
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটা আমরা পুরোপুরিভাবে ভুলে গেছি একদম, মন থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছি । মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী সেখানে ৪৩ জন মানুষের প্রাণ গিয়েছিল । যাঁর মধ্যে ১০ জন ছিলেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী । আহত হয়েছিলেন ১৬৩ জন ।
ফায়ার সার্ভিস ওই দশ জন কর্মীকে বাদ দিলে লাশের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৩ জন । অর্থ্যাৎ সেখানকার ৩৩ জন কর্মচারী মারা গিয়েছিল ।
অথচ সেখানে ফায়ার সার্ভিসের সেই ১০ জন কর্মীর মৃত্যুটা একেবারে অনাকাঙ্ক্ষিত । শুধুমাত্র কাপড় আর রাবারের তৈরি ইউনিফর্ম পরে এবং হালকা মানের অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করে তাঁরা ভেবেছিল এই ভয়াবহ আগুন নিভাতে পারবে ।
ওই যে দশজন হতভাগা মারা গেলো ওঁরাই হলো এদেশের অন্যতম হতভাগা । যাঁরা সরকারি চাকরি নামক সোনার হরিণ হাতে পেয়ে ভেবেছিল তাঁর একটা সুন্দর জীবন হবে, একটা সিকিউর লাইফ পাবে । বউ-বাচ্চাকে নিয়ে আয়েশ করে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারবে ।
অথচ কি আশ্চর্যের ব্যাপার । সেই দশ জনের মধ্যে কেউ হয়তোবা বিয়ে করেছিল, বাচ্চাকাচ্চা আছে, কেউবা ছিল অবিবাহিত । অবিবাহিতদের কেউবা হয়তো বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজতেছিলো ।

সেদিন জীবনের মায়া ত্যাগ করে সাধারণ মানের ইউনিফর্ম আর যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করে গিয়েছিলো ওঁরা । বিনিময়ে পেল মৃত্যু!
আমার প্রশ্ন হলো, ঘটনাটি ঘটার আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে, কিছুদিন পর তিন মাস পূর্ণ হবে । আচ্ছা ফায়ার সার্ভিস অফিসে কি তারপর নতুন হিটপ্রুভ ইউনিফর্ম বানানো হয়েছে? বা সেসবের জন্য বরাদ্দ কি পাঠানো কিংবা আবেদন কি করা হয়েছিল? নতুন যন্ত্রপাতি কি আমদানি করা হয়েছে কিংবা কোনো ট্রেনিং কি করানো হয়েছে যেন এরকম ঘটনা ঘটলে তা কিভাবে ঠেকানো যাবে মৃত্যু থেকে কর্মীগুলোকে বাঁচিয়ে!?
ঘনঘন ইস্যু প্রসব করা জাতি এবং দেশীয় মিডিয়া যাঁদের অধিকাংশের কাজ ভংচং নিউজ প্রচার আর ইস্যুকে হিসু করাতে ব্যস্ত সেইসব মিডিয়ার কাছেও এরকম প্রশ্ন করা সাজেনা!
সংবাদপত্রে গ্রহণযোগ্যতা তৈরিতে কে যে কোন রেজিমে নির্ভর করে তা আমজনতা ঠিকই জানে । অথচ এত এত মিডিয়া, সংবাদপত্র অন্তত একজন মূলধারার জাতীয় দৈনিক কিংবা টিভির সাংবাদিক তো পারতেন সেই ঘটনার পর কি কি ব্যবস্থা নেয়া হলো ফায়ার সার্ভিসে সেই বিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরা ।
লজ্জা লাগে আসলে এসব বলতে । কারণ এই ঘটনাগুলো তুলে ধরলেই চক্ষুশূল হয়ে যাই যাকে বা যাঁদের নিয়ে কথা বলি সেই গোষ্ঠীর কাছে । কিন্তু কথা তো কাউকে না কাউকে বলতেই হয়-হবে...তাই লিখে যাই যদি কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব হয়!
সাব্বির আহমেদ সাকিল
১১ ভাদ্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল | শুক্রবার | ২৬ আগস্ট ২০২২ ইং | কলমাকান্দা, নেত্রকোনা
#সীতাকুন্ড #ট্র্যাজেডি #বিএমডিপো #আগুন #চট্রগ্রকম #দমকল #ফায়ারসার্ভিস #অদক্ষতা #ইস্যু #সাম্প্রতিক #মিডিয়া #সংবাদপত্র #মৃত্যু
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



