যখন কেও সংসার জীবনে নেগেটিভ কাজ করবে আমার মনে হয় তার সাথে সংঘর্ষে না গিয়ে ভিন্ন উপায়ে ব্যাবহার করা যায়।
যেমন কেও হয়তো আপনার চালচলন বা কথাবার্তায় ব্যাকডেটেড বা এজাতীয় কিছু বলল , এতে মন খারাপ না করে তার কাছে জানতে চাওয়া কিভাবে আপডেটেড হউয়া যায়, শোনার পর ভালো লাগ্লে মনে রাখা, নাহলে ঝেড়ে ফেলা।
তবে নীতির সাথে কখোনই আপোষ করা নয়।
কেও হয়তো আপনার বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলল , বা তুলতেই থাক্লো , যেমন এতো বয়স হয়ে গেলো কেনো বিয়ে করছেনা, হাবজ্জাবি ...
আপনার কি মন খারাপ করা উচিত? মোটেই না বরং তাকে বলা মন মত মানুষ এখন অব্দি খুঁজে পাইনি।
অথবা পেলে বলা ,শুনুন আমি তো অমুক কে বিয়ে করতে যাচ্ছি আপনি জানেন, তাঁর গুছিয়ে উঠতে সময় লাগছে একটু।
সরাসরি সব কিছু ফেস করতে শেখা উচিত আমাদের, তাতে সে ব্যাক্তি একটু হলেও লজ্জা পায়।
আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞ্বতায় দেখেছি যারা বা যে আপু ভাবিরা সারাদিন বাসায় থাকে বা ভারতীয় বাংলার নাটক নিয়ে ব্যাস্ত থাকে তারা যেকোন কর্মজীবি মেয়েদের নিয়ে কথা বল্বেই, এমনকি স্বয়ং স্বাশুড়িকে নিয়েও ।
আড়ালে বললে আরো মেজাজ খারাপ হয়, যখন পরে শোনা হয়, আসলে মেজাজ খারাপের কিছু নেই।
এর মানে এই নয় যে আপনার দ্বারা কিছু হবেনা, বা আপনি খারাপ কাজ করছেন, যারা নেতিবাচক কথা বলবে তারা বিষধর সাপের মত, তাদের ঠাণ্ডা মাথায় ত্যাগ করবেন, ত্যাগ করতে না পারলে এড়িয়ে যাবেন।
আশাবাদী মানুষের সাথে থাকবেন সবসময়। নেতিবাচক কিছু কথায় অবশ্য ভালো কাজ দেয়, যেমন জেদ বাড়াতে সাহায্য করে।
নিজের দায়িত্ব নিজে নেয়া হচ্ছে সাফল্যের প্রথম শর্ত।
আপনার আশেপাশের মানুষদের বুঝিয়ে দিন কেমন ব্যাবহার আপনি তাদের কাছ থেকে আশা করেন।
আপনি তাদের প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ন ব্যাবহার যেমন করবেন,তেম্নি তাড়াও যাতে শ্রদ্ধাপূর্ন ব্যাভার করেন সেকথা আপনি পরোক্ষ ভাবে বুঝিয়ে দিন।
এখানে স্বামী বিবেকানন্দের একটি বাক্য না বলে পারছিনা, " তোমার গালে যদি কেও চড় মারে, তাকে দশ চড় যদি ফিরিয়ে না দাও,তুমি পাপ করবে, ঝাঁটা লাথি খেয়ে চুপ্টি করে ঘৃণিত জীবন যাপন করলে ইহকালেও নরকভোগ ,পরকালেও তাই। এইটি শাস্ত্রের মত। সত্য ,সত্য , পরম সত্য - স্বধর্ম কর হে বাপু, ....
অন্যায় সহ্য করা পাপ, গৃহস্থের পক্ষে ,তৎক্ষণাৎ প্রতিবিধান করতে চেষ্টা করতে হবে"
অনেক সময়ে লোকের কটুক্তি আপনার মনে প্রতিশোধ স্পৃহা জাগিয়ে দিয়ে আপনাকে নিত্য নতুন কাজে উদ্ভূত করবে।
অনেক অনেক কাছের কিছু মানুষজন বলতেন ভালো রেজাল্ট করে বিসিএস দেয়া , নাহয় বড় কর্পোরেট লেভেলের চাকরি করা, যারা কোথাও চান্স পায়না তাদের জন্যে বিজনেস।
আমার ঠিক উল্টোটি-ই মনে হত।
আমার কেবল মনে হত টপ সারির সবার ইনোভেটিভ আইডিয়া বা বুদ্ধি জ্ঞান দিয়ে দারুন ভাবে বিজনেস করা সম্ভব এবং উচিত। মধ্য সাড়িরা জব করবে, শেষের সাড়িরা ? জানিনা সে সম্পর্কে।
আসলে এই সাড়ি বিভাজন কারা সৃষ্টি করেছে? শিক্ষকরাই? নাকি গুরুজন রাই?
আর এই বিভাজন কিসের ভিত্তিতে যারা খুব ভালো পড়াশুনায় তারা প্রথম দিকে?
আমি তো দেখেছি শেষের বেঞ্চে থাকা ছেলেটি-ই আজ দারুন ভালো কাজ করছে।
আমাকে প্রায়-ই আমার কিছু বন্ধু বান্ধব বলতেন মেয়েদের দিয়ে আর যাইহোক বিজনেস হবেনা, যখন শুরু করি তখন বলতো কিছুদিন পরেই আমার এই উচ্চ্বাস শেষ হবে আর আমি ছেড়ে দিয়ে সেই জব এই ঢুকবো।
আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ । তারা এভাবে কটুক্তি বা হেলায় কথা না বললে আমি জোঁকের মত এভাবে লেগে থাকতাম কি না জানিনা।
এই ধরনের আরেকটি ঘটনা বলি, ভাষাচার্য ড; সুকুমার জীবনের প্রথম দিকে তাঁর বন্ধু আচার্য তাঁর প্রথম বরাত দেয়া লেখা পড়ে মন্তব্য করেছিলেন- "আপনি দেখছি বাংলা লিখতে জানেন না"
এই গুরুতর অভিযোগ শুনে সুকুমার সেন কিন্তু বিচলিত হননি।
"গুরুবাক্যকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই" তাঁর বাংলা চর্চা আরম্ভ হল, বাকিটা তো ইতিহাস......
আপনি যদি সত্য-ই বাঙালি হন, মানে জন্মসূত্রে বাঙালি সেই অর্থে না, আপনার ভাবনা চিন্তায় মননশীলতায় বাঙালি হয়ে থাকলে এইভাবে প্রতিবাদ করা আপনার জাতিগত বৈশিষ্ঠ্য ।
চিন্তা ভাবনাও একটা বড় ব্যাপার এই ব্যাপারে।
যেমন এই ভাবে চিন্তা না করে," আমার আশেপাশে যারা আছে তারা সবসময় এমনভাব দেখায় যেন আমার কোন মূল্য নেই"
বরং ভাবুন, " যাঁরা আমার নিকটজন তাঁরা সবাই-ই আমাকে উতসাহ দেন, সাহস যোগান। তাঁরা আমার সম্বন্ধে বেশ উচ্চ ধারনা পোষন করেন"
সবাই ভালো থাকুন, অনেক ভালো।