somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হায়দ্রাবাদের দিনগুলি: পর্ব-২.১ (রামুজী ফ্লিম সিটির ফ্লিম্মি জগত)

২৪ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ আমরা ঘুরব রামুজী ফ্লিম সিটিতে। কিন্তু এত্ত বড় ফ্লিম সিটির বর্ননা কি এক পর্বে শেষ করা যায়? তাই পর্ব-২ কে দুই পর্বে ভাগ করতে হল। প্রথম পর্বে রামুজী ফ্লিম সিটির অন্যতম আকর্ষন থীম পার্কটি ঘুরে দেখব এবং পরের পর্বে ফ্লিম সিটির শুটিং স্পট ও অন্যান্য আকর্ষনীগুলো দেখব। তাহলে শুরু করি আজকের ভ্রমন।

সকাল ৮টায় বেড়িয়ে পড়লাম রামুজী ফ্লিম সিটির উদ্দ্যেশে কারন সকাল দশটায় থীম পার্কের ফটক খুলে দেয়া হয় এক অসাধারন এবং রাজকীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। সেটা মিস করার কোন মানেই হয়না। বাসে করে আমরা সকাল ৯টার দিকে পৌছে গেলাম রামুজী ফ্লিম সিটিতে।



টিকিট কেটে বুকে ব্যাজ লাগিয়ে নিলাম এবং প্রবেশ করলাম রামুজী ফ্লিম সিটিতে।



বাসে করে থীম পার্কে যাওয়ার আগে বাস স্টপেজে নাচের মাধ্যমে আমাদের স্বাগত জানাল। কিছুক্ষন নাচ উপভোগ করে বাসে চড়ে বসলাম।



বাস চলতে শুরু করল ফ্লিম সিটির রাস্তা ধরে। কিছুক্ষন পর একটি প্রবেশ দুয়ার পার করলাম। শুরু হল রংয়ে রাঙ্গানো দেয়ালের মাঝ দিয়ে পথ চলা। কখনওবা সরু শহুরে আভার রাস্তা এল সামনে, এভাবেই আমাদের বাস এগোতে থাকল।



চলার পথে বেশ কিছু ভাষ্কর্য দেখতে পেলাম। নিচেরটা খুব ভালো লেগেছিল। সেই সাথে ছবির ফোয়ারাটিও অপূর্ব ছিল।



বাস এসে থামল প্রধার ফটকের সামনে। মনে হল যেন কোন মহারাজার দূর্গে এসেছি। সকাল ১০টা বাজেনি তখনও তাই প্রবেশ দুয়ার বন্ধ।



প্রধান ফটকের বিপরীতে নান রকম রাইডের সমাহার। কোর্সমেটরা সবাই তাতে চড়তে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল আর আমি ক্যামেরা হাতে ক্লিক ক্লিক করে চললাম।



রাইডগুলোর সামনে রাখা এই কার্টুন চরিত্রটি দেখে খুব মজা পেলাম। যতদূর মনে পড়ে এটি নড়ত আর নানারকম অঙ্গভঙ্গী করত।



ফটকের দিকে তাকিয়ে দেখি লাইভ কার্টুন ক্যারেক্টার ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের সাথে হাত মেললাম, ছবি তুললাম, মজা করলাম।



আচমকা শৃঙ্গের আওয়াজ কানে এল। রাজকীয় অভর্থ্যনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ধীরে ধীরে প্রধার ফটক খুলে গিয়ে একদল নৃত্যশিল্পী নাচতে রাচতে এগিয়ে এল। কিছুক্ষন নেচে অবশেষে নাচের তালে রাজকীয় ভঙ্গীতে আমাদের স্বাগত জানাল থীম পার্কে।



ভেতরে ঢুকতেই নজরে এল এই নান্দনিক ডিরেক্টন পোলটি। এটা দেখেই বুঝলাম যে সামনে আরও অনেক বৈচিত্র ছড়িয়ে রয়েছে!



প্রবেশের পরপরই শুরু হল গানের শুটিং। আসল নয়, ডামি যাতে দর্শকেরা বুঝতে পারে কিভাবে শুটিং হয়ে থাকে। ডিরেক্টর, ক্যামেরাম্যান, লাইটম্যান, শিল্পীরা মিলে একটি গানের অংশের দ্বারা আমাদের সুটিংয়ের ডেমো দেখাল বেশ কিছুক্ষন ধরে।



শুটিংয়ের ডেমো শেষে এবার থীম পার্কের প্রধান চারটি অংশ ঘুরে দেখবার পালা। প্রথমেই পা বাড়ালাম সেই স্টুডিওর দিকে যেখানে দুনিয়ার নানা রকম বিষয় মডেলের মাধ্যমে দেখানো হয়। যাওয়ার পথে ডামি পেট্রোল পাম্পটি দেখলাম।



স্টুডিওতে ঢুকতে টয় ট্রেনে চেপে বলাম। রাজা, রাজকন্যা থেকে শুরু করে হাল আমলের শহুরে আবহ, শুটিংয়ের দৃশ্য, স্ট্যাটু অব লিবার্টি এবং রামুজী ফ্রিম সিটির মডেল সবকিছুই এক চক্করে দেখে তবেই ট্রেন থেকে নামলাম।



পরবর্তী স্টুডিওতে যাওয়ার পথে এক বিশাল অস্কার দেখতে পেলাম। যদি অস্কার এতই বড় হত তবে কি ঝামেলাই না হয়ে যেত!



এই স্টুডিওতে দেখানো হয় কিভাবে মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড, সাউন্ড তৈরি করা হয়। যদিও যা দেখানো হল তা মনে হয়না এখন আর ব্যবহার করা হয় তবে পুরো ব্যাপারটা মজার ছিল। শুরুতেই রামুজী ফ্লিম সিটির জনক কিছু বললেন সিনেমা নিয়ে। এরপর দর্শকদের মাঝ থেকে কয়েকজনকে ডেকে তাদের দিয়ে সামান্য অভিনয় এবং এটা-ওটা নাড়িয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ডাকাতের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিন তৈরি করে ফেলা হল।



সিনেমা তৈরির কারিগরি দেখে বাইরে আসতেই একদল নাচিয়ের নাচ দেখলাম। আমরা কেউ কেউ তাদের সাথে তাল।মিলিয়ে কিছুক্ষন নাচলাম।



নাচ শেষে পা বাড়ালাম আরেকটি স্টুডিওর পানে যেখানে ফাইটিং স্ট্যান্ট দেখানো হয়। গিয়ে দেখি একটি শহুরে সেট তৈরি এবং ডামি পরিচালক শুটিং নিয়ে সেইরকম ব্যাস্ত।





শুরু হল শুটিং। পানি নিতে আসা একটি মেয়েকে কয়েকটি ছেরের জ্বালাতন করা দিয়ে ফাইটিংয়ের শুরু হল। মার, গুলি, ইত্যাদি কোন কিছুই বাদ গেলনা সেই সাথে কান ফাটানো বোমারূপী পটকার আওয়াজতো ছিলই।



স্টুডিও থেকে বের হতেই সামনে পড়ল ওয়স্টার্ণ মুভির ডামি সেট যেখানে চাইলেই মোস্ট ওয়ান্টেড হয়ে যাওয়া যায়।



পরবর্তী স্টুডিওতে যাওয়ার পথে দূরে হলিউড চোখে পড়ল তবে লোগোর পাশে কপ্টারের কাজ কি সেটা বুঝলামনা।



সর্বসেষ স্টুডিও যেখানে বলা চলে ৫ডি যেখানে কিছুটা ৩ডি সাথে পরিবেশটাকেও বাস্তবিক করে তোলা হয়। কিন্তু এখানকার কোন ছবি নেই আমার কাছে তাই ছবি দিতে পারছিনা।

থীম পার্ক ঘুরে বাইরে আসলাম দুপুর ১টায়। বাইরে বিলাশবহুর রেস্টুরেন্ট থাকলেও সময় কম তাই পাশের ক্যান্টিন থেকে ফাস্ট ফুড খেয়ে নিলাম জলদি।



দুপুরের খাবার শেষে এবার বাসে করে ফ্লিম।সিটি ঘুরে দেখবার পালা। বাসের দিকে এগোতে গিয়ে কিছু পোস্টার দেখতে পেলাম।



লাল রংয়ের সুন্দর বাসগুলো দাড়িয়ে আমাদের প্রতীক্ষায়। উঠে বসলাম বাসে। ঘুরতে যাওয়া যাক এবার তবে।



প্রথম পর্বের এখানেই সমাপ্তি। কাল ঘুরে দেখব ফ্লিম সিটির যা কিছু বাকি অনেক ছবির সাথে।

বি.দ্র: ছবি সংখ্যা বেশী তাই একই থীমের ছবিগুলো গ্রুপ করে দিলাম নাহলে এত্ত ছবি আপলোড করাটা বেশ সময়সাপেক্ষ।

পর্ব- ১:
হায়দ্রাবাদের দিনগুলি: পর্ব- ১ (হায়দ্রাবাদী বিরিয়নি, সালার জাঙ্গ যাদুঘর এবং পথে পথে কিছু সময়)
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৭
৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×