somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাহলে কি ‘পয়লা বৈশাখ’ পালন করা যাবেনা?

১০ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা পহেলা বৈশাখ পালন করিনা কিন্তু ১৪ এপ্রিল সকালে বাসায় পান্তাভাত আর ইলিশ ভাজা খাই... বাহঃ ।।বাহঃ।।
যে ইলিশ মাছ অন্য সময় ৫০০ টাকায় পাওয়া যায় সেইটা ১৪ এপ্রিল উপলক্ষে ১০০০ টাকায় কেনায় কোন সওয়াব লুক্কায়িত নাই। তার চেয়ে মে মাসে ৫০০ টাকায় ওই একই ইলিশ খেয়ে বাকি ৫০০ টাকায় নুন্যতম ৫ গরীব ইয়াতিম কে পেট ভরে বিরিয়ানি খাওয়ানো সম্ভব যার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি , সেই গরীবের সন্তুষ্টি, নিজের আত্মার পরিতৃপ্তি , সাওয়াব, আর আখিরাতের কল্যানের একটা পথ তৈরি হতে পারে।
এখন অনেকের প্রশ্ন হতে পারে আমরা দুই ঈদেও তো অনেক টাকা খরচ করি... এর জবাব হল আল্লাহ দুই ইদ পালন করতে বলেছেন এবং এই পালনে সাওয়াব রয়েছে তবে অপচয় করতে নিষেধ করেছেন, অসহায় দের সহায়তা করতে বলেছেন। কিন্তু পহেলা বৈশাখ পালন আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয় গুলোর একটি কারন মুসলিমদের জন্যে দুই ইদ ছাড়া আর কোন দিবস কে উতসবের জন্যে পালন করা ইসলামে সম্পূর্ণ রুপে নিষিদ্ধ।
পয়লা বৈশাখকে দিন হিসেবে উদযাপন করাটাই তো অনৈসলামিক ! কেন? সুনানে আবু দাউদের একটি হাদিস উল্লেখ করি যা আল্লামা নাসিরুদ্দিন আলবানি বিশুদ্ধ বলে নিশ্চিত করেছেন -
আনাস (রাঃ) বলেন, যখন রসুল (সাঃ) মদিনাতে আসলেন তখন তাদের দুটি দিনে খেলা-ধূলা করতে দেখলেন, তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন এই দু’দিন কি? তারা উত্তর দিল, আমরা অজ্ঞতার যুগে এদিনগুলোকে উদযাপন করতাম। রসুলুল্লাহ(সাঃ) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তোমাদের এদের পরিবর্তে এমন দু’টি দিন দিয়েছেন যা এর চেয়ে উত্তম - আল আযহার দিন ও আল ফিতরের দিন।
লক্ষ্যনীয় যে এখানে রসুল (সাঃ) বলেছেন - إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَ
ইন্নাল্লাহা ক্বাদ আবদালাকুম বিহিমা মানে “নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তাদের বদলে”, অর্থাৎ আগে যা ছিল সেটা বদলে দিয়ে আল্লাহ্‌ নিজে দুটো দিন আমাদের উৎসবের জন্য নির্ধারিত করে দিলেন। এখানে কিন্তু রসুল(সাঃ) আগের দুটোকে অক্ষত রেখে নতুন দুটো ঈদ যোগ করেননি। যে মদিনাবাসী তাকে দুর্দিনে সাহায্য করেছিল, একটি মুসলিম রাষ্ট্রের সূচনা করেছিল, সেই মদিনাবাসীদেরও জাতীয় উৎসবকে ছাড় দেয়া হয়নি, বদলে দেয়া হয়েছিল। এর কারণ ব্যাখ্যায় শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইম্যিয়া ‘ইক্বতিদা আল সিরাতাল মুস্তাকিম’ গ্রন্থে বলেন - উৎসব ইসলামি শরিয়তের অংশ, যেহেতু মহান আল্লাহ্‌ সুরা মায়িদার ৪৮ নম্বর আয়াতে বলেন -
"তোমাদের প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য আমি নির্দিষ্ট শরিয়ত এবং নির্দিষ্ট মিনহাজ (পথ বা পন্থা) নির্ধারণ করেছিলাম।" (সুরা মাইদাহ, ৫;৪৮)
মোটকথা মুসলিমদের জন্য বছর বছর যা ঘুরে আসে এমন মাত্র দু’টি দিন উদযাপনযোগ্য। এর বাইরে যত দিবস পালিত হয় সবই পরিত্যাজ্য - সেটা ঈদে মিলাদুন্নবি বা ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম হোক, বাংলা/আরবি/ইংরেজি নববর্ষই হোক আর জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী বা ভালোবাসা দিবসই হোক।
আচ্ছা তাহলে কি ‘পয়লা বৈশাখ’ পালন করা যাবেনা? একসাথে একজন মুসলিম ও একজন বাঙালি হওয়া যাবেনা?
আল্লাহ্‌কে স্রষ্টা ও প্রতিপালনকারী হিসেবে মেনে নিয়ে, আল্লাহ্‌কে একমাত্র সত্য ‘ইলাহ্‌’ হিসেবে স্বীকার করে মুসলিম হবার মানে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহ্‌র ইচ্ছার কাছে সমর্পণ করা। ইসলাম একটি দ্বীন - পরিপূর্ণ জীবন বিধান। আমার জীবনের সব ক্ষেত্রে আমি শয়তানের, আমার বা আমার মত অন্য কোন মানুষের ইচ্ছেমত চলবোনা, চলবো আল্লাহ্‌র ইচ্ছেমত।
যদি কোন কাজের বিষয়ে আমরা সুস্পষ্ট কোন নিষেধাজ্ঞা ক্বুর’আন এবং সহিহ হাদিস থেকে জানতে পারি তাহলে আমাদের কর্তব্য - আমরা যেটা করছি, সেটা করতে যতই ভালো লাগুক, সেটা পরিহার করতে হবে। সমাজ তা মানুক না মানুক, মানুশের বানানো জাতিগত সংস্কৃতির ভিতর পরুক না পরুক তা পরিহার করতেই হবে কারন আল্লাহর ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা আর এই কথা স্বীকার করেই আমি মুসলিম। গড়ে ৫০-৬০ বছরের জিবনের পরেই আখিরাত শুরু আর ভালো বাঙ্গালি সার্টিফিকেট দিয়ে আখিরাতে পার পাওয়া যাবেনা । ইহকাল এবং পরকালের কল্যানের জন্যে ভালো বাঙালি নয় প্রথমে ভালো মুসলিম হওয়া জরুরি এবং হতেই হবে যদি শেষ বিচারের দিন পার পেতে চাও।
এ লেখাটা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন করতে একজন মুসলিম হিসেবে অন্য মুসলিম দের প্রতি একটি স্মরণিকা মাত্র। হিদায়াত বা সত্য পথ সুস্পষ্ট - যার খুশি সে সেই পথে চলবে। বিভ্রান্তিও সুস্পষ্ট - যার খুশি সে তাতে নিমজ্জিত থাকবে। প্রত্যেক মানুষকেই তার স্রষ্টার সামনে দাঁড়িয়ে জবাবদিহী করতে হবে। পৃথিবীতে সে কোন পথ বেছে নিয়েছিল তার ভিত্তিতে সে শাস্তি বা পুরষ্কার পাবে। সুতরাং যে ‘পয়লা বৈশাখ’ থেকে বেঁচে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির দিকে যেতে চায় যাক, আর যে ‘পয়লা বৈশাখ’ পালন করতে চায় সে করুক - তার হিসাব আল্লাহ্‌র সাথে হবে।
""কোন ব্যক্তিকে তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী স্মরণ করিয়ে দেবার পরেও সে যদি তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার কৃতকর্ম সমূহ ভুলে যায়, তবে তার অপেক্ষা অধিক সীমালঙ্ঘনকারী আর কে?"" [সুরা কাহাফ, আয়াত ৫৭]
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×