এখন বাজছে রাত তিনটা পাঁচ। বৃহষ্পতিবার বিকেলে ৪টার সময় অফিসে এসেছিলাম। দিনপঞ্জির পাতা উল্টে এখন শুক্রবারে গড়িয়েছে। এখনও অফিসে আমি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে পত্রিকার তিনটি সংষ্করণ বেরুনোর কথা। দুটি ইতিমধ্যে বেরিয়েছে। তৃতীয় ছাপার প্রস্ততি চলছে। অফিস জুড়ে রাজ্যের ব্যস্ততা। রিপোর্টিং, ডেক্স এর কর্মীদের ছোটাছুটি, চট্টগ্রাম অফিসের সাথে ক্ষণে ক্ষণে টেলিফোনে খবর নেওয়া আর বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের সর্বশেষ আপডেট জানা। সবমিলিয়ে বিরাট এক কর্মযজ্ঞ।
একটুখানি ফুরসত পেতেই চোখ জুড়ে নেমে এলো ক্লান্তিজনিত ঘুম। উঠে দাড়িয়ে আড়মোড়া ভেঙ্গে অফিসের গেটে গিয়ে দাঁড়ালাম। নিউজ রুমের প্রচন্ড ব্যস্ততার চিহ্নমাত্র বাইরে নেই। নিশুতি রাত, প্রায় নির্জন, কয়েকটি কুকুর ছাড়া রাস্তায় আর কেউ নেই। ঘুম কাটাতে নিজের মোটরবাইকটিতে স্টার্ট দিয়ে উঠে পড়লাম। জুনিয়র সহকর্মী সৌরভকে নিয়ে নিলাম সাথে। প্রায় ১০০কিলোমিটারে বেগে উড়ে চললাম বিজয় স্মরণীর দিকে। সদ্য তৈরী হওয়া তেজগাঁও-বিজয় স্মরনী সংযোগ সড়কের ওভারপাস ধরে এগুতে থাকলাম। ঠান্ডা হওয়ার দাপটে মন-প্রাণ প্রফুল্ল হয়ে উঠলো। পুরো রাস্তা ঘুরে শেষ মাথা। তারপর আবার ফেরা। এবার ওভারপাসের মাঝামাঝি মোটারবাইক থামালাম। দু'জনে নামলাম। সিগারেট ধারালাম। দূরে তেজগাঁও রেলস্টেশনের টিমটিমে আলো। ওভারপাসের নিচ দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইনটি বড় নির্জন। ঢাকা শহরের মাদক ব্যবসার সবচেয়ে বড় স্পট।
প্রচণ্ড শব্দ তুলে পাশ দিয়ে চলে গেলো বৈশাখি টেলিভিশনের একটি মাইক্রোবাস। সৌরভকে বললাম, দেখেছো, এতো রাতে চোর, ছিনতাইকারি, পুলিশ আর সাংবাদিক ছাড়া কেউ রাস্তায় থাকে না।
সৌরভ বললো, ঠিক বলেছেন।
রাতের নির্জনতাকে উপভোগ করার সময় নেই। আবার ফিরে যেতে হবে অফিসে। কর্মব্যবস্তার মাঝে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে হবে সকালে রাজধানীর পাঠকদের হাতে যাওয়া পত্রিকার পাতায়। ক্লান্তিহীন কর্ম, আর গতিময় জীবন। সোডিয়ামের নিয়ন আলোর মাঝে আবার মোটরবাইক আমাদের দু'জনকে নিয়ে ছুটে চললো তেজগাঁওয়ের সমকাল অফিসের দিকে..........।
সাব্বির নেওয়াজ
সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক সমকাল
রাত ৩টা ১৫ মিনিট।
১৮ই জুন, ২০১০।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




