somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শেখ এম উদ্‌দীন
আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

Antifreeze proteins এবং এদের কাজের একটি সহজ ব্যখ্যা

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কখনো কি চিন্তা করেছেন এন্টার্কটিকার মত তাপমাত্রাতে একটি মথ বা একটি লার্ভা কিভাবে বেঁচে থাকে? মানুষের মত কাপড় বা অন্য প্রানির মত পুরু পশমের কোনটিই এগুলোর নেই, এর পরেও এরা বেঁচে থাকে বহাল তবিয়তে! এই সকল প্রানির দেহে এক ধরণের বরফ নিরোধক যৌগ তৈরি হয় যা তাদের এমন কঠিন বরফাচ্ছাদিত পরিবেশেও দিব্যি নিজেদের শরীর বৃত্তীয় কাজ গুলো করতে সাহায্য করে।

এদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের দেহে Antifreeze proteins (AFPs) নামক এক ধরণের প্রোটিন তৈরি করে, Antifreeze protein নামটা শুনলেই কেন যেন মনে হয়, এমন একটি প্রোটিন যা পানিকে বরফে রুপান্তরের পদ্ধতিটিকে বন্ধ করে দেয়, যেমনটি করে পেট্রোলের নকিংরোধী রাসায়নিক যৌগ গুলো! আসলেই কি Antifreeze proteins (AFPs) গুলো এতোটাই শক্তি রাখে? সত্য কথা বলতে এ প্রোটিনগুলোর আসলে বরফে পরিনত হওয়া ঠেকানোর অত বেশী শক্তি নেই। এগুলো কেবল একটি জলীয় দ্রবন কে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা পর্যন্ত বরফ হওয়ার থেকে রক্ষা করে। কোন একটি জলীয় দ্রবনে তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে প্রথমে কিছু খুব খুদ্র বরফের কনা সৃষ্টি হয়, অনেকটা মানুষের ভ্রুনের মত, যাকে আমরা বলি ‘embryonic ice crystal’ (লেখাকে সহজ করার জন্য এর নাম দিলাম আমি ‘বরফ ভ্রুন’)। এই বরফ ব্রুনের সাধারণত চার ধরণের তল নিয়ে আমরা Antifreeze protein নিয়ে গবেষণারত গন আলচনা করি। এ তল গুলো মিলার ইন্ডিসের মাধ্যমে ব্যখ্যা করা এবং প্রতিটি তলে পানির অণুগুলো একেকটি ভিন্ন ধারাতে বিন্যস্ত থাকে! Antifreeze proteins গুলোতে এমন কিছু অ্যামাইনো এসিডের সমন্বয় থাকে যা তাদের বরফের এমন আনবিক লেভেলের তারতম্য অনুযায়ী নিজের পৃষ্ঠদেশের অথবা দ্রবনের পানিকে সাজাতে সাহায্য করে। ফলে বরফ ভ্রুনের গঠনের সাথে সাথেই Antifreeze protein ঐ ভ্রুনের উপর নিজেদের তৈরি এই বরফ সাদৃশ্য পানির অনু নিয়ে পরিশোষিত হয়ে পরে। এই পরিশোষন বরফের সমতলীয় তল কে বাকা করে দেয় এবং গিবস ফ্রি এনার্জি কমিয়ে দেয়। এই দুইটি কাজই আসলে বরফে পরিনত হওয়ার প্রক্রিয়াটাকে ঐ তাপমাত্রাতে thermodynamically unfavorable করে দেয়। অর্থাৎ, বরফের নিউক্লিয়েসন প্রক্রিয়াটিকে কার্যত বন্ধ করে দেয়, ফলে জলীয় দ্রবনে তৈরি হওয়া বরফ ভ্রুন গুলো একত্রীত হয়ে পলিকৃষ্টালাইন বরফে পরিনত হতে পারে না এবং যে প্রানি বা উদ্ভিদ এই Antifreeze protein তৈরি করে তার দেহের ফ্লুয়িড গুলো সাবজিরো তাপ মাত্রাতেও নিজেদের তরল অবস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয় এবং প্রাণীটি বেঁচে থাকে!এদের কার্যকরণের আরও বিবরণ পরে দিব। আগে দেখি আসলে এরা কি ভাবে কাজ করে।

ছবিটি দেখলে লক্ষ্য করবেন, একটি Antifreeze protein এ আবদ্ধ বরফের ক্রিস্টাল কে যখন উত্তপ্ত করা হয় তখন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রাতে এটি গলতে শুরু করে, যাকে আমরা ঐ ক্রিস্টালের গলনাঙ্ক (Tm )বলি, আমাদের সাধারণ জ্ঞান অনুযায়ী, ঐ দ্রবনের হিমাঙ্কও কিন্তু এই একই তাপমাত্রা হবার কথা। কিন্তু দ্রবনে যখন Antifreeze protein থাকে তখন বিষয়টি এই সাধারণ ধারনার থেকে ব্যতিক্রম হয়। লক্ষ্য করে দেখুন, তাপমাত্রা কমতে থাকলেও বরফের ক্রিস্টালটির কোন পরিবর্তন হচ্ছে না কিন্তু একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা কমার পরে হঠাৎ করেই দ্রবণটি বরফে রুপান্তরিত হচ্ছে! এই তাপমাত্রাকে আমরা বলি ঐ ক্রিস্টালের busting তাপমাত্রা (Tf ) বা দ্রবনের হিমাংক। এই ভিডিও থেকে এটা স্পষ্ট যে, Antifreeze protein দ্রবনের হিমাংক এবং ক্রিস্টালের গলনাঙ্ক এর মধ্যে একটি পরিমাপণ যোগ্য পার্থক্য বা হিস্টেরেসিস তৈরি করে দিয়েছে। এই পার্থক্য কেই আমরা thermal hysteresis or TH (TH = Tf – Tm) বলে থাকি, যা এই প্রোটিন গুলোর সক্ষমতা নির্ণয়ের মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

পরিশেষে, Antifreeze protein আসলে সরাসরি বরফে পরিনত হওয়াকে রোধ করে না, তারা দ্রবনে তৈরি হওয়া খুদ্র বরফের কুঁচিগুলোকে বড় হতে বাধা দেয়, যা এ প্রোটিন তৈরি কারী প্রাণীটিকে হিমাঙ্কের নিচেও স্বাভাবিক জীবন যাপনে সাহায্য করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:২১
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×