রাজধানীর একটা ব্যস্ত এবং খ্যাত এলাকার মার্কেটে একটা কিচেন ওয়্যার কেনার জন্য এসেছি।
কিনেছি, ওমনি ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি!
কিন্তু কাছে তো নগদ টাকা নাই,
রাস্তার ওপারেতে বুথ আছে
ওখান থেকে তুলে দিয়ে দিবো সঙ্গে আসা দোকানিকে।
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝরছে, ঝরুক কিন্তু
দমকা হাওয়া নাহলেই হয় উল্টেপাল্টে যাইযে!
হাতে আবার মস্ত এক বাক্স ভরা থলে।
ছুটির পর পরেই বেরিয়েছি,
এখন আঁধার নেমে গেছে।
লেনদেন চুকিয়ে ফিরছি আমার মানব শূন্য নীড়ে।
ভূতের ভয় নাই, ভূতি আমাকে ডরায়।
তো ফিরছি, ব্যস্ততম পথে তেমন হৈ হুল্লোড় নাই
ট্রাফিক সিগন্যাল ক্রস করতে হবে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে
ব্যক্তিগত গাড়িগুলো তা জুড়ে দাঁড়িয়েছে
আমি খুব দক্ষ হাতে নিজের পোশাক এক হাতে উঁচু করে ধরে দৃঢ় পদক্ষেপে হেঁটে এগোচ্ছি,
আরেক হাতে পার্স আর প্রমান সাইজের বস্তা বলা যায় অবলীলায়।
নাহ! লজ্জা লাগেনা, আনস্মার্ট লাগেনা বরং ভীষণ কনফিডেন্ট লাগে, আলহামদুলিল্লাহ!
আইল্যান্ডটা বেশ উঁচু, বেশ কায়দা করে নামলাম প্রধান সড়কে, ছলকে উঠা, জমে থাকা পানির মধ্যে।
তখনই আরেকটা ব্যক্তিগত গাড়ি এসে থামলো আমার সামনে জেব্রা ক্রসিং এ।
আমি এগোচ্ছি আর ভাবছি কোন ফাঁক ফকোর দিয়ে যাওয়া যাবে কিনা! আমার চিন্তায় ভাটা দিয়ে শেষে আসা
গাড়ীটা ধীরে ধীরে পিছুচ্ছে বুঝতে পারছিলাম। ধীরে ধীরে পিছিয়ে জেব্রা ক্রসিং ছেড়ে দিয়ে
আমাকে যে সম্মান দিলো তাতে আমার মনে হলো যে, আমার মত তুচ্ছ মানুষের জন্যে এরকমটা অযাচিত সম্মান ছাড়া আর কিছু না।
অন্তরের অন্তঃস্থল ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে আবেগ ভর্তি সম্মান ঐ মানুষটার প্রতি।
তাঁর সামনে মাথা নুয়ে, হৃদয়ে হাত রেখে জানাতে চাইছি আমি কৃতজ্ঞ আপনার প্রতি, হে অপরিচিত সম্মানিত মানুষ!।
চার বছর হয়ে গেছে, এখনও দোআ করি, করা উচিত। একে অপরের সাথে সবাই কবে এমন হবো?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৫৬