somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ভার্সিটি জীবনের টুকিটাকি...এডা একটা মধু কাহিনী..:P

১১ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ভার্সিটি জীবনের টুকিটাকি - এডা প্রথম পর্ব ছিলো -

Click This Link


আজকে এক্টু কৈরা দুষ্টামীর কাহিনী বলি..:)

আমরা ছিলাম মধুর কাহিনীতে, আমাদের ক্লাসের মধু...

আগেই জানাইয়া নেই, মধু আমারে বড়ই ডিসলাইক করে, কিন্তু আমারে ফাঁপোড় দিতে পারলে তার আর কিছুই লাগতো না -- জীবন স্বার্থক টাইপ আনন্দ...হিমেল রে কিছু কৈতো না, বেশি ডর..সবার সাম্নে হিমেল এমন একটা কিছু কৈয়া দিবো, যে ইজ্জত সরাসরি গভীর কুয়ায়...

প্যাচাল কম পাড়ি...

একবার রমজানের ঈদে বাড়ি ফিরুম সব একসাথে...সিলেট স্টেশনে বিশেষ বন্ধের টিকেট পাওয়া যে কি দুস্কর, তা ভুক্তোভুগীরাই কেবল জানে...সেহেরী সাইরা গিয়া লাইনে দাড়াইতে হৈতো, তাও একজনে ৪ টার বেশি কাটা যাইবোনা...
এত ঝামেলা কৈরা আমরা প্রায় ১৫-১৬ জনের টিকিট কাটলামার্কি...
বাকীরা আল্লাহ-ভরষা..:D

সঙ্গী সাথিদের মাঝে আমি ছিলাম, মধু ছিলো, ইমরান, রাকু, চান্স মোহাম্মদ ছিলো...বান্ধবীরাও ছিলো কয়েকজন...
আর আমরা তো জানি, বান্ধবীরা থাকলে মধু সেমাঠ হবার একটা ট্রাই নিবেই....
বান্ধবীদের মাঝে ছিলো জিন্স(আমাদের দেয়া নাম;)), জিন্স হৈলো আমাদের সবচাইতে কড়া মানুষ...কাউরে লাইক না করলে, তার কপালে শনি আছে....একবার লাঠি নিয়াও তাড়া করছে কাউরে....
একবার আমার কথা পছন্দ না হওয়ায়, ৮-১০ কেজি ওজনের একটা শক্ত মলাটের বৈ দিয়া আমার মাথায় বাড়ী দিছিলো (মাথা ২ দিন ব্যাথা ছিলো..:-*)
সে টাল্টু বাল্টু একদম সহ্য করতে পারতোনা...

যাই হোক, আমরা ট্রেনে চড়ি এইবার...
রোজার মাস, নাইট জার্নি, তাই সেহেরীর কি ব্যাবস্থা?
এডার দায়িত্ব রাকু নিলো...যেহেতু তাদের মেস থেকে সর্বাধিক যাত্রি, তাই নিলো আর কি...কিন্তু সে মাংস-খিচুড়ি মিক্সড আইটেম করবে আগে জানলেকি আর তারে নিতে দিতাম??/:)

সিট এ্যারেন্জমেন্ট হৈলো....
মুখোমুখি শোভন সিট(চেয়ার পাওয়া যায়নাই)...তিনজন তিনজনের সিটে চাইর জন তিন জন বসলো..মেয়েরা একলগে তিন জন একটায়...


সিটের উপরে ছিলো র‌্যাক, গাট্টি বোঁচকা রাখার জন্য...জেলখানার রেকের মত, ফাঁকা কাঁকা...আমার টার্গেট ঐ টাতে উইঠা, চাদর বিছাইয়া ঘুম পাড়া...:)
উঠলাম, ইমরান উঠলো...মেয়েদের উপরের রেকে কেডা জানি উঠলো...

এখন ১/২ টা বাজতে বাজতে আমার আর ইমরানের মনে হৈলো, সেহেরী করলে খারাপ হয়না, বাকী কেউ রাজি হৈলোনা..
আমরা কৈলাম, ঠিকাছে, আমরাই খামু..:)

কয়েক প্যাকেটে আর টিফিন বাটিতে খাবার আনছিলো রাকু..
খুল্লাম একটা...খাইতে গিয়া দুইজনে মোডে ৩ টা মাংশ পাইলাম...
বুঝলাম, বাডি চয়েস ভুল হৈছে...
এইরকম অবিচারের ডিস্ট্রিবিউশন কেনো? রাকুরে ঝাড়লাম খানিক, তার পরে আরেক বাটি খুইলা মাংশ নিলাম, সেইখানেও অল্প কয়টা...তারপর আরেকটা...পরে মনে হৈলো, বাকীরা তো খাইবো, তাদের জন্য থাকা উচিৎ...

এখন, খাইয়া দাইয়া তো হাত ধোঁয়া দরকার....তাইলে জায়গা ছাড়তে হবে আর একবার ছাড়লে দখল!!..তাও গেলাম..আইসা দেখি, ঠিক, জায়গা দখল!!
ভাগ্যিস, তখন মেয়েদের উপরের রেকে যে ছিলো, সেও গেছিলো টয়লেটে...
দখল দখল...

আমার আর ইমরানের বকবকানিতে ততক্ষনে জিন্সের মাথা ব্যাথা শুরু হৈয়া গেছে নাকি...ক্ষেপছে ভীষন বুঝলাম, কাউরে ঘুমাইতে দেইনাই..কিন্তু আমি ধোরাছোঁয়ার ইট্টু বাইরে আছি, আর জিন্স আমারে ভালা পায়, মারবো না ইদানীং...:)

তো, আবারো খানিক পরে উঠতে হবে...ট্রেনে একটানা বৈসা থাকতে ভালো লাগেনা...
কিন্তু এখন ওঁৎ পাইতা রৈছে, একাধিক জন, কারন সবাই ঘুমে ঢুলুঢুলু তখন..একটু বিশ্রাম চায়..
ঘুইরা আইসা দেখি ঠিকই জায়গা দখল কৈরা ফেলছে, আর কেউ না, আমাদের মধু!!!
হালকা ঝাড়ি দিয়া কাজ উদ্ধার হয় কিনা দেখতে চাইলাম...
" ঐ মধু, ঐখানে আমি আগে বৈছি"
মধু: যাহ, দিমুনা
নেও, আমার তো আর ভালো লাগেনারে ভালো লাগেনা..বাংলা ছিনেমার ভিলেন হৈতে মন্চায়...
এখন কিছু তো করা লাগে..
মধুও ঐখানে নিরিবিলি রৈছে, বেশি নড়াচড়া করাটা ঠিক হবেনা, নীচে জানালার পাশে জিন্স বিরক্ত হবে...

ঠীকছে, দেখা যাক...
আমি পাশের রেকে চান্স মোহাম্মদরে কৈলাম, আমারে একটু চান্স দিস, কাজ সাইরা চৈলা যামু...
সময় গেলো, সব ঘুমের ঘোরে ঢুলু ঢুলু...মধুও ঘুম, নীচে বান্ধবীরাও ঘুম, বাকীরা যারা ঘুমে নাই, তারা এদিক সেদিক..আমি আর চান্স মোহাম্মদ..
রেকে উঠলাম...চাদর বিছাইয়া শুইলাম...
পানির বোতলের পানি আধা আধা করলাম, খুব হিসাব কৈরা..
মুখ খুল্লাম..
মধুর ঘুমন্ত হাতের নীচে বোতল টা কাইত কৈরা দিলাম....বোতলের পানি এমন গলার কাছে যে, নাড়া লাগলে পড়বে আরকিB-)

মধুর হাত বোতলের গায়ে জড়াইলাম..
তার পর বোতলের গায়ে ধাক্কা..রেকের ফাঁকা দিয়া পানি সব জিন্সের মাথায়..
আমি কি জানাইছি, তখন প্রচন্ড শীতকালের ঘটনা?:P
জিন্স ধড়মড় কৈরা জাইগা দেখে, মধুর হাতে বোতল, সে ঘুমের ভান কৈরা পৈরা আছে...ইয়া বড় কালা ব্যাগটা ঘুরাইয়া সুইং শটে জিন্স নিখুঁত এইমে ধুড়ুম কৈরা বাড়ি দিয়াল্লো...
(তখন আমি ধড়মড় কৈরা ঘুম থেইকা উঠলাম যেনো..:P)

মধুও লাফ দিয়া উঠলো, রিফ্লেক্স এ্যকশনের কারনে বোতল হাতে নিয়াই উঠলো..
উইঠা দেখে জিন্স রনাঙ্গিনী বেশে, মাথা চাদর সব পানিতে ভেজা, আর মধুর নিজের হাতে মুখ খোলা পানির বোতল...


চান্স মোহাম্মদ পরে আমারে ফাঁসাইয়া দিতে চাইছিলো, কিন্তু ঘটনা এতই চমৎকার খাপ খাইছিলো...Seeing Was decieving":P


মধুর সেই বোতল হাতে ভ্যাবাচ্যাকা মুখ, আমি এখনো ভুলিনাই...B-)

আমি জানি, আমি খুব খারাপ আছিলাম..

এই ঘটনার পর সবার ঘুম চটে যায়, উঠে সেহেরী খাইতে নিয়া দেখে, কোনো বাক্সেই কোনো মাংশ নাই....
এডা আমার আর ইমরানের কোনো দোষ নাই...
রাকু ৩ কেজি চালে মাত্র আধা কেজি মাংশ ডিছিলো, বেকুব কুনহানকার..
তারপরও সবাই কেনো যে আমাদের দোষ দিছিলো..:(



আবার আরেকদিন..







সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:৪২
৩৯টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×