তরুন প্রজন্মের চিন্তার বিভেদ ছিল একাত্তরেও। দেশমাতৃকার স্বাধীনতার সংগ্রামে সবাই যখন দুর্বার আন্দোলনের অংশীদার অনেক তরুণই তখন নিজেদের অধিক বিজ্ঞ-বিবেচক বোধ করে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখেছিল প্রানের দাবিতে মুখর সেই জনসমুদ্রকে। সমর্থন বা অংশগ্রহণ তো দুরের কথা, রাজনৈতিক সচেতনতায় দেউলিয়া সেই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর কাছে ওসব ছিল "হুজুগে বাঙ্গালির লাফালাফি" যা পাকিস্তান সরকারের টোকার মুখেই উবে যাবে। এসব তরুণের অনেকেই হয়েছিল সক্রিয় যুদ্ধবিরোধী। ইতিহাস আজ তাদের মানবিক ক্ষীণতা ও উর্বর মস্তিষ্কের প্রতি বিদ্রূপ হানে।
প্রজন্ম চত্ত্বরের আন্দোলনও আজ অনেকের কাছে "হুজুগ"। মাতৃভূমির জন্মশত্রুর বিরুদ্ধে আন্দোলন তাদের কাছে "হুদাই"। মুক্তিযুদ্ধ ও তার চেতনা তাদের কাছে "পুরান কাহিনি"। দেশকে ভালবাসা জনতার নিঃস্বার্থ-স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিকে তারা স্রেফ "এন্টারটেইনিং হ্যাংআউট" বলে ভাবতে পারে। স্বপ্নেপাওয়া পরিসংখ্যান তাদের বলে দেয় "অধিকাংশ" লোকই এসেছে মজা দেখতে, বিনোদনের জন্য।
আসলে ইতিহাসের গতিপথ সম্পর্কে ধারণায় হত-দরিদ্র এসব তরুণের ভাবনার সামর্থ্যই এমন। সাম্প্রতিক সময়ের "তাহরীর স্কোয়ার" আন্দোলন থেকেও এরা কোন শিক্ষা পায় না। ভ্রষ্ট বয়ঃজ্যেষ্ঠের গোবৎস অনুগামী হিসাবেই এরা স্বচ্ছন্দ। মাতৃভূমিকে ভালবেসে জীবন উৎসর্গ করা পৃথিবীর কোন শহীদের দেশপ্রেমকে নুন্নতম উপলব্ধি করার যোগ্যতা এদের নেই। গ্লানিকর হলেও নিশ্চিত জীবনযাপনের আপাত নিশ্চয়তা তাদেরকে ঠেলে দেয় বিভিন্ন অজুহাতের আড়ালে। দেশপ্রেমী জনগণের প্রানের প্রতিধ্বনি থেকে এরা বিচ্ছিন্ন। আর এদের মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধী সমর্থক নীতিহীন রাজনীতির প্রচ্ছন্ন বা সরাসরি অন্ধ-অনুসারী ও উচ্ছিষ্টপ্রেমী সমর্থক নিঃসন্দেহে তারা গো.আজম, নিজামি, মুজাহিদ, সাঈদী, কাদের মোল্লাদের ঔরসজাত বেজন্মা। রাজাকার বিরোধিতা তাদের কাছে ধর্মবিরোধিতা!!
চিন্তায় নপুংসক এইসব তরুণরা একাত্তরের সেই উর্বর মস্তিষ্কের গোষ্ঠীরই উত্তরসূরি এবং সবার উচিত এই সুযোগে এদের চিনে রাখা। ইতিহাস জ্ঞানহীন, ভাবনায় মনঃবিকলাঙ্গ কিন্তু ইঙ্গিতে অতিবিজ্ঞ এসব তরুণদের জন্য জন্য স্রেফ করুণা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



