
যেদিন ভোরবেলা আব্বা মারা গেলেন, মা আমাদের চার ভাইকে মুরগির ছানার মতো বুকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। তার কান্নায় কেবল অসহায়ত্ব নয়, মিশে ছিল এক বুক গভীর শূন্যতা। বারবার বলছিলেন, ‘তোরা তো এতিম হয়ে গেলি, আমি এখন কীভাবে তোদের আগলে রাখব?’
একদিকে জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে হারানোর অসহনীয় বেদনা, অন্যদিকে তাঁর রেখে যাওয়া ছোট ছোট সন্তানদের দেখভালের বিশাল দায়িত্ব—মা যেন দিশেহারা হয়ে যাচ্ছিলেন। কী খাওয়াবেন, কী পরাবেন, কীভাবে আমাদের সঠিক শিক্ষায় বড় করে তুলবেন—এইসব ভাবনায় সারাক্ষণ আনমনা হয়ে থাকতেন।
মা নিজে তো আমাদের কড়া কথা বলতেনই না, বরং অন্য কেউ কিছু বললে আব্বার কথা মনে করে ডুকরে ডুকরে কাঁদতেন। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা বুকে পুষে রাখতে রাখতে ঠিক এমনই এক বর্ষার সকালে, মা-ও চলে গেলেন আব্বার কাছে। আর আমরা হয়ে গেলাম পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী মানুষ।
আমি যদি কোনোদিন আলাদিনের চেরাগের সেই দৈত্যের দেখা পেতাম, আর সে যদি আমাকে তিনটি ইচ্ছা পূরণের সুযোগ দিত, আমি এক মুহূর্ত না ভেবে তিনবারই আমার মাকে ফিরে পেতে চাইতাম। মায়ের মতো আশ্রয় আর কেউ দিতে পারে না, এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


