somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লকডাউনে কঠিন জীবন হয়েছে আরও কঠিনতর।

০৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘করোনার সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়ার এখন পর্যন্ত প্রধান উপাদান হলো টিকা। কিন্তু এ টিকা নিয়ে যে বাংলাদেশ বড় সংকটে আছে, তা সরকারের নীতিনির্ধারকেরাও স্বীকার করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তো একবার ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, সবাই আশ্বাস দেয়, টিকা দেয় না। উন্নত দেশগুলোর কথা বাদ দিলাম, কিউবার মতো ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশও যখন টিকা উৎপাদন করল, তখন আমরা সময়মতো উদ্যোগ নিলাম না কেন? এখন থেকে টিকা উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করলেও অনেক সময় লাগবে।

সরকারের মন্ত্রীরাও বলছেন, লকডাউন স্থায়ী সমাধান নয়। মাসের পর মাস সবকিছু বন্ধ থাকলে অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। জীবন কিংবা জীবিকার মধ্যে সমন্বয় দূরের কথা, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। এ করোনার মধ্যেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। টিকা নিতে হবে। করোনার প্রথম ঢেউ ছিল প্রধানত শহরকেন্দ্রিক। অনেকে করোনা থেকে রক্ষা পেতে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন। এবার শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলে সমানভাবে সংক্রমিত। তাই মানুষকেও বুঝতে হবে, গ্রামে গেলেও ঝুঁকি কমবে না। বরং আসা-যাওয়ার পথে তারা বহু মানুষের সংস্পর্শে এলে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়বে।

লকডাউনে কেমন আছে শহর ও গ্রামের মানুষ?
গ্রামে যারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল, তাদের হয়তো খাওয়া-পরার চিন্তা কম। কিন্তু জেলে, কামার, কুমার, তাঁতি সম্প্রদায়ের মানুষ নিরুপায়। আর শহরেও সব মানুষই তো মাস শেষে বেতন পান না। সব মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যও নেই যে এক-দুই সপ্তাহ ঘরে বন্দী থাকলেও তাঁরা চলতে পারবেন। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো কীভাবে চলবেন? যাঁরা ফুটপাতে ছোট্ট দোকান সাজিয়ে বসতেন, যাঁরা রাস্তার মোড়ে কাজের জন্য সকালে টুকরি-হাতুড়ি, বাটালি নিয়ে অপেক্ষা করতেন, অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তাঁরা কোথায় যাবেন? কী খাবেন?সরকার লকডাউনের মধ্যে কলকারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু মালিকেরা শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার ব্যবস্থা করেননি। এই যে গণপরিবহনের লাখ লাখ চালক-কর্মী দীর্ঘদিন অলস বসে থাকার পর গত ঈদের পর যানবাহন নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরাও ফের বেকার হয়ে পড়লেন। একদিন গাড়ি বের না হলে মালিক মজুরি দেবেন না। একই কথা প্রযোজ্য নৌযানশ্রমিকদের বেলায়। করোনায় বেশির ভাগ খাবার দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। অনানুষ্ঠানিক খাতেও লাখ লাখ শ্রমিক আছেন, যাঁদের নিয়োগপত্র নেই, বোনাস, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড কিছুই নেই। মাস শেষে সামান্য মজুরির কটা টাকা পেতেন, তা-ও লকডাউনে বন্ধ।কেবল এই শ্রমিকেরা নন, করোনা লকডাউনে বড় বিপদে পড়েছেন নন-এমপিও শিক্ষকেরাও।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই ধরনের শিক্ষক আছেন। যাঁরা ভাগ্যবান, তাঁরা সরকারি ভাতা পান, যা মূল বেতনের শতভাগ। কিন্তু যাঁরা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নন এমপিও শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া ফির ওপরই তাঁরা নির্ভর করেন। অনেক আগেই তাঁদের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে।

করোনা মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। লকডাউনে সেই কঠিন জীবন হয়েছে আরও কঠিনতর।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×