somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাওনকে ঘিরে যতো প্রশ্ন ? !

৩০ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সদ্য প্রয়াত জননন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও ব্লগে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক তোলপাড়।
হুমায়ূন আহমেদের অপারেশনের সময়ে ‘টাকা না দিলে অপারেশন করা হবে না’ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আনা শাওনের এমন অভিযোগের কড়া সমালোচনা করেছেন নিউইয়র্ক ও বাংলাদেশের হুমায়ূন ভক্তরা।
চিকিৎসকের নয়, শাওনের অবহেলা আর হেঁয়ালীপনার কারণেই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করছেন অনেকেই। এজন্য শাওনের বিভিন্ন সময়ে করা আচরণকেও দায়ি করেছেন তারা।
অনেকেই মন্তব্য করছেন, নিউইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসায় অর্থাভাবের যে কথা শাওন তুলেছেন, তা মোটেও সত্যি নয়। সত্যিই যদি টাকার অভাব হতো, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে যখন চিকিৎসা সহায়তা করার কথা বলা হয়েছে, শাওন তখন টাকার সমস্যা নেই বলে সে সহায়তা গ্রহণ করেননি কেন (প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ১০ হাজার ডলারের চেক ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা দ্রষ্টব্য)?
এছাড়াও হুমায়ূন পরিবারের আর্থিক সমস্যা থাকা সত্বেও (শাওনের বক্তব্য মতে- আর্থিক সমস্যায় চিকিৎসা ব্যহত হয় এবং বিল পে না ‍করায় চিকি‍ৎসক অপারেশনের আগে একপর্যায়ে হুমায়ূনের অপারেশন শুরু করবেন না বলে জানান) ৯ মাস ধরে অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম কেন হুমায়ূন আহমেদের ফ্ল্যাটে অবস্থান করেছেন?
একইসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদ মারা যাওয়ার পরেও শাওনের বিভিন্ন আচরণে ক্ষুব্ধ হুমায়ূন আহমেদের ভক্তরা। শাওনের কারণেই নন্দিত এ লেখকের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে বিলম্ব হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। হুমায়ূন ভক্ত ও সচেতন মহল দাবি করেন, শাওন ও তার মায়ের বিজনেস ক্লাসে দেশে ফেরার ইচ্ছার কবলে পড়ে প্রিয় লেখকের মরদেহ দেশে আনতে একদিন বিলম্ব হয়েছে। সে সূত্রেই অন্যপ্রকাশের স্বত্ত্বাধিকারী প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম বিজনেস ক্লাসের টিকিট দাবি করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এম এ মোমেনের কাছে।
কেউ কেউ আবার হুমায়ূন আহমেদ অসুস্থ থাকাকালীন সাবেক স্ত্রী গুলতেকিন খান ও সন্তানদের কাছে আসতে শাওন বাধা প্রদান করেছেন বলেও অভিযোগ এনেছেন।
হুমায়ূন আহমেদের পিতৃস্থান নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা ও নিজ গ্রাম কুতুবপুরেও শাওনের বিরুদ্ধে অনেককে অভিযোগ তুলতে দেখা গেছে। শাওনের কারণেই হুমায়ূন আহমেদকে দ্রুত মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে বলে তারা মনে করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দুয়ার এক সাংবাদিক বলেন, শাওনই যত ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নেড়ে থাকেন। হুমায়ূন আহমেদ জীবিত থাকতে তার বক্তব্যে নুহাশপল্লীকে কবরস্থান বানাতে নিষেধ করে গেলেও শাওন স্বামীকে ওখানে কবর দিয়েছেন। এক্ষেত্রে শাওন হুমায়ূন আহমেদের মায়ের কথাকেও গুরুত্ব দেননি।
তিনি আরো বলেন, শাওন হুমায়ূন আহমেদের মায়ের কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে অনেক বড় অন্যায় করেছেন। এটা এক ধরণের ঔদ্ধত্য। তাছাড়া আগের সন্তানদের কথাকেও শাওন পাত্তা দেননি। শাওনের এরকম কাজ মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে শাওনের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

নিউইয়র্কে শাওন ও শাশুড়ির কর্মকাণ্ডে মিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্ষোভ

হুমায়ূন আহমেদ নিউ ইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালে স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও শাশুড়ি তহুরা আলী এমপির নানা কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একবার সব কর্মচারী মিলে বিদ্রোহ করে বসেনÑ তারা আর হাসপাতালে যাবেন না হুমায়ূনকে দেখাশোনা করতে। মিশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়। উপদেষ্টা নিয়োগের পর থেকে সার্বক্ষণিক হুমায়ূনের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর রাখতেন স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এম এ মোমেন। হুমায়ূন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে দেখাশোনা করার জন্য মিশন থেকে প্রতিদিন দুজন কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হত। প্রতিদিন স্ত্রী ও শাশুড়ি হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য মিশনের একটি গাড়িও দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, শাশুড়ি তহুরা আলী সরকারদলীয় এমপি হওয়ায় তার দাপটে তটস্থ থাকতেন মিশনের কর্মচারীরা। হাসপাতালে কর্মচারীদের বসিয়ে রেখে স্ত্রী ও শাশুড়ি গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন স্থানে।
হুমায়ূনের অবস্থা যখন সংকটাপন্ন, তখনও তাকে হাসপাতালে মূলত দেখভাল করতেন মিশনের কর্মচারীরা। প্রায়ই শাওন ও তার মা এসব কর্মচারীদের গালমন্দ করতেন। একপর্যায়ে কর্মচারীরা একজোট হয়ে স্থায়ী প্রতিনিধিকে জানায়, তারা আর হাসপাতালে যেতে পারবে না। তাদের সঙ্গে হুমায়ূন পরিবারের সদস্যরা অশোভন আচরণ করেন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এবং ড. মোমেনের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত কর্মচারীরা রাত-দিন হাসপাতালে দেখভাল করেছেন। বিরক্ত ছিলেন গাড়িচালকও।
সূত্র জানায়, মিশনে গাড়ি সংকট থাকায় বলা হয়েছিল, যখন তারা হাসপাতালে যাবেন কিংবা ফিরবেন, তখন ফোন দিলেই গাড়ি যাবে। কিন্তু সকালে গাড়ি নিলে সারাদিনের মধ্যে তারা গাড়ি ছাড়তেন না। গাড়ি নিয়ে ঘুরতেন নিউ ইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্থানে। এই খবর ঢাকা পর্যন্ত গড়িয়েছে। সূত্রমতে, ঢাকা থেকে সবকিছু ধৈর্য্যরে সঙ্গে মোকাবিলা করে হুমায়ূনের চিকিৎসায় সহযোগিতার হাত আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মিশনকে।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×