এস.এস.সি পরিক্ষার পর মোবাইল হাতে পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। পরিক্ষার আগে দেখতাম বন্ধুরা তাদের গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে কি সুন্দর কথা বলে কিন্তু মোবাইল ছিল না আমি খালি তামাশা দেখতাম আর মনে মনে বলতাম ইস আমার যদি এক খানা থাকত । যাই হোক, নতুন মোবাইল পাইছি আর মেয়েদের সাথে বিতলামি করব না তা কি করে হয়। যেই বন্ধুর সাথে দেখা হতো তারেই বলতাম “দোস্ত একটা নাম্বার দে।”এক পর্যায়ে আমাকে একজন ডিলার বলে মনে হত, এত নাম্বার কারে ফেলে কার সাথে কথা বলব। অবশেষে আমি আমার জীবনের প্রথম মিশনে নামলাম। মেয়েরে ফোন দিয়া প্রথমেই আমি কাইত। এত সুন্দর গলা। ২.৫ মাস কথা বলার পর ১৪ ফেব্রুয়ারি তার সাথে দেখা করলাম। দেখা করে মনে হল যে টাকা ওই মেয়ের পিছনে মোবাইলে খরচ করছি তা একটা ফকিরকে দিলে অনেক সওয়াব পাওয়া যেত । তার সামনে আমাকে তার ছোট ভাই লাগছিল, যদিও সে আমার থেকে ২ বছরের বড় । যাইহোক ৩৫০ টাকা খাবার বিল দিলাম। এবার বিদায়ের পালা। যাবার সময় আমাকে বলে “আমি আমার এক বান্ধবির বাসায় জাব,তার বাসায় আজকে কেউ নাই। তুমি যাবা”। আমি বললাম “না”। এখন মনে হয় ইস কেন যে গেলাম না। পাখি আইসা নিজেই খাচার ভিতর ধরা দিসে আর আমি নিজ হাতে খাঁচার দরজা খুলে পাখিকে উড়িয়ে দিলাম।
যাই হোক পরে বাসায় এসে নতুন করে এক্স.পি সেট আপ দিয়ে নতুন আরেকটা মিশনে নামলাম। প্রথম মিশনে রাম ছ্যাকা খাবার পর আরও অনুপ্রাণিত হয়ে কোমরে রশি বেধে এই মিশনে নামলাম। এবং বুঝতে পারলাম মেয়ে মানুষ কত প্রকারের হয়। এই বার ও গলা শুনে আমি কাইত, পুরা ইংলিশ ছবির নায়িকাদের মত কণ্ঠ। তাই তার পিছনেই লেগে রইলাম। নাম বলে না। কি করে কিছুই বলে না। পরে একদিন তার মায়ের সাথে কথা হয়। তখনই জানতে পারলাম সেও আমার থেকে ১ বছরের বড়, আমি যে কলেজে পরি সেও ওই কলেজেই পরে। অনেকেই বলে ফোন আমার কণ্ঠ নাকি কিছুটা মেয়েদের মত লাগে তাই তার মায়ের কাছ থেকে এই সুবিধাটা নিতে পারেছি । ১.৫ বছর পর সে আমার সাথে দেখা করবে কিন্তু শর্ত একটা তার বাসায় আমাকে যেতে হবে। মনে মনে ভাবলাম প্রথমবারের ভুল এইবার আর করা যাবে না তাই রাজি হয়ে গেলাম। মেয়ের বাসায় যাবার পর গিয়ে দেখি তার ফুল ফ্যামিলি আমাকে দেখার জন্য বসে আছে। তার মা, ভাই, বোন, বাপ সবাই নাকি আমাকে চিনে :!> :!> :!> :!> । যাই হোক বিয়ের আগেই জামাই আদর পেয়ে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হল।আসল কথা মেয়েকে বলার পর সে আমাকে বলে “দেখ এইটা কোন দিন সম্ভব না, আমি তোমাকে ভাই ছাড়া অন্য কিছু ভাবি নাই”। পরে অবশ্য গোপন সুত্রে খবর পেয়েছিলাম মেয়ে রাজি ছিল কিন্তু মায়ের নিষেধ মেয়ে ফেলতে পারল না বলে এইবার ও আরেকটা রাম ছ্যাকা খেয়ে আমাকে দ্বারা প্রেম হবে না বলে এই অধ্যায় এখানেই সমাপ্ত করলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর পুরনো সব কথা ভুলে গেলাম। আমাদের ক্লাশের একটা মেয়ের সাথে আমার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোটামুটি আমি অনেকের কাছে মুভি ডিলার হিসেবে পরিচিত ছিলাম, আমার এক বন্ধুর জন্য আমার কম্পিউটারের হিডেন কালেকশন নিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেদিন সে বন্ধু আসে নাই বলে পেন ড্রাইভ আমার সেই বান্ধবি নিয়ে গেল। আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম এইবার আমি গেছি, আমার ইজ্জত সম্মান সব ফালুদা হয়ে গেছে । রাত ১০.৩০ এ তার ফোন পেয়ে আত্মার সব পানি শুকিয়ে গেল। অনেক ভয়ে ফোন রিসিভ করার পর সে আমাকে বলে “কালেকশন যখন দিস আরও ভালো কালেকশনই দিতা । কি দিস এইগুলা মেলেনা,আন ফেইথফুল .............সবই দেখা !!! :#> :#> :#> :#> :#> :#> :#>” আমি বললাম "ঠিক আছে সা্মনের বার আরও ভালো কালেকশন দিব "
“ট্রিপল ই” ল্যাব ক্লাশে এক গ্রুপে আমরা। একদিন ল্যাব ক্লাশে দাত দিয়ে তার কাটছিলাম, সে আমাকে বলে “ভালই তো টেকনিক জানো, তোমার বউ অনেক সুখে থাকেবে ” এই কথা শুনে আমি তার দিকে শুধু হা করে তাকিয়ে থাকি, কিছু বলতে পারি নাই। পরে আমার গ্রুপের আরেক মেম্বার আমাকে বলে, “মামা কাহিনি এত দূর গেছে আর আমরা কিছুই জানি না”। আমি সে দিন কোনরকমে তাদের কাছে থেকে বাচলেও পরের ক্লাশে আর বাচেতে পারলাম না। ব্রেড বোর্ডে তার লাগানোর সময় সে আমাকে বলে “এত জোরে ঢুকাও কেন,সময় কম নাকি আস্তে ঢুকাও”। এই কথা শোনার পর আমাদের আরেক গ্রুপ মেম্বার আমার দিকে হা করে তাকিয়ে রইল আর আমি এর উত্তর খুজতে লাগলাম........................।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৩