেই মারা যায় বিড়ালটি। ঘটনাস্থলেই বিড়ালটির মৃতদেহ চাপা দেওয়া হয়। দ্বীপের অধিবাসীরা পরবর্তীতে সেখানে মন্দির গড়ে তোলেন।
২০১৫ সালে তাশিরোজিমা দ্বীপের পুনর্নিমাণ করা শুরু হয়। সুনামির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপ আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে। দ্বীপে মধ্যে বিড়ালকে খাওয়ানোর জন্য আলাদা জায়গা তৈরি করা হয়। পর্যটকরা দ্বীপে ঘুরতে গেলে সেই নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে বিড়ালদের খাবার দিতে ভুল করেন না।
জাপানে এমন আরও দুইটি দ্বীপ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ‘আওশিমা’ এবং ‘এনোশিমা’। আওশিমা দ্বীপে ১৫ থেকে ২০ জন মানুষের বাস, অথচ সেখানে বিড়ালের সংখ্যা ১২০। এনোশিমা দ্বীপে ১৯৮০ সাল থেকে এই দ্বীপে বিড়ালের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×