প্রতিটি সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা আছে। বাবা-মা থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা একেক জনের সংস্পর্শে আসি এদের মধ্যে ভাই- বোন,দাদা-দাদী, নানা-নানি,চাচা-ফুপু,খালা-মামা ছাড়াও আছে তাদের সন্তান আমরা তাদের আমাদের কাজিন হিসেবে জানি এরা সবাই হলো রক্তের সম্পর্ক তার বাহিরে তাদের সম্পর্কের মাধ্যমে আমরা আরো কিছু মানুষদের পাই যারা রক্তের সম্পর্কের নয় কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে পরিবারের অংশ হয়ে যায় যেমন, চাচী-মামী,ফুপা- খালু, ভাবি- দুলাভাই, এদের প্রত্যেকের সম্পর্ক অনুযায়ী হক রয়েছে আমাদের উপর এবং আমাদেরও হক রয়েছে তাদের উপর । কিন্তু যখনই আমরা আমাদের হকের চেয়ে বেশি করি বা একে অন্যের হক মারি তখনই আসলে সম্পর্কগুলো ভেঙে যায় । তদরূপ এদের বাইরেও আমরা কিছু সম্পর্কে জড়িয়ে যাই যারা আমাদের জীবনকে প্রাচুর্য়ময় করে তুলতে সাহায্য করে এক কথায় পরিবারের পর পরই তাদের সাহায্যে আমরা এগিয়ে যাই, প্রতিবেশী, শিক্ষক,বন্ধু- সহোপাঠী,কলিগ এদের কারো সাথেই আমাদের কোন রক্তের সম্পর্ক বা বৈবাহিক সম্পর্ক থাকে না বা নেই তবুও জীবনে তাদের উপর আমাদের এবং আমাদের উপর তাদের হক রয়েছে যেটার তারতম্য হলে আমাদের সম্পর্কগুলো ভেঙে যায়।
তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিটি সম্পর্কের হকগুলোকে খুব ভালো করে অনুশীলন করা এবং সেই অনুযায়ী বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ করা ।
কারন আপনার বাবা বা সন্তানের যে হক সে হক আপনি অন্য মানুষকে বাবা- ছেলে-মেয়ে ডেকে দিতে পারেন না। যখনই দিবেন তখনই বিশৃঙ্খলতা হবে এবং সম্পর্কগুলো তার মাধুর্যতা হারাবে । আপনার হয়ত ভাবছেন আমি খুবই ছোট মনের মানুষ-কেউ যদি পরকে আপন করে নিয়ে বাবা-মা, ভাইবোনদের স্হান দিতে পার সেটা তো খুব প্রশংসনীয় বড় মনের পরিচয় এটা সবাই পারে না,এটাই মানবতার।
হ্যাঁ মানবতা, মানবতা করতে চাইলে পর মানুষকে পর মেনে নিযেই তার সাহায্য করতে হয় তাকে অন্যের জায়গায় বসাতে হয় না। অন্যের জায়গা দেওয়া মানে অন্য সম্পর্কের হক নষ্ট করা সমাজে কেওয়াজ সৃষ্টি করা । যেখানে সমাজে এত মানুষজন আছে তাদের প্রতিও আপনার আমার দায়িত্ব-কর্তব্য আছে সেখানেও মানবতা দেখাতে হবে আপনাকে, যদি আপনি মানবতার দোহাই দেন।
এ ব্যপারে এইজন্যই বলছি সম্প্রতি আমার মনে হয়েছে যে যদি আমরা প্রত্যেকে নিজেদের সীমারেখা ও সম্পর্কের সীমারেখাগুলো জানি তাহলে অন্যের এবং নিজেদের সম্পর্কগুলো স্বাস্থ্যকর রাখতে পারবো।
বন্ধু বন্ধু মতই থাক পরিবার হওয়ার দরকার নেই । বন্ধু যদি পরিবার হয়ে যায় তাহলে বন্ধুত্ব সত্তাটি হারিয়ে যায়।তাই আপনি আপনার লিমিটে থাকুন কেউ আন্তরিক হয়েছে বলে আপনি তার মাথায় চরে বসতে চেয়েন না। নিজের সম্পর্কের হিসেব করুন।বড়রা যদি দায়িত্বহীন হয় তাহলে তারা তাদের মর্যাদা ছোট্টদের কাছে হারিয়ে ফেলে কারণ ঐ যে সম্পর্কের সীমারেখা সম্পর্কের হক যা ছাড়া ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ, বিশ্ব সবই ভঙ্গুর। তাই সম্পর্কের হকও সীমারেখা সম্পর্কে জানুন।
কেউ ধনী হলেই তার চেয়ে কম সম্পদশালীকে গরীব বলার অধিকার তার নেই।কারণ আপনার সম্পদে সবাই চলে না।
আপনি যদি কাউকে কথা দেন তবে সে কথা রাখুন নতুবা কথা দেবেন না।
আপনি যদি বন্ধুত্ব চান তবে সেই সীমারেখায় থাকুন নতুবা বন্ধুত্ব ত্যাগ করুন।এটা বেশিভাগ ছেলেমেয়েদের বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে হয় বন্ধুত্ব রেখে বন্ধুত্বের সীমারেখা অতিক্রম করে এবং সম্পর্ককে অরুচিকর করে দেয় একজন দাবী করে প্রেমিক অন্যজনের দাবী সম্পর্ক শুধু বন্ধুত্ব।তাই প্রেমিক/ স্বামী/ স্ত্রী যেভাবে মিশে সেভাবে বন্ধুদের সাথে মিশবেন না। প্রেম /বিয়ে করলে বন্ধুত্ব করবেন না । কারণ বন্ধুত্বের আলাদা সংজ্ঞা এবং সীমারেখা আছে।
এখনকার ইয়াং জেনারেশন আমার প্রিয় কারণ ওরা বন্ধুত্ব বোঝে তবে তারাও সম্পর্কগুলো নির্দিষ্ট করে রাখতে পারেনি আমাদের আদি পচা সমাজের কারণে।
আসল কথা হচ্ছে সব সম্পর্কে সচ্ছতা রাখুন এবং দিন।তবেই মানবিক হতে পারবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


