কোন মানুষ যখন অন্যায় করেন সে অন্যায় কে ন্যায় অর্থাৎ ১০০ ভাগ সঠিক পদক্ষেপ মনে করেই করেন। এই সঠিক পদক্ষেপে তার কোন ভুল নাই দুনিয়া ভুল হতে পারে সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হয়ে পূর্ব দিকে অস্ত যাওয়ার ভুল করতে পারে কিন্তু তিনি যেহেতু ফেরেশতার চেয়েও অধিক ভালো মানুষ সে ভুল কিংবা অন্যায় করেন না করতে পারেন না।
যদি একান্তই নিজের ভুল চোখে আংগুল দিয়ে তার নিজের আংগুলই ধরিয়ে দেয় তখন সেই অন্যায়ের সপক্ষে এক লক্ষ যুক্তি দাঁড় করাতে তিনি সক্ষম হন।
এখন চলছে স্বার্থের যুগ মানুষ চরম খারাপ নিজের স্বার্থ উদ্ধারে এরা যে কোন খারাপ কাজ করতে পারে হ্যান ত্যান বেশিরভাগ লোকজন একে অপরকে এই সকল কথা বলে চাপের মধ্যে রাখতে রাখতে করেন ঐটাই যা অপরের দোষ হিসেবে ঢোল পিটিয়ে বলতেই থাকেন।
কিন্তু এরা ধরা খায় কোন খানে? যেখানে তাদের দূর্বলতা; তার থেকে ক্ষমতাবান কোন মানুষ, লোকলজ্জার ভয়, সতীর্থদের জেনে যাবার ভয়, তখন তাদের তর্জন গর্জন কই! গলা দিয়ে দুই একটা মিউ মিউ যা ও বের হয় তাও অত্যাধিক নিচু আওয়াজে।
করোনা থেকে আরোগ্যে লাভ করে আমার Department এর আপা এসে মাথা খারাপের মতন আচরন করছেন কাড়ি কাড়ি খাবার এনে টেবিলে রাখছেন ( করোনার পর নাকি বেশী বেশী খেতে হয় তাই এই আয়োজন) আমাকে খেতে বলছেন বার বার, মাস্ক খুলে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে ঘুরছেন, তাকে মাস্ক পড়তে অনুরোধ করায় আমাকে কড়া গলায় বললেন যে তিনি তো মাস্ক পড়বেনই না কারন তার ইমিউনিটি এখন হাই; সাথে আমিও যেনো না পড়ি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে মানুষ মাস্ক পড়তে পড়তে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন, আর আমিও খুব দ্রুত সেই দলে যাচ্ছি এবং আমার ছোট বাবুটা আর কি সেভ থাকবে! সাথে ঠোঁট উল্টিয়ে হাসি, বাবুর কথা এই প্রসংগে আনায় আমি ভেতরে ভেতরে খুবই কষ্ট পেলাম, উনার বয়স পঞ্চাশ বিয়ে করেননি, সন্তান কি জিনিস উনাকে বোঝাতে যাওয়া অনর্থক।
আমি কত কষ্ট সহ্য করতে পারি নতুন এই আপা তো জানেন না; কাজেই আমি তার কথা এবং আমার গায়ে ঢলে পড়া আমার Desk এ গায়ে পড়ে এটা ওটা ঘাঁটাঘাঁটি করা ও তার বাড়ি থেকে আনা খাবার না খাওয়ার জন্য ইফটিজিং হজম করলাম আরো এক সপ্তাহ। তারপর বাধ্য হয়েই management এ জানালাম।
উনি মাস্ক না পড়া সহ আমার সাথে করা অন্যান্য কর্মকাণ্ডের জন্য বিশ্রী ভাবে ধমক খেলেন অপমানিত হলেন। তারপর মিউ মিউ করলেন এবং লজ্জা ঢাকতে হেসে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করলেন কিন্তু রুলস এখন মানছেন এটা ভালো ব্যাপার।
এক শুভাকাঙ্ক্ষী আপুকে এই ঘটনাটা জানিয়ে জানতে চাইলাম আমি যা করেছি তা ঐ অন্ধের দলের মত অন্যায় হলো কি না, তিনি বললেন তুমি যা করেছো তোমার সেফটির জন্য করেছ এতে কোন অন্যায় হয়নি, যাক তাই যেন হয়।
ছবিতে আমি, তুলে দিয়েছেন অচেনা বৃদ্ধ মালী তিনি জীবনের প্রথম ছবি তোলা যায় এরকম মোবাইল হাতে নিয়েছিলেন, ছবি কিভাবে তোলা হয় আমি শিখিয়ে দিয়েছিলাম। উনার আফসোস সামনের দিকে ঘুরে তো ছবি তুললাম নাহ। সুখকর স্মৃতি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৩