somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অল্প গল্প: চার

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



।১।

হুমকি দাতা একটা আহাম্মক। অপরিপক্ক। ক্ষ্যাত। বেকুব। যদিও হুমকি দেবার সময় দেশ থেকে পলাতক, অন্যতম এবং প্রধান সন্ত্রাসীর নাম ব্যবহার করেছিল। তবুও হুমকি গৃহীতার সাথে সে বেকুবের কিছুদিন আগে এ প্রসঙ্গে, অপ্রত্যক্ষভাবে একটা যোগাযোগ হয়েছিল। আরে বাবা, এটাতো ডিজিটাল যুগ। অনলাইনের যুগ। ফেসবুকের যুগ। তাছাড়া, হুমকি দাতা এবং গৃহীতা একই ডিজিটাল বৃত্তের উপর ভিন্ন ভিন্ন চাপে বসবাস, যে বৃত্তের পরিধি ও তেমন বড় নয়। তাই হুমকি গৃহীতা আগেই বুঝেছিল, কাজটি ঐ আহাম্মকের এবং হুমকি পাবার সময়ই কাঁদো কাঁদো সুরে বলে উঠে, “ভাই, আমিতো দিনে এনে দিনে খাই। মাস শেষে ধার করি। শুধু কি পদবী দেখলে হবে? আমি ক্যামনে আপনেরে চার লক্ষ টাকা দিমু?“

এসব আহাম্মকের জন্য করুণা হয়। নির্বিণ্ণ লাগে। ধুর, শুধুশুধু দুইটি দিন নষ্ট হলো।


।২।

হুমকি নোটিসটি রাখা ছিল, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কর্মব্যস্তময় বৃহত্তর শপিং কমপ্লেক্সের অভিযোগ বক্সে। তাতে সাদা অফসেট কাগজে কালো কালিতে টাইপ করা ছিল, “আগামী নয়দিনের মধ্যে এ ভবনটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হবে। বিস্তারিত জানতে অবিলম্বে নিচের নাম্বারে যোগাযোগ করুন। ০১৭১.......।“ এর বেশী কিছু লেখা ছিল না।

এর প্রায় ৪০ কিংবা ৪৩ দিন পর, হুমকি দাতা ঐ নাম্বারে একটি কল পায়। ওপাশ থেকে বোমার কথা জিজ্ঞেস করার সাথে সাথে সে বলে উঠে, “আরে ভাই, নয়দিন তো সেই কবে পার হয়ে গেছে ! তারমানে আপনারা অভিযোগ বক্সটি গুরুত্বসহকারে নেন না। তাহলে আর রেখে লাভ কি ! “

লাইনটি কেঁটে যায়। এরপর আর কোনদিন ঐ নাম্বারে সংযোগ পাওয়া যায়নি।


।৩।

হুমকি পাইনি সেটা বলছি না। যখন বাংলাদেশে প্রথম মধ্যবিত্তের নাগালে মোবাইল ফোন আসল, তখন মধ্যরাতে ভুল করে কোন নেশাখোর ফোন দিয়ে উল্টোপাল্টো কথায় হুমকি বা নোংরা কথা বলেছে। পাত্তা দেইনি এবং ভয় পাবার প্রশ্নই আসেনি। বরং হেসেছি। কবি কিংবা দুঃসাহসী প্রেমিক, কোনটাই ছিলাম না। তাই প্রণয়ালয় থেকে সুশ্রাব্য কোন হুমকি ও ভাগ্যে জোটেনি। যা বলছিলাম, সব ছিল তরঙ্গ ভিত্তিক হুমকির কথা।

মুখোমুখি রাশভারী, হুমকির কথা কখনো চিন্তা করা হয়নি। কোন কারণ ছিল না। বেশতো পার করে দিলাম, নিষ্কলুষ ২৬টি বছর। তবুও পেলাম, সেই প্রধ্বংস হুমকি। নিজের আত্মারামের জন্য নয়। সেটা ছিল তোমাকে ছাড়ার, হুমকি !

আর হুমকি দাতা ছিলেন, আমার বাবা।



আগের অল্প গল্পসমূহ:

অল্প গল্প: এক
অল্প গল্প: দুই
অল্প গল্প: তিন


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪
৭২টি মন্তব্য ৭২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×