সংকলিত
রাস্তাঘাটে প্রস্রাব ঠেকানো বন্ধে দেয়ালে আরবী লিখেছে সরকার। প্রথম দিনেই প্রতিবাদ করেছি,¹ মূল কারণ এটা প্রতারণা। মানুষের অজ্ঞানতা এবং অন্ধ ধর্মবিশ্বাসের সুযোগ নেয়া। আজ এক মন্তব্য দেখে বুঝতে পারলাম, ঘটনার আরো অনেকদূর যাওয়া বাকি।
ঘটনা হলো বিশিষ্ট সাংবাদিক মুন্নী সাহাও এই আরবী লিখনের বিপক্ষে। তবে তার প্রতিবাদের কারণ ভিন্ন। তিনি সেই কারণটি গত সাত তারিখে ফেইসবুকে লিখেছেন এভাবে "টেলিভিশনের মানুষ হিসেবে আমি অারবী দেয়াল লিখনে শহরের ইসলামী চেহারা নিয়ে চিন্তিত।"²
সে স্ট্যাটাসে আরেকজন বিশিষ্ট সাংবাদিক জ.ই. মামুন মন্তব্য করেছেন "আমাদের মুতের গন্ধও ভালো এই আরবী আগ্রাসনের চেয়ে।"
মূত্রপাত বন্ধে আরবী লেখার বিপক্ষে থাকার কারণ আগে অনেক দীর্ঘ করেছি। এখন নতুন প্রশ্ন জাগলো, আরবীর প্রতি জনাব মামুনের এতো ঘৃণা কেন?
অথবা ইসলামের চেহারা ফুটে উঠলে তাতে শ্রীমতি সাহা'দি এতো চিন্তায় পরে যান কেন?
এদেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ মুসলমান, তাদের ধর্মের প্রকাশ বিভিন্নভাবে ঘটতেই পারে। এই প্রকাশে অন্য ধর্মের অবমাননার কিংবা অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের অসন্মানের কিছু নেই। পাশ্চাত্যের কোন রাস্তায় বিশাল ক্রস অথবা মাদার মেরির মুর্তি থাকলে, অথবা এমনকি বাংলাদেশের রাজধানীর রাস্তায় মুর্তি থাকলে তখন তো তাদের সমস্যা হয় না। ভারতের রাস্তায় হিন্দুত্ববাদের প্রকাশে তিনি চিন্তায় পরেন না। বরং সংস্কৃতির প্রকাশে বড় আনন্দিত হন।
প্রসঙ্গত, আরবী লেখা নিয়ে সাহা'দিদির আরও বিভিন্ন আপত্তি আছে। তার মতে, এই লেখার কারণে বাংলাদেশ পাকিস্তান বা আফগানিস্তান হয়ে গেলো। তিনি প্রশ্ন করেছেন, আরবীর জন্য কি সালাম রফিক মরেছে? আরবীর জন্য কি কেউ সকালে খালি পায়ে ফুল দিতে বের হয়? তাহলে কোন ভাষা শ্রদ্ধার আর সম্ভ্রমের ভাষা?
সাহা'দির এইসব আকূল করা প্রশ্নমালা দেখে আমিও আকূল হয়ে গেলাম। এইটা বাকি ছিলো। বাংলার সামনে আরবীকে দাড় করিয়ে দেয়া। শাহবাগি আদর্শকে সবসময় আগুনের মতো মনে করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শত্রু দরকার। জ্বালানি দরকার। জ্বালানি না থাকলে আগুনে ভাটা পরে। পাকিস্তান আর উর্দুকে নিয়ে মারামারি করতে করতে পুরনো হয়ে গেছে।
এবার আসল শত্রুর দিকে হাত বাড়াও। আরবীকে শত্রু বানাও। এই সাহা'দির দল যত চিতকারই করুক না কেন, আর আমি যত খারাপ মুসলমানই হই না কেন, আমার কাছে আরবী বেশি শ্রদ্ধার ভাষা। তাতে আমি ন্যুনতম লজ্জাবোধও করি না, বরং অহংকার করি। এবং তাতে আমার প্রাণের ভাষা বাংলার কোন অবমাননা হয়, আমার বাংলাদেশিত্বে ঘাটতি হয়, এমন 'অনুভূতি'ও আমার নাই। আইসিস কিংবা ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদকে মুন্নি সাহার চেয়ে আমি বেশি অপছন্দ করি। কিন্তু এই দেয়াল লিখনে আইসিস দেখিনা। কারণ এইসব শ্রীযুক্ত আর শ্রীমতিদের লজিক স্ট্রাকচার আর আমার লজিক স্ট্রাকচার পুরাপুরি আলাদা।
সুতরাং আমার শ্রদ্ধার ভাষা যখন জ.ই. মামুনের কাছে 'মুতের গন্ধ' এর চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে যায়, তা সে পাবলিকলি ঘোষণা দিয়ে বলে, তখন এ নিয়ে কৌতুক করতে পারিনা। আমি ইতিহাস জানি। আরবী কাদের শত্রু এবং কেন শত্রু হয়, জানি। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ শত্রুতা করার জন্য এই সাহা'দি আর মামুন'দাদের আব্বারা বারবার অনেক চেষ্টা করেছে। লাভ হয়নি, এখানেও হবেনা।
কিন্তু প্রচণ্ড ক্রোধ হয়। এই জ.ই. মামুনের আরবী নাম বদলে যা ইচ্ছা বাংলা নাম রাখা উচিত। এমনকি জ.ই. মূত্র রাখলেও আপত্তির কিছু নেই। আরবীর সাথে এর মতো বাস্টার্ডদের কোন সম্পর্ক নেই, আরবী নিয়ে কথা বলারও কোন অধিকার নাই তার। কিন্তু সেই কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে মাননীয় সরকার বাহাদুর। আওয়ামী লীগ সরকারের ধর্ম মন্ত্রনালয়।
1. https://goo.gl/WkKxND
2. https://goo.gl/AsWz2H